সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : সাতক্ষীরার শ্যামনগরে দারিদ্রতার কারনে ছেলে রোহিত দত্তকে জুসের সাথে বিষ মিশিয়ে খাইয়ে হত্যা করার দায় স্বীকার করায় মা সুমিতা দত্তকে গ্রেফতার দেখিয়েছে পুলিশ। নিহত রোহিত স্থানীয় স্কুলের ৫ম শ্রেণির ছাত্র। শনিবার দুপুরে সুমিতা দত্তকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। এর আগে গত শুক্রবার বিকালে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে নিয়ে যাবার পর রাতে জবানবন্দীতে সে ছেলেকে হত্যার কথা স্বীকার করে।
এদিকে, নিহত রোহিতের কাকা শ্যামনগর উপজেলার হরিতলা গ্রামের মৃত মদন মোহন দত্তের ছেলে উজ্জল দত্ত বাদি হয়ে শুক্রবার রাতেই রোহিতের মা সুস্মিতা দত্তের নাম উল্লেখপূর্বক অজ্ঞাতনামা আরো তিনজনকে আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-২৬।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শ্যামনগর থানার উপ-পরিদর্শক মোঃ খবির হোসেন জানান, গ্রেফতার দেখানোর পর সুমিতা দত্তকে আজ দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মোঃ নুরুল ইসলাম বাদল এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ঘটনাটি সন্দেহজনক মনে হওয়ায় শিশুটির মা ও বাপ্পী সরদার নামে স্থানীয় এক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়। জিজ্ঞাসাবাদকালে মা সুস্মিতা দত্ত দারিদ্রতার কারণে ছেলে রোহিতকে ভরনপোষণ করতে না পারায় জুসের সাথে বিষ মিশিয়ে তাকে হত্যার কথা স্বীকার করে। এছাড়া এ ঘটনায় বাপ্পী সরদারের কোন সম্পৃক্ততা না থাকায় তাকে তার পবিারের কাছে তুলে দেয়া হয় ।
নিহত রোহিত দত্ত শ্যামনগর সদরের হরিতলা গ্রামের মৃত গোপাল দত্তের ছেলে। সে ৭৫ নং নকিপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলো।
প্রসঙ্গদ: গত শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টায় রোহিত দত্ত (১২) নামের ৫ম শ্রেনির ওই স্কুল ছাত্র তার স্কুলে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন পালন অনুষ্ঠানে যায়। ফিরে আসার পথে কে বা কারা তাকে একটি ম্যাংগো জুস খেতে দেয়। এরপর বেলা ১২টার দিকে বাড়ি এসে সে তার মায়ের দেয়া একটি স্যালাইন পান করার পরপরই ছটফট করতে করতে মারা যায়। এ ঘটনায় তার মা সুমিতা দত্ত ও বাপ্পী সরদারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যায় পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে সুমিতা দত্ত এই হত্যার কথা স্বীকার করায় তাকে পুলিশ গ্রেফতার দেখায়। এছাড়া এ ঘটনায় বাপ্পী সরদারের কোন সম্পৃক্ততা না থাকায় পুলিশ তাকে ছেড়ে দেয়।