কুষ্টিয়া প্রতিনিধি : শুক্রবার মধ্যরাতে মাঘ মাসের অমাবস্যায় কুষ্টিয়ার খোকসা কালীর বার্ষিক পূজার মধ্যদিয়ে শুরু হয়েছে ছয়’শ বছরের ঐতিহ্যবাহী কালী পূজার মেলা । এ বছরও বার্ষিক পূজা ও মেলাকে ঘিরে কয়েক লাখ দেশ-বিদেশি পূর্ন্যাথী সমাবেত হওয়ার আশা করছে আয়োজকরা। বার্ষিক এ পূজাকে ঘিরে কালীপূজা মন্দির মাঠে শুরু হওয়া গ্রামীন মেলা, ঐতিহাসিক লায়ন সার্কেস, যা চলবে ১৫দিন।
প্রথা অনুসারে পৌস মাসের শেষ অমাবস্যা তিথিতে কদম গাছের গুড়ির তৈরী কাঠামের উপর সাড়ে সাত হাত লম্বা দীর্ঘাকায়ী মাটির কালী প্রতিমা তৈরী কাজ আনুষ্ঠানিক ভাবে শুরু করা হয়। মাটি ও খড় দিয়ে প্রতিমা তৈরীর কাজ শেষে শুক্রবার মধ্য রাতে বার্ষিক পূজা অনুষ্ঠিত হয়।
মাঘ মাসের অমাবস্যা তিথিতে নাটর ও যশরের রাজা জমিদারী আমলের আদলে ক্রোধের প্রতিক মহিষ ও কামের প্রতিক পাঠা বলীর মধ্যদিয়ে বার্ষিক এ পূজা শুরু হয়। মানসার কয়েকশ পাঠা বলি ও ভোগ আরতির পর আজ শনিবার গোধূলীতে গড়াই নদীতে প্রতিমা বির্সজন দেওয়া হবে।
তবে বার্ষিক এ পূজার আনুষ্ঠানিকতা চলবে সপ্তমী তিথি পর্যন্ত। পূজার আনুষ্ঠানিকতা শেষ হলেও বার্ষিক এ পূজাকে ঘিরে কালীবাড়ীর মাঠে মেলা চলবে ১৫ দিন। এ উৎসব উপলক্ষে ইতোমধ্যে উপজেলা সদরসহ প্রত্যন্ত এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকের বাড়িতে দেশ-বিদেশ থেকে পূর্ণ্যার্থী, দর্শনার্থী ও অতিথিরা এসেছে।
আয়োজকরা বলছে, বার্ষিক এ পূজার সপ্তমী তিথি পর্যন্ত দেশ-বিদেশের কয়েক লাখ পূর্ন্যার্থী সমাবেত হবে। পূজা উপলক্ষে কালীবাড়ির বিশাল মাঠে কাঠ, বেত, লোহা ও মনোহরি পন্যের প্রায় ৫ শতাধিক দোকানী পসরা সাজিয়ে বসেছে। মূল মন্দির ঘিরে সাঁখা সিদুর ও বিভিন্ন পূজার তৈজস পত্রের শতাধিক দোকানি বসেছে। অর্থের দিক দিয়ে প্রায় কোটি টাকার হাত বদল হবে এ বেলায় বলে পূর্ণচ্ছেদে জানিয়েছেন।
খোকসার এ কালীর পূজাটি উপমহাদেশের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পুরাতন পূজা বলে দাবি করেন কালীপূজা মন্দির কমিটির সভাপতি অধ্যাপক সুপ্রভাত কুমার মালাকার। তিনি বলেন, বংশ পরমপরায় বর্তমান পূজারী অনিমেষ কুমার চক্রবর্তী এ পূজার নবদশ পূজারী। প্রায় ৬শ বছর আগে গড়াই নদী তীরে কালীপূজার সুচনা হয়েছিল। কালীপূজা ও গ্রামীন মেলা এ জনপদের সব ধর্মের মানুষের মধ্যে সম্প্রীতিরে মেলবন্ধন সৃষ্টি করেছে। মেলার দর্শক, পূন্যার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়ে খোকসা থানা অফিসার ইনচার্জ আননূর যায়েদ বলেন, মেলাঙ্গন ও তার পার্শবর্তী এলাকায় নিশছিদ্র নিরাপত্তার জন্য খোকসা থানা পুলিশ একটি দল সার্বক্ষনিক কাজ করবে। আশা করছি মেলার আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভাল থাকবে। পোশাক ছাড়াও সাদা পোশাকও প্রায়ই অদ্ধসত তাদের পুলিশ মোতায়েন থাকবে মেলার মাঠ এবং তার আশপাশের এলাকায়। এছাড়াও মেলার মাঠে থাকবে ওয়াস টাওয়ার, সিসি ক্যামেরা।