ডেস্ক নিউজ : রূপসার পূর্ব ও পশ্চিম ঘাটের পন্টুন দু’টি যেন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। সম্প্রতি দায়সারা ভাবে সংস্কার করা হলেও বর্তমানে পন্টুন দু’টির একাধিক জায়গায় ছোট-বড় গর্তে পরিণত হয়েছে। জনসাধারণ চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়লেও টোল ইজারা কর্তৃপক্ষের নেই কোনো মাথা ব্যথা। পারাপাররত যাত্রীরা শিগগির দু’পাড়ে নতুন পন্টুনের দাবি তুলেছেন। আগামী একসপ্তাহের মধ্যে রূপসা ঘাটের দুইপাড়ে পুরাতন পন্টুন ও গ্যাংওয়ে বাদ দিয়ে নতুন পন্টুন ও গ্যাংওয়ে স্থাপন করা হবে এমনও প্রতিশ্র“তি দিয়েছেন বিআইডব্লিউটিএ খুলনা’র যুগ্ম-পরিচালক মোঃ মাসুদ পারভেজ। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পর গত পাঁচ আগস্ট ক্ষমতার পালাবদলের পর বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে রূপসা ঘাটে টোল ইজারা নেন শেখ আলী আকবর। বিগত সরকারের আমলে কেসিসি’র কাছ থেকে ইজারা নিয়ে আদায় করা হতো রূপসা ঘাটে টোল।
সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, খুলনার রূপসা ঘাট একটি জনগুরুত্বপূর্ণ খেয়াঘাট। সংস্কারের অভাবে দু’পাড়ে পন্টুন দু’টি মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। এ ঘাট দিয়ে প্রতিদিন পারাপার হয় সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ট্রলার থেকে ওঠা-নামা করতে হয় যাত্রীদের। প্রায় ঘটছে ছোট-খাটো দুর্ঘটনা। অবিলম্বে পন্টুন দু’টি সংস্কার করা প্রয়োজন। এমন মন্তব্য করেছেন রূপসাঘাট দিয়ে পারাপাররত জনসাধারণ। একজন ব্যক্তির প্রতিদিন রূপসাঘাট পারাপার হতে গুণতে হচ্ছে ১০ টাকা।
অপর দিকে, যাত্রীদের সাথে বেশি জুলুম করা হচ্ছে রহিমনগর কাস্টমঘাটে। প্রতিদিন একজন ব্যক্তির রহিমনগর কাস্টমঘাট পারাপার হতে গুণতে হচ্ছে ১৪ টাকা। বাইসাইকেলসহ পারাপার হতে গেলে গুণতে হয় ১৬ টাকা। প্রায় দুইমাস ধরে রূপসা ঘাটে দু’পাড়ে পন্টুন দু’টির বেহাল অবস্থা। উদাসীনতা ও সংস্কারের অভাবে পরিণত হয়েছে অসংখ্য ছোট-বড় গর্ত। ক্ষমতার পালাবদলের আগে পন্টুন দু’টি চলাচলে অনুপযোগী হলে কেসিসি কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করতেন। গত পাঁচ আগস্ট আন্দোলনের পর বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে রূপসা ঘাটে টোল আদায় ইজারা নেন শেখ আলী আকবর। মাস খানেক আগে টোল আদায় কর্তৃপক্ষ তালিপট্টি দিয়ে দায়সারা ভাবে মেরামত করেন। বর্তমানে পন্টুন দু’টির বিভিন্ন স্থানে ছোট-বড় গর্তে পরিণত হওয়ায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে হচ্ছে যাত্রীদের।
পূর্ব ও পশ্চিম রূপসা ইঞ্জিন চালিত নৌকা মাঝি সংঘের সভাপতি আব্দুল হালিম বলেন, রূপসা ঘাটের পন্টুন দু’টি সংস্কারের অভাবে মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। পন্টুনের অনেক স্থানে বড়-বড় গর্তে পরিণত হয়েছে। পন্টুনের প্লেনশীট উঠে ফাঁকা হয়ে গেছে। এখন যারা টোল আদায়ের দায়িত্বে আছেন তাদের পন্টুন সংস্কারের ব্যাপারে কোনো মাথা ব্যথাই নেই। যাত্রীরা যাতে দুর্ঘটনা কবলিত না হয় সেজন্য বেশকিছু স্থানে সামান্য বালুর বস্তা, কাঠের তক্তা ও বসার বেঞ্চ দিয়ে ঠেক দেওয়া হয়েছে।
রূপসাঘাট দিয়ে পারাপার হওয়া যাত্রী ফকিরহাট উপজেলার মানসা গ্রামের শহিদুল ইসলাম বলেন, রূপসা ঘাটে পন্টুনের বাজে অবস্থা। দ্রুত সংস্কর করা প্রয়োজন। পন্টুন দু’টি মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে।
ফকিরহাট উপজেলার খাজুরা গ্রামের সেলিম হোসেন বলেন, রূপসাঘাটে পন্টুন দু’টি দ্রুত সংস্কার করা প্রয়োজন। সংস্করের অভাবে রূপসা ঘাটে দুই পাড়ের পন্টুন দু’টি যেন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে।
নগরীর হাজী মোহসীন এলাকার বাসিন্দা মোঃ জসীম উদ্দিন বলেন, রূপসা ঘাটের দুই পাড়ের পন্টুনের বাড়ে অবস্থা। দ্রুত সংস্কার করা প্রয়োজন। তিনি আরো বলেন, শিগগির পুরনো পন্টুন দু’টি বাদ দিয়ে নতুন পন্টুন স্থাপন করা একান্ত প্রয়োজন।
বিআইডব্লিউটিএ খুলনার যুগ্ম-পরিচালক মোঃ মাসুদ পারভেজ সময়ের খবরকে বলেন, রূপসাঘাটে জনসাধারণের ভোগান্তি দ্রুত লাঘবে মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে রূপসাঘাটের দুইপাড়ে পুরাতন পন্টুন ও গ্যাংওয়ে বাদ দিয়ে নতুন পন্টুন ও গ্যাংওয়ে স্থাপন করা হচ্ছে।
রূপসার দু’টি ঘাটের পন্টুন যেনো মরণ ফাঁদ: প্রায়ই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা

Leave a comment