
সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : সাতক্ষীরা জেলায় ২০২৫ সালে কুল উৎপাদনে ১০০ কোটি টাকা উৎপাদনায় ছাড়িয়ে যাবে বলে মনে করছেকুল চাষিরা । কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর দুটি জরিপ দিয়েছে একটি জরিপে বলা হয়েছে এবার সাতক্ষীরা জেলায় ৮৩০ একটা জমিতে কুল চষ হয়েছে আরেকটি জরিপে বলা হয়েছে এবার সাতক্ষীরা জেলায় ৮৭০হেক্টর জমিতে কুল চাষ হয়েছে ।সাতক্ষীরায় এবার কুলের বাম্পার ফলন হয়েছে। চলতি মৌসুমে এ জেলার ৮৩০ হেক্টর জমিতে বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা হয়েছে বল সুন্দরী, ভারত সুন্দরী, থাই আপেল, বাউকুল, আপেল কুল, তাইওয়ান কুল, নারিকেলি ও ঢাকা নাইটসহ বিভিন্ন জাতের কুল।
এতে জেলায় এবার ১০ হাজার মেট্রিক টন কুল উৎপাদনের প্রত্যাশা করছে কৃষি বিভাগ। সূত্র জানায়, সাতক্ষীরার কুল স্বাদে, গুণে ও মানে অনন্য হওয়ায় এর চাহিদা রয়েছে সারা দেশেই। একই সঙ্গে কম খরচে লাভ বেশি হওয়ায় সাতক্ষীরার চাষিরাও ঝুঁকছেন বাণিজ্যিক কুল চাষে। ফলে গত চার বছরের ব্যবধানে জেলায় ৩০ শতাংশ জমিতে কুলের আবাদ বেড়েছে। এতে একদিকে যেমন সমৃদ্ধ হচ্ছে সাতক্ষীরার অর্থনীতি, অন্যদিকে কুল চাষ করে স্বাবলম্বী হচ্ছে অনেকে।
সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, সাতক্ষীরার মাটি কুল চাষের জন্য বেশ উপযোগী। মূলত ২০০০ সালের পর থেকে এ জেলায় বাণিজ্যিকভাবে কুল চাষ শুরু হয় এবং ক্রমান্বয়ে তা বাড়তে থাকে। ২০১৯ সালে যেখানে জেলার ৫৫০ হেক্টর জমিতে কুলের আবাদ হয়েছিল, সেখানে চলতি মৌসুমে ৩০ শতাংশ বেড়ে ৮৩০ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে।
সাতক্ষীরার তালা, কলারোয়া, দেবহাটা ও সাতক্ষীরা সদরের বিভিন্ন এলাকায় গেলে দেখা যায়, সারি সারি কুলের বাগান। এসব বাগানের গাছগুলোতে যেন উপচে পড়ছে নানা জাতের কুল বরই। কুলের ভারে নুয়ে পড়ছে ডাল। এদিকে বাজারেও উঠেছে নানা জাতের কুল।
উপজেলার নগরঘাটার কুল চাষি পাঞ্চাব আলী বিশ্বাস জানান, এ বছর আট বিঘা জমিতে কুল আবাদ করেছেন তিনি। এতে তার প্রায় ছয় লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এরই মধ্যে কুল বাজারজাত করতে শুরু করেছেন তিনি। ১০ লাখ টাকা বেচাকেনার প্রত্যাশা তার।
সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার পাটকেলঘাটায় এবার ব্যাপকভাবে কুলের চাষ করা হয়েছে। ভিটামিন-এ ও ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ সুস্বাদু এ কুল উপজেলার সবখানেই চাষ করা হয়। এবার উপজেলায় কুল চাষ করা হয়েছে ১৫৫ হেক্টর জমিতে।
বিশেষ করে সরুলিয়া ইউনিয়নের কাশিপুর, বড়বিলা, সরুলিয়া, কুমিরা, খলিষখালী এলাকায় মাঠ জুড়ে কেবল চোখে পড়ে কুলগাছের সবুজ বনভূমি।
সরজমিনে কাশিপুর গ্রামের কুলবাগানে দেখা যায়, কুল গাছগুলোতে তারার মতো ফুটে আছে ফুল। তাতে অল্প অল্প ফল ধরেছে। উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, এবার উপজেলায় কুল চাষ করা হয়েছে ১৫৫ হেক্টর জমিতে। যা গত মৌসুমের চেয়ে বেশি।
কাশিপুর গ্রামের কুলচাষী জামালউদ্দীন জানান, প্রায় ১৫ বছর ধরে কুলের চাষাবাদ করে আসছেন। এবার তিনি ২০ বিঘা জমিতে ফুল চাষ করেছেন। তাঁর কুলের বাগানে তিনি পাঁচ জাতের কুল চাষ করেছেন।
অন্য দিকে কুল চাষ শাহীন কাগুচী জানান, আমি প্রায় ৩০ বিঘা মত কুল চাষ করেছি। আবহাওয়া যদি অনুকুলে থাকে তাহলে ফলন ভালো হবে বিক্রিও হবে। তিনি আরো জানান থাই আপেল, বল সুন্দরী, সাদা টক কুল, খাড়া টক কুল ও টক কমলা কুল বিভিন্ন জাতের কুল রয়েছে। তিনি বলেন, নামে টক হলেও এগুলো টক-মিষ্টি কুল।
কুলচাষী পলাশ সরদার জানান, এ পাঁচ জাতের কুলের মধ্যে থাই আপেল কুলের চাহিদা বেশি। কুল চাষ করতে হলে নিবিড় পরিচর্যা ও একাগ্রতা প্রয়োজন। এবার তিনি ১০ বিঘা জমিতে কুলচাষ করেছেন। কুলের ফলনে তিনি আশাবাদী। প্রতিবারই তিনি কুল চাষ করে লাভবান হন। তবে টক কুলের এবারও ফলন ভালো হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। উন্নয়ন প্রচেষ্টার কৃষি ইউনিটের কর্মকর্তা নয়ন হোসেন জানান এক বিঘা ফুল
চাষ করতে খরচ হয় ৩০-৩৫ হাজার টাকা। ভাল ফলন হলে কৃষকের এক থেকে দেড় লক্ষ টাকা বিক্রি হয়। অধিকাংশ কুল চাষ করি বেশ লাভবান হচ্ছে।
সাতক্ষীরায় বাণিজ্যিকভাবে কুল চাষ করে কৃষকরা লাভবান হচ্ছে। অল্প সময়ে অধিক লাভজনক হওয়ায় প্রতি বছরই বাড়ছে এর আবাদ। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে এ জেলার উৎপাদিত কুল যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। তবে এ বছর ভালো দাম পাচ্ছে কুল চাষিরা। ৫ হাজার পরিবারে ১৫ হাজারের বেশি নারী ও পুরুষ শ্রমিক কুলবাগানে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছে, কুল চাষে অধিক লাভবান হওয়ায় কৃষক ঝুঁকে পড়েছে কুল চাষে। সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অফিস থেকে জানা গেছে, এ বছর ৭৯৫ হেক্টর জমিতে কুল চাষ করা হয়েছে। তবে কলারোয়া, তালা, সদর ও কালীগঞ্জ উপজেলায় সবচেয়ে বেশি কুল চাষ হয়ে থাকে। গত বছর জেলায় ৬৫০ হেক্টর জমিতে কুল চাষ করা হয়। অধিদপ্তর আরও জানায়, বিঘাপ্রতি মৌসুমে ৫০ থেকে ৫৫ কুইন্টাল কুল পাওয়া যায়। বর্তমানে নারিকেল কুল কেজিপ্রতি ৭০ থেকে ৮০ টাকা ও আপেল কুল ৬০ টাকা বল সুন্দরি কুল ৬০ থেকে ৭০ তালা উপজেলার পাটকেলঘাটা এলাকার কুল চাষি মো. মিজানুর রহমান জানান, কুলবাগানে ১০ থেকে ১২ জন কাজ করে। একেকজনের মাসিক বেতন ১২ হাজার ১৩ হাজার টাকা। এখানে কাজ করে যে টাকা পায়, তা দিয়ে সন্তাদের লেখা পড়া ও সংসার ভালোভাবে চালে যায় তাদের।
কুলবাগান মালিক মো. নুরুজ্জামান জানান, এ বছর ১০ বিঘা জমিতে তিন রকম কুল চাষ করেছি। এই পর্যন্ত ১৫ থেকে ১৬ লাখ টাকা খরচ করেছি। আমার এখানে অনেকের কর্ম সংস্থানের জায়গা হয়েছে। সরকারিভাবে যদি আর্থিক সহযোগিতা পেতাম, তাহলে আরও বড় পরিসরে কুলচাষ করতে পারতাম। এলাকার আরও অনেকের কর্মসংস্থানের জায়গায় হতো। সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন জানান, সাতক্ষীরার বেলে দোঁয়াশ মাটি ও নাতিশীতোষ্ণ জলবায়ু কুল চাষের উপযোগী। ধান, পাট, সবজি ও মাছ চাষ অপেক্ষাও কুল চাষে অধিক লাভবান হওয়ায় কৃষক এ চাষে ঝুঁকে পড়েছেন। ফলে সাতক্ষীরা কুল চাষের সম্ভাবনাময় জেলা হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। তিনি আরও বলেন, জেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় ও মাছের ঘেরের আইল কৃষকরা কুলচাষ করে আসছে। এবার ৭৯৫ হেক্টর জমিতে কুল চাষ হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় ১৩০ হেক্টর বা ২০ শতাংশের বেশি। এখান কার যে জাতগুলো হলো বল সুন্দরী, ভারত সুন্দরী, আপেল কুল, বাও কুল, কাশ্মীরি, টক মিষ্টি ইত্যাদি জাতগুলো চাষ করেছে। তিনি আরও বলেন, প্রতি বিঘা জমিতে কুল চাষ করতে খরচ হয় ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা, বিক্রি হয় ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা। আবহাওয়া ভালো থাকলে কুল চাষে বেশি লাভ হবে। এদিকে, কুল একটি সুস্বাদু, মিষ্টি ও পুষ্টিকর ফল। দেশের মানুষের বিকল্প খাদ্য হিসাবে ও পুষ্টির পূরণে অনেকটা সহায়ক হবে কুল। দেশের চাহিদা মিটিয়ে কুল বিদেশে রপ্তানি করে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
চাষে রীতিমতো বিপ্লব ঘটিয়েছেন সাতক্ষীরার চাষিরা। কুল চাষ করে লাভবান হয়েছেন এ জেলার শত শত কৃষক। সারাদেশের বাজারেই পাওয়া যাচ্ছে সাতক্ষীরায় উৎপাদিত কুল।
চাষিরা বলছেন, অল্প সময়ে অধিক লাভজনক হওয়ায় প্রতি বছরই বাড়ছে কুল এর আবাদ। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়েও শত শত মেট্রিক টন কুল চলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। ‘সাতক্ষীরার কুল’ এখন ব্র্যান্ডে পরিনত হয়েছে।
২০০০ সালের পর থেকে এ জেলায় বানিজ্যিক ভাবে উন্নত জাতের কুল চাষ শুরু হয়। লাভজনক হওয়ায় অন্যান্য ফসলের আবাদ কমিয়ে এ জেলার অনেক কৃষক ঝুঁকে পড়ে কুল চাষে।
স্থানীয় বিজ্ঞজনরা বলছেন, জেলায় অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে এই ‘সাতক্ষীরার কুল’। এখানের মাটি ও আবহাওয়া কুল চাষের জন্য অনুকূল মনে করছেন কৃষি বিশেষজ্ঞরা।
সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এবছর সাতক্ষীরায় কুলের ভাল ফলন হয়েছে। কৃষকরাও ভাল দাম পাচ্ছেন। গত মৌসুমে জেলায় কুল চাষ হয়েছিলো ৫৫০ হেক্টর জমিতে। সেখানে এবছর কুলের চাষ হয়েছে ৬৫৪ হেক্টরে। উৎপাদন হবে অন্তত ৭ হাজার মেট্রিক টন কুল।
এবার সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় উপজেলায় ১০৪ হেক্টর, কলারোয়ায় উপজেলায় ৩১৬ হেক্টর, তালায় উপজেলায় ১৫৮ হেক্টর, দেবহাটায় উপজেলায় ১৬ হেক্টর, কালিগঞ্জে উপজেলায় ২০ হেক্টর, আশাশুনি উপজেলায় ১৫ হেক্টর ও শ্যামনগর উপজেলায় ২৫ হেক্টর জমিতে কুলের চাষ হয়েছে।
এখানে উৎপাদিত কুলের মধ্যে রয়েছে বাউকুল, আপেলকুল, নাইন্টিকুল, নারকেলকুল, ঢাকা-৯০ কুল, বিলাতিকুল ও মিষ্টিকুল।
প্রতি বিঘায় ৭০ থেকে ৮০ মন করে কুল উৎপাদন হবে বলে আশা করছেন কৃষি বিভাগ। এ জেলার উৎপাদিত এসব কুল স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে খুলনা, গোপালগঞ্জ, ঢাকা ও চট্রগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হয়ে থাকে।
সদর উপজেলার তুজুলপুর এলাকার কুলচাষি ইয়ারব হোসেন বলেন, ‘এবার বিভিন্ন জাতের কুল চাষ করেছি। বুলবুল ঝড়ের কারণে সামান্য ক্ষতি হলেও ফলন ভালোই। সরকার চাষিদের সহজ শর্তে ঋণ দিলে এ জেলায় কুল চাষ আরও অনেক বেশি সম্প্রসারিত হতো।’
কুল চাষে বিঘাপ্রতি খরচ হয় ২০ থেকে ২২ হাজার টাকা। প্রতি কেজি কুলের পাইকারি মূল্য ৪০ থেকে ৫০ টাকা। সব খরচ বাদে বিঘা প্রতি ৯০ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত লাভ করা সম্ভব।
সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সাইফুল ইসলাম এই প্রতিবেদকে জানান, এবছর সাতক্ষীরায় কুলের ভাল ফলন হয়েছে। কৃষকরা ভাল দামও পাচ্ছেন। জেলার প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকদের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে কুল চাষ। সরকার কুল চাষিদের সব ধরণের সহযোগিতা করছে। বাণিজ্যিক কুল চাষে আগ্রহ বাড়ছে সাতক্ষীরার চাষিদের। চার বছরের ব্যবধানে এবার জেলার ৩০ শতাংশ জমিতে কুলের আবাদ বেড়েছে। কম খরচে লাভ বেশি হওয়ায় কুল চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন এ অঞ্চলের চাষিরা।
বর্তমানে জেলার উৎপাদিত কুল ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।
সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলার মাটি কুল চাষের জন্য উপযোগী হওয়ায় ২০০০ সালের পর এ জেলায় বাণিজ্যিকভাবে কুল চাষ শুরু হয়। ফসলটি লাভজনক হওয়ায় অন্যান্য ফসলের উৎপাদন কমিয়ে জেলার কৃষকরা তাদের জমিতে বল সুন্দরী, ভারত সুন্দরী, থাই আপেল, বাউ কুল, আপেল কুল, তাইওয়ান কুল, নারিকেলি, ঢাকা নাইনটিসহ বিভিন্ন জাতের কুল চাষ করে আসছেন।
২০২৫ সালে জেলার ৮৭০ হেক্টর জমিতে কুলের আবাদ হয়। তবে চার বছরে ব্যবধানে ৩০ শতাংশ জমিতে আবাদ বেড়েছে। এবার জেলার ৮৩০ হেক্টর জমিতে কুল চাষ করা হয়েছে। যা থেকে ১০ হাজার টন কুল উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ। যার বাজারমূল্য হবে ১০০ কোটি টাকার ওপরে।
সাতক্ষীরা জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বেশির ভাগ অনাবাদি জমি এখন সারি সারি কুল গাছে ছেয়ে গেছে। গাছগুলোতে শোভা পাচ্ছে নানা জাতের কুল। আর কুলের ভারে নুইয়ে পড়ছে ডাল। কিছু বাগান থেকে আগাম জাতের কুল সংগ্রহ শুরু করেছেন কৃষকরা। বর্তমানে জেলার স্থানীয় বাজারগুলোতে মিষ্টি কুল ১২০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আর টক কুল বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা থেকে ৮০ টাকা দরে।
কয়েকজন কুল চাষি জানান, প্রতি বিঘা জমিতে কুল চাষ করতে খরচ হয়েছে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা। সেখানে বিক্রি করতে পারবেন ৬০ থেকে ৮০ হাজার টাকা। আর এ বছর ফলন ও বাজার দর ভালো হওয়াতে কুল চাষে ভালো লাভের আশায় রয়েছেন তারা।
কৃষকরা বলেন, সরকার যদি কৃষি অফিসের মাধ্যমে কৃষকদের কুল চাষে উদ্বুদ্ধকরণ সভা, সেমিনার এবং সুদমুক্ত ঋণ দিয়ে সহযোগিতা করে তাহলে সাতক্ষীরার কুল দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব। আর বিদেশে বিপণন করতে পারলে কুলের দাম দেশের বাজারে আরও বাড়বে। এতে করে এক দিকে যেমন দেশের অর্থনীতি সমৃদ্ধ হবে তেমনইভাবে কৃষকরাও স্বাবলম্বী হয়ে উঠবেন।
সাতক্ষীরা জেলার পাটকেলঘাটা থানার যুগিপুকুরিয়া গ্রামের পলাশ বিশ্বাস জানান, বিগত কয়েক বছর ধরে কুল চাষ করে আসছেন তিনি। তার সাত বিঘার একটি কুল বাগানে থাই আপেলকুল, বল সুন্দরীকুল, বিলাতি মিষ্টি, কাশ্মীর আপেল কুল, দেশি আপেল কুল, নারকেল কুল, ও টক বোম্বাইসহ বিভিন্ন প্রজাতির ৫০০টি কুল গাছ রয়েছে। এসব গাছে একনাগাড়ে গত কয়েক বছর ধরে কুল উৎপাদন হচ্ছে। প্রতি বছর কুলের মৌসুমে ১২ থেকে ১৩ লাখ টাকার কুল বিক্রি করেন।
তিনি আরও জানান, গত বছর সাত বিঘা বাগানের কুল বিক্রি হয়েছে ১২ লাখ টাকায়। এ সময় সেচ, গাছের পরিচর্যা, সার কীটনাশক, ভিটামিন ও শ্রমিকের মজুরি দিয়ে তার উৎপাদন খরচ হয় সাড়ে ৬ লাখ টাকা। বিক্রি শেষে তার লাভ হয়েছে ৫ লাখ টাকার ওপরে। তবে চলতি মৌসুমে গাছে যে পরিমাণ ফলন এসেছে তাতে ১৩ থেকে ১৪ লাখ টাকার কুল বিক্রি হবে।
জুজখোলা গ্রামের জামাল উদ্দীন নামে অপর এক কুল চাষি জানান, এবার তিন বিঘা জমিতে বল সুন্দরী, আপেল ও থাই কুল চাষ করেছেন। বর্তমানে প্রতিটি গাছে ৩ থেকে ৪ মণের বেশি কুল ধরেছে। যা ১১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে শুরু করেছেন। অল্প খরচ ও কম পরিশ্রমে কুল চাষ অধিক লাভজনক। যেকোনো পতিত জমিতে কুল চাষ করা সম্ভব। এজন্য আগামীতে তার বাগান আরও প্রসারিত করবেন।
সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সাইফুল ইসলাম জানান, জেলায় অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে সাতক্ষীরার কুল। এখানের মাটি ও আবহাওয়া কুল চাষের জন্য অনুকূল। অল্প সময়ে অধিক লাভজনক হওয়ায় প্রতি বছরই বাড়ছে কুলের আবাদ। আর কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে যেকোনো প্রয়োজনে কুল চাষিদের সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে।
প্রধান সম্পাদক: লে. কমান্ডার (অব.) রাশেদ ইকবাল, প্রকাশক আসিফ কবীর কর্তৃক জন্মভূমি প্রকাশনী লি: ১১০/২,সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর বালু সড়ক, খুলনা থেকে মূদ্রিত ও প্রকাশিত