সিরাজুল ইসলাম, শ্যামনগর : এশিয়ার সর্ববৃহৎ মৎস্য খামার শাওন ফিস সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলার হরিনগরে অবস্থিত প্রকল্পটির স্বত্ব অধিকারী বিশিষ্ট শিল্পপতি আব্দুস সাত্তার মোড়ল জানান আমার এই প্রকল্পটি ২৭০০ একর আয়তনের ১৪০ টি পুকুর আছে এর নির্মাণ কাল ২০১৫ সাল আমি এটিকে আধানীবির পদ্ধতিতে বাগদা চিংড়ি চাষের জন্য তৈরি করে ছিলাম কয়েক বছর বাগদা চিংড়ি চাষের লাভবান না হতে পেরে বর্তমান পাবদা মাছ সহ দেশিয় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ করেছি তার মধ্যে পাবদা মাছ উল্লেখ যোগ্য ১৪০ টি পুকুরের মধ্যে ৭৫ টি পুকুরে পাবদা মাছ চাষ করেছে বর্তমান পাবদা মাছে আমার খামারের উল্লেখযোগ্য মাছ এবং ৭৫ টি খামারে পাবদা চাষে আমি সাবলম্বী শ্যামনগর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা তুষার মজুমদার বলেন এশিয়ার সর্ববৃহৎ মৎস খামার শাওন ফিস এখন পাবদা চাষ সহ নানা প্রজাতির মাছ চাষে ঘুরে দাঁড়িয়েছে।সাতক্ষীরার মৎস্য চাষীরা পাবদা মাছ চাষে উল্লেখযোগ্য সফলতা অর্জন করেছে। এই মাছ মাত্র ৫ থেকে ৬ মাসের মধ্যেই বিক্রির উপযোগী হয়, ফলে বছরে দুই বার চাষ করা সম্ভব। দেশীয় বাজারের পাশাপাশি বিদেশেও, বিশেষত ভারতের, পাবদার চাহিদা থাকায় এটি অন্য মাছের তুলনায় অধিক লাভজনক।
মৎস্য চাষীরা জানান, অল্প সময়ে বেশি উৎপাদন এবং ভালো বাজারমূল্য পাওয়ায় তারা পাবদা মাছ চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। একই জমিতে সাদা মাছ চাষের তুলনায় পাবদা মাছের তিনগুণ উৎপাদন হয়। তবে, সাদা মাছের তুলনায় পাবদা মাছের জন্য একটু বেশি যত্নের প্রয়োজন। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে সাদা মাছের সাথে পাবদার মিশ্র চাষ করে উৎপাদন আরও বাড়ানো সম্ভব বলে জানিয়েছেন স্থানীয় চাষীরা। এছাড়া, বিদেশে পাবদার চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে এটি।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার খানপুর গ্রামের তরুণ উদ্যোক্তা নাজমুল হুদা ২০১৮ সালে লেখাপড়া ছেড়ে মৎস্য ব্যবসা শুরু করেন। ৬ বিঘা জমিতে পাবদা মাছ চাষ শুরু করে বর্তমানে তিনি ৪টি খামারের মালিক। তার সফলতা দেখে অনেকে মৎস্য উদ্যোক্তা হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তার খামারের মাছ ভারতের বাজারেও সরবরাহ হচ্ছে। তিনি জানান, আকার অনুযায়ী পাবদা মাছ ১৩ থেকে ১৪ হাজার টাকা মণ বিক্রি হচ্ছে, যা তার উদ্যোগকে আরও লাভজনক করে তুলেছে।
একই গ্রামের মৎস্য ব্যবসায়ী মাও. রেজাউল ইসলাম জানান, তিনি ১০ বিঘা জমিতে পাবদা মাছ চাষ করে প্রায় ২০-২২ লাখ টাকা খরচ করেছেন, যা থেকে ৪ থেকে ৫ মাসের মধ্যে ৩৫-৪০ লাখ টাকার মাছ বিক্রি করবেন বলে আশা করছেন।
সাতক্ষীরা জেলা মৎস্য অফিসার আনিছুর রহমান জানান, সাতক্ষীরা উপকূলীয় জেলা হওয়ায় এটি মৎস্য সম্পদে সমৃদ্ধ। প্রতি বছর এখানে ১ লক্ষ ৪৯ হাজার মেট্রিকটন চিংড়ি ও সাদা মাছ উৎপাদিত হয়, যার মধ্যে ৬৫ হাজার মেট্রিকটন কার্প জাতীয় মাছ রয়েছে। এছাড়া, পাবদা ও তেলাপিয়া মাছের উৎপাদন ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষত, সদর, তালা, ও কলারোয়া উপজেলায় পাবদা মাছের উৎপাদন বেশি হচ্ছে কারণ এটি রপ্তানি করা হচ্ছে, বিশেষ করে ভারতে। রপ্তানির ফলে চাষীরা ভালো দাম পাচ্ছেন—প্রতি কেজি ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অল্প সময়ে লাভজনক হওয়ায় সাতক্ষীরায় পাবদা মাছ চাষের প্রবণতা বাড়ছে এবং মৎস্য অফিস চাষীদের উৎসাহিত ও পরামর্শ প্রদান করছে।