মোঃ মোস্তফা কামাল, লোহাগড়া : এই গরমে নড়াইলের লোহাগড়ার বিভিন্ন হাটবাজারে জমে উঠেছে লোভনীয় ফল তাল শাঁস বেচাকেনা। বিক্রিও হচ্ছে দেদারসে। বিভিন্ন শ্রেনি-পেশার মানুষ মৌসুমী এই ফলটি কেনার জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়ছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জৈষ্ঠ্যের ভ্যাপসা গরমে শরীরের পানি শূন্যতা দূর করতে সহায়ক ভূমিকা রাখে তালের শাঁস। সহজলভ্য ও মুখরোচক হওয়ায় এ সময় বিভিন্ন বয়সী শ্রেনি-পেশার মানুষের পছন্দের ফল তাল শাঁস। এ ফলটির রয়েছে বিভিন্ন রকমের ঔষধি গুণ।
সুত্র মতে, বাংলাদেশের সর্বত্র তালগাছ দেখা যায়। তালগাছ শাখা-প্রশাখা বিহীন একবীজপত্রী উদ্ভিদ। তালগাছ বাড়ির আনাচে-কানাচে, পুকুর পাড়ে, নদীর ধারে, পরিত্যক্ত স্থানে বেশি দেখা যায়। তবে দিনে-দিনে বিলুপ্তির পথে তালগাছ। তালগাছ কিন্তু দীর্ঘজীবী। পৃথিবীর বহু দেশে তালগাছ আছে। এই গাছ কমবেশি শতবছর বাঁচে। তালগাছের প্রতিটি অংশই আমাদের প্রয়োজনীয়। পাতায় ঘরের ছাউনি, জ্বালানি, গরমের বন্ধু হাত পাখা, পাতার ডগার আঁশ দিয়ে মাছ ধরার নানা যন্ত্র তৈরির উপকরণের যোগানদার এই তালগাছ।
মাওলানা ভাসানীর বিখ্যাত টুপি এই তালের আঁশ দিয়েই তৈরি। তালের ডোঙা বর্ষাকালে গ্রামবাংলার অন্যতম বাহন। তালের রস, তালের গুড়, কচি তালের শাঁস, পাকা তাল, তালের পিঠা, পাকা তালের বিচির শাঁস এরসবই অত্যন্ত মজার ও উপাদেয় খাবার। তালের দীর্ঘজীবনের প্রায় পুরোটা সময়ই ফল দেয়।
গোপীনাথপুর এলাকার মনি রিপন বলেন, তাল যখন কাঁচা থাকে, তখনো খাওয়া যায়, তখন বাজারে এটি পানি-তাল হিসেবেই বিক্রি হয়। কেউ বলে তালশাঁস আবার কেউ বলে তালের চোখ, কেউ বলে তালকোরা। যে যেই নামে চিনুক বা জানুক এটি মৌসুমি ফল। মধুমাস জ্যৈষ্ঠতে বিভিন্ন ফলের সঙ্গে এই ফলেরও কদর বাড়ে। খেতে সুস্বাদু ফলটি রাস্তার মোড়ে, ফুটপাতে কিংবা হাট-বাজারে এ সময়টায় দেদার বিক্রি হয়। অনেকে বিক্রির জন্য এই কচি তাল বাজারে তুলেছেন। আর চোখে পড়ে বিক্রেতারা হাঁসুয়া বা ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাল কেটে তালের শাঁস বের করার দৃশ্য।
উপজেলার সদরের লক্ষীপাশার তাল শাঁস বিক্রেতা হোসেন আলী জানান, প্রতিটি তাল ১০ থেকে ১৫ টাকা বেচাকেনা হয়। প্রতিটি তালের পাইকারি দাম ৪ টাকা থেকে ৬ টাকা। সে হিসাবে প্রতি গাছের তাল ১৫শ’ থেকে ২ হাজার টাকা করে বিক্রি হয়।