জন্মভূমি ডেস্ক : ওরা শিশু অপহরণকারী। দীর্ঘদিন ধরে রাজধানীর বিভিন্ন স্কুল, মাদ্রাসা, কোচিং সেন্টার ও মার্কেটের সামনে ওঁৎপেতে থাকত। কোনো শিশুকে একা পেলে তার সঙ্গে ভাব জমিয়ে তুলত। শিশুটিকে তার মা-বাবার আত্মীয়-বন্ধু পরিচয় দিত তারা। যে সব শিশু তাদের বাবা-মায়ের ফোন নম্বর মুখস্থ থাকত তাদের বেশি টার্গেট করত তারা। এরপর শিশুকে অপহরণ করে কৌশলে তাদের বাবা-মায়ের মোবাইল নম্বর নিয়ে যোগাযোগ করে মুক্তিপণ আদায় করত।
গত ছয়বছরে ৫০০ থেকে ৬০০ শিশু অপহরণ করে মোটা অংকের মুক্তিপণ আদায় করেছে। এরকমই সংঘবদ্ধ অপহরণকারী চক্রের হোতা মো. মিল্টন মাসুদসহ (৪৫) তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত অন্যরা হচ্ছে- মো. শাহীনুর রহমান (৩৮) ও সুফিয়া বেগম (৪৮)।
শুক্রবার গভীর রাতে উত্তরা পূর্ব থানার পুলিশের একটি দল গাজীপুরের সালনা এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে দুটি মোবাইল ফোন ও অপহরণে ব্যবহৃত পাঁচটি সিমকার্ড জব্দ করা হয়। গ্রেফতারকৃত মিল্টন মাসুদের বিরুদ্ধে ঢাকা ও গাজীপুরে পাঁচটি এবং শাহীনুর রহমানের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা রয়েছে।
শনিবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে উত্তরা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মোর্শেদ আলম এ তথ্য জানান।
ডিসি মোর্শেদ আলম জানান, গত ২৪ মার্চ রাজধানীর উত্তরা ৪ নম্বর সেক্টরের হলি ল্যাবের সামনে থেকে ছয়বছরের শিশু শাহিন শেখ হারিয়ে যায়। ওইদিন উত্তরা পূর্ব থানায় একটি জিডি করা হয়। তদন্তের সূত্র ধরে প্রথমে ওই অপহরণকারী চক্রের সন্ধান পাওয়া যায়। পরে উত্তরা এয়ারপোর্ট জোনের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) মো. তৌহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে উত্তরা পূর্ব থানার একটি টিম তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় আসামিদের শনাক্ত করেন। পরে শুক্রবার রাতে গাজীপুর সালনা এলাকায় অভিযান চালিয়ে অপহরণকারী চক্রের ওই তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে জানা গেছে, গ্রেফতারকৃতরা দীর্ঘদিন ধরে স্কুল, বাজার, রেস্টুরেন্টসহ নানা জায়গায় একা থাকা ও বাবা মায়ের সঙ্গে ঘুরতে থাকা শিশুদের টার্গেট করে কৌশলে অপহরণ করত। তাদের পরিবারের কাছ থেকে বিকাশ, নগদসহ মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে মোটা অংকের মুক্তিপণ আদায় করে।
অভিভাবকদের সচেতন হওয়ার অনুরোধ জানিয়ে পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান, আপনারা বাচ্চাদের অপহরণ সংক্রান্ত বিষয়ে সতর্ক করবেন। স্কুল ও কোচিং সেন্টারে যাওয়া আসার সময় অপরিচিত কারও সঙ্গে কথা না বলা, মোবাইল নাম্বার না দেওয়া ও কিছু খেতে দিলে না খাওয়ার জন্য সতর্ক করার অনুরোধ জানান তিনি।
প্রধান সম্পাদক: লে. কমান্ডার (অব.) রাশেদ ইকবাল, প্রকাশক আসিফ কবীর কর্তৃক জন্মভূমি প্রকাশনী লি: ১১০/২,সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর বালু সড়ক, খুলনা থেকে মূদ্রিত ও প্রকাশিত