সিরাজুল ইসলাম, শ্যামনগর : সাতক্ষীরার বালিথা কমিউনিটি ক্লিনিকে আলমগীর হোসেন এখন আর হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার সিএইচসিপি পদে দায়িত্ব পালন করেন না। যার কারণে দীর্ঘ দুই বছর যাবত বালিথা কমিউনিটি ক্লিনিকের স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে ওই এলাকার কমিউনিটি ক্লিনিকের স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন হাজার হাজার নারী পুরুষ ও শিশু।
জানা গেছে, সিএইচসিপি আলমগীর হোসেন একজন কমিউনিটি হেলথ্ কেয়ার প্রোপাইটার সিএইচসিপি হয়েও তিনি এক অদৃশ্য ক্ষমতা বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নীতিমালা লংঘন করে সম্পূর্ণ অনিয়মতান্ত্রিকভাবে অবৈধ পন্থায় সাতক্ষীরা সদর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কার্যালয়ে ক্যাশ সরকারের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। অথচ কমিউনিটি বেইজ হেলথ কেয়ার সিএইচসিপি কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের লাইন ডাইরেক্টর ড: হাবিবুর রহমান স্বাক্ষরিত ২০২৪ সনের ৯৬৫ নম্বর স্মারকের এক পত্রে তিনি সুস্পষ্টভাবে সকল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা নির্দেশনা দিয়েছেন, তৃণমূলের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতের জন্য। তিনি কমিউনিটি ক্লিনিকে কর্মরত সকল সিএইচসিপিকে দায়িত্বরত স্ব- স্ব কর্মস্থলে দায়িত্ব পালনের জন্য নির্দেশনা দিয়ে বিষয়টি সকল উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাদের বিষয়টি নিশ্চিত করতে বলেছেন । সংশ্লিষ্ট দপ্তরের এমন কড়া নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও বালিথা কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি আলমগীর হোসেন সেখানে ডিউটি না করে সদর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার মোঃ ফারহাদ জামিলের যোগসাযোসে তার অফিসের ক্যাশ সরকারের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। ফলে নিজ কর্মস্থলে দায়িত্ব সেবা ভেঙে পড়েছে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ,উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার ডাক্তার মোঃ ফারহাদ জামিলের সহায়তায় সেখানকার ক্যাশ সরকারের নিয়োগ পেয়েছেন আলমগীর হোসেন। যেটি সদর উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার ফরহাদ জামিল ২০২৪ সনের ২৪ জুন ৩০৭ নম্বর স্বাক্ষরিত স্মারকে তার নিয়োগটি নিশ্চিত করেছেন। সম্পূর্ণ স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘন করে অনিয়ম তান্ত্রিকভাবে তাকে নিয়োগ দিয়েছেন তিনি। বিষয়টি এলাকাবাসী ও সাংবাদিকদের নজরে এলে ঘটনা ধামাচাপা দিতে দৌড় ঝাপ শুরু করেন ডাক্তার ফরহাদ জামিল । এ বিষয়ে তার সঙ্গে কথা বললে তিনি কিছুই জানেন না বলে সাংবাদিকদের কৌশলে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। অথচ সিএইচসিপি আলমগীর হোসেন দায়িত্ব নিয়ে ডাক্তার ফরহাদ জামিলের সাথে জোগসাজসে বিভিন্ন ভুয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে সদর উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন বলে এলাকাবাসী অভিযোগ তুলেছেন।
খোঁজ নিয়ে আরো জানা গেছে, বালিথা কমিউনিটি ক্লিনিকে সিএইচসিপি আলমগীর হোসেন দীর্ঘদিন কমিউনিটি ক্লিনিকে যান না। অধিকাংশ সময় ক্লিনিক বন্ধ থাকে। দূরদূরান্ত থেকে এলাকাবাসী চিকিৎসা নিতে এসে ফিরে যান।
এবিষয়ে সিএইচসিপি আলমগীর হোসেন জানান, আমি দীর্ঘদিন অসুস্থ ও বাবার মৃত্যুর কারণে বেশ কিছুদিন বাড়িতে ছিলাম। যে কারণে কমিউনিটি ক্লিনিকে যেতে পারিনি। তবে, সদর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসে ক্যাশ সরকারের দায়িত্ব পালনের বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি সাংবাদিকদের জানান,উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার ফারহাদ জামিলের নির্দেশক্রমে তিনি সেখানে ক্যাশ সরকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ আব্দুস সালাম সাংবাদিকদের বলেন, বিষয়টি আমি অবগত নই। আপনারা আগামী ৪ জুন আমার অফিসে এসে দেখা করেন। এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে আমি আলমগীর হোসেন এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো ।