
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : লেবাননে পেজার বিস্ফোরণে ১২ জনের মৃত্যুর ঘটনার এক দিন পার না হতেই এবার দেশজুড়ে ওয়াকিটকি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে প্রাণ গেছে অন্তত ২০ জনের। বুধবারের বিস্ফোরণে তিন শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। খবর বিবিসির।
এসব ঘটনায় দেশটির সাধারণ মানুষ এখন কাউকে মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে দেখলে আতঙ্কিত হয়ে উঠছে। দক্ষিণ লেবাননের সিদন শহরে একটি মোবাইল ফোনের দোকান থেকে ধোঁয়া উঠতে দেখা গেছে। সেই ধোয়ার কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া না গেলেও ঘণ্টাখানেকের মধ্যে বিভিন্ন স্থান থেকে দফায় দফায় বিস্ফোরণের খবর পাওয়া যায়।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট বলেছেন, যুদ্ধের নতুন পর্ব শুরু করেছে তার দেশ। ইসরায়েলের একটি বিমানঘাঁটি পরিদর্শনের সময় তিনি এ মন্তব্য করেন।
মঙ্গলবার লেবাননে পেজার (যোগাযোগের যন্ত্র) বিস্ফোরণে অন্তত ১২ জন নিহত এবং হাজার হাজার মানুষ আহত হন।
হিজবুল্লাহর কেনা পাঁচ হাজার পেজারের ভেতরে বিস্ফোরক রেখে দিয়েছিল ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ, লেবাননের একটি নিরাপত্তা সূত্র এবং অন্য একটি সূত্রের বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এমন খবর জানিয়েছে। তবে ইসরায়েলি ও মার্কিন সূত্র সংবাদমাধ্যম অ্যাক্সিয়স ও আল-মনিটরকে বলেছে, হিজবুল্লাহ এই পরিকল্পনা সম্পর্কে জেনে গেছে, এমন আশঙ্কার পরপরই পেজারগুলো বিস্ফোরিত হয়।
লেবাননের একটি সূত্র বলেছে, উৎপাদন পর্যায়েই পেজারগুলোয় পরিবর্তন এনেছিল ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ। একই সূত্র বলেছে, পেজারের ভেতরে একটি বোর্ড ঢুকিয়ে দিয়েছিল মোসাদ। এই বোর্ডে বিস্ফোরক উপাদান ছিল। এর একটি সাংকেতিক ভাষা গ্রহণের ক্ষমতা ছিল। যে কোনোভাবেই হোক, এটি শনাক্ত করা খুব কঠিন। সূত্রটি বলেছে, যে তিন হাজার পেজার বিস্ফোরিত হয়েছে, সেগুলোয় বিস্ফোরণের আগে সাংকেতিক বার্তা পাঠানো হয়েছিল। এ কারণে বিস্ফোরকগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে সক্রিয় হয়ে ওঠে। আরেকটি সূত্র রয়টার্সকে বলেছে, নতুন পেজারগুলোর মধ্যে তিন গ্রাম পর্যন্ত বিস্ফোরক লুকানো ছিল। কয়েক মাসেও হিজবুল্লাহ তা শনাক্ত করতে পারেনি।
হিজবুল্লাহর নিজস্ব তদন্তের বরাত দিয়ে আলজাজিরা জানায়, এ ধরনের যন্ত্র সরাসরি লেবাননে আনার অনুমতি ছিল না। ফলে পার্শ্ববর্তী একটি বন্দরে সেগুলো প্রায় তিন মাস পড়ে ছিল। ওই সময় এসব পেজারে বিস্ফোরক বসানোর জন্য যথেষ্ট সময় পেয়েছিল মোসাদ।
হিজবুল্লাহ ও লেবাননের প্রধানমন্ত্রী ওই হামলার জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করেছে। যদিও এ নিয়ে ইসরায়েলের তরফে কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য আসেনি। এ ঘটনায় বদলা নেওয়ার অঙ্গীকার করেছে হিজবুল্লাহ।
প্রধান সম্পাদক: লে. কমান্ডার (অব.) রাশেদ ইকবাল, প্রকাশক আসিফ কবীর কর্তৃক জন্মভূমি প্রকাশনী লি: ১১০/২,সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর বালু সড়ক, খুলনা থেকে মূদ্রিত ও প্রকাশিত