
সিরাজুল ইসলাম, শ্যামনগর : ‘চেতনানাশক স্প্রে’ ব্যবহার করে আওয়ামী লীগ নেতার বাড়ি থেকে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট করা হয়েছে। এ সময় লুটেরাদের চিনে ফেলায় গৃহকর্তা আওয়ামী লীগ নেতাকে কুপিয়ে জখম করে তারা।
রোববার (১৬ মার্চ) ভোরে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের জয়পত্রকাটি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় চেতনানাশকের ফলে ওই পরিবারের আরও দুজন মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাদের তিনজনকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
র্যাব পরিচয়ে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে সাবেক আনসার সদস্য আটক
কুপিয়ে জখম ও অজ্ঞান পার্টির কবলে পড়া তিনজন হলেন, কালিগঞ্জের বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জয়পত্রকাটি গ্রামের মৃত শহর আলী সরদারের ছেলে নুরুল হক (৬৩), তার স্ত্রী রওশানারা খাতুন (৫৪) ও তাদের ছেলে রাহিনুর হক (১৬)।
সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রওশানারা খাতুন জানান, সেহরি খেয়ে নামাজ পড়ার পর তিনি ও তার ছেলে রাহিনুর ঘুমিয়ে পড়েন। এর পরে কী হয়েছে তারা কিছু বুঝতে পারেন নি।
জয়পত্রকাটি গ্রামের রুহুল আমিনের মেয়ে রিতু খাতুন জানান, রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তিনি তার বাচ্চাকে নিয়ে দুধ নেওয়ার জন্য চাচা নুরুল হকের বাড়িতে যান। সেখানে গিয়ে চৌমুহুনীর পাগল শিলুকে দেখতে পান। শিলু ঈদের জন্য জাকাত আনতে নুরুল হকের কাছে যান। তারা বাড়ির কাউকে বাইরে না দেখে ঘরে প্রবেশ করেন। এ সময় নুরুল হককে ঘরের মধ্যে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। রান্নাঘরের এক কোণায় অনেক রক্ত পড়ে থাকতে দেখেন তারা। এ ছাড়া রওশানারা ও রাহিনুরকে পৃথক স্থানে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন।
নিহত মন্টু দাশের বাড়িতে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মনি
সামান্য চেতনা থাকা নূরুল হক তাকে বলেন, অজ্ঞানপার্টির সদস্যরা তার ঘরের সিন্ধুক ভাঙার চেষ্টা করলে তিনি বাধা দেন। একজনকে তিনি চিনতেও পারেন। এ সময় তাকে পেছন দিক থেকে মাথায় কোপ দিলে তিনি পড়ে যান। পরে তারা বিভিন্ন জিনিসপত্র লুটপাট করে নিয়ে যায়।
রিতু জানান, তারা ধারণা করছেন অজ্ঞানপার্টি চেতনানাশক স্প্রে করে পরিবারের সদস্যদের অচেতন করে রাখে।
নুরুল হকের চাচাতো ভাই আব্দুস সামাদ জানান, নুরুল হকের বাড়িতে সিন্দুক ভেঙে বিভিন্ন প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পুকুর পাড়ে এনে ফেলে রাখা হয়। এ ছাড়া একটি লিচু গাছের তলায় পলিথিন বিছিয়ে কোন ব্যক্তি বা কতিপয় ব্যক্তি সেখানে অপেক্ষা করেছে বলে মনে হয়েছে। সেখানে একটি ব্যাগ পড়ে ছিল। বাড়ি থেকে কী কী জিনিস লুটপাট করা হয়েছে তা এখনই বলা সম্ভব নয়। নুরুল হকসহ তিনজনকে দুপুর ২টার দিকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অধিক রক্তক্ষরণের ফলে অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় নুরুল হককে রাত ৮টার দিকে আইসিইউতে নেওয়া হয়েছে।