সিরাজুল ইসলাম (শ্যামনগর), সাতক্ষীরা : মাছের জেলা। গলদা ও বাগদা চিংড়ি থেকে শুরু করে ভেটকি, পারশে, পায়রা,জাবা, কান, দাতিনা, রেখা, ভোল, ভাঙ্গাল, টেংরা, রুই ও কার্প জাতীয় মাছসহ এমন কোনো মাছ নেই- যা পাওয়া যায় না।খাল-বিল, নদী-নালা, হাওড়-বাওড় এমনকি প্লাবনভূমিতেও হয় মাছের চাষ। জেলার চাহিদা মিটিয়েও প্রতি বছর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে রাখে সহায়ক ভূমিকা।জেলাটি হচ্ছে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা। এ জেলার বিখ্যাত অনেক কিছুর মধ্যে চিংড়ি অন্যতম। তবে, শুধু চিংড়ি নয়, প্রতিনিয়ত বিদেশে রফতানিসহ ভেটকি, পারশে, টেংরা, পায়রা,জাবা, কান, দাতিনা, রেখা, ভোল, ভাঙ্গাল, রুই ও কার্পসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ।
সাতক্ষীরা জেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলার ২২ লাখ মানুষের জন্য প্রতিদিন ৫০ গ্রাম হিসেবে মাছের বার্ষিক চাহিদা ৪০ হাজার ২৪১ মেট্রিক টন। সেখানে জেলায় বছরে মাছ উৎপাদনের পরিমাণ এক লাখ ৫০ হাজার ১৫৩ মেট্রিক টন।এ হিসেবে সাতক্ষীরা থেকে প্রতি বছর দেশের বিভিন্ন জেলায় ও বিভিন্ন দেশে প্রায় ৭৫ হাজার ৯১২ মেট্রিক টন মাছ পাঠানো হয়। যা থেকে আয় হয় প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা। মৎস্য উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বিপণনের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করছেন লক্ষাধিক মানুষ।চলতি বছর জেলার বার্ষিক উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে এক লাখ ৬০ হাজার ৯৪০ মেট্রিক টন মাছ।সূত্র জানায়, ২০২৪ সালে জেলার ৪৯ হাজার ১৬৩টি ঘেরে ২০ হাজার ৬৮০ মেট্রিক টন বাগদা ও ১১ হাজার ৫২২টি ঘেরে পাঁচ হাজার ৮১৮ মেট্রিক টন গলদা চিংড়ি উৎপাদন হয়। যা চলতি বছর ৪৯ হাজার ৫শ’ ৯০ মেট্রিক টন ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।এছাড়া ২০২৪ সালে জেলার ৫৫ হাজার ১৮টি পুকুরে ২৫ হাজার ১০০ মেট্রিকটন কার্প জাতীয় মাছ, ২৮ হাজার ৭০৭ মেট্রিকটন মনোসেক্স তেলাপিয়া ও পাঙ্গাস মাছ, ১৬ হাজার ৭৬৫ মেট্রিকটন রুই জাতীয় মাছ, ধানখেতে ২ হাজার ২৮০ মেট্রিকটন সাদা মাছ, লবণাক্ত পানিতে ২৬ হাজার ৫০০ মেট্রিকটন সাদা মাছ, এক হাজার ৮০০ মেট্রিকটন চাকা, চ্যামা ও হরিণাসহ অন্যান্য মাছ, ৪৩টি নদীতে ১৮৪০ মেট্রিক টন, ৪০৬টি খালে ২ হাজার মেট্রিক টন, চারটি বিলে ৬৮ মেট্রিক টন, চারটি বাওড়ে ২৯২ মেট্রিক টন ও আটটি প্লাবনভূমিতে ১৪২ মেট্রিক টন মাছ উৎপাদিত হবে।জেলায় এসব মাছ উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বিপণনে গড়ে উঠেছে ৩৮টি হ্যাচারি, ৩৬৭টি নার্সারি, ছয়টি মৎস্য প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্র, ৬২টি আড়ত, ৪১৫টি ডিপো, ৫৪টি বরফ কল, ২৫টি মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ও ৬৮টি পাইকারি মৎস্য বিপণন কেন্দ্র।তবে, মৎস্য খাতে চাষিদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সেবা প্রদানে জনবল বাড়ানো, চাষিদের প্রশিক্ষণ ও এ খাতে খামারিদের ভর্তুকি দিয়ে উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।এছাড়া ২০২৪ সালে জেলার ৫৫ হাজার ১৮টি পুকুরে ২৫ হাজার ১০০ মেট্রিকটন কার্প জাতীয় মাছ, ২৫ হাজার ৭০৭ মেট্রিকটন মনোসেক্স তেলাপিয়া ও পাঙ্গাস মাছ, ২৬ হাজার ৭৬৫ মেট্রিক টন রুই জাতীয় মাছ, ধান খেতে ২ হাজার ২৮০ মেট্রিক টন সাদা মাছ, লবণাক্ত পানিতে ২৬ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন সাদা মাছ, ২ হাজার ৮০০ মেট্রিকটন চাকা, চ্যামা ও হরিণাসহ অন্যান্য মাছ, ৪৩টি নদীতে ১৮৪০ মেট্রিক টন, ৪০৬টি খালে ২ হাজার ২১৩ মেট্রিক টন, চারটি বিলে ৬৮ মেট্রিক টন, চারটি বাওড়ে ২৯২ মেট্রিক টন ও আটটি প্লাবনভূমিতে ১৪২ মেট্রিক টন মাছ উৎপাদিত হবে বলে জানান মৎস্য অধিদপ্তর।
জেলায় এসব মাছ উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বিপণনে গড়ে উঠেছে ৩৮টি হ্যাচারি, ৩৬৭টি নার্সারি, ছয়টি মৎস্য প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্র, ৬২টি আড়ত, ৪১৫টি ডিপো, ৫৪টি বরফ কল, ২৫টি মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ও ৬৮টি পাইকারি মৎস্য বিপণন কেন্দ্র।তবে, মৎস্য খাতে চাষিদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সেবা প্রদানে জনবল বাড়ানো, চাষিদের প্রশিক্ষণ ও এ খাতে খামারিদের ভর্তুকি দিয়ে উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।জেলার শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা গ্রামের আসাদুল ইসলাম এই প্রতিবেদককে বলেন, কৃষিখাতে পরামর্শ ও সেবা দেওয়ার জন্য প্রত্যেক ইউনিয়নে এক থেকে দুইজন করে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রয়েছেন। কিন্তু মৎস্যখাতে এ ধরনের কাউকে কাছে পাওয়া যায় না। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।আশাশুনির শোভনালী গ্রামের মৎস্যচাষি উদয় মণ্ডল এই প্রতিবেদককে বলেন, আমরা যারা মাছ চাষ করি, তাদের ভর্তুকি দেওয়া হয় না। যে বিদ্যুৎ ব্যবহার করি, তার মূল্য দিতে হয় বাণিজ্যিক রেটে। সব সময় আমরা বৈষম্যের শিকার হই।জনবল সংকটের কথা স্বীকার করে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আব্দুল ওয়াদুদ এই প্রতিবেদককে বলেন, আমাদের জেলা ও উপজেলা কার্যালয়ে জনবল রয়েছে চার থেকে পাঁচজন করে। অনেক সময় আমাদের বিভিন্ন পরীক্ষা, ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাসহ বিভিন্ন সরকারি কাজে ব্যস্ত থাকতে হয়। তাই সেবা ও পরামর্শ পেতে মৎস্য চাষিদের বেগ পেতে হয়।
তিনি বলেন, মৎস্য উৎপাদনে সাতক্ষীরা একটি সম্ভাবনাময় জেলা। মৎস্যচাষিদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সেবা দিতে জনবল বাড়ানো জরুরি। এছাড়া বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করে এ খাতে ভর্তুকি বাড়ালে মৎস্য উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব।কৃষিখাতের মতো মৎস্যখাতে ভর্তুকি দিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।