এম সাইফুল ইসলাম
সন্তানদের দুপুরে খেতে দিতে পারিনি। রোজার মাসেও আমরা রোজা রাখছি, না খাইয়া। ছেলেটারে সকালে দোকান থেইকা একটা পাউরুটি আইনা দিছি। এরপর সারাদিন আর কিছু দিতে পারি নাই। ঘরে চাল ছিল না এইরকম অনেক দিন হইছে। কথাগুলো বলছিলেন খুলনা মহানগরীর রয়েলের মোড়ে এক মাসের শিশুকে নিয়ে পত্রিকা বিক্রি করতে আসা সালেকা বেগম (৩০)।
মহানগরীর ট্যাংক রোডের একটি বস্তিতে বাস করেন সালেকা বেগম ও তার পরিবার। তার স্বামী মেহেদি হাসান বাপ্পী (৩৫)। তিনি একটি বেকারী কোম্পানিতে কাজ করতেন। যার মাসে উপার্জন ১০ হাজার টাকা। তাদের চার সন্তান নিয়ে পরিবারের ৬ সদস্য। যাদের সকলের বয়স এক মাস থেকে শুরু করে ১১ বছর। কেউই লেখাপড়া করছে না। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে তার স্বামী মেহেদী হাসান বাপ্পী চাকুরি হারালে পথে বসার মতো অবস্থা হয়ে দাঁড়ায় এই পরিবারের। এ পরিস্থিতি সামলাতে সালেকা তার একমাসের বাচ্ছাকে নিয়ে পত্রিকা বিক্রি করতে রাস্তায় নামেন।
তিনি বলেন, ছেলেটা সারাদিন খাই খাই করে। কিন্তু টাকা না থাকলে কোত্থেকে খাইতে দেব। এই পরিবারের অভুক্ত দিন কাটানো আর এখনকার দৈন্যদশার কারণ করোনাভাইরাস।
সালেকা বেগমের অভুক্ত শিশুটির মতোই বাবা-মায়ের বেকারত্ব ও আয় কমে যাওয়ার বড় প্রভাব সাধারণত পড়ে শিশুদের উপর। তিনি এ প্রতিবেদককে জানান, সরকারে পক্ষ থেকে আমরা কোন ধরনের ত্রাণ সহায়তা পাইনি। আমি ছোট শিশু বাচ্ছাকে সাথে নিয়ে পত্রিকা বিক্রি করছি যা এই করোনার মধ্যে খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। আমাকে যদি সরকার কোন কর্মসংস্থান যেমন দোকান বা সেলাই মেশিন এর ব্যবস্থা করে দিত তাহলে আমার জন্য এত কষ্ট হতো না।
লকডাউনে নিম্ন আয়ের মানুষ এক মাসের শিশুটিকেও দেখতে হলো পৃথিবীর নির্মম বাস্তবতা
Leave a comment