সিরাজুল ইসলাম ইসলাম, শ্যামনগর : সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগরে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক জাহিদুর রহমানের বিরুদ্ধে খাদ্য বান্ধব ও এম এস কর্মসূচির ডিলারদের কাছ থেকে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায় শ্যামনগর উপজেলায় ১২ টি ইউনিয়নে ৬২ জন খাদ্য বান্ধব ডিলার রয়েছে আর শ্যামনগর পৌরসভায় রয়েছেন ৬ জন ওএম এস ডিলার।
প্রতি খাদ্য বান্ধব ডিলারদের ডিওপ্রদানের সময় শ্যামনগর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক জাহিদুর রহমান প্রতি ডিলিয়ারদের কাছ থেকে এক হাজার তিনশত করে টাকা নিচ্ছে ঘুষ। প্রত্যক্ষদর্শী এই প্রতিবেদকও নিজে কারণেই প্রতিবেদক খাদ্য বান্ধব ছিলেন উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের অফিসের এই ঘুষ বাণিজ্য দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে বন্ধ করতে পারছে না কোন কায়দায়। আর ও এম এস ডিলারদের কাছ থেকে প্রতি মেট্রিক টন আটায় টনপতি পাঁচশত টাকা করে ঘুষ নিচ্ছে বলে চঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। শ্যামনগর উপজেলার খাদ্য বান্ধবের ডিলার নজরুল ইসলাম, জুলফিকার, আব্দুস সাত্তার সহ ৪৩জন খাদ্য বান্ধব ডিলারের বক্তব্যে সংগ্রহ করে এই তথ্য উঠে এসেছে। উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক শুধু এখন নয় যতদিন শ্যামনগরে চাকরি করছেন ততদিন ধরে খাদ্য বান্ধব ডিলারদের কাছ থেকে এই ঘুষ বাণিজ্য করছেন। খাদ্য বান্ধবের ডিলার গন অভিযোগ করে বলেন প্রতি মাসে ডিওগ্রহণ করার সময় আগে টাকা দিতে হয় তারপরে ডিওর
পাতা আমাদের হাতে ধরিয়ে দেয় টাকা না দিলে মালামাল বিতরণের সময় মিথ্যা অভিযোগ খাড়া করে ডিলারশিপ বাতিল সহ নানান ভয়ভুতি দেখান শ্যামনগর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক জাহিদুর রহমান। শ্যামনগরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রনী খাতুন যোগদানের পথ থেকে সকল দুর্নীতি শূন্য কোঠায়নিয়ে আসলেও শ্যামনগর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের অফিসের দুর্নীতি চলমান রয়েছে। অনেক ডিলাররা অভিযোগ করে বলেন এই প্রতিবেদককে প্রতিবাদ করে কিছু করতে পারছিনা কারন টাকা না দিলে চাউল বিতরণের সময় শ্যামনগর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক জাহিদুর রহমান ঘটনাস্থলে হাজির হয়ে নানা অভিযোগ দেখিয়ে আরও বেশি অংকের টাকা গুনতে হয় তখন। সে কারণে আমরা পরিস্থিতির শিকার হয়ে ডিওগ্রহণ করার সময় শ্যামনগর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক জাহিদুর রহমানকে এই এক হাজার তিনশত টাকা গুনে দিয়ে আসছে হচ্ছে। এদিকে শ্যামনগর পৌরসভার ৬জন ও এম এস ডিলার অভিযোগ করে বলেছেন প্রতি মেট্রিক টন আটার ডিওএ পাঁচশত টাকা করে শ্যামনগর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে অথবা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক জাহিদুর রহমানের হাতে দিতে হয়, তা না দিলে ডি ও দেয় না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছু ক শ্যামনগর সদরের একজন ডিলার এই প্রতিবেদককে জানান বর্তমান সরকারের আমলে সব দপ্তরে ঘুষ বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণে এসেছে কিন্তু শ্যামনগরের উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় এখনো চলছে রমরমা ঘুষ বাণিজ্যর ব্যবসা। তিনি আরো বলেন খাদ্য বান্ধব ডিলার দের গলায় পা দিয়ে শ্যামনগর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক জাহিদুর রহমান এই ঘুষের টাকা আদায় করছে।
ও এম এস ডিলার গণ জানান প্রতিদিন সাতক্ষীরা সদর থেকে আটা শ্যামনগর সদর পর্যন্ত পৌঁছে দিয়ে যায় তবুও প্রতিটন আটার ডিওতে পাঁচশত টাকা করে গুনতে হচ্ছে না দিলে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক জাহিদুর রহমান বিভিন্ন তালবাহানা করছেন ডিও দিতে বিলম্ব করেন এবং ডিলার বাতিলের হুমকি দেখান। বাধ্য হয়ে পরিস্থিতির টিকার হয়ে টাকা দিতে হচ্ছে। কিন্তু আমরা যে এক টুকরো আটা বা চাইল কম দিয়ে এই টাকাগুলো ছেপ করব সে সুযোগটুকু আমাদের দেওয়া হয় না আমাদের কাছ থেকে কড়াই গন্ডায় জনগণ ও উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক জাহিদুর রহমান বুঝে নিচ্ছেন।
এই প্রতিবেদন লেখার সময় খবর পাওয়া গেছে সেপ্টেম্বর মাসের খাদ্য বান্ধব ও ও এম এস এর ডিও প্রদান করা হচ্ছে কিন্তু টাকা ছাড়া কোন ডিলারকে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ডিও দিচ্ছে না। এ ব্যাপারে শ্যামনগর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক জাহিদুর রহমানের সাথে এই প্রতিবেদকের কথা হলে তিনি বলেন টাকা নিয়ে আমরা খাই না আমাদের বিভিন্ন অফিসার অফিস আছে সেগুলোকে ম্যানেজ করতে হয় আপনারা জানেন না লেখালেখি করে কি করবেন ব্রিটিশের আমল থেকে এই কার্যক্রম চলে আসছে আমি টাকা না নিলে তাহলে চালাবো কি করে ওই টাকাগুলো আমাকে দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ম্যানেজ করতে হয় সেগুলো কি আমি বাড়ি থেকে জমি বিক্রি করে নিয়ে আসবো। তিনি আরো বলেন সাংবাদিক ভাই আপনিও তো খাদ্য বান্ধবের ডিলার ছিলেন তখনও তো টাকা দিতেন এখন ডিলার নেই বলে এইসব করছেন। যদি আপনাকে ডিলার শিপদিতে পারতাম তাহলে আপনি পত্র-পত্রিকায় লেখালেখি করতেন না। অবশেষে বলেন আপনার যা খুশি আপনি লেখেন আমার কিছু যায় আসে না আপনাদের মত সাংবাদিক কত কিছুই লিখল কিছুই হয় না অফিসাররা জানে যে টাকা ছাড়া খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় কাজ হয় না। তাছাড়া আরো বলেন সাংবাদিকতা করবেন আপনার কায়দায় করবেন আমার কাছে কোনদিন ফোন করবেন না ফোন করার চেষ্টাও করবেন না আপনাদের হাতে কলম আছে আপনারা কাজ করেন আমার হাতে আইন আছে আমি আইনের কাজ করব ।ডিলার দের কাছ থেকে কেন টাকা নিচ্ছি এ জবাব আমি আমার কর্তৃপক্ষকে দেবো। এদিকে শ্যামনাগর উপজেলা নকিপুর খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামান হোসেন প্রতিটি খাদ্য বান্ধব দিলের কাছ থেকে ২০০০ টাকা করে ঘুষ গ্রহণ করছে আর তার অফিসের দারোয়ান না নিচ্ছে পাঁচশত টাকা। এ ব্যাপারে তার সাথে কথা হলে তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন আমাকে আরসি ফুট পর্যন্ত ম্যানেজ করতে হয় টাকা যদি না নেই তাহলে এই টাকাগুলো আমি পাব কোথায় পরিস্থিতির শিকার হয়ে খাদ্যবান্ধব ডিলার ও এম এস এর ডিলার দের কাছ থেকে টাকা নিতে হচ্ছে আপনার যা লেখার আপনি লেখেন। এদিকে শ্যামনগর উপজেলার একাধিক খাদ্য বান্ধব ডিলার ও এম এস ডিলার অভিযোগ করেছেন নকিপুর খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামাল হোসেনকে নির্ধারিত টাকা না দিলে ট্রাক অথবা যান বাহনে মাল উত্তোলন করতে দেওয়া হয় না। ডিলার বন আরো বলেন খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামান হোসেন তিনি খুব বদমেজাজি টাকা ছাড়া তার ধারে কথা বলা যায় না কথায় কথায় টাকা ছাড়া কোন কথা চলে না পরিস্থিতির শিকার হয়ে আমরা এই টাকা দিতে বাধ্য হচ্ছি। ডিলারগণ আরো জানান টাকা দিয়েও ওজনে মাল সঠিক পাচ্ছি না ৩০ কেজির বস্তায় ২৮ কেজি থেকে ৩০ কেজি চাইল আছে আর ৫০ কেজির বস্তা দিলে প্রতি বস্তায় দুই থেকে তিন কেজি পর্যন্ত চাউল কম থাকে কিন্তু খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্য কর্মকর্তা ৫০ কেজি ৩০০ গ্রাম করে প্রতি বস্তায় ধরে দেয়। ও এমএস ডিলারা অভিযোগ করেছেন তাদের ক্ষেত্রে অতি ম্যাটট্রিক টন গমে ১০০০ টাকা করে খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামান হোসেনকে দিতে হয় তা না দিলে নানান অজুহাত তালবাহনায় ডিলার শিব বাতিলের হুমকি দেয় । তিনি আওয়ামী লীগের সময় আওয়ামী লীগ পরিবারের সন্তান বলে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার চাকরি করে এসেছেন সবার সাথে ম্যানেজ করে আবার এখন তিনি বলেন আমি জামাত বিএনপির রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত কথাগুলো জানিয়েছেন কান্না জনিত ভাষায় ১১ জন খাদ্য বান্ধব ডিলার পাঁচজন ও এম এস ডিলার।
এ ব্যাপারে কথা হয় এই প্রতিবেদকের সাথে শ্যামনগর উপজেলার সুযোগ্য দক্ষ কর্মবান্ধব উপজেলা নির্বাহী অফিসার রনী খাতুন এর সাথে তিনি এই প্রতিবাদককে বলেন বিষয়টি আমার জানার বাইরে ছিল আপনি যখন জানিয়েছেন বিষয়টি আমি অবশ্যই নিয়ন্ত্রণ করবো প্রয়োজনে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় নকিপুর খাদ্য গুদামে ও তার আশেপাশে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করব ঘুষ লেন দেন হলে অবশ্যই ধরা পড়বে। তিনি আরো বলেন আমি যাওয়ার আগে খাদ্য বিভাগের এই ঘুষ বাণিজ্য দুর্নীতি বন্ধ করে সকলকে প্রমাণ করিয়ে যাব যাওয়ার সময় শেষ কাজটাও করে গেলাম ।আপনারা সাংবাদিক ভাইয়েরা আমাকে শ্যামনগর উপজেলার উন্নয়নমূলক কাজে এবং দুর্নীতি প্রতিরোধে অনেক সহযোগিতা করেছেন এটার ক্ষেত্রেও আপনারা সহযোগিতা করবেন আমার পক্ষ থেকে আইনগত ব্যবস্থা নিতে কোন প্রকার দুর্বলতা থাকবে না,। আর খাদ্যবান্ধব ও ও এম এস ডিলারদের বলবো আপনারা শ্যামনগর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের অফিসে একটি টাকা দিবেন না আমি প্রমাণ পেলে তার ডিলারশিপ বাতিল করে দেব কারণ এই প্রকল্পের সভাপতি আমি নির্বাহী অফিসার।
এব্যাপারে মুঠোফোনে কথা হয় মাননীয় খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদারের সাথে তিনি অভিযোগের বিষয়টি ধৈর্য সহকারে শোনেন শোনার পরে এই প্রতিবেদককে বলেন বিষয়টি আমার কাছে গতরাতেও খবর এসেছে আমি এক্ষুনি যাচাই করছি আমাদের ডিপার্টমেন্ট ও বিভিন্ন গোয়েন্দাদের মাধ্যমে যদি অভিযোগের সত্যতা মেলে তাহলে সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক জাহিদুর রহমানকে ও খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামান হোসেনকে চাকরি থেকে বাধ্যতামূলক অবসর পর্যন্ত দিতে বাধ্য থাকিব এবং যত প্রকার দুর্নীতি প্রতিরোধে আইনগত ব্যবস্থা আছে সবকিছু জাহিদুর রহমানের ও খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামাল হোসেনের বিরুদ্ধে নেওয়া হবে । তিনি আরো বলেন এই প্রকল্পে ডিলার, খাদ্য গুদামে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক , ও জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কেহ কোন অপরাধের সাথে জড়িয়ে পড়লে সেটার প্রমাণ হলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
প্রধান সম্পাদক: লে. কমান্ডার (অব.) রাশেদ ইকবাল, প্রকাশক আসিফ কবীর কর্তৃক জন্মভূমি প্রকাশনী লি: ১১০/২,সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর বালু সড়ক, খুলনা থেকে মূদ্রিত ও প্রকাশিত