
জন্মভূমি ডেস্ক : সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী সংসদ সদস্যরা চাইলে তাঁদের নিয়ে নির্বাচনকালীন সরকার গঠিত হতে পারে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। সোমবার (১৫ মে) বিকেলে গণভবনে এক জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী তাঁর ইতিবাচক অবস্থানের কথা দেশবাসীর সামনে তুলে ধরেছেন। যেহেতু বিএনপির বর্তমান সংসদে কোন প্রতিনিধিত্ব নেই, ফলে নির্বাচনকালীন এমন সরকার গঠিত তাদের (বিএনপি) স্থান পাওয়ারও কোন সম্ভাবনা নেই।
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওয়েস্ট-ইস্ট অব ডেমোক্রেসি আমরা ফলো করি। ব্রিটেনে কীভাবে ইলেকশন হয়, তারা কীভাবে করে, আমরা সেভাবেই নির্বাচন করবো। এর মধ্যে আমরা এটুকু উদারতা দেখাতে পারি, পার্লামেন্টে সংসদ সদস্য যারা আছেন তাদের মধ্যে কেউ যদি ইচ্ছা প্রকাশ করেন যে, নির্বাচনকালীন সরকারে আসতে চান, আমরা নিতে রাজি আছি। এটুকু উদারতা আমাদের আছে, আগেও আমরা নিয়েছি। আর এখন তো তারা (বিএনপি) পার্লামেন্টেও নেই।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। নির্বাচন নিয়ে বিএনপির সঙ্গে সংলাপের সম্ভাবনা আবারও নাকচ করে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আলোচনায় কিসের জন্য ডাকতে যাবো? তাদের ডিমান্ডই তো ঠিক নাই। নির্বাচন আসছে বলে ভয় পাবো! কেন ভয় পাবো? আমি জনগণের জন্য কাজ করেছি, জনগণ যদি ভোট দেয় আছি, না দিলে নাই। মানুষের কল্যাণ করাই আমরা একমাত্র লক্ষ্য ও ব্রত, সেটাই করে যাব। একইসঙ্গে হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করে তিনি বলেন, আমি বলে দিয়েছি, আন্দোলন করুক কোনো আপত্তি নাই। কিন্তু জ্বালা-পোড়াও যদি করতে যায়, কোনো মানুষকে যদি আবার এরকম করে পোড়ায়, তাকে ছাড়বো না। মানুষের ক্ষতি আর করতে দেবো না।
সম্প্রতি তাঁর জাপান, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে সাম্প্রতিক সফর নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই সংবাদ সম্মেলন করেন। প্রায় দেড় ঘন্টারও বেশি সময় ধরে চলা সংবাদ সম্মেলনে ত্রিদেশীয় সফর ছাড়াও দেশের সর্বশেষ রাজনীতি, অর্থনীতি, বিরোধী দলের আন্দোলনসহ নানা ইস্যুতে সাংবাদিকদের অসংখ্য প্রশ্নের স্বভাবসুলভ হাসি মুখে সবগুলোর উত্তর দেন।
সংবাদ সম্মেলনে মূল মঞ্চে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সংসদ উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী, সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এবং প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে দেশের শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যমের প্রধানসহ জ্যেষ্ঠ সম্পাদক-সাংবাদিকরা ছাড়াও এ সময় আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতৃবৃন্দ, মন্ত্রিসভার সদস্যবৃন্দ, সংসদ সদস্যবৃন্দসহ সামরিক- বেসামরিক উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন প্রধানন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম।
বক্তব্যের শুরুতে ঘূর্ণিঝড় মোখার ক্ষয়ক্ষতি থেকে বাংলাদেশকে রক্ষার জন্য সৃষ্টিকর্তার শুকরিয়া আদায় করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ক্ষয়ক্ষতি হ্রাসে যথেষ্ট প্রস্তুতি গ্রহণ করেছিলাম। আমি নিজে সার্বক্ষণিক খোঁজ-খবর নিয়েছি, নানা নির্দেশনা দিয়েছি। আমরা উপকূলীয় ১৩ জেলায় ৭ হাজার ৪০টি আশ্রয়কেন্দ্র খুলেছিলাম। আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে সাড়ে সাত লাখেরও বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছিল। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় দ্রুত পুনর্বাসন কার্যক্রম গ্রহণের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।