
মোস্তফা কামাল, লোহাগড়া : স্থাপনা নির্মাণে আইনের বাধ্য-বাধকতা আছে। তবে সকলের জন্য তার প্রয়োগ নেই। ক্ষেত্র বিশেষে আইন শিথিল হয়। বৈষম্যের বদৌলতে বঞ্চিত সাধারণ পৌরবাসী। এসব মানুষেরা কর্তা-ব্যক্তিদের পেছনে ছুটে বেড়ান একটু ছাড় পাওয়ার আশায়। কিন্তু কর্তৃপক্ষের আশ্বাস ছাড়া শেষ পর্যন্ত কিছুই জোটে না তাদের। কাজ করার স্বার্থে অবশেষে অফিসের প্রতি ডেক্সে দিতে হয় নজরানা। অনুসন্ধান আর ভুক্তভোগী সাধারণ মানুষের সাথে কথা বলে জানা গেছে নানা এসব বঞ্চনার কথা।
সম্প্রতি পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের লক্ষীপাশা আদর্শপাড়ায় উপসচিব পরিচয়দানকারী বিটিআরসির সহকারী পরিচালক-সাবরেজিষ্ট্রার দম্পতি পৌরসভা কর্তৃক টেন্ডারের মাধ্যমে নির্মিত প্রায় ১২ বছরের পুরনো হেরিংবোন সড়কের ইট তুলে সীমানা প্রাচীর তৈরী করেন। প্রাচীর নির্মাণের ফলে মুহুর্তেই অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে ওই এলাকার ৫টি পরিবার। অবরুদ্ধ পরিবারের পক্ষ থেকে প্রতিকার চেয়ে লোহাগড়া পৌর মেয়র ও লোহাগড়া থানা অফিসার বরাবর আবেদন করা হয়। এক্ষেত্রে পৌর কর্তৃপক্ষ নিরব দর্শক বনে গেছেন। আবেদন পেলেও সৃষ্ট সমস্যা সমাধানে ডাকা হয়নি অভিযুক্তদের। দেওয়া হয়নি সড়কের ইট তুলে ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহারে কোন কারণ দর্শানো নোটিশ। শুধু তাই নয়, প্রভাবশালী ওই দম্পতি কারাগারের প্রাচীর সম দেয়াল তৈরী করে দুর্বলদের বেঁচে থাকার শেষ নি:শ্বাসের ওপর হেনেছেন তীব্র আঘাত। প্রাচীর নির্মাণেও মানা হয়নি পৌর কোড। এমনকি নেওয়া হয়নি পৌর কর্তৃপক্ষের অনুমতি। আইনরক্ষকদের সাহায্য চাইলেও মেলে একই ধরনের আচরন। থানায় সহযোগিতার জন্য আবেদন নিয়ে গেলে উল্টো হুমকি-ধামকিসহ দেখানো হয় ভয়-ভীতি। উপসচিব পরিচয়দানকারী বিটিআরসির সহকারী পরিচালক মোঃ আলী কাওছার সুমন-মুকসুদপুর উপজেলায় কর্মরত সাবরেজিষ্ট্রার নাজনীন জাহান দম্পতি অবৈধ অর্থের কুপ্রভাবে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করলেও তাদের সমীহ করা হচ্ছে। ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা যান এমপি মাশরাফী বিন মোর্ত্তজার কাছে। দেখা করে আইনের অপব্যবহারকারী ও অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে লিখিত আবেদন দাখিল করেছেন তারা। এমপি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নিশ্চয়তা দিয়েছেন বলে ভুক্তভোগীরা জানান।
এদিকে মঙ্গলবার সকাল ১১টায় লোহাগড়া পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের বাসিন্দারা অবৈধ সীমানা প্রাচীর নির্মাণের প্রতিবাদে উপজেলা গেটের সামনে বিক্ষোভ মিছিল, প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন করেছে। মানববন্ধনে এলাকাবাসী ঐ অবৈধ সীমানা প্রাচীর ভেঙ্গে ফেলার দাবি জানিয়েছেন। মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসক (ডিসি) নড়াইলের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন।