জন্মভূমি ডেস্ক : শিশু আরিয়ান (১৯মাস) তার মাকে না পেয়ে কাঁদছে আর মা মা করছে। শিশুটি জানেনা তার মা তাকে কখনো আদর করবে না। শিশু আরিয়ানের মা মারিয়াকে হত্যা করেছে শ্বশুরবাড়ি লোকেরা এমন অভিযোগ করেছে মারিয়ার পিতা মাতা। মারিয়ার বাড়ি খুলনার রূপসা উপজেলার নৈহাটি ইউনিয়নের জাবুসা এলাকায়। জানা যায়, উপজেলার নৈহাটি ইউনিয়নের জাবুসা দক্ষিণপাড়া এলাকার অহিদ শেখের মেয়ে মারিয়াকে দুই বছর আগে সরিয়া মোতাবেক বিবাহ দেন ফকিরহাট উপজেলার শুভদিয়া ইউনিয়নের দিয়া পাড়া গ্রামের মতিয়ার রহমান এর ছেলে হোসাইন এর সাথে। বিবাহের পর থেকে মারিয়াকে স্বামী শশুর ও শাশুড়ি কারণে অকারণে মারপিট করত এমনকি পিতার বাড়ি থেকে টাকা ও ব্যবহারিক মালামাল আনতে চাপ দিত।
মারিয়া পিতার বাড়িতে এসে পিতা মাতাকে জানায় স্বামী, শশুর ও শাশুড়ি তাকে মারপিট করে টাকা ও মালামাল না দিলে।
মেয়ের সুখের কথা ভেবে গরীব পিতা বিভিন্ন সময় নগত ২লাখ ৫০হাজার টাকা ও টিভি ফ্রীজসহ ব্যবহারিক সকল মালামাল দেয় শশুর বাড়িতে। এত কিছুর পরেও শশুরদের মন ভরাতে পারেনি গৃহবধু মারিয়া। যে কারণে তাকে মারপিট করে শশুর মতিয়ার রহমান।
মারিয়া তার উপর অত্যাচারের ঘটনা মাতা ও পিতাকে জানাত এবং বলত আমাকে ওরা মেরে ফেলবে। গত ৩০ সেপ্টেম্বর রাত আনুমানিক ৪টার দিকে জামাই(হোসাইন) শশুর অহিদকে ফোন দিয়ে বলে আপনি কোথায়, আপনাদের ওখানে কি বৃষ্টি হচ্ছে । যা কোন দিন এই সময় এই ধরনের কথা বলেনি বলে শশুর অহিদ জানায়।
শুক্রবার দুপুরে মারিয়ার পিতা অহিদকে হোসাইনের পিতা মতিয়ার ফোনে জানায় তার মেয়ে গলায় দড়ি দিয়ে মারা গেছে। ঘটনার খবর শুনে অহিদের বাড়ি থেকে লোক হোসাইনদের বাড়িতে যাবার পথে বটিয়াঘাটা উপজেলার সৈয়দ এর দোকানের সামনে আসলে দেখতে পাই ভ্যানে করে নিয়ে আসছে মারিয়াকে। এসময় মারিয়ার মাতা গায়ে হাত দিয়ে দেখে সারা শরীর ঠান্ডা হয়ে গেছে।
পরবর্তীতে মারিয়ার মাতাকে রেখে শশুর বাড়ির লোকেরা খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায় এবং পরে তারা গিয়ে দেখতে পাই হোসাইনের পরিবার পালিয়ে যায় মারিয়াকে রেখে। ময়না তদন্ত শেষে পিতার নিকট লাশ হস্তান্তর করেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
মারিয়া গলায় রশি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে যে কথা শশুর জানায় তার কোন চিহ্ন নাই বলে মারিয়ার পরিবার দাবি করেন। শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলেও তারা জানায়।
এলাকাবাসীর দাবী নিরিহ ও গরীব অসহায় মেয়েটিকে হোসাইন তার পিতা ও মাতা মিলে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করেছে। এব্যাপারে তাদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবী জানায় প্রশাসনের নিকট।
জাবুসা এলাকার বাসিন্দা আব্দুল গফফার জানান, মেয়েটিকে শ্বশুরবাড়ি লোকজন অনেক নির্যাতন করত। আমরা কয়েকবার সালিশ করেছি।
তারপরও মেয়েটিকে ওরা বাঁচতে দেয়নি। গরিব পিতা হয়েও জামাইকে অনেক সময় নগত টাকা এবং ব্যবহারিক মালামাল দিয়েছে।
ইউপি সদস্য বাবর আলী বলেন, মেয়েটাকে নির্যাতন করত। শশুর আগে কয়েকবার তাকে মারপিট করেছে। টাকা পয়সা দাবি করত সামর্থ অনুযায়ী দিয়েছে। এই জঘন্য ঘটনার শাস্তি দাবি করি।