
হারুন-অর-রশীদ : সমাজ বিবর্তনের ছোয়ায় হারিয়ে গেছে চিরায়িত সংস্কৃতি হালখাতা উৎসব। নেই হালখাতার বর্ণিল উৎসব। পবিত্র মাহে রমজানের কারণে ব্যবসায়ীরা হালখাতার তেমন আয়োজন করবে না। অনেক ব্যবসায়ী ঈদের পর হালখাতা করবে। এখন আয়োজন করলেও কাঙ্খিত পাওনা পাওয়া যাচ্ছে না। দেখা যায় না লাল শালু কাপড়ের নতুন খাতা। পহেলা বৈশাখ হালখাতা করার কথা থাকলেও এবছর পবিত্র মাহে রমজানের কারণে ব্যবসায়ীরা এই কাজটি সেরে নিতে পারেনি।
ব্যবসাযীরা বললেন তাদের কথা। বাংলা বছরের প্রথম দিনে ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের হিসেব অনুষ্ঠানিক ভাবে হালনাগাদ করার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়। তাদের দেনা পাওনা হিসেব সমন্বয় এ দিনে হিসেবের নতুন খাতা খোলেন। হালখাতা আবহমান বাংলার চিুরায়িত সংস্কৃতিক। আনন্দ উৎসবের মধ্য দিয়ে পুরনো খাতা বন্ধ করে নতুন খাতায় নাম লিপিবদ্ধ করায় ব্যবসায়ীরা। চৈত্র মাসের মধ্যে পাইকাররা মহাজনের পাওনা বুঝিয়ে দিতেন। আর পহেলা বৈশাখ হালখাতা হতো। এখন করোনায় ক্ষতি ও মাহে রমজানের আগমনে ব্যবসায়ীরা আগে থেকেই নিজেদের সুবিধা মতো হালখাতা করে নেন। তবে পাওনা টাকা সম্পূর্ণ পাওয়া যায়না। আগে নতুন খাতায় সব কিছু লেখা হলেও এখন তথ্য প্রযুক্তিতে কম্পিউটারে লিপি বদ্ধ করা হয়। ১৫৮৪ সালে সম্্রাট আকবরের সময় এর প্রচলন শুরু হয়। আগে দোকানে হালখাতার কার্ড বিক্রি হতো। এখন তার প্রচলন নেই। নেই বর্নিল আয়োজন। এই উৎসব পালনে আড়ম্বররতায় ভাটা পড়েছে।
বড় বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মেসার্স নিশাত বানিজ্য ভান্ডারের সত্বাধিকারী মো. সুজন মিয়া বলেন, হালখাতায় পাওনা টাকা সেভাবে পাওয়া যায়না। হালখাতা হচ্ছে ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে একটা সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্কের সেতু বন্ধন তৈরী করা।
বড় বাজারের ব্যবসায়ী মো. আজিবর রহমান বলেন, আগের মতো এখন আর লাল শালু কাপড়ের নতুন খাতা বিক্রি হয়না। ব্যবসায়ীরা এখন উন্নয়নের দিক চলে গেছেন। তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। খাতার পরিবর্তে কম্পিউটারে সব হিসেব লিপিবন্ধ করা হচ্ছে।
বিশিষ্ট মিষ্টি ব্যবসায়ী শংকর ঘোষ বলেন, হালকাতার জন্য মিষ্টির কোন অর্ডার পাইনি। রোজার কারণে অনেক ব্যবসায়ী ঈদের পরে হালখাতা করবেন।
সার্বজনীন উৎসব হিসেবে হালখাতা ছিল বাংলা নববর্ষের প্রাণ। অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে হালখাতা সামাজিক গুরুত্বও ছিল বেশ। ভোক্তারা হালখাতার জন্য অপেক্ষা করে থাকন এবং আপ্যায়িত হন। সাথে থাকে সুগন্ধি মিষ্টি পান।