সিরাজুল ইসলাম, শ্যামনগর : উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরায় সুর্যমুখি চাষ কমে গেছে। গত মৌসুমের তুলনায় চলতি রবি মৌসুমে তেল জাতীয় এই ফসলটি আবাদ কমেছে অন্তত ৩০শতাংশ। সরকারের প্রণোদনা দিয়েও বাড়ছেনা সুর্যমুখি চাষ।
তবে কৃষকরা বলছেন, উন্নতজাতের বীজ সরবরাহ না থাকায় ফসলটি চাষ করে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তারা। এসব কৃষকরা জানান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে যে প্রণোদনা হিসেবে বীজ দেয়া হয় তা চাষ করে ফলন ভালো পাওয়া যাচ্ছেনা।
এদিকে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম জানান, জেলায় ৬০০জন কৃষককে এক কেজি হারে টিএসএফ জাতের সুর্যমুখি বীজ দেয়া হয়েছে। কিন্ত এই বীজ কোন দেশ থেকে আমদানিকৃত বা এর গুনগতমান কেমন তা বলতে পারেননি তিনি।
সাতক্ষীরার তালা উপজেলার জাতপুর গ্রামের মৃতুঞ্জয় কুমার জানান, চলতি মৌসুমে রবি ৬বিঘা পরিমান জমিতে হাইসান জাতের সুর্যমুখি চাষ করেছেন। গত বছর একই পরিমান জমিতে ফসলটি চাষ করে লক্ষাধিক টাকা লাভ হয়। তবে আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে চলতি মৌসুমে সুর্যমুখি চাষে তার দেড় লাখ টাকা হতে পারে বলে আশা করছেন তিনি।এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন কৃষক জানান, কৃষি সম্প্রসরাণ অধিদপ্তর থেকে প্রণোদনা হিসেবে যে সুর্যমুখির বীজ দেয়া হয় তা চাষ করে ফলন ভালো হয়না। তাছাড়া বীজটা যে কোন দেশের তাও আমরা জানতে পারিনা। ফলে ফসলটি উৎপাদনে আগ্রহ হারাচ্ছেন কৃষক। তবে ভালো মানের বীজ পেলে সুর্যমুখি চাষ লাভজনক হবে বলে জানান তারা।সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে জানা গেছে, চলতি রবি মৌসুমে সাতক্ষীরার সাতটি উপজেলায় ১০৯ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় ২৪ হেক্টর, কলারোয়ায় উপজেলায় ২২ হেক্টর, তালা উপজেলায় ২০ হেক্টর, দেবহাটা উপজেলায় ৫ হেক্টর, কালিগঞ্জ উপজেলায় ১০ হেক্টর, আশাশুনি উপজেলায় ১১ হেক্টর ও শ্যামনগর উপজেলায় ১৭ হেক্টর। তবে গেল বছর জেলায় এ ফসলটি চাষ হয়েছিল ১৩৮ হেক্টর জমিতে। এ হিসাব অনুযায়ী চলতি মৌসুমে জেলায় সুর্যমুখির আবাদ কমেছে ২৯ হেক্টর পরিমান।
সুর্যমুখির আবাদ কমে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম জানান, উৎপাদন বাড়াতে চলতি রবি মৌসুমে জেলাতে ৬০০ জন কৃষককে প্রণোদনা হিসেবে জন প্রতি এক কেজি করে টিএসএফ জাতের সুর্যমুখি বীজ দেয়া হয়েছে। সঙ্গে দুই প্রকার (১০+১০) ২০ কেজি করে সারও দেয়া হয়েছে এসব কৃষককে। বীজ ও সার মিলে মোট ১৩ লাখ ৩৩ হাজার ৫০০টাকা প্রণোদনা দেয়া হয়েছে এসব সুর্যমুখি চাষীদের। তবে টিএসএফ জাতের সুর্যমুখি সর্ম্পকে কৃষক পরিচিত নয় বা এই জাতের বীজ কোন দেশের? এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, খুলনার একটি কোম্পানীর নিকট থেকে বীজ সংগ্রহ করা হয়েছে। কিন্ত কোন দেশের উৎপাদন তা বলতে পারবেন না বলে জানান তিনি।