By using this site, you agree to the Privacy Policy and Terms of Use.
Accept

প্রকাশনার ৫২ বছর

দৈনিক জন্মভূমি

পাঠকের চাহিদা পূরণের অঙ্গীকার

  • মূলপাতা
  • জাতীয়
  • আন্তর্জাতিক
  • রাজনীতি
  • খেলাধূলা
  • বিনোদন
  • জেলার খবর
    • খুলনা
    • চুয়াডাঙ্গা
    • বাগেরহাট
    • মাগুরা
    • যশোর
    • সাতক্ষীরা
  • ফিচার
  • ই-পেপার
  • ALL E-Paper
Reading: সাতক্ষীরায় জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ভোজন রসিকদের চুই ঝাল
Share
দৈনিক জন্মভূমিদৈনিক জন্মভূমি
Aa
  • মূলপাতা
  • জাতীয়
  • জেলার খবর
  • ই-পেপার
অনুসন্ধান করুন
  • জাতীয়
  • জেলার খবর
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলাধূলা
  • বিনোদন
  • ই-পেপার
Have an existing account? Sign In
Follow US
প্রধান সম্পাদক মনিরুল হুদা, প্রকাশক আসিফ কবীর কর্তৃক জন্মভূমি প্রকাশনী লি: ১১০/২,সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর বালু সড়ক, খুলনা থেকে মূদ্রিত ও প্রকাশিত
দৈনিক জন্মভূমি > জেলার খবর > সাতক্ষীরা > সাতক্ষীরায় জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ভোজন রসিকদের চুই ঝাল
তাজা খবরসাতক্ষীরা

সাতক্ষীরায় জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ভোজন রসিকদের চুই ঝাল

Last updated: 2025/12/02 at 12:41 PM
জন্মভূমি ডেস্ক 7 minutes ago
Share
SHARE

 সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : চুই ঝালের কথা বলতেই অনেকের জিবে জ্বল চলে আসে। চুইঝাল একটি প্রচলিত মসলা জাতীয় অর্থকরী ফসল। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে এটি বেশি চাষ হয়ে থাকে। স্থানীরা এটিকে চুইঝাল বলে থাকে। এটি একটি লতা জাতীয় গাছ। এর বৈজ্ঞানিক নাম চরঢ়বৎ পযধনধ। এটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার স্থানীয় প্রজাতি। বর্তমানে সাতক্ষীরা এবং খুলনাঞ্চলে সবচেয়ে ভালো চুই উৎপাদন হচ্ছে। সাতক্ষীরার ভোজন রসিকদের কাছে চুইয়ের কদর সবচেয়ে বেশি। গোশত রান্নায় চুইঝাল বেশি ব্যবহার করা হয়। অনেকে চুই দিয়ে মাছও রান্না করে থাকেন। চুই ঝালকে কেন্দ্র করে সাতক্ষীরায়, পাটকেলঘাটা, তালায়সহ বেশ কয়েক জায়গায় হোটেল গড়ে উঠেছে। এর মধ্যে সাতক্ষীরায় আব্বাস হোটেল, পানসি হোটেল, পাটকেলাঘাট গণির হোটেল। শুধুমাত্র চুইঝাল দিয়ে গোশত রান্নার কারণে খুলনা, চুকনগর ও সাতক্ষীরার বেশ কয়েকটি হোটেলের সুখ্যাতি রয়েছে সারা দেশে। জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চুই লতাজাতীয় গাছের কা- ধূসর বর্ণের ও পাতা পান পাতার মতো সবুজ রঙের। কা- থেকে আকর্ষি বের হয়, সেই আকর্ষি মাটিতে বিশেষভাবে রোপণ করলে আবার সেটা গাছ হয়। এর কা-টি মসলা হিসেবে ব্যবহৃত হয়। চুইঝাল একধরনের মসলা। এর ডাল মসলা হিসেবে গরু ও খাসির গোশতে দেয়া হয়। এতে এক অপূর্ব স্বাদের সৃষ্টি হয়। সেই স্বাদ ঝাল ঝাল। সাতক্ষীরা বড় বাজার, পাটকেলঘাটা, তালা কালিগঞ্জসহ জেলার বিভিন্ন বাজারে চুই ঝাল বিক্রি হয়ে থাকে প্রতি কেজি ৩০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত। সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলা এলাকার চাষিরা জানান, আম, শিমুল গাছের সাথে ভাল ফল পাওয়া গেছে। সাধারণত আম, সুপারিসহ কাঠ জাতীয় গাছের গোড়া থেকে ১২-১৫ ইঞ্চি দূরে গর্ত করে চুই গাছের কাটিং লাগান হয়। গর্তের মধ্যে কিছু গোবর, বর্জ্য, ৫০ গ্রাম ইউরিয়া, ৫০ গ্রাম টি এস পি, ৫০ গ্রাম পটাশ দিয়ে গর্তে ও মাটির সঙ্গে ভালোভাবে মিশিয়ে ৭ দিন রেখে কাটিং লাগাতে হয়। গর্তে একটি খুঁটি কাত করে বড় গাছের সাথে বেঁধে দিলে ৩০-৪০ দিনের মাঝে তা গাছের কা-ের সাহায্যে উপরে উঠে যায়। এভাবে চুই গাছ বাড়তে থাকে। সাতক্ষীরা শহরের বড় বাজারের চুই ঝাল বিক্রেতা শাহিনুর রহমান বলেন, আমি প্রতিদিন ১০ থেকে ১২ কেজি চুই ঝাল বিক্রি করি। বিভিন্ন দিবস উপলক্ষে চুই ঝালের বিক্রি বেড়ে যায় কয়েক গুণ। তিনি আরও বলেন, তালা, কালিগঞ্জ, পাটকেলঘাটা এলাকা থেকে চাষিরা আমাদের চুই ঝাল দিয়ে যায়। সাতক্ষীরা শহরের পলাশপোল এলাকার আবুল হোসেন বলেন, আমি ৩ কেজি চুই কিনেছি। চুই ছাড়া আমাদের বাড়িতে কোন মাংস রান্নাই হয় না। বাড়ির সবার প্রিয় চুই ঝাল। তবে শাখা ডাল থেকে শেকড়ে ঝাল বেশি বলে এর দামও একটু বেশি। জেলার পাটকেলঘাটা থানার তৈলকুপি এলাকার অমিত কুমার সাধু জানান, বাপ-দাদার আমল থেকে চুইয়ের আবাদ করছি। এখন কৃষি অফিসের সাহায্য নিয়ে বেশি করে চাষ করছি। বছরে প্রায় ৫০ হাজার টাকার চুই বিক্রি করে থাকি। একজন সাধারণ কৃষক মাত্র ২-৪টি চুই গাছের চাষ করে নিজের পরিবারের চাহিদা মেটাতে পারেন। অনেকে আবার চুই ঝালের গোড়াসহ নিয়ে যায়। সরকারিভাবে উদ্যোগ নিলে চুই ঝালের চাষ আরো বাড়তে পারে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। অবাক করা বিষয় হল এই যে খুলনা-যশোর-সাতক্ষীরার চুই দেশের চাহিদা মিটিয়ে বাইরেও রপ্তানি হচ্ছে। হারবাল চিকিৎসক হাকিম তপন কুমার দে বলেন, চুই ঝাল শুধু মাত্র মসলা নয় ভেষজ ওষুধ, চুইলতার শিকড়, কা-, পাতা, ফুল ফল সব অংশই ভেষজগুণ সম্পন্ন এবং গুরুত্বপূর্ণ। অর্থাৎ পুরো গাছ উপকারি। মানব শরীরের বিভিন্ন রোগ নিবারণে এটি অনেক কার্যকর। গ্যাস নিবারণ, কোষ্ঠকাঠিন্য তাড়াতে, রুচি বাড়াতে, ক্ষুধামন্দা দূর করতে কার্যকর ওষুধ এটা। স্নায়ুবিক উত্তেজনা ও মানসিক অস্থিরতা প্রশমন করে ঘুম আনতে সহায়তা করে চুই ঝাল। হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট, কাশি, কফ, ডায়রিয়া, রক্তস্বল্পতা, শারীরিক দুর্বলতা কাটাতে অথবা শরীরের ব্যথা সারাতে পারে চুই ঝাল। এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ সাইফুল ইসলাম এই প্রতিবেদককে ‌বলেন, জেলায় সাড়ে ৩ হেক্টর জমিতে চুই ঝালের চায় হয়। জেলায় বিভিন্ন বাড়িতে লাগানো পাশাপাশি এখন কেউ কেউ বাণিজ্যিকভাবে এর চাষ শুরু।
চুই ঝালের কথা বলতেই অনেকের জ্বিবে জ্বল চলে আসে।  চুইঝাল একটি প্রচলিত মসলা জাতীয় অর্থকরী ফসল। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে এটি বেশি চাষ হয়ে থাকে। স্থানীরা এটিকে চুইঝাল বলে থাকে। পিপারাসি পরিবারের সপুষ্পক লতা চুই। এর বৈজ্ঞানিক নাম Piper chaba। এটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার স্থানীয় প্রজাতি। দেশে সাতক্ষীরা এবং খুলনাঞ্চলে সবচেয়ে ভালো চুই উৎপাদন হয়।
অনেক বছর ধরে খুলনা এবং সাতক্ষীরার ভোজনরসিকদের কাছে চুইয়ের কদর সবচেয়ে বেশি। মাংসেই চুই বেশি ব্যবহার করা হয়। অনেকে চুই দিয়ে মাছও রান্না করে থাকেন। চুই ঝালকে কেন্দ্র করে সাতক্ষীরা, পাটকেলঘাটা, তালায়সহ বেশ কয়েক জায়গায় হোটেল গড়ে উঠেছে। শুধুমাত্র চুইঝাল দিয়ে খাসির মাংসের কারণে খুলনার চুকনগরে আব্বাসের হোটেলের সুখ্যাতি রয়েছে সারা দেশে।
জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চুই লতাজাতীয় গাছের কা- ধূসর বর্ণের ও পাতা পান পাতার মতো সবুজ রঙের। কাণ্ড থেকে আকর্ষি বের হয়, সেই আকর্ষি মাটিতে বিশেষভাবে রোপন করলে আবার সেটা গাছ হয়। এর কাণ্ডটি মসলা হিসেবে ব্যবহৃত হয়। চুইঝাল একধরনের মসলা। এর ডাল মসলা হিসেবে গরু ও খাসির মাংসে দেওয়া হয়। আঙুলের মতো চিকন এ গাছের লতার দাম কম। আর গাছের গোড়ার দাম সবচেয়ে বেশি। লতা ফেড়ে মাংস রান্নার সময় দেওয়া হয়। এতে এক অপূর্ব স্বাদের সৃষ্টি হয়। সেই স্বাদ ঝাল ঝাল। অনেকে মাংস রেখে শুধু চুই ঝালই মজা করে খান। এছাড়া এর অনেক ভেষজ গুণ রয়েছে। পাতা, কাণ্ড, শিকড়, ফুল, ফল, ডাল সবই ঔষধি গুণসম্পন্ন।
মাংসের স্বাদ বাড়তে চুই ঝালের বিকল্প নেই। বিভিন্ন সামাজিক আচার অনুষ্ঠানসহ ঈদ পার্বণে চুই ঝালের কদর বেড়ে যায় অনেকগুণ। সাতক্ষীরা বড় বাজার, পাটকেলঘাটা, তালা কালাগঞ্জসহ জেলার বিভিন্ন বাজারে চুই ঝাল বিক্রি হয়ে থাকে প্রতি কেজি ২০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা পর্যন।
চুইয়ের গাছ কিভাবে বেড়ে ওঠে সেটি সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাটিতে কাটিং লাগাতে হয়। কাটিং থেকে নতুন চারা বের হলে তা কোন ফল বা কাঠ গাছে দিয়ে দিলে ধীরে ধীরে বেড়ে উঠে। চুই লতাজাতীয় গাছ, তাই আম, জাম, সুপারি, নারকেল ইত্যাদি গাছের গোড়ায় এটি রোপণ করা হয়। এক বছর বয়সী চুই খাওয়া যায়, তবে ৫-৬ বছরের চুই উত্তম। এটি সাতক্ষীরার স্থানীয় বাজার ছাড়াও যশোর, খুলনা, ঢাকাসহ দেশ-বিদেশেও এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।
সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলা এলাকার চাষিরা জানান, আম, শিমুল গাছের সাথে ভাল ফল পাওয়া গেছে। সাধারণত আম, সুপারিসহ কাঠ জাতীয় গাছের গোড়া থেকে ১২-১৫ ইঞ্চি দূরে গর্ত করে চুই গাছের কাটিং লাগান হয়। গর্তের মধ্যে কিছু গোবর, বর্জ্য, ৫০ গ্রাম ইউরিয়া, ৫০ গ্রাম টি এস পি, ৫০ গ্রাম পটাশ দিয়ে গর্তে ও মাটির সঙ্গে ভালোভাবে মিশিয়ে ৭ দিন রেখে কাটিং লাগাতে হয়। গর্তে একটি খুঁটি কাত করে বড় গাছের সাথে বেঁধে দিলে ৩০-৪০ দিনের মাঝে তা গাছের কাণ্ডের সাহায্যে উপরে উঠে যায়। এভাবে চুই গাছ বাড়তে থাকে।
সাতক্ষীরা শহরের বড় বাজারের চুই ঝাল বিক্রেতা শাহিনুর রহমান বলেন, ‘আমি প্রতিদিন ১০ থেকে ১২ কেজি চুই ঝাল বিক্রি করি। বিভিন্ন দিবস উপলক্ষে চুই ঝালের বিক্রি বেড়ে যায় কয়েক গুণ। তিনি আরও বলেন, তালা, কালিগঞ্জ, পাটকেলঘাটা এলাকা থেকে চাষীরা আমাদের চুই ঝাল দিয়ে যায়।’
চুই ঝাল কেনার সময় কথা হয় ওয়ালিদের সঙ্গে। তিনি বলেন, ঢাকা থেকে সাতক্ষীরায় একটি কাজে এসেছেন। যাওয়ার সময় ৫০০ টাকা দিয়ে ২ কেজি চুই ঝাল কিনে নিয়েছেন।
সাতক্ষীরা শহরের পলাশপোল এলাকার শফিউল আলম খান বলেন, ‘আমি ৩ কেজি চুই কিনেছি। চুই ছাড়া আমাদের বাড়িতে কোন মাংস রান্নাই হয় না। বাড়ির সবার প্রিয় চুই ঝাল। তবে শাখা ডাল থেকে শেকড়ে ঝাল বেশি বলে এর দামও একটু বেশি। শুকনো চুইয়ের দাম আরো ২-৩ গুণ।
জেলার পাটকেলঘাটা থানার তৈলকুপি এলাকার অমিত কুমার সাধু জানান, বাপ-দাদার আমল থেকে চুইয়ের আবাদ করছি। এখন কৃষি অফিসের সাহায্য নিয়ে বেশি করে চাষ করছি। বছরে প্রায় ৫০ হাজার টাকার চুই বিক্রি করে থাকি। আমারও বাড়ির সকল তরকারিতে চুই ঝাল ব্যবাহার করে থাকি।
তিনি আরো বলেন, জেলার চাহিদা মিটিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ অন্যান্য জেলায়ও এটি নিয়ে যাচ্ছে । একজন সাধারণ কৃষক মাত্র ২-৪টি চুই গাছের চাষ করে নিজের পরিবারের চাহিদা মেটাতে পারেন। অনেকে আবার চুই ঝালের গোড়াসহ নিয়ে যায়। আমাদের বাড়ির আম গাছে অনেক পুরাতন একটি গাছ ছিল সেটি ৫০ হাজার টাকায় দিয়ে বাড়ি থেকে নিয়ে যাচ্ছে এক বেপারিরা। সরকারিভাবে উদ্যোগ নিলে এটির চুই ঝালের চাষ আরো বাড়তে পারে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সাতক্ষীরা শহর থেকে ১৫ কিলোমিটার মটরসাইকেল চালিয়ে পাটকেলাটা ব্রীজের নিচে গণির হোটেলে শুধুমাত্র চুইঝাল খাওয়ার জন্য এসেছেন মাহবুবর রহমান। তিনি বলেন, সাতক্ষীরার অনেক খাবারের হোটেলে খেতে গেলে পাওয়া যায় এই চুই ঝালের স্বাদ। পাটকেলাটার বেশ কয়েকটি হোটেল শুধুমাত্র চুই ঝালকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে। এখানে ভালো রান্না হয় এজন্য এত দূর থেকে এই চুই ঝাল খাওয়ার জন্য এসেছি। তিনি চুই ঝাল নামেই বোঝা যায় এটি স্বাদে ঝাল, কিন্তু এই ঝাল একটু আলাদা। এর রয়েছে একটি আলাদা গন্ধ যা তরকারি বা রান্না মাংসে আনে আলাদা এক আমেজ। আরও মজার ব্যাপার হলো খাওয়ার পর এই ঝাল বেশীক্ষণ স্থায়ী হয়না।
স্থানীয় চাষিরা মনে করেন বাংলাদেশে মরিচের বদলে চুইয়ের চাষের বিস্তার ঘটিয়ে প্রতি বছর হাজার কোটি টাকা আয় করা সম্ভব। অবাক করা বিষয় হল এই যে খুলনা-যশোর-সাতক্ষীরার চুই দেশের চাহিদা মিটিয়ে বাইরেও রপ্তানি হচ্ছে। সরকার যদি এর দিকে সুনজর দেয় তবে আমাদের দেশ এখান থেকে অনেক বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারবে।
হারবাল চিকিৎসক হাকিম তপন কুমার দে বলেন, চুই ঝাল শুধু মাত্র মসলা নয় ভেষজ ওষুধ, চুইলতার শিকড়, কাণ্ড, পাতা, ফুল ফল সব অংশই ভেষজগুণ সম্পন্ন এবং গুরুত্বপূর্ণ। অর্থাৎ পুরো গাছ উপকারি। মানব শরীরের বিভিন্ন রোগ নিবারণে এটি অনেক কার্যকর। গ্যাস নিবারণ, কোষ্ঠকাঠিন্য তাড়াতে, রুচি বাড়াতে,ক্ষুধামন্দা দূর করতে কার্যকর ওষুধ এটা। অর্থাৎ পাকস্থলী ও অন্ত্রের প্রদাহ সারাতে খেতে চুই ঝাল খাওয়া যাবে। সর্দির সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে মাত্র এক ইঞ্চি পরিমাণ চুই ঝালের সঙ্গে আদা পিষে খেতে পারেন। স্নায়ুবিক উত্তেজনা ও মানসিক অস্থিরতা প্রশমন করে ঘুম আনতে সহায়তা করে চুই ঝাল। হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট, কাশি, কফ, ডায়রিয়া, রক্তস্বল্পতা, শারীরিক দুর্বলতা কাটাতে অথবা শরীরের ব্যথা সারাতে পারে চুই ঝাল।
এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ সাইফুল ইসলাম এই প্রতিবেদককে ‌বলেন, সাতক্ষীরা জেলায় সাড়ে ৩ হেক্টর জমিতে চুই ঝালের চায় হয়। জেলায় বিভিন্ন বাড়িতে লাগানো পাশাপাশি এখন কেউ কেউ বাণিজ্যিকভাবে এর চাষ শুরু করছে।
চুই ঝালের কথা বলতেই অনেকের জ্বিবে জ্বল চলে আসে।  চুইঝাল একটি প্রচলিত মসলা জাতীয় অর্থকরী ফসল। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে এটি বেশি চাষ হয়ে থাকে। স্থানীরা এটিকে চুইঝাল বলে থাকে। পিপারাসি পরিবারের সপুষ্পক লতা চুই। এর বৈজ্ঞানিক নাম Piper chaba। এটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার স্থানীয় প্রজাতি। দেশে সাতক্ষীরা এবং খুলনাঞ্চলে সবচেয়ে ভালো চুই উৎপাদন হয়।
অনেক বছর ধরে খুলনা এবং সাতক্ষীরার ভোজনরসিকদের কাছে চুইয়ের কদর সবচেয়ে বেশি। মাংসেই চুই বেশি ব্যবহার করা হয়। অনেকে চুই দিয়ে মাছও রান্না করে থাকেন। চুই ঝালকে কেন্দ্র করে সাতক্ষীরা, পাটকেলঘাটা, তালায়সহ বেশ কয়েক জায়গায় হোটেল গড়ে উঠেছে। শুধুমাত্র চুইঝাল দিয়ে খাসির মাংসের কারণে খুলনার চুকনগরে আব্বাসের হোটেলের সুখ্যাতি রয়েছে সারা দেশে।
জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চুই লতাজাতীয় গাছের কা- ধূসর বর্ণের ও পাতা পান পাতার মতো সবুজ রঙের। কাণ্ড থেকে আকর্ষি বের হয়, সেই আকর্ষি মাটিতে বিশেষভাবে রোপন করলে আবার সেটা গাছ হয়। এর কাণ্ডটি মসলা হিসেবে ব্যবহৃত হয়। চুইঝাল একধরনের মসলা। এর ডাল মসলা হিসেবে গরু ও খাসির মাংসে দেওয়া হয়। আঙুলের মতো চিকন এ গাছের লতার দাম কম। আর গাছের গোড়ার দাম সবচেয়ে বেশি। লতা ফেড়ে মাংস রান্নার সময় দেওয়া হয়। এতে এক অপূর্ব স্বাদের সৃষ্টি হয়। সেই স্বাদ ঝাল ঝাল। অনেকে মাংস রেখে শুধু চুই ঝালই মজা করে খান। এছাড়া এর অনেক ভেষজ গুণ রয়েছে। পাতা, কাণ্ড, শিকড়, ফুল, ফল, ডাল সবই ঔষধি গুণসম্পন্ন।
মাংসের স্বাদ বাড়তে চুই ঝালের বিকল্প নেই। বিভিন্ন সামাজিক আচার অনুষ্ঠানসহ ঈদ পার্বণে চুই ঝালের কদর বেড়ে যায় অনেকগুণ। সাতক্ষীরা বড় বাজার, পাটকেলঘাটা, তালা কালাগঞ্জসহ জেলার বিভিন্ন বাজারে চুই ঝাল বিক্রি হয়ে থাকে প্রতি কেজি ২০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত।
চুইয়ের গাছ কিভাবে বেড়ে ওঠে সেটি সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাটিতে কাটিং লাগাতে হয়। কাটিং থেকে নতুন চারা বের হলে তা কোন ফল বা কাঠ গাছে দিয়ে দিলে ধীরে ধীরে বেড়ে উঠে। চুই লতাজাতীয় গাছ, তাই আম, জাম, সুপারি, নারকেল ইত্যাদি গাছের গোড়ায় এটি রোপণ করা হয়। এক বছর বয়সী চুই খাওয়া যায়, তবে ৫-৬ বছরের চুই উত্তম। এটি সাতক্ষীরার স্থানীয় বাজার ছাড়াও যশোর, খুলনা, ঢাকাসহ দেশ-বিদেশেও এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।
সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলা এলাকার চাষিরা জানান, আম, শিমুল গাছের সাথে ভাল ফল পাওয়া গেছে। সাধারণত আম, সুপারিসহ কাঠ জাতীয় গাছের গোড়া থেকে ১২-১৫ ইঞ্চি দূরে গর্ত করে চুই গাছের কাটিং লাগান হয়। গর্তের মধ্যে কিছু গোবর, বর্জ্য, ৫০ গ্রাম ইউরিয়া, ৫০ গ্রাম টি এস পি, ৫০ গ্রাম পটাশ দিয়ে গর্তে ও মাটির সঙ্গে ভালোভাবে মিশিয়ে ৭ দিন রেখে কাটিং লাগাতে হয়। গর্তে একটি খুঁটি কাত করে বড় গাছের সাথে বেঁধে দিলে ৩০-৪০ দিনের মাঝে তা গাছের কাণ্ডের সাহায্যে উপরে উঠে যায়। এভাবে চুই গাছ বাড়তে থাকে।
সাতক্ষীরা শহরের বড় বাজারের চুই ঝাল বিক্রেতা শাহিনুর রহমান বলেন, ‘আমি প্রতিদিন ১০ থেকে ১২ কেজি চুই ঝাল বিক্রি করি। বিভিন্ন দিবস উপলক্ষে চুই ঝালের বিক্রি বেড়ে যায় কয়েক গুণ। তিনি আরও বলেন, তালা, কালিগঞ্জ, পাটকেলঘাটা এলাকা থেকে চাষীরা আমাদের চুই ঝাল দিয়ে যায়।’
চুই ঝাল কেনার সময় কথা হয় ওয়ালিদের সঙ্গে। তিনি বলেন, ঢাকা থেকে সাতক্ষীরায় একটি কাজে এসেছেন। যাওয়ার সময় ৫০০ টাকা দিয়ে ২ কেজি চুই ঝাল কিনে নিয়েছে।
সাতক্ষীরা শহরের পলাশপোল এলাকার শফিউল আলম খান বলেন, ‘আমি ৩ কেজি চুই কিনেছি। চুই ছাড়া আমাদের বাড়িতে কোন মাংস রান্নাই হয় না। বাড়ির সবার প্রিয় চুই ঝাল। তবে শাখা ডাল থেকে শেকড়ে ঝাল বেশি বলে এর দামও একটু বেশি। শুকনো চুইয়ের দাম আরো ২-৩ গুণ।
জেলার পাটকেলঘাটা থানার তৈলকুপি এলাকার অমিত কুমার সাধু জানান, বাপ-দাদার আমল থেকে চুইয়ের আবাদ করছি। এখন কৃষি অফিসের সাহায্য নিয়ে বেশি করে চাষ করছি। বছরে প্রায় ৫০ হাজার টাকার চুই বিক্রি করে থাকি। আমারও বাড়ির সকল তরকারিতে চুই ঝাল ব্যবাহার করে থাকি।
তিনি আরো বলেন, জেলার চাহিদা মিটিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ অন্যান্য জেলায়ও এটি নিয়ে যাচ্ছে । একজন সাধারণ কৃষক মাত্র ২-৪টি চুই গাছের চাষ করে নিজের পরিবারের চাহিদা মেটাতে পারেন। অনেকে আবার চুই ঝালের গোড়াসহ নিয়ে যায়। আমাদের বাড়ির আম গাছে অনেক পুরাতন একটি গাছ ছিল সেটি ৫০ হাজার টাকায় দিয়ে বাড়ি থেকে নিয়ে যাচ্ছে এক বেপারিরা। সরকারিভাবে উদ্যোগ নিলে এটির চুই ঝালের চাষ আরো বাড়তে পারে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সাতক্ষীরা শহর থেকে ১৫ কিলোমিটার মটরসাইকেল চালিয়ে পাটকেলাটা ব্রীজের নিচে গণির হোটেলে শুধুমাত্র চুইঝাল খাওয়ার জন্য এসেছেন মাহবুবর রহমান। তিনি বলেন, সাতক্ষীরার অনেক খাবারের হোটেলে খেতে গেলে পাওয়া যায় এই চুই ঝালের স্বাদ। পাটকেলাটার বেশ কয়েকটি হোটেল শুধুমাত্র চুই ঝালকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে। এখানে ভালো রান্না হয় এজন্য এত দূর থেকে এই চুই ঝাল খাওয়ার জন্য এসেছি। তিনি চুই ঝাল নামেই বোঝা যায় এটি স্বাদে ঝাল, কিন্তু এই ঝাল একটু আলাদা। এর রয়েছে একটি আলাদা গন্ধ যা তরকারি বা রান্না মাংসে আনে আলাদা এক আমেজ। আরও মজার ব্যাপার হলো খাওয়ার পর এই ঝাল বেশীক্ষণ স্থায়ী হয়না।
স্থানীয় চাষিরা মনে করেন বাংলাদেশে মরিচের বদলে চুইয়ের চাষের বিস্তার ঘটিয়ে প্রতি বছর হাজার কোটি টাকা আয় করা সম্ভব। অবাক করা বিষয় হল এই যে খুলনা-যশোর-সাতক্ষীরার চুই দেশের চাহিদা মিটিয়ে বাইরেও রপ্তানি হচ্ছে। সরকার যদি এর দিকে সুনজর দেয় তবে আমাদের দেশ এখান থেকে অনেক বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারবে।
চুই গাছ
হারবাল চিকিৎসক হাকিম তপন কুমার দে বলেন, চুই ঝাল শুধু মাত্র মসলা নয় ভেষজ ওষুধ, চুইলতার শিকড়, কাণ্ড, পাতা, ফুল ফল সব অংশই ভেষজগুণ সম্পন্ন এবং গুরুত্বপূর্ণ। অর্থাৎ পুরো গাছ উপকারি। মানব শরীরের বিভিন্ন রোগ নিবারণে এটি অনেক কার্যকর। গ্যাস নিবারণ, কোষ্ঠকাঠিন্য তাড়াতে, রুচি বাড়াতে,ক্ষুধামন্দা দূর করতে কার্যকর ওষুধ এটা। অর্থাৎ পাকস্থলী ও অন্ত্রের প্রদাহ সারাতে খেতে চুই ঝাল খাওয়া যাবে। সর্দির সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে মাত্র এক ইঞ্চি পরিমাণ চুই ঝালের সঙ্গে আদা পিষে খেতে পারেন। স্নায়ুবিক উত্তেজনা ও মানসিক অস্থিরতা প্রশমন করে ঘুম আনতে সহায়তা করে চুই ঝাল। হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট, কাশি, কফ, ডায়রিয়া, রক্তস্বল্পতা, শারীরিক দুর্বলতা কাটাতে অথবা শরীরের ব্যথা সারাতে পারে চুই ঝাল।
এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ সাইফুল ইসলাম ‌ এই প্রতিবেদককে ‌বলেন, সাতক্ষীরা জেলায় সাড়ে ৩ হেক্টর জমিতে চুই ঝালের চায় হয়। জেলায় বিভিন্ন বাড়িতে লাগানো পাশাপাশি এখন কেউ কেউ বাণিজ্যিকভাবে এর চাষ শুরু করছে।

জন্মভূমি ডেস্ক December 2, 2025
Share this Article
Facebook Twitter Whatsapp Whatsapp LinkedIn Email Copy Link Print
Previous Article প্রকৃত ‌দেশপ্রেমিক নেতৃত্বের রাজনীতি কেন প্রয়োজন

দিনপঞ্জি

December 2025
S M T W T F S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031  
« Nov    
- Advertisement -
Ad imageAd image
আরো পড়ুন
তাজা খবরসাতক্ষীরা

সাতক্ষীরায় জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ভোজন রসিকদের চুই ঝাল

By জন্মভূমি ডেস্ক 7 minutes ago
তাজা খবরসাতক্ষীরা

প্রকৃত ‌দেশপ্রেমিক নেতৃত্বের রাজনীতি কেন প্রয়োজন

By জন্মভূমি ডেস্ক 1 hour ago
চুয়াডাঙ্গা

চুয়াডাঙ্গায় এক যুবককে গলা কেটে হত্যা

By জন্মভূমি ডেস্ক 5 hours ago

এ সম্পর্কিত আরও খবর

তাজা খবরসাতক্ষীরা

প্রকৃত ‌দেশপ্রেমিক নেতৃত্বের রাজনীতি কেন প্রয়োজন

By জন্মভূমি ডেস্ক 1 hour ago
জাতীয়তাজা খবর

এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে নিরাপত্তা জোরদার, বসেছে ব্যারিকেড

By জন্মভূমি ডেস্ক 9 hours ago
তাজা খবরসাতক্ষীরা

সাতক্ষীরা ‌পাউবোর কর্মকর্তা আ’ লীগ ক্যাডার ইমরানের খুঁটির জোর কোথায়?

By জন্মভূমি ডেস্ক 9 hours ago

প্রতিষ্ঠাতা: আক্তার জাহান রুমা

প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক: হুমায়ুন কবীর বালু

প্রকাশনার ৫২ বছর

দৈনিক জন্মভূমি

পাঠকের চাহিদা পূরণের অঙ্গীকার

প্রতিষ্ঠাতা: আক্তার জাহান রুমা

প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক: হুমায়ুন কবীর বালু

রেজি: কেএন ৭৫

প্রধান সম্পাদক: লে. কমান্ডার (অব.) রাশেদ ইকবাল, প্রকাশক: আসিফ কবীর কর্তৃক জন্মভূমি প্রকাশনী লি: ১১০/২,সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর বালু সড়ক, খুলনা থেকে মূদ্রিত ও প্রকাশিত

Developed By Proxima Infotech and Ali Abrar

Removed from reading list

Undo
Welcome Back!

Sign in to your account

Lost your password?