সিরাজুল ইসলাম, শ্যামনগর : সাতক্ষীরায় আবারো সব উপজেলায় চিংড়িতে ভাই রাজ্যনিত কারণে মড়কদেখা দিয়েছে । কিন্তু মৎস অফিস সূত্র বলছে হঠাৎ বর্ষা হয় মিষ্টি পানির সাথে লব পানি মিশে যাওয়ায় বাগদা চিংড়ির মড়কদেখা দিয়েছে । কিন্তু চাষিরা বলছে ভিন্ন কথা তারা বলছে বাগদা চিংড়িতে ফের মড়ক দেখা দিয়েছে। ঘেরের মধ্যে মাছ মরে পচে যাচ্ছে। পানিতে দুর্গন্ধ হচ্ছে। কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই ঘেরে বাগদা চিংড়ি মারা যাচ্ছে। মাছচাষিরা বিভিন্ন ওষুধ ব্যবহার করলেও কোনো কাজ হচ্ছে না। এতে মৌসুমের শুরুতে বড় অঙ্কের লোকসানের মুখে পড়েছেন বাগদা চাষিরা। এ সংক্রান্ত একটি খবর বৃহস্পতিবার (২৯ মে) এই ধরনের খবর বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রকাশ হয়েছে। এর আগে মৌসুমের শুরুতেই চলতি বছর এপ্রিল মাসে ‘সাতক্ষীরায় বাগদা চিংড়িতে মড়ক, চাষিরা হতাশ’ শিরোনামে আরও একটি খবর প্রকাশ হয়। খবরে বলা হয়Ñ সাতক্ষীরায় হেক্টরপ্রতি ৪০০ কেজি বাগদা উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা চাষিদের। কিন্তু মৌসুমের শুরুতে মাছে মড়ক লাগায় বড় ধরনের ধাক্কা খায় চাষিরা। ফলে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ নিয়ে তৈরি হয়েছে শঙ্কা।চাষিদের বরাতে বলা হয়Ñ অনেকেই বিভিন্ন ব্যাংক, এনজিও এবং সমিতি থেকে সুদে ঋণ নিয়ে চিংড়ি চাষ করেছিলেন। মৌসুমের শুরুতে প্রতি গোনে গোনে পোনা মাছ ছেড়েছিলেন তারা। কিন্তু অধিকাংশ মাছ মারা যায়। এলাকার ছোট-বড় সব ঘেরের একই অবস্থা। এতে বাগদা চাষিরা বড় অঙ্কের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েন।’বাগদা চাষিদের উদ্ধৃতি দিযে বলা হয়Ñ কোনো ওষুধে কাজ না হওয়ায় কেউ কেউ ঘের একেবারে শুকিয়ে আবার নতুন করে চাষের উপযোগী করার চেষ্টাও করেন। ইতোমধ্যে বাগদা চাষিদের জমির হারি, পোনা ও খাবারের টাকা ব্যয় হয়ে গেছে। এই পুঁজি ফেরার কোনো উপায় নেই। তারপরও দায় শোধ করার চ্যালেঞ্জ চাষিদের কাঁধে।’দেশের রপ্তানি আয়ের অন্যতম খ্যাত হচ্ছে হিমায়িত চিংড়ি। এ খাত থেকে সরকার প্রচুর বৈদেশিক মূদ্রা অর্জন করে থাকে। ফলে দেশের অর্থনীতির ভিত মজবুত হয়। চিংড়ির বাজার মূল্য বৃদ্ধি, ভাইরাসসহ অন্যান্য রোগবালাই দমন করার ক্ষেত্রে সরকারিভাবে কার্যকরী পদক্ষেপ না নিলে চিংড়ি খাতে ধ্বস নামার আশংকা রয়েছে। এর ফলে সরকার হারাতে পারে প্রচুর বৈদেশিক মূদ্রা এবং অর্থনীতিতে পড়তে পারে নেতিবাচক প্রভাব।মৎস্য কর্মকর্তারা বলছেনÑ চাষিরা স্থানীয় মার্কেট থেকে বাগদা পোনা কিনেছিলেন। সম্প্রতি তারা ঘেরের পানি পরিবর্তন করেন। একজনের ঘেরের ভাইরাস লাগা পানি খালে ছেড়ে দেন। অন্য ঘের সেই ভাইরাসযুক্ত পানি নিজের ঘেরে ঢোকান। এ কারণে বেশি ভাইরাস লাগে। তারা ব্লিচিং পাউডার ব্যবহার করেননি। পানি শোধন প্রক্রিয়া নেননি। এ কারণে মাছ মারা যাচ্ছে।আমরা জানি, ঘেরে একবার ভাইরাস ঢুকে গেলে তার বিপরীতে কোনো অ্যান্টিবায়োটিক নেই। অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হয় ব্যাকটেরিয়া নিধনের জন্য। এ কারণে ভাইরাস ঢুকলে ওষুধ কোনো কাজ করে না। চাষিরা মাছ ছাড়ার আগে যদি পানি ও মাটি পরীক্ষা করে তাহলে পরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব। সরকারিভাবে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ও কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে ‘সাদাসোনা’ খ্যাত চিংড়ি শিল্প রক্ষায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ পদক্ষেপ গ্রহণ করবেনÑএ প্রত্যাশা আমাদের।