জন্মভূমি ডেস্ক : বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। শনিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে এটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ তরিফুল নেওয়াজ কবির।
অন্যদিকে শনিবার রাতে সর্বশেষ আপডেটে ভারতের আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে সারারাত শক্তি সঞ্চার করে রোববার (২৬ মে) সকালে এটি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেওয়ার পর রাতে বাংলাদেশের খেপুপাড়া এবং পশ্চিমবঙ্গের সাগরদ্বীপের মধ্যবর্তী অঞ্চলটি ঘূর্ণিঝড়টি অতিক্রম করবে।
সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, নিম্নচাপটির সর্বশেষ অবস্থান খেপুপাড়া থেকে ৪২০ কিলোমিটার দূরে। এটি সর্বশেষ ৬ ঘণ্টায় ১১ কিলোমিটার বেগে উপকূলের দিকে এগিয়ে আসছে।
সংস্থাটি জানিয়েছে, বাংলাদেশের খেপুপাড়া এবং ভারতের সাগরদ্বীপের মাঝামাঝি অঞ্চল দিয়ে ঘূর্ণিঝড়টি অতিক্রম করবে। ওই সময় এটির গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ১১০ থেকে ১২০ কিলোমিটার। আর এটি বাতাসের গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ১৩৫ কিলোমিটার।
শনিবার সন্ধ্যার দিকে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেয়। এটি এখনো শক্তি সঞ্চার করে যাচ্ছে। রোববার সকালে এটি ঘূর্ণিঝড় থেকে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেবে। সারাদিন শক্তি ধরে রেখে এটি রোববার মধ্যরাতে প্রবল ঘূর্ণিঝড় হিসেবেই উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতে আঘাত হানবে।
ভারতের আবহাওয়া বিভাগ তাদের সর্বশেষ আপডেটে আরও জানিয়েছে, গত ৬ ঘণ্টায় ১২ কিলোমিটার গতিতে ঘূর্ণিঝড়টি বঙ্গোপসাগরের উত্তরাঞ্চলের দিকে সরেছে। ওই সময় এটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেয়।
সংস্থাটি আরও বলেছে, ঝড়ের সময় বাংলাদেশ ও ভারতের উপকূলীয় অঞ্চলের নিম্নাঞ্চলগুলো ৬ থেকে ৯ ফুট জলোচ্ছ¡াসে প্লাবিত হতে পারে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম, সিলেট বিভাগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। শনিবার আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঘূর্ণিঝড় সংক্রান্ত ৮ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে দেশের সব বিভাগে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ ভারী (৪৪-৮৮ মিমি) থেকে অতি ভারী (২৮৯ মিমি) বর্ষণ হতে পারে।
এছাড়া বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালী, বরিশাল, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, ফেনী, কুমিলা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং তৎসংলগ্ন দ্বীপ ও চরে স্বাভাবিকের চেয়ে ৩-৫ ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছাস হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। রাজধানী ঢাকাতেও রাতে বৃষ্টিপাত হয়েছে।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে দেশের চারটি সমুদ্র বন্দরের ওপর সতর্ক সংকেত বাড়ানো হয়েছে। এর মধ্যে মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত এবং চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
এর আগে পূর্ব মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করা গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড় রেমালে পরিণত হয়।