ক্রীড়া প্রতিবেদক
অ্যান্টিগার স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস স্টেডিয়াম যেন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ দলের কাছে। এবারের সফরের আগে টাইগাররা একটি মাত্র টেস্ট খেলেছে এই ভেন্যুতে। যেখানে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৪৩ রানে গুটিয়ে যাওয়ার লজ্জার রেকর্ডের সঙ্গী হয়েছে সফরকারী। সেই দুঃস্বপ্ন আবার ফিরতে বসেছিল অ্যান্টিগায়। তবে সাকিব আল হাসান আর তামিম ইকবালের ব্যাটে এ যাত্রায় রক্ষা পেয়েছে বাংলাদেশ দল।
উইন্ডিজের বোলার, আরও নির্দিষ্ট করে বললে স্বাগতিক পেসারদের দাপুটে বোলিংয়ে রীতিমত কোণঠাসা অধিনায়ক সাকিবের দল। রানের খাতাই যে খুলতে পারেননি ছয় ব্যাটসম্যান। সাকিবের প্রতিরোধী ফিফটিতে ৫১ এবং ওপেনার তামিমের ২৯ রানের কল্যাণে স্কোর বোর্ডে সংগ্রহ কোনরকম একশর কোটা পূর্ণ করেছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। প্রথম ইনিংসে টাইগাররা গুটিয়ে গেছে ১০৩ রানে।
ক্যারিবীয়দের হয়ে জেইডেন সিলেস আর আলজারি জোসেফ নিয়েছেন ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন। কাইল মায়ার্রস ও কেমার রোচ নেন ২টি করে উইকেট।
এদিন টস হেরে ‘নতুন’ অধিনায়ম সাকিবের কণ্ঠে ঝরল একরাশ আক্ষেপ। দল যে এমন পরিস্থিতির মধ্যে পড়বে, সেটি যেন আগেই অনুমান করতে পেরেছিলেন তিনি। আগে বল করতে চাওয়া সাকিবের দলকে বাধ্য হয়ে ব্যাটিংয়ে নামতে হয়। বাঁহাতি অলরাউন্ডার সতর্ক বার্তায় জানান, ম্যাচের প্রথম ঘণ্টা হব খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে অধিনায়কের চাওয়ার মান রাখতে পারেননি তরুণরা। অথচ আগের দিনই এই তরুণদের নিয়ে প্রশংসার ফুলঝুরি সাজিয়েছিলেন সাকিব।
ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই সাজঘরে মাহমুদুল হাসান জয়। ‘গোল্ডের ডাক’ সঙ্গী করে ফেরেন এই ডানহাতি। অফ ফর্মে ভোগা নাজমুল হাসান শান্তর পরিণতি একই। ব্যাটিংয়ে মনোযোগ দিতে নেতৃত্ব ছাড়া মুমিনুল হকও বৃত্ত ভেঙে বের হতে পারেননি, আগের দুইজনের মতো শূন্য হাতে সাজঘরে ফেরেন।
উইন্ডিজে বাংলাদেশ দলের চ্যালেঞ্জের নাম ডিউক বল। এই বলের সুইং আর মুভমেন্টের হেরফের পড়তে পারেননি ব্যাটসম্যান। এতে উইকেট নিতে বোলাররা যতটা না চেষ্টা করেছেন, তার থেকে বেশি উইকেট বেলানোর দিকে মনোযোগ ছিল সফরকারীদের। নাহলে কি আর অভিজ্ঞ তামিম ইকবাল, লিটন দাসরা এভাবে নিজেদের উইকেট ছুড়ে দিতে পারেন!
তামিম ২৯, লিটন দাস ১২ আর নুরুল হাসান শূন্য আউট হন কোনো রান না করে। এতে প্রথম সেশনের আগেই ৬ উইকেট নেই বাংলাদেশ দলের। পরে ২৫ ওভারে সেই ৬ উইকেট হারিয়ে ৭৬ রান নিয়ে মধ্যহ্নভোজের বিরতিতে যায় বাংলাদেশ দল।
সাকিব ৩৯ বলে ২৭ এবং মিরাজ ২১ বলে ২ রান নিয়ে দ্বিতীয় সেশনের খেলা করেন। তবে বিরতি কাটিয়ে ফিরে নিজের খেলা প্রথম বলেই আউট মিরাজ। ৭ উইকেট হারাতিয়ে আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে নিজের অর্ধশতক তুলে নেন সাকিব। তার ইনিংসটি থামে ৫১ রানে। ৬৭ বলে ৬টি চার ও ১টি ছক্কা মারেন তিনি।
মুস্তাফিজুর রহমান আর খেলাদ আমহেদ শূন্য রানে আউট হলে ১০৩ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ দল। এবাদত হোসেন অপরাজিত থাকেন ৩ রান নিয়ে।