জন্মভূমি ডেস্ক
বরগুনায় শোক দিবসের অনুষ্ঠান চলাকালে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বরগুনায় ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে ৬০ জন আহত হয়েছেন। দুজনকে আটক করেছে পুলিশ।পরে জেলা শিল্পকলা ও লঞ্চঘাট এলাকায় অভিযান চালিয়ে দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করেছে।
সোমবার বেলা ১১টার দিকে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে শোক দিবসের আলোচনা সভায় উপস্থিত দুই গ্রুপের নেতাকর্মীদের মাঝে বাগবিতণ্ডার একপর্যায়ে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
একপর্যায়ে পুলিশের গাড়িও ভাঙচুর করে ছাত্রলীগের কর্মীরা। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার বেলা ১১টার দিকে শোক দিবসের আলোচনা সভায় যোগ দেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বরগুনা ১ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য অ্যাড. ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু ও বরগুনা জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমানসহ জেলা পর্যায়ের ঊর্ধ্বতন নেতারা। এ সময় জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল কবীর রেজা, সাধারণ সম্পাদক তৌশিকুর রহমান ইমরান, জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি সবুজ মোল্লা এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সদস্য রিশাত হাসান প্রিন্স ও তাদের কর্মী ও সমর্থকরা জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে এলে দুপক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা-ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে সূত্রপাত হলেও তা মুহূর্তেই জেলা শহর উত্তপ্ত হয়ে পড়ে। ছাত্রলীগের একটা অংশ রামদাছেনাসহ বরগুনা শহরের লঞ্চঘাট চত্বর দখলে নেয়।
এর আগে ২৪ জুলাই জেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হলে নতুন কমিটি ও পদবঞ্চিত নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মাঝে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে আসছিল।
বরগুনা সদর থানার এক ঝাঁক পুলিশ লঞ্চঘাটে হানা দিয়ে আগত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদেরকে তাড়িয়ে দেয় এবং বেশ কিছু রামদা ছেনাসহ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করে। শহরে পুলিশি টহল ব্যবস্থা জোরদার রয়েছে।
বরগুনা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এস এম তারেক রহমান জানান, ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের ওপর হামলার সময় পুলিশ লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় ২ জনকে আটক করেছে পুলিশ। উদ্ধার করেছে বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র।
বরগুনা জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসাইন বলেন, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল কবির রেজাসহ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বঙ্গবন্ধু স্মৃতি কমপ্লেক্সে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়ে ফেরার পথে ছাত্রলীগের সভাপতি পদবঞ্চিত কয়েকটি গ্রুপ এক হয়ে হামলা চালায় সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের ওপর।
এ সময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনতে গেলে তাদের একটি গাড়িও ভাঙচুর করে তারা। পরে পুলিশ লাঠিচার্জ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পদবঞ্চিতদের হামলায় ছাত্রলীগের প্রায় ৬০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
প্রসঙ্গত, আট বছর পর গত ১৭ জুলাই বরগুনা শহরের সিরাজ উদ্দীন টাউন হল মিলনায়তনে বরগুনা জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এরপর ২৪ জুলাই রাতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ জেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটির অনুমোদন দেয়। সদ্য ঘোষিত ৩৩ সদস্যের কমিটি প্রত্যাখ্যান করে বরগুনা শহরে পদবঞ্চিত প্রার্থীরা বিক্ষোভ করে আসছেন।