জি এম ফিরোজ, ডুমুরিয়া : চলতি মৌসুমে দ্বিগুণ মূল্য দিয়েও শ্রমিক সংকটে পড়েছেন ডুমুরিয়া কৃষকরা। ঝড় বৃষ্টির শঙ্কায় বাড়তি পারিশ্রমিক দিতে না পারায় শেষাবধি পরিবারের লোকজন নিয়ে ধান কেটেও লোকসানের ঘানি টানছেন কৃষকরা। ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, বিল ডাকাতিয়া, রংপুরসহ কয়েকটি বিলের জমি অনাবাদি থাকলেও উপজেলার ৪২টি ব্লকে ইরি- বোরো ধান উৎপাদন হয়েছে। তবে কৃষকের নিজস্ব উদ্যোগে বাড়তি খরচে জমির পানি সেচ দিয়ে বাইরে ফেলে ধান চাষ করেছে কৃষকরা। আবওহাওয়া অনুকূলে থাকায় বাম্পার ফলন হওয়ায় লক্ষমাত্রা অর্জিত হবে। অতিবৃষ্টির কারণে চাষাবাদ বিলম্বিত হলেও ফলনও হয়েছে বেশ। এবার ১ লাখ ৫০ হাজার ৩৮ মেট্টিক টন ধান ঘওে তুলতে পারবে কৃষকরা। বর্তমানে কৃষকদের ধান কাটার ধূম পড়েছে। ধান কাটার শেষ মুহূর্তে মাধবকাটি, থুকড়াসহ কয়েকটি বিলের পাকা ধানে দেখা দিয়েছে ব্লাস্ট রোগের আক্রমণ। তারপর শুরু হয়েছে ঝড় বৃষ্টি। বছরের খোরাক ঘরে তুলতে ব্যস্ত কৃষকরা। পুরোদমে ধান কাটা চললেও শ্রমিক সংকট এবং পারিশ্রমিক দ্বিগুণ হওয়ায় কৃষকরা পড়েছে মহাবিপাকে। ৩ বার থাকা খাওয়া প্রতিজন ১ হাজার থেকে ১১’শ টাকা দিতে হচ্ছে। অনেকেই পরিবারের মহিলা লোকজন নিয়ে ধান কেটে ঘরে তোলার চেষ্টা করছেন। ডুমুরিয়া উপজেলার শাহপুর গ্রামের জাফর ইকবাল আকুঞ্জী জানান, তিনি ৩ একর জমিতে ধান লাগিয়েছেন। গত এক সপ্তাহ ধওে ৯-১০জন শ্রমিক নিয়ে ধান কাটছেন। ৩ বার খাওয়া প্রতিদিন ১ হাজার টাকা করে পারিশ্রমিক। কিন্তু দুঃখের বিষয় একজন শ্রমিক দিনে ১ মণ ধান কাটতে পারছে না। যার মূল্য ১২’শ টাকা। এতে উৎপাদন খরচ বেড়ে লোকসান টানতে হচ্ছে। বরুনা গ্রামের জহুরা বেগম (৫৫) ও আবেলা বেগম (৩৫) জানান, তারা দেড় বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছেন। অর্থাভাবে তারা দুই ‘জা’ ধান কাটতে নেমে পড়েছেন। পাশে ধান কাটছেন বরুনা গ্রামের ৯ম শ্রেণির স্কুল ছাত্র ইয়ামিন বিশ্বাস। দুই বিঘা ১৫ কাঠা জমিতে ধান চাষ করেছেন। তারা জানান, চড়া মূল্যে কিষাণ নিয়ে ধান কাটলে খরচ বেশি পড়ে যাচ্ছে। তাই নিজেরা ধান কাটছি। থুকড়া গ্রামের বর্গা চাষী মিন্টু বিশ্বাস জানান, ধান চাষ করেও অর্ধেক ধান জমির মালিককে দিতে হচ্ছে। উৎপাদন খরচ ও কাটা খরচ হিসেব করলে ধানের দাম ডাবল পড়ে যাচ্ছে। ধান কাটা শ্রমিক কয়রা উপজেলার আঃ মান্নান ঢালী (৫৫) ও শাহিনুর ঢালী (৩৫) জানান, এখন ধান কাটার পুরোগণ চলছে। কুষকের তুলনায় কিষাণ অনেক কম। বাজার মূল্য অনুপাতে শ্রমের মূল্য বেশি না নিলে সংসার চালাতে পারিনা।