পঞ্জিকা মতে, আগামী ১৪ অক্টোবর মহালয়ার মধ্য দিয়ে শুরু হবে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব দেবী দুর্গার আগমনী বার্তা।
জানা যায়, দুর্গাপূজার দিন গণনা শুরু হয় মহালয়ার দিন থেকেই। তবে আগামী ২০শে অক্টোবর মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে সূচনা এবং ২৪শে অক্টোবর বিজয়াদশমী মধ্য দিয়ে শেষ হবে পাঁচদিন এই শারদীয় দুর্গোৎসব।
এ উৎসবকে কেন্দ্র করে লোহাগড়া উপজেলার প্রতিমা শিল্পীরা তাদের কল্পনায় দেবী দুর্গার অনিন্দ্যসুন্দর রূপ দিতে দিনরাত কাজ করছেন। নিপূন হাতে অপরুপ কারুকার্য করে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত তৈরি করছেন প্রতিমা। পূজার দিন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই যেন ব্যস্ত হয়ে পড়ছে প্রতিমা তৈরীর শিল্পীরা। স্হানীয় ভাবে প্রতিমা তৈরীর শিল্পীদের "পাল" বল সম্বোধন করা হয়।
পৌর শহরের কচুবাড়ীয়া, রামপুর, লক্ষ্মীপাশা, জয়পুর, লোহাগড়া, পোদ্দারপাড়া, চৌধুরীপাড়া, কুন্দশীসহ বিভিন্ন মন্ডব ঘুরে দেখা গেছে , প্রতিমা তৈরির কারিগররা তাদের নিখুঁত হাত দিয়ে প্রতিমার 'দো-মাটির' কাজ করছেন।। মন্দিরগুলোতে দেবী দুর্গার প্রতিমা ছাড়াও কার্তিক, গনেশ, লক্ষ্মী ও সরস্বতীসহ অন্যান্য প্রতিমা তৈরির কাজ করছেন এই শিল্পীরা।
নবগঙ্গা নদী পাড়ের কুন্দশী গ্রামের প্রতিমা তৈরীর শিল্পী পবিত্র পাল বলেন, 'এটা আমার বাপ-দাদার পেশা। শিশুকাল থেকেই প্রতিমা তৈরীর কাজে জড়িত। সারা বছর কাজ না থাকলেও বছরের এই সময় ১১ টি প্রতিমা তৈরীর কাজ করছি । এ জন্য ৪/৫ জন সহযোগী নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে।
ওই শিল্পী আরও বলেন, সময়ের সাথে সাথে প্রতিমার আকার ও ডিজাইনে ভিন্নতা এসেছে।
শহরের কচুয়াবাড়ী দশভুজা সার্বজনীন দুর্গাপূজা কমিটির সভাপতি কাজল পাল বলেন, গত বছরের তুলনায় এবছর বাজেট অনেক বাড়াতে হয়েছে। এ বছর প্রতিমা তৈরির খরচও অনেক বেশি।
তিনি আরো জানান, মন্দির ও দর্শনার্থীদের নিরাপত্তায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সিসি টিভি ক্যামেরার আওতায় রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
লক্ষ্মীপাশা সার্বজনীন পূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সিনিয়র সাংবাদিক রূপক মুখার্জি বলেন, 'নিত্যপন্যের দাম আকাশচুম্বী। প্রতিটা জিনিসের দাম বৃদ্ধি পাওয়াতে আমাদের বাজেট বেড়ে গেছে।
লোহাগড়া উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি প্রবীর কুন্ডু মদন জানান, এ বছর লোহাগড়ায় মোট ১৫১ টি মন্দিরে দূর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে লোহাগড়া পৌরসভায় ৪১টি পূজা মন্ডবে দূর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হবে।
লোহাগড়া পৌরসভা পূজা উদযাপন পর্ষদের সভাপতি কিশোর রায় ও সাধারণ সম্পাদক সুদর্শন কুন্ডু ছোটন জানান, ' সামনে নির্বাচন। তাই পূজা চলাকালে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্হিতি নিয়ে কিছুটা দুশ্চিন্তা আছে। নেতৃবৃন্দ শান্তিপূর্ণ পরিবেশে দূর্গা পূজা উদযাপনের জন্য সকালের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
লোহাগড়া উপজেলা পূজা উদযাপন পর্ষদের সাধারণ সম্পাদক পরীক্ষিত শিকদার বলেন, দেশের বিভিন্ন জেলায় প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটলেও আমাদের এখানে এখনো কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে নাই। আশা করছি শান্তিপূর্ণভাবে শারদীয় দুর্গোৎসব শেষ হবে।
লক্ষীপাশা শ্রী শ্রী সিদ্ধেশ্বরী কালিমাতা মন্দির পরিচালনা পর্ষদের সাধারণ সম্পাদক শিব প্রসাদ ভট্টাচার্য (শিবু) বলেন, প্রতি বছরের ন্যায় এবারও আমরা জাকজমকপূর্ণ ভাবে শারদীয় দূর্গাউৎসব পালন করছি। তবে প্রয়োজনীয় উপকরন ও দ্রব্যসামগ্রীর দাম বাড়ায় আমাদের সবকিছু ম্যানেজ করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
লোহাগড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ নাসির উদ্দীন বলেন, দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে লোহাগড়া থানা পুলিশের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তার ব্যাবস্থা নেওয়া হয়েছে।
প্রধান সম্পাদক: লে. কমান্ডার (অব.) রাশেদ ইকবাল, প্রকাশক আসিফ কবীর কর্তৃক জন্মভূমি প্রকাশনী লি: ১১০/২,সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর বালু সড়ক, খুলনা থেকে মূদ্রিত ও প্রকাশিত