জন্মভূমি রিপোর্ট
‘শেখ রাসেল নির্মলতার প্রতীক, দুরন্ত প্রাণবন্ত নির্ভীক’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে খুলনায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেল এর জন্মদিন ও শেখ রাসেল দিবস-২০২২ যথাযোগ্য মর্যাদায় উদ্যাপন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে মঙ্গলবার সকালে সার্কিট হাউজ মাঠে স্থাপিত শেখ রাসেলের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন জেলা ও মহানগর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড, বিভাগীয় কমিশনার মো: জিল্লুর রহমান চৌধুরী, খুলনা সিটি কর্পোরেশন, কেএমপি, রেঞ্জ ডিআইজি’র দপ্তর, জেলা প্রশাসক মো: মনিরুজ্জামান তালুকদার, সরকারি-বেসরকারি দপ্তর, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। এর আগে নগরীর শহিদ হাদিস পার্ক থেকে সার্কিট হাউজ ময়দান পর্যন্ত বর্ণাঢ্য র্যালি বের করা হয়।
জেলা শিল্পকলা একাডেমি অডিটোরিয়ামে রাজধানী ঢাকা থেকে কেন্দ্রীয়ভাবে আয়োজিত অনুষ্ঠানের উদ্বোধন ও শেখ রাসেল পদক প্রদান অনুষ্ঠানটি সরাসরি স¤প্রচার করা হয়। একই স্থানে আলোচনা সভা, কেক কাটা, শিশুদের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়।
বিভাগীয় কমিশনার মো: জিল্লুর রহমান চৌধুরী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ত্যাগ-তিতিক্ষা ও সাহসী নেতৃত্বে এ দেশ স্বাধীন হয়েছে। শেখ রাসেল বঙ্গবন্ধুর সন্তান। তিনি বেঁচে থাকলে দেশের জন্য অবদান রাখতে পারতেন। কিন্তু স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি ও চক্রান্তকারীদের ঘৃণ্য চক্রান্তে শেখ রাসেল ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তাঁর পরিবারের সদস্যদের সাথে নির্মমভাবে নিহত হন। অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে বিভাগীয় কমিশনার বলেন, সন্তানকে স্বাধীনতার সঠিক ইতিহাস সম্পর্কে জানানো পিতামাতার দায়িত্ব। শিশুদের বিকৃত ইতিহাস শেখাবেন না। বাংলাদেশের স্বাধীনতার মহানায়ক একজন, তিনি জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান। শিশুদের জানাতে হবে কেন আমরা পরাধীন ছিলাম, কিভাবে আমরা স্বাধীন হলাম এবং কিভাবে বাঙালি জাতি পাকিস্তানি শাসকদের হাতে বঞ্চনার শিকার হয়েছে। বঙ্গবন্ধু দেশকে স্বাধীন করেছেন বলেই এদেশের শিশুরা আজ নিশ্চিন্তে খেলতে পারছে, হাসতে পারছে ও পড়াশুনা করতে পারছে।
বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার সরদার রকিবুল ইসলাম, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুব হাসান, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম ডি এ বাবুল রানা, প্রেসক্লাবের সভাপতি এসএম নজরুল ইসলাম, এড. মো: সাইফুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: আলমগীর কবির ও সরদার মাহাবুবার রহমান। জেলা প্রশাসক মো: মনিরুজ্জামান তালুকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত জানান অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) মো: শহিদুল ইসলাম।
এছাড়া সকালে সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে নগর ভবন চত্বরে শেখ রাসেলের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন, আলোচনা সভা, কেক কাটা এবং চিত্রাংকন ও রচনা প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান অতিথি ছিলেন ভারপ্রাপ্ত মেয়র মো: আমিনুল ইসলাম মুন্না।
দিবসটি উপলক্ষে ‘একটি স্বপ্নের নাম শেখ রাসেল’ শীর্ষক প্রামাণ্যচিত্রটি শহিদ হদিস পার্ক, রেলওয়ে স্টেশনসহ জেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বড় পর্দায় প্রদর্শন করা হয়। সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যথাযোগ্য মর্যাদায় শেখ রাসেল দিবস উদযাপন করে। জেলা ও মহানগরীর মসজিদসমূহে শেখ রাসেল ও বঙ্গবন্ধু পরিবারের শহিদ সদস্যদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত, দোয়া মাহফিল এবং মন্দির, গীর্জা, প্যাগোডা ও অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে বিশেষ প্রার্থনা করা হয়।
দুপুরে সরকারি শিশু সনদ, এতিমখানা ও শিশু পরিবারসমূহে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন এবং শিশুদের নিয়ে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বিভাগীয় জাদুঘর ও প্রতœতত্ত¡ স্থানে শিশু-কিশোরদের জন্য বিনা টিকিটে পরিদর্শনের আয়োজন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষ্যে স্থানীয় সংবাদপত্রগুলো বিশেষ ক্রোড়পত্র, নিবন্ধ ও প্রবন্ধ প্রকাশ করে।
প্রধান সম্পাদক: লে. কমান্ডার (অব.) রাশেদ ইকবাল, প্রকাশক আসিফ কবীর কর্তৃক জন্মভূমি প্রকাশনী লি: ১১০/২,সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর বালু সড়ক, খুলনা থেকে মূদ্রিত ও প্রকাশিত