
মধুর দাবি, এ সরকারের আমলে নিরপেক্ষ নির্বাচন হওয়া সম্ভব নয়
হাতপাখায় ভোট দিলে নৌকা আসছে, এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে
শেখ আব্দুল হামিদ : খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনে শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকালের দিকে ভোটকেন্দ্রগুলোতে ভোটার উপস্থিতি কম থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটকেন্দ্রগুলোতে ভোটার উপস্থিতি বাড়তে থাকে। গতকাল সোমবার সকাল ৮টায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ শুরু হয়। বিরতিহীনভাবে এ ভোটগ্রহণ চলে বিকাল ৪টা পর্যন্ত। তবে অনেক কেন্দ্রের ভোটাররা ভোটগ্রহণের দেরির জন্য ইভিএমের যান্ত্রিক ত্রুটিকে দায়ি করেছেন। এদিকে ভোটকেন্দ্রগুলোতে নৌকা প্রতীকের এজেন্ট দেখা গেলেও অধিকাংশ ভোটকেন্দ্রগুলোতে বাকি চার মেয়র প্রার্থীর কোনো এজেন্ট ছিল না।
কেসিসির রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন বলেন, ভোট শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছে, কোথাও ভোট বাতিল বা কোনো কেন্দ্রে ভোট স্থগিত করা হয়নি।
আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী সদ্য সাবেক মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক সকাল সোয়া ৯টায় নগরীর ২২ নম্বর ওয়ার্ডের পাইওনিয়ার বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দেন। পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘নিরপেক্ষ নির্বাচন করার জন্য ইলেকশন কমিশন সকল প্রকার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এজন্য আমি একজন প্রার্থী হিসাবে এটাকে সাধুবাদ জানাই। সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণভাবে ভোট হচ্ছে। আমি মনে করি মানুষ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে খুলনার চলমান উন্নয়ন বাস্তবায়নের জন্য সহযোগিতা করবে। নির্বাচনে ফলাফল যাই হোক না কেন-আমি মেনে নেব।’
তবে তালুকদার আব্দুল খালেকের প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির (জাপা) মেয়র প্রার্থী শফিকুল ইসলাম মধু বেলা ১১টায় নগরীর সোনাডাঙ্গা আবাসিক এলাকার কলেজিয়েট স্কুলকেন্দ্রে ভোট দেন। বুথ থেকে বেরিয়ে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন জায়গায় ইভিএমে ভোট দিতে ভোটাররা সমস্যায় পড়ছে। ইভিএমে সমস্যার কারণে ভোটারদের দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে। আমি বলেছিলাম, এই জাদুর বাক্স না দিতে। কিন্তু সে কথা ইসি শোনেনি। এই জাদুর বাক্সের মধ্যে কারচুপি থাকতে পারে বলে আমার সন্দেহ হচ্ছে। এ সরকারের আমলে নিরপেক্ষ নির্বাচন হওয়া সম্ভব নয়’।
অপরদিকে ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের মেয়র প্রার্থী মাওলানা আব্দুল আউয়াল সকাল ১০টায় নগরীর ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের বানিয়াখামার এলাকার দারুল কোরআন বহুমুখী মাদরাসা কেন্দ্রে ভোট দেন। ভোটদান শেষে তিনি সাংবাদিকদের কাছে বলেন, এখনো ভোটের পরিবেশ ভালো। সব কেন্দ্রে আমাদের পোলিং এজেন্ট আছে। কোনো প্রকার ষড়যন্ত্র না হলে, আশা করছি বিপুল ভোটে জয় লাভ করবো।
আব্দুল আউয়াল আরো বলেন, মানুষের ভোট দিতে সমস্যা হচ্ছে। ভোটাররা সঠিকভাবে ভোট দিতে পারছে না। কোনো কোনো জায়গায় হাতপাখায় ভোট দিলে নৌকা আসছে- এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে। খালিশপুর ১২ নম্বর ওয়ার্ডের একটা কেন্দ্রে হাতপাখায় টিপ দিলে নৌকা আসছে। কিছু কিছু মেশিনে বিভ্রাট দেখা দিচ্ছে। মেশিন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, ঠিকমতো কাজ করছে না’।
গতকাল সোমবার সকাল সাড়ে ৮টায় নগরীর ১২ নম্বর ওয়ার্ডের খালিশপুর রোটারি স্কুলের উত্তর ও দক্ষিণ অংশের নারী ভোট কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, ভোটারদের উপস্থিতি খুবই কম। রোটারি স্কুলের উত্তর ভোট কেন্দ্রের ভোটার সংখ্যা ২ হাজার ১৪৬জন। সকাল ৮টা থেকে ৯টা পর্যন্ত একঘণ্টায় এ কেন্দ্রের সাতটি বুথে মাত্র ৭৪টি ভোট পড়েছে। সকাল সাড়ে ৮টায় বুথ থেকে বেরিয়ে এসে নাসিমা আক্তার নামে একজন ভোটার বলেন, ‘ইভিএমে ভোট দেওয়া খুবই সহজ। ইভিএমে ভোট দিতে পেরে আমি খুবই আনন্দ পেয়েছি’।
সকাল সোয়া ৯টার দিকে বর্তমান কাউন্সিলার ও প্রার্থী মনিরুজ্জামান প্রায় দুই শতাধিক নারীর এক বিশাল বহর নিয়ে রোটারি স্কুলের উত্তর ভোটকেন্দ্রে আসেন। তার বিরুদ্ধে অপর দুই কাউন্সিলর প্রার্থী রবিউল গাজী উজ্জ্বল ও মাস্টার শফিকুল আলম নির্বাচনি আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগ করেন। তবে মনিরুজ্জামান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, একসঙ্গে এত পরিমাণ ভোটার ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত করার জন্য ইসির আমাকে ধন্যবাদ জানানো উচিত।
বেলা ১২টার সময় খালিশপুর সরকারি হাজি মুহাম্মদ মুহসিন কলেজের একাডেমিক ভবন কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, এখানেও ভোটার উপস্থিতি কম। প্রিসাইডিং অফিসার শেখ আওসাফুর রহমান জানান, এ কেন্দ্রের মোট ভোটার সংখ্যা ১ হাজার ২২৫জন। বেলা ১২টা পর্যন্ত ভোট পড়েছে ৫৯৫টি। ভোট পড়ার হার ২৬দশমিক ৭০শতাংশ।
দুপুর ২টার সময় ১০২ নম্বর রায়ের মহল মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, ভোটার উপস্থিতি তেমন নেই। কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার পুষ্পেন্দু দাশ বলেন, এ কেন্দ্রের ১ হাজার ৬১৯ ভোটের মধ্যে ৮১১ ভোট পড়েছে। যার শতকরা হার ৫০দশমিক ০৯ শতাংশ। তিনি বলেন, আশা করছি, বিকাল ৪টা পর্যন্ত এ কেন্দ্রে ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ ভোট পড়তে পারে।
খুলনার গুরুত্বপূর্ণ জেলা স্কুলের একাডেমিক ভবন-১ কেন্দ্রেও ভোটারদের উপস্থিতির হার ছিল কম। দুপুর ২টা পর্যন্ত এ কেন্দ্রের ১ হাজার ৪৬৫ ভোটের মধ্যে ভোট পড়েছে ৬৮১টি। এ কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার রাশেদুল বশির খান বলেন, দুপুর ২টা পর্যন্ত এ কেন্দ্রে ৪৬ দশমিক ৫৫ শতাংশ ভোট পড়েছে। তবে অনেকটাই বিপরীত চিত্র ছিল বয়রা হাজি ফয়েজউদ্দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১২৩ নম্বর কেন্দ্রে। এ কেন্দ্রে সকাল ৮টা থেকেই নারী ভোটারদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। পাশের হাজি ফয়েজউদ্দিন বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রের চিত্রও ছিল এক রকম।
॥ যেসব কেন্দ্রে ভোট দিলেন কেসিসির ৫ মেয়র প্রার্থী ॥
খুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি) পাঁচ মেয়র প্রার্থী নগরীর পাঁচটি পৃথক কেন্দ্রে ভোট দিয়েছেন। আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক সকাল ৯টা ২০ মিনিটে নগরীর ২২ নম্বর ওয়ার্ডের সেন্ট্রাল রোডস্থ পাইওনিয়ার বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দেন। জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী শফিকুল ইসলাম মধু বেলা ১১টায় নগরীর সোনাডাঙ্গা আবাসিক এলাকার কলেজিয়েট স্কুলকেন্দ্রে ভোট দেন। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মেয়র প্রার্থী মাওলানা আব্দুল আউয়াল সকাল ১০টায় বানিয়াখামার দারুল কোরআন হাফিজিয়া মাদরাসা কেন্দ্রে ভোট প্রয়োগ করেন। জাকের পার্টির মেয়র প্রার্থী এস এম সাব্বির হোসেন বেলা ১১টায় মতিয়াখালি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ও স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী এস এম শফিকুর রহমান দুপুর দেড়টায় আলিয়া মাদ্রাসা কেন্দ্রে ভোট দেন।
॥ নৌকার প্রার্থীই যোগ্য ॥
কেসিসির ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের বসুপাড়া লেনের ইসলামাবাদ কলেজিয়েট স্কুলে ১৫৮ নম্বর কেন্দ্রে ভোট দিতে এসেছেন ৯০ বছরের বৃদ্ধা মীরা রানী দে। একা হাঁটতে পারেন না। এক নিকট আত্মীয়ের সাহায্য নিয়ে ভোট দিতে এসেছেন। তার পছন্দের প্রার্থী কে, কাকে ভোট দিলেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, তার চোখে নৌকার প্রার্থীই যোগ্য। নৌকা ছাড়া তাই কাউকে তিনি ভোট দিতে চান না। নির্বাচনে নৌকা জিতবে বলে তিনি আশা করেন।
॥ ভোট দিতে না পেরে ফিরে গেলেন জাহানারা বেগম ॥
দুপুর আড়াইটার দিকে নগরীর মুন্সিপাড়া তৃতীয় গলির বাসিন্দা ৭৮ বছর বয়সের বৃদ্ধা জাহানারা বেগম ছেলে কামরুল ইসলামকে নিয়ে ১৭৯ খুলনা জিলা স্কুল কেন্দ্রে ভোট দিতে এসেছিলেন। কিন্তু ইভিএমের সঙ্গে তার হাতের আঙ্গুলের ছাপ না মেলায় তিনি ভোট দিতে পারেননি।
জাহানারা বেগম বলেন, এই বৃদ্ধ বয়সে ছেলেকে নিয়ে ভোট দিতে এসেছিলাম। ভেবেছিলাম ইভিএম মেশিনে ভোট দেব। কিন্তু আঙ্গুলের ছাপ না মেলার কারণে ভোট দিতে পারলাম না। জানি না, ভবিষ্যতে আর ভোট দিতে আসতে পারব কিনা।
এ কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার রাশেদুল বশির খান বলেন, আঙ্গুলের ছাপ না মেলার কারণে জাহানারা বেগম ভোট দিতে পারেননি। তাকে বলা হয়েছে, দুপুর ৩টার পরে আসতে।
॥ নতুন ভোটাররা খুশি ॥
অনেক তরুণ-তরুণী এবার ভোটার হওয়ার পর প্রথমবার ভোট দিতে পেরেছেন। আবার প্রথমবারেই ইভিএমে ভোট দেওয়া তাদের। স্বাভাবিকভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পেরে তারা অনেক খুশি। এবারে খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৪২ হাজার ৪৩৫ জন নতুন ভোটার ছিলেন।
নগরীর ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের খুলনা কলেজিয়েট স্কুল কেন্দ্রে ভোট দেন নতুন ভোটার আব্দুল কাদের। ভোট দিতে পেরে তিনি ছিলেন বেশ উচ্ছ্বসিত। সাব্বির নামের আর এক তরুণ বলেন, বন্ধুরা মিলে ইভিএমে ভোট দিতে এসেছি। ভোট দিতে পেরে খুব ভালো লাগছে। ইভিএমে যে এত সহজে ভোট দেওয়া যায় তা জানতাম না।
নগরীর ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের খুলনা আলীয়া মাদ্রাসা ভোট দিতে আসেন তরুণী নুসরাত রায়হানা। প্রথমবারে পছন্দমত ভোট দিতে পেরে বেশ ভালা লাগছে বলে জানান তিনি।
॥ ভোট দিতে পেরে খুশি মনিরুজ্জামান ॥
জন্ম থেকেই চলৎশক্তিহীন মনিরুজ্জামান (৪৫)। হাঁটু গেড়ে তাকে চলাফেরা করতে হয়। ফলে বাড়ি থেকে তার খুব একটা বের হওয়া হয় না। প্রায় সাড়ে ৩ফুট উচ্চতার মনিরুজ্জামান বেলা সাড়ে ১১টার দিকে স্ত্রী মিনারা জামানকে সঙ্গে নিয়ে তিনি খালিশপুর সরকারি হাজি মুহসিন কলেজের আবু সুফিয়ান কেন্দ্রে ভোট দিতে এসেছিলেন।
তিনি বলেন, ভাবলাম প্রথমবার ইভিএমে ভোট দিব। তাই কষ্ট হলেও চলে আসলাম ভোট কেন্দ্রে। ভোট দিতে পেরে খুব খুশি লাগছে। তার হাসিমুখ দেখে স্ত্রী মিনারা জামানও একটু হাসলেন।
॥ ৪ জনকে দণ্ড ॥
খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচন চলাকালে এক ওয়ার্ডের ভোটার অন্য ওয়ার্ডে গিয়ে বিশৃঙ্খলা করার অভিযোগে চারজনকে দণ্ড দিয়েছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। বেলা ১২টার দিকে ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের ন্যাশনাল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে। ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার আকরাম হোসেনের নিকট থেকে ৫০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। এছাড়া তাওহীদুল ইসলাম, আব্দুস সামাদ ও সিরাজুল ইসলামকে অন্য কেন্দ্রে প্রবেশ না করার শর্তে মুসলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।
১৮ নম্বর ওয়ার্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আসাদুজ্জামান বলেন, অভিযুক্ত ব্যক্তিরা ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার। তারা ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে প্রবেশ করে ভোট কেন্দ্রের সামনে বিশৃঙ্খলা করছিলেন। তাদের নিকট থেকে জরিমানা ও মুসলেকা আদায় করা হয়।
॥ নিরিবিলি ভোট কেন্দ্র ॥
ঘড়ির কাঁটায় তখন সকাল সাড়ে নয়টা। নিরব নিরিবিলি পরিবেশ, কোনো কোলাহল নেই। গেটে আছেন নিরাপত্তা রক্ষীর কয়েকজন। ভোটার তেমন একটা চোখে পড়েনি। ২৪নম্বর ওয়ার্ডের সোনাপোতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৫/৬ নম্বর ভোটকেন্দ্রের দৃশ্য এটি। এখানে ভোটার আছেন ১ হাজার ২৪৮ জন। ভোটার উপস্থিতি এত কম হওয়ার কারণ কি- এমন প্রশ্নের জবাবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একজন সদস্য বললেন, আমাদের দায়িত্ব নিরাপত্তার দিকটা দেখা। কে ভোট দেবেন, না দেবেন সেটা তাদের বিষয়। আমরা চাই ভোটাররা নিরাপদে ভোট দিন। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে আমরা সেটার খেয়াল রাখছি।