
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে যখন রাজনৈতিক পরিবেশ শান্তিপূর্ণ রাখা জরুরি, তখন উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করা যাচ্ছে যে পাল্টাপাল্টি সমাবেশ, হামলার ঘটনায় পরিবেশ সংঘাতময় হয়ে উঠছে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে শেষ পর্যন্ত পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে, তা কে বলতে পারে!
আমাদের দেশের প্রধান দুটি রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি কেউ কাউকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা না করে গায়ের জোরে মোকাবিলা করতে চায়। দুই দলই নিজেকে জনপ্রিয় বলে দাবি করে, কিন্তু জনগণের মতামতের তোয়াক্কা করে না দলীয় কর্মসূচি গ্রহণের বেলায়। ছোট দলগুলোর মধ্যেও বড় দলের বদঅভ্যাস সংক্রমিত হচ্ছে। যুক্তির জোর নয়, জোরের যুক্তি হয়ে উঠছে রাজনৈতিক দলগুলোর নীতি। আর জোরজবরদস্তির রাজনীতিতে সাধারণ মানুষের চিড়ে চ্যাপ্টা অবস্থা।
অথচ বদলে যাওয়া পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে রাজনৈতিক কর্মসূচি নির্ধারণে সক্ষমতা দেখাতে পারছে না রাজনৈতিক দলগুলো। মানুষের কাছে নিজেদের রাজনৈতিক বক্তব্য পৌঁছে দেওয়ার জন্য এখন অনেক সহজ উপযোগী মাধ্যম থাকলেও রাজনৈতিক দলগুলো এখনো আটকে আছে পুরোনো ধারার মিছিল-মিটিং-স্লোগানে। এই রাজনীতি মানুষকে কাছে টানে না, উল্টো তাদের মধ্যে বিরক্তির উদ্রেক করে।
রাজনীতির প্রতি মানুষের বীতশ্রদ্ধ ভাব নানাভাবেই স্পষ্ট হয়ে ওঠে। কোনো দলের কর্মসূচিতেই এখন আর সাধারণ মানুষের উপস্থিতি দেখা যায় না। একেবারে দলীয় কর্মী-সমর্থক-ক্যাডার ছাড়া কেউ সভা-সমাবেশে যোগ দেয় না। নির্বাচনের প্রতি মানুষের উৎসাহ থাকলেও এখন সেখানেও ভাটার টান। ঢাকা-১৭ আসনের সাম্প্রতিক নির্বাচনে ভোটারদের যে খরা দেখা গেল, তা রীতিমতো উদ্বেগের। এর মধ্যে রাজনৈতিক পরিবেশ যদি সংঘাতময় হয়ে ওঠে, তাহলে পরিণতি হবে ভয়াবহ। জনদুর্ভোগ তৈরি হয়- এমন কর্মসূচি রাজনৈতিক দলগুলোকে যেমন এড়িয়ে চলতে হবে, তেমনি সহিংসতাও পরিহার করতে হবে।