তালা প্রতিনিধি : বিয়ের পর থেকে এই পর্যন্ত প্রায় ৭ লক্ষ টাকার যৌতুক দেয়া হয়েছে, আবারও দাবী নগদ ১লক্ষ টাকাসহ পাটকেলঘাটায় ৫ শতক জমি এবং বাড়ি। কিন্তু দরিদ্র পিতা ১৮/২০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে জমি কিনে বাড়ি করে দিতে না পারায় স্ত্রী সহ ২ কন্যা শিশুকে পিতার বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছে তালার খোর্দ্দ গ্রামের যৌতুক লোভী স্বামী যুগল দাশ। পিতা চন্দ্র শেখর ও মা সাধনা দাশের উস্কানিতে সে যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে বারবার মারপিট করে পিতার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। ঘটনায় মামলা দায়ের হলে কৌশলে বিজ্ঞ আদালত থেকে জামিনে এসে যুগল দাশ বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এমনকি, যৌতুক হিসেবে জমি ও বাড়ি না পাওয়ায় যুগল দাশ ইতোমধ্যে শিল্পী দাশ নামের এক মেয়েকে বিয়ে করে ঘরে তুলেছেন। মামলা তুলে নিতে যুগল দাশের অব্যাহত হুমকি ও অত্যাচারে তালার অসহায় হয়ে পড়েছেন বারাত গ্রামের নিরিহ শ্যামল দাশ ও তার পরিবারের সদস্যরা ।
ভুক্তভোগী স্ত্রী প্রিয়ন্তী দাশের পিতা শ্যামল দাশ জানান, প্রায় ৭বছর আগে তার কন্যা প্রিয়ন্তী দাশের সাথে পারিবারিক ভাবে পাটকেলঘাটা থানার খোর্দ্দ গ্রামের চন্দ্র শেখর দাশের ছেলে যুগল দাশের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে দফায় দফায় যৌতুক হিসেবে যুগল দাশকে তার পিতা ও মাতার দাবীরমুখে নগদ টাকা ও আসবাবপত্র মিলিয়ে প্রায় ৭লক্ষ টাকার সম্পদ দেয়া হয়েছে। এরমধ্যে যুগল-প্রিয়ন্তীর ঘরে কন্যা সন্তান জয়া দাশ (৫) জন্মগ্রহন করলে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে যুগল ও তার পিতা চন্দ্র শেখর এবং মা সাধনা দাশ। একপর্যায়ে প্রিয়ন্তীকে সন্তান সহ পিতার বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়ে ৩ লক্ষ টাকা যৌতুক দাবী করে। কিন্তু এই টাকা দিতে না পারায় প্রিয়ন্তীকে মারপিট করে গুরুতর আহত করে যুগল। এঘটনায় প্রিয়ন্তীর পিতা শ্যামল দাশ পাটকেলঘাটা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা (১৩/২০২৩) দায়ের করেন। এই মামলায় জেল খাটার পর “ভাল হয়ে ঘর সংসার” করার অঙ্গিকার করে ধুরন্তর যুগল দাশ বিজ্ঞ আদালত থেকে জামিনে এসে শশুরবাড়িতে ওঠে। এখানে থাকাকালে সে মাদক সেবন ও ব্যবসার সাথে জড়িয়ে পড়ে এবং মাদক সেবনের টাকার জন্য স্ত্রী ও শশুরের উপর অত্যাচার শুরু করে। একপর্যায়ে পিতা ও মাতার উস্কানিতে যুগল দাশ স্ত্রীকে নিয়ে পাটকেলঘাটায় থেকে ঘর-সংসার করার কথা বলে নতুন করে নগদ ১লক্ষ টাকা এবং ৫শতক জমি কিনে দিয়ে সেখানে বাড়ি করে দেবার দাবী করে। কিন্তু জমি কিনে বাড়ি করে দেবার সামর্থ না থাকায় প্রিয়ন্তীর পিতা তা দিতে অস্বীকার করে।
ভুক্তভোগী প্রিয়ন্তী দাশ জানান, স্বামী যুগল দাশকে নতুন করে যৌতুক দিতে না দেয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে সে আবারও বিয়ে করার হুমকি দিয়ে আমার অমানুষিক নির্যাতন চালাতে থাকে। একপর্যায়ে আমাকে সহ আমার ২ কন্যা সন্তানকে পিতার বাড়িতে রেখে পালিয়ে যায়। এর কয়েকদিন পর সে আমার শশুর ও শাশুড়িুর উস্কানিতে শিল্পি দাশ নামের এক মেয়েকে বিয়ে করে। এঘটনায় আমি তালা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন মামলা দায়ের করি। মামলায় শশুর চন্দ্র শেখর এবং শাশুড়ি সাধনা দাশ বিজ্ঞ আদালত থেকে জামিন নেন। কিন্তু স্বামী যুগল দাশ ও তার নতুন স্ত্রী শিল্পী দাশ জেলে যাবার ভয়ে জামিন না নিয়ে আমাদের মামলা তুলে নেবার জন্য প্রতিনিয়ত হুমকি প্রদান করে যাচ্ছে। এপ্রেক্ষিতে একদিকে স্বামীর হুমকি অপরদিকে ২ শিশু সন্তানকে নিয়ে প্রিয়ন্তী দাশ তার পিতার বাড়িতে অমানবিক জীবন যাপন করছে। এঘটনায় অসহায় প্রিয়ন্তীর হতভাগ্য পিতা শ্যামল দাশ যৌতুকলোভী যুগল দাশকে গ্রেফতার পূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবীতে উর্দ্ধন পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
যৌতুকের দাবীতে স্ত্রী-সন্তানদের তাড়িয়ে দিয়ে আবারও বিয়ে করার অভিযোগ!
Leave a comment