জন্মভূমি ডেস্ক : যশোরের চৌগাছা উপজেলায় ভালো ফলন পেতে রাতের বেলায় ড্রাগন বাগানের খুঁটিতে খুঁটিতে বৈদ্যুতিক বাতি জ্বালিয়ে চাষ হচ্ছে ড্রাগন ফল। এভাবে চাষাবাদকে বলা হচ্ছে ‘লাইট পদ্ধতি’। ড্রাগন চাষের নতুন এ পদ্ধতিতে অনেক লাভবান হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন অনেক চাষি। কৃষি অফিস সূত্র জানিয়েছে, এ বছর উপজেলাতে ২৭৫ হেক্টর জমিতে ড্রাগন চাষ করেছেন চাষিরা।
মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) রাতে, উপজেলার টেংগুরপুর গ্রামের পূর্ব মাঠে কৃষক বাকি-বিল্লাহর ড্রাগন ক্ষেত দেখা যায়। ক্ষেতের ভিতর শত শত বিদ্যুতের বাল্ব জলছে। আলোকিত হয়ে রয়েছে পুরো ড্রাগন ক্ষেত। নিজ হাতে ক্ষেত পরিচর্যা করছেন বাকি-বিল্লাহ।
এ সময় তার ক্ষেতে কাজ করা শ্রমিক আশাদুল ইসলাম বলেছেন, আমি দীর্ঘদিন যাবৎ এ ফল বাগানে কাজ করছি। রাতে কাজ করলে দ্বিগুণ পারিশ্রমিক পাই। বাকি-বিল্লাহ জানিয়েছেন, তিনি নিজ জমিতে ১৫ বিঘা ড্রাগন চাষ করেছেন এই বছর। টিভিতে কৃষিবিদ শাইখ সিরাজের প্রচারিত লাইটিং চায়না পদ্ধতি প্রতিবেদন দেখে উদ্বুদ্ধ হন তিনি।
তিনি আরও বলেন, ড্রাগন মূলত গ্রীষ্মকালীন ফল। অতিরিক্ত ঠাণ্ডায় ড্রাগনে ফুল-ফল হয়না। কিন্তু লাইটিং পদ্ধতিতে ড্রাগন গাছে রাতে তাপমাত্রা পাওয়ার কারণে ভরা শীতের মৌসুমেও ড্রাগনফল পাওয়া যাচ্ছে। অসময়ে উৎপাদিত ড্রাগন ফল বিক্রি করে ভরা মৌসুমের তুলনায় দ্বিগুণ দামও পাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
চাঁদপাড়া গ্রামের চাষি রাব্বি। গত বছর পাঁচ বিঘা জমিতে ড্রাগন চাষ করেছেন। তিনি বলেন, মূলত ড্রাগনের ফুল যাতে নষ্ট না হয় এবং একই ড্রাগন গাছে দুইবার ফল পাওয়ার জন্য এই লাইটিং পদ্ধতির ব্যবহার করা হচ্ছে। শীত মৌসুমে বিদ্যুতের আলো ব্যবহার করে বেশ লাভবান হচ্ছি।
চৌগাছা উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মোসাব্বির হোসাইন বলেছেন, শীতে দিন ছোট আর রাত বড় হয়। এ সময়ে দিনের তাপমাত্রা অনেকাংশে কম থাকে। আবার রাতে ঠান্ডাও পড়ে। ড্রাগন তার স্বাভাবিক ফুল ও ফল দিতে পারেনা সেই কারনে। তাই ড্রাগন ক্ষেতে বিদ্যুতের আলো ব্যবহার করলে ভলো ফল পাওয়া সম্ভব। চৌগাছার মাটি উর্বর হওয়ায় অল্প খরচে যেকোনো ফল সহজেই চাষ করা যায়।