
জন্মভূমি ডেস্ক : জাতীয় পার্টির (জাপা) মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, আমরা একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই। দেশের মানুষও একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চায়। নির্বাচন গ্রহণযোগ্য করতে সরকার ও নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা অনেক বেশি। রাজনৈতিক সমস্যা আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান করতে হবে। আলোচনার মূল উদ্যোগ সরকারের পক্ষ থেকেই নিতে হবে।
শনিবার (১৫ জুলাই) দুপুরে গুলশান-২ এর একটি বাড়িতে বাংলাদেশে সফররত ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) প্রতিনিধি দলের সদস্যদের সঙ্গে জাতীয় পার্টি শীর্ষ নেতৃত্বের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
মো. মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ‘সংলাপ ছাড়া সমাধান হবে না। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি এক দফা নিয়ে আছে। বিএনপি সরকারের পদত্যাগ চায়। আর আওয়ামী লীগ শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন চায়। জাতীয় পার্টির এক দফা হলো আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের স্বার্থে সরকারকেই সংলাপের উদ্যোগ নিতে হবে।’
জাতীয় পার্টি মহাসচিব বলেন, ‘ইউরোপীয় ইউনয়নের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আমাদের বৈঠক হয়েছে। তাদের আরও একটি প্রতিনিধি দল আগামী ২৩ জুলাই বাংলাদেশে আসবে। তারাও বিভিন্ন দলের সঙ্গে অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের স্বার্থে আলোচনা করবেন। ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দল আগামী নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠানোর বিষয়েও আলোচনা করেছেন। তারা নির্বাচন বিষয়েই কথা বলেছেন।’
বৈঠকের আলোচনা প্রসঙ্গে মাসরুর মওলা সাংবাদিকেদের বলেন, ‘নির্বাচনকে সামনে রেখে দুই পক্ষের আলোচনা হয়েছে। বিগত নির্বাচনগুলো কেমন হয়েছে এবং আগামী নির্বাচন কেমন হতে যাচ্ছে—এ বিষয়ে তারা (ইইউ) জানতে চায়। আমরা আমাদের জায়গা থেকে এ বিষয়ে মতামত জানিয়েছি।’
মাসরুর মওলা বলেন, ‘জাপা কীভাবে নির্বাচনে অংশ নেবে জানতে চাইলে আমরা বলেছি—৩০০ আসনে নির্বাচন করার পরিকল্পনা আছে।’
এর আগে, জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের নেতৃত্বে ইউরোপীয় ইউনয়নের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে জাতীয় পার্টি মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু ও জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ও বিশেষ দূত মাসরুর মওলা উপস্থিত ছিলেন।
সংবিধান অনুযায়ী চলতি বছরে ডিসেম্বর কিংবা আগামী জানুয়ারি মাসে বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠাতে চায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। এর জন্য ছয় সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল নির্বাচনের আগে অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে ১৫ দিনের সফরে বাংলাদেশে এসেছে। গত শনিবার প্রতিনিধিদলটি ঢাকায় আসে। তাদের আগামী ২৩ জুলাই পর্যন্ত ঢাকায় অবস্থান করার কথা রয়েছে। এরই মধ্যে প্রতিনিধিদলটি সরকারের কয়েকজন উচ্চপর্যায়ের সদস্য, নিরাপত্তা কর্মকর্তা, অ্যাটর্নি জেনারেলসহ অনেকের সঙ্গে বেশ কয়েকটি বৈঠক করেছে। সেখানে তারা আগামী জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে কথা বলেছে বলে গণমাধ্যমকে জানান সরকারের কয়েকজন মন্ত্রী।
প্রতিনিধিদলটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করছে। এর অংশ হিসেবে আজ তাঁরা বিএনপির সঙ্গে বৈঠক করেছে। আওয়ামী লীগের সঙ্গে বৈঠক চলছে। এ ছাড়া জামায়াত, এবি পার্টিসহ ১৪-১৫টি নিবন্ধিত-অনিবন্ধিত রাজনৈতিক দলকে বৈঠকের আমন্ত্রণ জানিয়েছে বলে জানা গেছে।

