রূপসা প্রতিনিধি : প্রতিষ্ঠানের নামে ভুয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে ম্যানেজার কর্তৃক প্রায় অর্ধকোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনায় বিপাকে পড়েছে ইটভাটা মালিক শেখ আব্দুস সাত্তার। সম্প্রতি রূপসা উপজেলার নেহালপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ব্যাপারে ভাটা মালিক থানায় পৃথক পৃথক অভিযোগ ও জিডি করেছেন।
গত ৩০ মার্চ রূপসা থানায় করা জিডিতে উপজেলার নেহালপুর গ্রামে অবস্থিত কনকর্ড ব্রিক্স ইন্ডাষ্ট্রিস (সিবিআই) এর মালিক ও ভদ্রাগাতি গ্রামের বাসিন্দা শেখ আব্দুস সাত্তার উল্লেখ করেন, নন্দনপুর গ্রামের হাবিবুর রহমান মোল্লার ছেলে মোঃ লুৎফর রহমান তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ১২ বছর যাবত ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত রয়েছে। উক্ত লুৎফর রহমান প্রতিদিন তার বাড়ি হতে ভাটায় এসে চাকরি করত। এমতাবস্থায় তার নিকট থাকা ভাটার ইট বিক্রি করা বাবদ অনুমান ৫লাখ ছিল। গত ২৭ মার্চ সকালে ম্যানেজার লুৎফরকে ভাটায় না দেখতে পেয়ে বেলা অনুমানিক ১১টার দিকে ভাটা মালিক তার মোবাইলে ফোন করলে তিনি তা রিসিভ করেননি। তবে লুৎফরের স্ত্রী জানায় সে ভাটায় রওনা হয়েছে। তারপরও লুৎফর ভাটায় না আসলে পরদিন ভাটা মালিক আব্দুস সাত্তার লুৎফরের ভাইয়ের নম্বরে কল করলে সে কোথায় আছে তা কেউ জানেনা বলে জানায়। তখন ভাটা মালিক তার ৫ লাখ টাকার কথা বাড়ির কেউ জানে কি না জানতে চাইলে তারা বিভিন্ন অসংলগ্ন কথাবার্তা বলে।
এদিকে থানায় জিডি করার পরও ম্যানেজার লুৎফর টাকা ফেরত না দিয়ে গা ঢাকা দিয়ে থাকার পাশাপাশি ইটভাটার ভুয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যক্তির নিকট থেকে আরো প্রায় ৩৫ লাখ ৪৫ হাজার টাকা আত্মসাতের খবর পান ভাটা মালিক আব্দুস সাত্তার। এখবর জানার পর নানাভাবে ম্যানেজার লুৎফরের সাথে যোগাযোগে ব্যর্থ হয়ে গত ৩ এপ্রিল ভাটা মালিক শেখ আব্দুস সাত্তার রূপসা থানায় ফের লিখিত অভিযোগ করেন। লিখিত অভিযোগ করতে না করতেই আরো বেশ কিছু টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পান ভাটা মালিক।
এদিকে থানায় জিডি ও অভিযোগের ভিত্তিতে কিসমত খুলনা ফাঁড়ি পুলিশ দিয়ে লুৎফরকে আটক করান ভাটা মালিক আব্দুস সাত্তার। আটকের পর উক্ত লুৎফর ফাঁড়িতে তার ভাই ও ছেলের উপস্থিতিতে পাওনাদারদের পাওনা মিটিয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে মুচলেকা দেন। মুচলেকা প্রদানকালে ভাটা মালিক আব্দুস সাত্তার ও স্থানীয় ইউপি সদস্য আসাবুর রহমান মোড়ল উপস্থিত ছিলেন। টাকার পরিমান বেশি হওয়ায় লুৎফরের মুচলেকার উপর আস্থা রাখতে না পেরে এসময় আসাবুর মেম্বর বিষয়টি ইউপি চেয়ারম্যান কামাল হোসেন বুলবুলকে অবগত করালে তিনি পরিষদে বসাবসির প্রস্তাব দেন। সে মোতাবেক গত ১ মে ইউনিয়ন পরিষদে অনুষ্ঠিত শালিস বৈঠকে হাজির হন ম্যানেজার লুৎফর রহমান। নৈহাটী ইউপি চেয়ারম্যান কামাল হোসেন বুলবুল এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত শালিস বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ভাটা মালিক শেখ আব্দুস সাত্তার, সরদার ফেরদাউসসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। ওই বৈঠকে লুৎফর রহমান টাকা আত্মসাতের অভিযোগ স্বীকার করে তা ফেরত দেয়ার ব্যাপারে অঙ্গিকার করেন। এদিকে মালিকের অনুমতি ছাড়াই ম্যানেজার কর্তৃক ভুয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে বিপুল পরিমান অর্থ আত্মসাতের ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করে ব্যবসায়ী শেখ আব্দুস সাত্তারের ব্যবসায়ীক সুনাম ও সামাজিক ভাবমূর্তি নষ্ট করার অপতৎতরতায় লিপ্ত রয়েছে একটি মহল।
এব্যাপারে ভাটা মালিক শেখ আব্দুস সাত্তার বলেন, সুদীর্ঘকাল ধরে অত্যন্ত সুনামের সাথে ইটভাটার ব্যবসা করে আসছি। দীর্ঘদিন প্রতিষ্ঠানে জড়িত থাকার সুবাধে ম্যানেজার লুৎফর রহমান ভাটার লেবারদের বিলের ৫লাখ টাকা আত্মসাৎ করে গা ঢাকা দেয়। এছাড়া আমার অগোচরে ম্যানেজার বিভিন্ন ব্যক্তির নিকট থেকে ভুয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে যে অর্থ আত্মসাৎ করেছে তার সাথে আমার বা আমার প্রতিষ্ঠানের কোন সম্পর্ক নেই।
প্রধান সম্পাদক: লে. কমান্ডার (অব.) রাশেদ ইকবাল, প্রকাশক আসিফ কবীর কর্তৃক জন্মভূমি প্রকাশনী লি: ১১০/২,সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর বালু সড়ক, খুলনা থেকে মূদ্রিত ও প্রকাশিত