
সিরাজুল ইসলাম, শ্যামনগর: সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স রোগী সেবা, চিকিৎসা প্রদানের পরিবর্তে নিজেই রোগীতে পরিণত হয়েছে। লক্ষাধীক মানুষের চিকিৎসা সেবার একমাত্র এই সরকারি চিকিৎসা কেন্দ্রটি বর্তমান সময়ে চিকিৎসক সংকটে ভূগছে। কমপ্লেক্সটির তত্ত্বাবধায়ক অধিকাংশ সময়ে প্রশাসনিক ও সরকারি কাজে ব্যস্ত থাকায় একজন মেডিকেল অফিসারই ভরসা। মেডিকেল সহকারী কয়েকজন থাকলেও সংকট তার শেষ নেই মেডিকেল অফিসারের। দেবহাটা উপজেলার পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী উপজেলা আশাশুনি কালিগঞ্জ এলাকার রোগীরাও দেবহাটা উপজেলার হাসপাতালমুখি ছিল। উপজেলার এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি সখিপুর হাসপাতাল নামে পরিচিতির সুচিকিৎসার এবং রোগী সেবা কিন্তু বর্তমানে যেন অতীত হয়েছে। কেবল চিকিৎসক স্বল্পতাই শেষ কথা নয় ত্রিশ হতে পঞ্চাশ বেডে উন্নতি হাসপাতালটির এক্স-রে মেশিনটি অকেজো হওয়ায় দীর্ঘদিন যাবৎ এক্স-রের ও আল্ট্রাসনোগ্রাম সুযোগ হতে বঞ্চিত হচ্ছে রোগীরা। প্যাথলজি বিভাগ চলছে দায়সারা ভাবে। অভ্যন্তরীণ পরিবেশ হাসপাতাল বান্ধব নয় এমনই দেখা গেছে সরেজমিন। নেই সুপেয় পানির ব্যবস্থা। পুরুষ এবং মহিলা উভয় ওয়ার্ডে রোগী স্বল্পতার পাশাপাশি খাদ্যের মান যথাযথ নয়। হাসপাতালটির রোগীদের খাদ্য সরবরাহ এবং মান নিয়ে অভিযোগ দীর্ঘদিনের। উপজেলার একমাত্র সরকারি এই হাসপাতালটিকে চিকিৎসা সেবা পরিপূর্ণতা আনায়নের ক্ষেত্রে চিকিৎসক ঘাটতি দূরীকরণ জরুরী। ইতিপূর্বে হাসপাতালটিতে কেবল দেবহাটা উপজেলা নয় পার্শ্ববর্তী উপজেলার রোগীরাও চিকিৎসা সেবা নিতেন ভর্তি হতেন কিন্তু বর্তমানের চিত্র এতটুকু বিয়োগান্তক যে কোন রোগী জরুরী বিভাগে আসলে নাম ঠিকানা লিখে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল বা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। এলাকাবাসি ও রোগীদের প্রত্যাশা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অবিলম্বে চিকিৎসক ঘাটতি পূরণ করবেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পঞ্চাশ বেডের হাসপাতালে পনেরো জনের অধিক মেডিকেল অফিসার থাকার কথা কিন্তু আছে একজন। বর্তমান ৫০ শয্যা হাসপাতালটিতে ভর্তি রুগীর সংখ্যা পনেরো থেকে বিশ জন কিন্তু মেডিকেল অফিসারের সংকটে চিকিৎসা পাচ্ছে না তারা। হাসপাতালে একটি অ্যাম্বুলেন্স থাকলেও অধিকাংশ সময় থাকে অকেজ। ভেঙ্গে পড়েছে সখিপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা ব্যবস্থা। হাসপাতালে সুইপার থাকলেও অপরিষ্কার টয়লেট গুলোও।হাসপাতালে বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা একাধিক রুগী জানান, ডাক্তার না থাকায় আমরা ঠিক মত চিকিৎসা সেবা পাচ্ছি না। দেবহাটা থেকে চিকিৎসা নিতে আসা আনারুল ইসলাম জানান, এই পথ অসুস্থ শরীর নিয়ে এসে ডাক্তার না থাকায় আমার ফিরে যেতে হচ্ছে। দেবহাটা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডাঃ শফিকুল ইসলাম বলেন, মেডিকেল অফিসার ও জনবল সংকটে রুগীদের চিকিৎসা দিতে আমাদের হিম সিম খেতে হচ্ছে। অন্যদিকে, কোটি কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত সরকারি কোয়াটার অব্যবহারের ফলে নষ্ট হতে বসেছে।