
মোংলা প্রতিনিধি : দেশে ঝরে পড়া গড় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর হার ১৭ দশমিক নয় শতাংশ। তার মধ্যে বাগেরহাটের মোংলায় এই হার ১৮ দশমিক চার শতাংশ। এই অবস্থায় সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের উজ্জ্বল ও সুন্দর ভবিষ্যত গড়তে মোংলায় ব্যতিক্রম শিক্ষা কার্যক্রম চালু হয়েছে। উপানুষ্ঠানিক প্রাথমিক শিক্ষার সেকেন্ড চান্স কর্মসূচির আওতায় ‘শিখন কেন্দ্র’ নামে ৩৫টি স্কুল খোলা হয়েছে এখানে। উপজেলার একটি পৌরসভায় ও ছয়টি ইউনিয়নে এই স্কুল প্রতিষ্ঠান করে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা নীড় সেবাসংস্থা। এসব স্কুলে মোট ১০৫০ জন কোমলমতি বঞ্চিত শিক্ষার্থীরা নিয়মিত ক্লাস করছে।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, সরকারের রুপকল্প ২০২১ ও জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা মানসম্মত সার্বজনীন প্রাথমিক শিক্ষা (এসডিজি-২০৩০) অর্জনের মাধ্যমে টেকসই উন্নয়নের ভিত্তি শক্তিশালী করার মানসে একযোগে কাজ চলছে।
এদিকে এই কাজের অংশীদার হয়ে তা বাস্তবায়নে শিশুর হাসি, শিশুর খুশি প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে শিক্ষার আলো থেকে ঝরে পড়া শিশুদের জন্য নতুন কার্যক্রম চালু করেছে বেসরকারি একটি উন্নয়ন সংস্থা। উপানুষ্ঠানিক প্রাথমিক শিক্ষার সেকেন্ড চান্স কর্মসূচীর আওতায় নীড় সেবাসংস্থা নামে উন্নয়ন সংস্থাটি মোংলা উপজেলায় ৩৫টি স্কুলে খুলেছে। এর মধ্যে পৌরসভায় ১১, উপজেলার চাঁদপাই ইউনিয়নে ১১, চিলা ইউনিয়নে ৭ ও সুন্দরবন ইউনিয়নে ৬টি স্কুল চালু রয়েছে।
নীড় সেবা সংস্থার মোংলা উপজেলার প্রোগ্রাম ম্যানেজার লিপি ধূনী সোমবার বেলা ১১টায় মোংলা প্রেসক্লাব হলরুমে আউট অব স্কুল চিলড্রেন এডুকেশন প্রোগাম বাস্তবায়নের ইতিবৃত্ত ও বর্তমান অবস্থা উপস্থাপন বিষয়ক সভায় সাংবাদিকদের জানান, নানা কারণে মোংলা উপজেলায় শিক্ষার জ্ঞান থেকে অনেক শিশু শিক্ষার্থী ছিটকে পড়ে। এসব শিশুদের শিক্ষার মূল ধারায় নিয়ে আসতে ২০২২ সাল থেকে কাজ করছেন। ওই বছরের ডিসেম্বর থেকে এসব শিশুদের জন্য ৩৫টি স্কুল খুলে তাদের জীবনের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গড়তে কার্যক্রম শুরু করা হয়। এই স্কুলে ছাত্র ছাত্রী সংখ্যা এখন ১০৫০। তাদেরকে বিনামূল্যে প্রথম শ্রেনি থেকে পঞ্চম শ্রেনি পর্যন্ত পড়ানো হয়।
মোংলা উপজেলার ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ শাহীনুর রহমান বলেন, উপানুষ্ঠানিক প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রমের মাধ্যমে বিদ্যালয় বহির্ভূত (ঝরে পড়া এবং ভর্তি না হওয়া) ৮ থেকে ১৪ বছর বয়সী শিশুদেরকে প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণের জন্য দ্বিতীয়বার সুযোগ দেয়া এবং আনুষ্ঠানিক শিক্ষার মূলধরায় নিয়ে আসায় নীড় সেবাসংস্থা নিসন্দেহে একটি প্রশাংসামূলক কাজ করে চলছেন। তাদের এই ব্যতিক্রম কার্যক্রম অব্যাহত থাকলে সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা শতভাগ মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করতে পারবে বলেও জানান তিনি।