By using this site, you agree to the Privacy Policy and Terms of Use.
Accept

প্রকাশনার ৫২ বছর

দৈনিক জন্মভূমি

পাঠকের চাহিদা পূরণের অঙ্গীকার

  • মূলপাতা
  • জাতীয়
  • আন্তর্জাতিক
  • রাজনীতি
  • খেলাধূলা
  • বিনোদন
  • জেলার খবর
    • খুলনা
    • চুয়াডাঙ্গা
    • বাগেরহাট
    • মাগুরা
    • যশোর
    • সাতক্ষীরা
  • ফিচার
  • ই-পেপার
  • ALL E-Paper
Reading: সাতক্ষীরার কুমড়ার বড়ি সারা দেশে জনপ্রিয়
Share
দৈনিক জন্মভূমিদৈনিক জন্মভূমি
Aa
  • মূলপাতা
  • জাতীয়
  • জেলার খবর
  • ই-পেপার
অনুসন্ধান করুন
  • জাতীয়
  • জেলার খবর
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলাধূলা
  • বিনোদন
  • ই-পেপার
Have an existing account? Sign In
Follow US
প্রধান সম্পাদক মনিরুল হুদা, প্রকাশক আসিফ কবীর কর্তৃক জন্মভূমি প্রকাশনী লি: ১১০/২,সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর বালু সড়ক, খুলনা থেকে মূদ্রিত ও প্রকাশিত
দৈনিক জন্মভূমি > জেলার খবর > সাতক্ষীরা > সাতক্ষীরার কুমড়ার বড়ি সারা দেশে জনপ্রিয়
তাজা খবরসাতক্ষীরা

সাতক্ষীরার কুমড়ার বড়ি সারা দেশে জনপ্রিয়

Last updated: 2025/11/27 at 12:57 PM
জন্মভূমি ডেস্ক 6 days ago
Share
SHARE

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি ‌: সাতক্ষীরা জেলার দেবহাটা উপজেলাতে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে দেখা যায় চাল কুমড়ার বড়ি দেওয়ায় ব্যস্ত সময় পার করছে গৃহিণীরা। শীতকালের অন্যতম জনপ্রিয় একটি সুস্বাদু ও পরিচিত খাবার কুমড়ার বড়ি। তরকারির সাথে এই কু থেকেমড়ার বড়ি রান্না করে খাওয়ার প্রচলন বহু বছরের। শীতের মৌসুম এলেই দেবহাটাসহ সাতক্ষীরা জেলাজুড়ে শুরু হয় কুমড়া বড়ি তৈরির মহোৎসব। কিন্তু অন্যান্য বছরের তুলনায় এই বছর শীতের শুরু থেকেই কুমড়ার বড়ি তৈরির ধুম পড়ে গেছে , প্রায় বাড়িতে বড়ি তৈরির কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে গৃহিণীরা।
গ্রাম থেকে শহরের অনেকেই নিজেদের খাওয়ার পাশাপাশি জীবিকা হিসেবে বেছে নিয়েছে এই কুমড়া বড়ি তৈরির কাজ। দেবহাটা উপজেলার প্রায় প্রতিটা বাড়িতে দেখা যায় শীত এলেই মাষকলাই ডালের সাথে চাল কুমড়া দিয়ে বিশেষ পদ্ধতিতে বড়ি তৈরি করা হয়। শীতের কাক ডাকা ভোরে মহিলারা বিশেষ পদ্ধতিতে দলবেঁধে কুমড়োর বড়ি দেওয়া শুরু করলেও মূলত আগের দিন থেকে শুরু করতে হয় মূল কর্মযজ্ঞ। মূলত অগ্রহায়ণ মাস থেকে শুরু করে ফাল্গুন মাস পর্যন্ত চলে কুমড়া বড়ি তৈরির মহোৎসব। কেউ কেউ নিজেরা মিলে, আবার কেউ পাড়ার সবাই একসাথে তৈরি করে এই বিশেষ সুস্বাদু কুমড়ার বড়ি।
কুমড়ো বড়ি তৈরির প্রধান উপকরণ মাসকলাইয়ের ডাল আর চালকুমড়া। এর সাথে সামান্য মসলা। বাজারে প্রতি কেজি মাষকলাই ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা আর চাল কুমড়া ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। সাইজ হিসেবে চালকুমড়া ১০০ থেকে ৭০ টাকার মধ্যে ক্রয় করা যায়। ৩ কেজি চালকুমড়ার সাথে ১ কেজি মাসকলাইয়ের মিশ্রণে কুমড়া বড়ি ভালো হয়।
প্রথমে মাষকলাই রোদে শুকিয়ে জাঁতায় ভেঙে পরিষ্কার করে বা না ভেঙে পানিতে ভিজিয়ে রেখে খোসা ছাড়িয়ে নিতে হয়। মাষকলাই ডাউল মা বোনেরা সন্ধ্যায় পানিতে ভেজাইয়া রেকে সকালে উঠাইয়া তারপর ঢেঁকি বা শিলপাটায় বেটে নিয়ে কুমড়ো ও ডাউল মাটির মালসাথে বড়ির মিশ্রণ তৈরি করে ফ্যানাইয়া বড়ির উপকরণ তৈরি করে মাঠ, বাড়ির আঙিনা, ছাদ বা খোলা জায়গায় ভোর থেকে বড়ি বসানো শুরু করা হয়। পাতলা কাপড়ে সারি সারি বড়ি বসানো হয়। কুমড়ো বড়ি বসানোর পর দুই-তিন দিন একটানা রোদে শুকানো হয়। সূর্যের আলো কম হলে ৩-৪ দিন পর্যন্ত শুকাতে সময় লেগে যায়। শুকানোর পর কাপড় থেকে বড়ি উঠিয়ে পাত্রে সংরক্ষণ করা হয়। উপজেলা জগন্নাথপুর গ্রামের ওজিলা বেগম বলেন আমরা আগে ডাল মাটির মালশায় তে হিজুর দিয়ে বেটে ফেসে ফেলতাম কিন্তু বর্তমান সময় মেশিনে দিয়ে সব কিছু একেবার মিক্সিং করে দিচ্ছে তাতে আমাদের কস্টও কমে গেছে। মাহমুদা বেগম সখিপুর গ্রামের এক গৃহিণী তিনি জানান, কুমড়া বড়ি গৃহিণীদের জন্য শীতকালীন একটা যেন একটা রুটিন মাফিক কাজ। এ বড়ি নিয়ে গ্রাম্য সমাজে রয়েছে নানা কুসংস্কার। কেউ বড়ি দিলে ওইদিন যদি কুয়াশায় সূর্যের দেখা না মেলে তাহলে অনেকে বলে থাকেন বড়ি দেয়া গৃহিনীর কারনে সূর্য়ের দেখা মিলছেনা। যদিও এ কথার সাথে বাস্তবতার কোন মিল নেই।দেবহাটার সখিপুর বাজারের মুদি দোকানদার এলাহি বক্স জানান, তিনি দোকানে সব জিনিসের সাথে সব ধরনের ডালও বিক্রি করেন। তবে শীত শুরু হলে বড়ি দেয়া কলাইয়ের ডাল খুব বিক্রি হয়। অন্য বছরের তুলনায় এ বছর কলাইয়ের ডালের ব্যাপক চাহিদা।

কুমড়ার বড়ি দিলে তরকারীর স্বাদই পাল্টে যায়। পাকা কুমড়া সাধারনত শীতের শুরুতেই পাওয়া যায়। এ কুমড়ার সাথে কলাইয়ের ডাল পিসে কাপড় অথবা বিশেষ নেটে ছোট ছোট বড়ি করে রোদে শুকালেই খাওয়ার উপযোগী হয়ে ওঠে। এটাই তরকারীর মধ্যে দিলে তা হয়ে ওঠে অত্যন্ত সুস্বাদু। শীত মৌসুমের দেওয়া বড়ি সংরক্ষণ করে সারাবছর খাওয়া হয়। ফলে শীতের শুরু থেকেই শ্যামনগরে বাড়ি বাড়ি গৃহিণীরা এ কুমড়ার বড়ি দেওয়া নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। বাড়ি বাড়ি এ যেন গৃহিণীদের চিরাচরিত্র উৎসব হয়ে উঠেছে, একাধিক গৃহিণী জানান, সারাদেশে কি হয় তারা জানেন না তবে শীত আসলেই এ অঞ্চলের গ্রাম থেকে শুরু করে শহরের পরিবারগুলোতে এ কুমড়ার বড়ি দেয়া হয়। এ বড়ি ঘরে রেখে সারা বছর তরকারিতে দিয়ে তরকারি সুস্বাদু করে খাওয়া হয়। এর আগে বর্ষা মৌসুমে গ্রামাঞ্চালের প্রায় বাড়িতে লাগানো হয় কুমড়া গাছ। এ গাছগুলো লতিয়ে গেলে উঠিয়ে দেয়া হয় বসবাসের ঘর, গোয়ালঘর, রান্নাঘরের ছাদ অথবা চালে, কোন কোন ক্ষেত্রে মাচা করে এ গাছের লতাগুলো উঠিয়ে দেয়া হয়। কোন প্রকার সার ছাড়াই এখানে আপন গতিতে লতিয়ে বেড়ে উঠে এক সময় কুমড়ার ফুল ও ফল আসতে শুরু করে। প্রথম পর্যায়ে কাঁচা বা জালি কুমড়া তরকারী অথবা ভাজি করে খাওয়া হয়। বাকিগুলো রেখে দেয়া হয় বড়ি দেওয়ার জন্য। কুমড়াগুলো ধীরে ধীরে বড় হয়ে ছাদে অথবা টাল বা মাচংয়ে ঝুলতে থাকে। এক পর্যায়ে কুমড়া পেকে এর গায়ে সাদা গুড়া পড়ে যায়। সাথে সাথে গাছের তরতাজা ভাব কেটে গিয়ে এক পর্যায়ে মাছও মরে যায়। তখন গৃহিণীরা কুমড়াগুলো ঘরে রেখে সংরক্ষণ করে শীতের জন্য অপেক্ষা করেন। এরপর শীতের শুরুতে নতুন কলাইয়ের ডাল ক্ষেত থেকে উঠলে অথবা বাজারে আসলে এ কলাইয়ের ডাল এনে পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হয়। পরে এ ডাল পানিতে ভিজে রসালো হয়ে উঠলে পরে উপরের কালো ছাল তুলে ফেলা হয়। এরপর কুমড়া কেটে ছোট ছোট টুকরা বড়ির সাথে মিশিয়ে মেশিনে অথবা ঢেঁকিতে একসাথে পিসে মন্ডাকার করা হয়। এরপর বাড়িতে এনে পাত্রে ফেলে হাত দিয়ে উত্তমরুপে মাখানো হয়। এক পর্যায়ে আঠালো হয়ে উঠলে নতুন কোন নেট, টিন, চালুনী, পরিষ্কার কাপড়ে ছোট ছোট বড়ি আকারে দিয়ে রোদে শুকাতে হয়। এরপর এটা হয় তরকারীতে দেয়ার উপযোগী, শ্যামনগর উপজেলার নকিপুর গ্রামের মারুফা খাতুন জানান শীত মৌসুমে কুমড়ার বড়ি দেয়াটা সকল পরিবারের মহিলারা একটা উৎসব বলে মনে করে। কেননা প্রতিটি পরিবারেই এটার জন্য আয়োজন থাকে। তিনি জানান, আবহমান কাল থেকেই এটার চালু রয়েছে। তবে পূর্বের চেয়ে এখন এটা দেওয়ার জন্য কষ্ট কমে গেছে। কেননা পূর্বে এ ডাল পিসা হতো ঢেঁকিতে। কিন্ত বর্তমানে যন্ত্র নির্ভর সময়ে এটা করা হচ্ছে। ফলে শীতের রাতে রাত জেগে ঢেঁকিতে আর পাড় দিতে হবে না। তাছাড়াও গ্রামে এখন সচারাচর ঢেঁকিও পাওয়া যায় না। উপজেলার নকিপুর গ্রামের গৃহিণী ওজিলা বেগম জানান, এ বছর তিনি প্রতিকেজি ১৭০-১৮০ টাকা দরে কলাইয়ের ডাল ও ৩০ টাকা প্রতিকেজি দরে ৩ টি কুমড়া কিনে বড়ি দিয়েছেন। অর্ধেকটা পরিবারের জন্য রেখে বাকিটা ঢাকা শহরে বসবাসরত এক আত্বীয়ের বাসায় পাঠাবেন। তিনি জানান, বড়ি ভালোমত শুকিয়ে সংরক্ষণ করলে সারাবছর খাওয়া যায়। মাছ না থাকলেও তরকারী বড়ি দিয়ে রান্না করলে অত্যন্ত লোভনীয় স্বাদ হয়। মাহমুদা বেগম জানান, কুমড়া বড়ি গৃহিণীদের জন্য শীতকালীন একটা যেন একটা রুটিন মাফিক কাজ। এ বড়ি নিয়ে গ্রাম্য সমাজে রয়েছে নানা কুসংস্কার। কেউ বড়ি দিলে ওইদিন যদি কুয়াশায় সূর্যের দেখা না মেলে তাহলে অনেকে বলে থাকেন বড়ি দেয়া গৃহিনীর কারনে সূর্য়ের দেখা মিলছেনা। যদিও এ কথার সাথে বাস্তবতার কোন মিল নেই। শ্যামনগর বাজারের মুদি দোকানদার এলাই বক্স জানান, তিনি দোকানে সব জিনিসের সাথে সব ধরনের ডালও বিক্রি করেন। তবে শীত শুরু হলে বড়ি দেয়া কলাইয়ের ডাল খুব বিক্রি হয়। অন্য বছরের তুলনায় এ বছর কলাইয়ের ডালের ব্যাপক চাহিদা। প্রতিকেজি ডাল এখন ১৭০-১৮০ টাকায় বিক্রি করছেন।
শীতকালের অন্যতম জনপ্রিয় একটি সুস্বাদু ও পরিচিত খাবার কুমড়ার বড়ি। তরকারির সাথে এই কুমড়ার বড়ি রান্না করে খাওয়ার প্রচলন বহু বছরের। শীতের মৌসুম এলেই দেবহাটাসহ সাতক্ষীরা জেলাজুড়ে শুরু হয় কুমড়া বড়ি তৈরির মহোৎসব। কিন্তু অন্যান্য বছরের তুলনায় এই বছর শীতের শুরু থেকেই কুমড়ার বড়ি তৈরির ধুম পড়ে গেছে , প্রায় বাড়িতে বড়ি তৈরির কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে গৃহিণীরা।গ্রাম থেকে শহরের অনেকেই নিজেদের খাওয়ার পাশাপাশি জীবিকা হিসেবে বেছে নিয়েছে এই কুমড়া বড়ি তৈরির কাজ। দেবহাটা উপজেলার প্রায় প্রতিটা বাড়িতে দেখা যায় শীত এলেই মাষকলাই ডালের সাথে চাল কুমড়া দিয়ে বিশেষ পদ্ধতিতে বড়ি তৈরি করা হয়। শীতের কাক ডাকা ভোরে মহিলারা বিশেষ পদ্ধতিতে দলবেঁধে কুমড়োর বড়ি দেওয়া শুরু করলেও মূলত আগের দিন থেকে শুরু করতে হয় মূল কর্মযজ্ঞ। মূলত অগ্রহায়ণ মাস থেকে শুরু করে ফাল্গুন মাস পর্যন্ত চলে কুমড়া বড়ি তৈরির মহোৎসব। কেউ কেউ নিজেরা মিলে আবার কেউ পাড়ার সবাই একসাথে তৈরি করে এই বিশেষ সুস্বাদু কুমড়ার বড়ি।
কুমড়ো বড়ি তৈরির প্রধান উপকরণ মাসকলাইয়ের ডাল আর চালকুমড়া। এর সাথে সামান্য মসলা। বাজারে প্রতি কেজি মাষকলাই ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা আর চাল কুমড়া ৩০ থেকে ৩৫  টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। সাইজ হিসেবে চালকুমড়া ১০০ থেকে ৭০ টাকার মধ্যে ক্রয় করা যায়। ৬ কেজি চালকুমড়ার সাথে ২ কেজি মাসকলাইয়ের মিশ্রণে কুমড়া বড়ি ভালো হয়।প্রথমে মাষকলাই রোদে শুকিয়ে জাঁতায় ভেঙে পরিষ্কার করে বা না ভেঙে পানিতে ভিজিয়ে রেখে খোসা ছাড়িয়ে নিতে হয়। ৫-৬ ঘণ্টা মাষকলাই পানিতে ভেজাতে হয়। তারপর ঢেঁকি বা শিলপাটায় বেটে নিয়ে কুমড়ো বড়ির মিশ্রণ তৈরি করা হয়।

সাতক্ষীরার তালা উপজেলার গ্রামে গ্রামে শীতের উপাদেয় খাবার কুমড়ো বড়ি তৈরির ধুম পড়েছে। প্রতিবছর শীত মৌসুমে কুমড়োর বড়ি তৈরিতে ব্যস্ত থাকেন এখানকার নারীরা। মাষকলাই ভিজিয়ে সেই ডালের সঙ্গে পাকা চালকুমড়ো মিশিয়ে তৈরি করা হয় এ সুস্বাদু বড়ি। শীতের সময় গ্রামের প্রায় ৮০ ভাগ মহিলা পালা করে বড়ি তৈরি করার কাজটি করে থাকেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তালা উপজেলার নারীরা এই বড়ি তৈরি করার জন্য বেশ কয়েক মাস আগে থেকে চাহিদামতো পাকা চালকুমড়োর ব্যবস্থা করেন। কুমড়ো বড়ি তৈরিতে মূলত চালকুমড়া এবং মাষকলাইয়ের ডাল প্রয়োজন হয়। মাষকলাইয়ের ডাল ছাড়া অন্য ডালেও তৈরি করা যায় এই বড়ি। মচমচে করে রোদে শুকাতে পারলে এই বড়ির ভালো স্বাদ পাওয়া যায়।

বড়ি তৈরি করা বিষয়ে মহান্দী গ্রামের দীপালি রানি জানান, বড়ি তৈরির আগের দিন ডাল ভিজিয়ে রাখতে হয়। চালকুমড়া ছিলে ভেতরের নরম অংশ ফেলে মিহিভাবে কুচি করে রাখতে হয়। এরপর কুমড়ো খুব ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার পাতলা কাপড়ে বেঁধে সারা রাত ঝুলিয়ে রাখতে হয়। অন্যদিকে ডালের পানি ছেঁকে শিলপাটায় বেটে নিতে হয়।
এরপর বাটা ডালের সঙ্গে কুমড়ো মেশাতে হয়। যতক্ষণ না ডাল-কুমড়োর মিশ্রণ হালকা হয়, ততক্ষণ খুব ভালো করে হাত দিয়ে এ মিশ্রণ মিশাতে হয়। এরপর কড়া রোদে চাটি বা কাপড় বিছিয়ে বড়ির ছোট ছোট আকার দিয়ে একটু ফাঁকা ফাঁকা করে বসিয়ে শুকাতে হয়। এভাবে বড়ি তিন থেকে চার দিন রোদে শুকিয়ে অনেক দিন পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যায়।
তালার শাহাপুর গ্রামের ফাতেমা বেগম বলেন, ‘শীতের সময় মূলত বড়ি তৈরি করা হয়। এ বড়ি নিজেদের খাওয়াসহ আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতেও পাঠানো হয়।’
তালা বাজারের বড়ি বিক্রেতা মামুন বলেন, ‘শীতকালে বাজারে কুমড়ো বড়ির যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে। এ সময় কুমড়োর বড়ি তৈরি করে আমাদের মোটামুটি ভালো আয় হয়।’
সাতক্ষীরায় শীতকালের অন্যতম জনপ্রিয় একটি সুস্বাদু ও পরিচিত খাবার কুমড়োর বড়ি। তরকারির সাথে এই কুমড়োর বড়ি রান্না করে খাওয়ার প্রচলন বহু বছরের। শীতের মৌসুম এলেই সাতক্ষীরা জেলা জুড়ে শুরু হয় কুমড়া বড়ি তৈরির মহোৎসব। কিন্তু অন্যান্য বছরের তুলনায় এই বছর শীতের শুরু থেকেই কুমড়ার বড়ি তৈরির ধুম পড়ে যায় এবং এখন পর্যন্ত বড়ি তৈরির কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে সাতক্ষীরার গৃহিণীরা।
গ্রাম থেকে শহরের অনেকেই নিজেদের খাওয়ার পাশাপাশি জীবিকা হিসেবে বেছে নিয়েছে এই কুমড়া বড়ি তৈরির কাজ। সাতক্ষীরা জেলার প্রায় প্রতিটা বাড়িতে দেখা যায় শীত এলেই মাষকলাই ডালের সাথে চাল কুমড়া দিয়ে বিশেষ পদ্ধতিতে বড়ি তৈরি করা হয়।
শীতের কাকডাকা ভোরে মহিলারা বিশেষ পদ্ধতিতে দলবেঁধে কুমড়োর বড়ি দেওয়া শুরু করলেও মূলত আগের দিন থেকে শুরু করতে হয় মূল কর্মযজ্ঞ। সাতক্ষীরায় মূলত অগ্রহায়ণ মাস থেকে শুরু করে ফাল্গুন মাস পর্যন্ত চলে কুমড়া বড়ি তৈরির মহোৎসব। কেউ কেউ নিজেরা মিলে আবার কেউ পাড়ার সবাই একসাথে তৈরি করে এই বিশেষ সুস্বাদু কুমড়ার বড়ি।
বড়ি তৈরির ব্যাপারে সদরের ফয়জুল্যাপুর গ্রামের গৃহবধূ ফিরোজা বেগম জানান, গ্রাম বাংলায় আবহমান কাল ধরে বিশেষ পদ্ধতিতে তৈরি অত্যন্ত সুস্বাদু এই কুমড়োর বড়ি তরকারিতে ভিন্ন মাত্রা যোগ করে। ছোট বড় সকলের প্রিয় সুস্বাদু এই বড়ির চাহিদা সারা বছর থাকলেও শীতকালে শুধু তৈরি করা হয়। পরিবারের সারা বছরের চাহিদা অনুযায়ী সংরক্ষণের পাশাপাশি আত্মীয় স্বজনের বাড়িতেও কুমড়োর বড়ি দিয়ে থাকি। আসলে কুমড়ার বড়ি তৈরি গ্রাম বাংলার পুরানো ঐতিহ্য।
তিনি আরও জানান, তার ৪০ বছরের জীবনে ছোট থেকে দেখে আসছেন শীতকাল পড়লে গ্রামের মা-বোন ও চাচিরা মিলে কুমড়া দিয়ে বড়ি তৈরি করতে। এটা খেতেও অনেক সুস্বাদু হয়। এই কুমড়ার বড়ি বিভিন্ন রকম তরকারির সাথে দিয়ে রান্না করলে তরকারিতে অন্য রকম মজাদার ও লোভনীয় স্বাদ আসে। আগে যেমন তারা দেখতেন মা-চাচিরা বাড়িতে শীল-নোড়া, হিজিড়-মালশায় ফেলে ডাল বাটা-কুটার কাজ করতো।
কিন্তু এখন আধুনিকতার ছোঁয়ায় ডাল ও কুমড়া বাটা-কুটার মেশিন বের হয়েছে। মেশিনে কুটার কারণে এখন তাদের অনেক কষ্ট কম হয় এবং সময়ও তুলনামূলক অনেক কম লাগে। নিজেদের পরিবারের চাহিদা মতো বড়ি তৈরির পাশাপাশি প্রতিবেশী ও আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে দেওয়া হয় বলে আমাদের একটু বেশি তৈরি করতে হয় বলে জানান তিনি।
এছাড়া বর্তমানে গ্রামের অনেক গৃহিণীরা আর্থিক লাভবান হওয়ার আশায় নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে বাড়তি কিছু উপার্জনের আশায় কুমড়োর বড়ি বানিয়ে বাজারে বিক্রি করেন। এই কুমড়া বড়ি গ্রাম থেকে কিনে অনেকে আবার শহরে নিয়ে যান বিক্রি করতে।
এই বড়ি কেজি প্রতি দু’শ থেকে তিনশ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করা হয়। যার কারণে অনেক মহিলারা এটাকে আবার পেশা হিসেবেও বেছে নিয়েছেন। সারাদেশে পর্যাপ্ত চাহিদা থাকায় এবং কুমড়োর বড়ি তৈরির উপকরণ সহজলভ্য হওয়ায় সাতক্ষীরার অত্যন্ত সুস্বাদু ও জনপ্রিয় খাবারটিকে ঘিরে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে অনেকেরই কর্মসংস্থান গড়ে তোলা সম্ভব বলে অভিজ্ঞমহলের ধারণা।
সাতক্ষীরায় শীতকালের অন্যতম জনপ্রিয় একটি সুস্বাদু ও পরিচিত খাবার কুমড়োর বড়ি। তরকারীর সাথে এই কুমড়োর বড়ি রান্না করে খাওয়ার প্রচলন বহু বছরের। শীতের মৌসুম এলেই সাতক্ষীরা জেলা জুড়ে শুরু হয় কুমড়া বড়ি তৈরির মহোৎসব। কিন্তু অন্যান্য বছরের তুলনায় এই বছর শীতের শুরু থেকেই কুমড়ার বড়ি তৈরির ধুম পড়ে যায় এবং এখন পর্যন্ত বড়ি তৈরির কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে সাতক্ষীরার গৃহীনিরা। গ্রাম থেকে শহরের অনেকেই নিজেদের খাওয়ার পাশাপাশি জীবিকা হিসেবে বেছে নিয়েছে এই কুমড়া বড়ি তৈরির কাজ। সাতক্ষীরা জেলার প্রায় প্রতিটা বাড়িতে দেখা যায় শীত এলেই মাসকলাই ডালের সাথে চাল কুমড়া দিয়ে বিশেষ পদ্ধতিতে বড়ি তৈরি করা হয়।
শীতের কাকডাকা ভোরে মহিলারা বিশেষ পদ্ধতিতে দলবেঁধে কুমড়োর বড়ি দেওয়া শুরু করলেও মুলত আগের দিন থেকে শুরু করতে হয় মুল কর্মযজ্ঞ। সাতক্ষীরায় মুলত অগ্রহায়ণ মাস থেকে শুরু করে ফাল্গুন মাস পর্যন্ত চলে কুমড়া বড়ি তৈরির মহোৎসব। কেউ কেউ নিজেরা মিলে আবার কেউ কেউ পাড়ার অনেকেই একসাথে মিলে তৈরি করে এই বিশেষ সুস্বাদু কুমড়ার বড়ি। বড়ি তৈরির ব্যাপারে সদরের ফয়জুল্যাপুর গ্রামের গৃহবধূ ফিরোজা বেগম বলেন-গ্রাম বাংলায় আবহমান কাল ধরে বিশেষ পদ্ধতিতে তৈরি অত্যন্ত সুস্বাদু এই কুমড়োর বড়ি তরকারিতে ভিন্ন মাত্রা যোগ করে। ছোট বড় সকলের প্রিয় সুস্বাদু এই বড়ির চাহিদা সারা বছর থাকলেও শীতকালে শুধু তৈরী করা হয়।পরিবারের সারা বছরের চাহিদা অনুযায়ী সংরক্ষণের পাশাপাশি আত্মীয় স্বজনের বাড়িতেও কুমড়োর বড়ি দিয়ে থাকি।আসলে কুমড়ার বড়ি তৈরি গ্রাম বাংলার পুরানো ঐতিহ্য। তার বয়স প্রায় ৪০ বছর, তিনি ছোট থেকে দেখে আসছেন শীতকাল পড়লে গ্রামের মা-বোন ও চাচিরা মিলে কুমড়া দিয়ে বড়ি তৈরি করতে। এটা খেতেও অনেক সুস্বাদু হয়। এই কুমড়ার বড়ি বিভিন্ন রকম তরকারির সাথে দিয়ে রান্না করলে তরকারিতে অন্য রকম মজাদার ও লোভনীয় স্বাদ আসে। আগে যেমন তারা দেখতেন মা-চাচিরা বাড়িতে শীল-নোড়া, হিজিড়-মালশায় ফেলে ডাল বাটা/কুটার কাজ করতো। কিন্তু এখন আধুনিকতার ছোয়ায় ডাল ও কুমড়া বাটা/কুটার মেশিন বের হয়েছে।মেশিনে কুটার কারণে এখন তাদের অনেক কষ্ট কম হয় এবং সময়ও তুলনামূলক অনেক কম লাগে। নিজেদের পরিবারের চাহিদা মতো বড়ি তৈরির পাশাপাশি প্রতিবেশী ও আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে দেওয়া হয় বলে আমাদের একটু বেশি তৈরি করতে হয় বলে তিনি জানান।
এছাড়া বর্তমানে গ্রামের অনেক গৃহিনীরা আর্থিক লাভবান হওয়ার আশায় নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে বাড়তি কিছু উপার্জনের আশায় কুমড়োর বড়ি বানিয়ে বাজারে বিক্রি করেন। এই কুমড়া বড়ি গ্রাম থেকে কিনে অনেকে আবার শহরে নিয়ে যান বিক্রি করতে। এই বড়ি কেজি প্রতি ২শ থেকে ৩শ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করা হয়। যার কারণে অনেক মহিলারা এটাকে আবার পেশা হিসেবেও বেছে নিয়েছেন। সারাদেশে পর্যাপ্ত চাহিদা থাকায় এবং কুমড়োর বড়ি তৈরির উপকরণ সহজলভ্য হওয়ায় সাতক্ষীরার অত্যন্ত সুস্বাদু ও জনপ্রিয় খাবারটিকে ঘিরে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে অনেকেরই কর্মসংস্থান গড়ে তোলা সম্ভব বলে অভিজ্ঞমহলের ধারণা।

কুমড়ার বড়ি দিলে তরকারীর স্বাদই পাল্টে যায়। পাকা কুমড়া সাধারনত শীতের শুরুতেই পাওয়া যায়। এ কুমড়ার সাথে কলাইয়ের ডাল পিসে কাপড় অথবা বিশেষ নেটে ছোট ছোট বড়ি করে রোদে শুকালেই খাওয়ার উপযোগী হয়ে ওঠে। এটাই তরকারীর মধ্যে দিলে তা হয়ে ওঠে অত্যন্ত সুস্বাদু। শীত মৌসুমের দেওয়া বড়ি সংরক্ষণ করে সারাবছর খাওয়া হয়। ফলে শীতের শুরু থেকেই শ্যামনগরে বাড়ি বাড়ি গৃহিণীরা এ কুমড়ার বড়ি দেওয়া নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। বাড়ি বাড়ি এ যেন গৃহিণীদের চিরাচরিত্র উৎসব হয়ে উঠেছে, একাধিক গৃহিণী জানান, সারাদেশে কি হয় তারা জানেন না তবে শীত আসলেই এ অঞ্চলের গ্রাম থেকে শুরু করে শহরের পরিবারগুলোতে এ কুমড়ার বড়ি দেয়া হয়। এ বড়ি ঘরে রেখে সারা বছর তরকারিতে দিয়ে তরকারি সুস্বাদু করে খাওয়া হয়। এর আগে বর্ষা মৌসুমে গ্রামাঞ্চালের প্রায় বাড়িতে লাগানো হয় কুমড়া গাছ। এ গাছগুলো লতিয়ে গেলে উঠিয়ে দেয়া হয় বসবাসের ঘর, গোয়ালঘর, রান্নাঘরের ছাদ অথবা চালে, কোন কোন ক্ষেত্রে মাচা করে এ গাছের লতাগুলো উঠিয়ে দেয়া হয়। কোন প্রকার সার ছাড়াই এখানে আপন গতিতে লতিয়ে বেড়ে উঠে এক সময় কুমড়ার ফুল ও ফল আসতে শুরু করে। প্রথম পর্যায়ে কাঁচা বা জালি কুমড়া তরকারী অথবা ভাজি করে খাওয়া হয়। বাকিগুলো রেখে দেয়া হয় বড়ি দেওয়ার জন্য। কুমড়াগুলো ধীরে ধীরে বড় হয়ে ছাদে অথবা টাল বা মাচংয়ে ঝুলতে থাকে। এক পর্যায়ে কুমড়া পেকে এর গায়ে সাদা গুড়া পড়ে যায়। সাথে সাথে গাছের তরতাজা ভাব কেটে গিয়ে এক পর্যায়ে মাছও মরে যায়। তখন গৃহিণীরা কুমড়াগুলো ঘরে রেখে সংরক্ষণ করে শীতের জন্য অপেক্ষা করেন। এরপর শীতের শুরুতে নতুন কলাইয়ের ডাল ক্ষেত থেকে উঠলে অথবা বাজারে আসলে এ কলাইয়ের ডাল এনে পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হয়। পরে এ ডাল পানিতে ভিজে রসালো হয়ে উঠলে পরে উপরের কালো ছাল তুলে ফেলা হয়। এরপর কুমড়া কেটে ছোট ছোট টুকরা বড়ির সাথে মিশিয়ে মেশিনে অথবা ঢেঁকিতে একসাথে পিসে মন্ডাকার করা হয়। এরপর বাড়িতে এনে পাত্রে ফেলে হাত দিয়ে উত্তমরুপে মাখানো হয়। এক পর্যায়ে আঠালো হয়ে উঠলে নতুন কোন নেট, টিন, চালুনী, পরিষ্কার কাপড়ে ছোট ছোট বড়ি আকারে দিয়ে রোদে শুকাতে হয়। এরপর এটা হয় তরকারীতে দেয়ার উপযোগী, শ্যামনগর উপজেলার নকিপুর গ্রামের নাজমা ‌‌খাতুন জানান শীত মৌসুমে কুমড়ার বড়ি দেয়াটা সকল পরিবারের মহিলারা একটা উৎসব বলে মনে করে। কেননা প্রতিটি পরিবারেই এটার জন্য আয়োজন থাকে। তিনি জানান, আবহমান কাল থেকেই এটার চালু রয়েছে। তবে পূর্বের চেয়ে এখন এটা দেওয়ার জন্য কষ্ট কমে গেছে। কেননা পূর্বে এ ডাল পিসা হতো ঢেঁকিতে। কিন্ত বর্তমানে যন্ত্র নির্ভর সময়ে এটা করা হচ্ছে। ফলে শীতের রাতে রাত জেগে ঢেঁকিতে আর পাড় দিতে হবে না। তাছাড়াও গ্রামে এখন সচারাচর ঢেঁকিও পাওয়া যায় না। উপজেলার নকিপুর গ্রামের গৃহিণী ওজিলা বেগম জানান, এ বছর তিনি প্রতিকেজি ১৭০-১৮০ টাকা দরে কলাইয়ের ডাল ও ৩০ টাকা প্রতিকেজি দরে ৩ টি কুমড়া কিনে বড়ি দিয়েছেন। অর্ধেকটা পরিবারের জন্য রেখে বাকিটা ঢাকা শহরে বসবাসরত এক আত্বীয়ের বাসায় পাঠাবেন। তিনি জানান, বড়ি ভালোমত শুকিয়ে সংরক্ষণ করলে সারাবছর খাওয়া যায়। মাছ না থাকলেও তরকারী বড়ি দিয়ে রান্না করলে অত্যন্ত লোভনীয় স্বাদ হয়। মাহমুদা বেগম জানান, কুমড়া বড়ি গৃহিণীদের জন্য শীতকালীন একটা যেন একটা রুটিন মাফিক কাজ। এ বড়ি নিয়ে গ্রাম্য সমাজে রয়েছে নানা কুসংস্কার। কেউ বড়ি দিলে ওইদিন যদি কুয়াশায় সূর্যের দেখা না মেলে তাহলে অনেকে বলে থাকেন বড়ি দেয়া গৃহিনীর কারনে সূর্য়ের দেখা মিলছেনা। যদিও এ কথার সাথে বাস্তবতার কোন মিল নেই। শ্যামনগর বাজারের মুদি দোকানদার এলাই বক্স জানান, তিনি দোকানে সব জিনিসের সাথে সব ধরনের ডালও বিক্রি করেন। তবে শীত শুরু হলে বড়ি দেয়া কলাইয়ের ডাল খুব বিক্রি হয়। অন্য বছরের তুলনায় এ বছর কলাইয়ের ডালের ব্যাপক চাহিদা। প্রতিকেজি ডাল এখন ১৭০-১৮০ টাকায় বিক্রি করছেন।
শীত মৌসুমের এক অনন্য খাবার কুমড়া বড়ি। সাধারণত তরকারিতে এই কুমড়া বড়ি দেয়া হয়। এতে তরকারির স্বাদ ও মান বৃদ্ধি পায়। চলমান শীতে সাতক্ষীরার কলারোয়ায় কুমড়া বড়ি তৈরী কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন অনেক নারীরা। কিছু কিছু স্থানে তাদের সাথে যোগ দিচ্ছেন পুরুষরাও। জানা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কুমড়া বড়ি তৈরীর ধুম পড়েছে। বহু নারী কুমড়া বড়ি তৈরীর কাজে জড়িত রয়েছেন। নিজেদের পরিবারের খাবারের জন্য এটি তৈরি করছেন। আবার কিছু কিছু এলাকায় বিক্রির জন্যও কুমড়া বড়ি প্রস্তুত করা হচ্ছে। আবার এই শীত মৌসুমে বাড়তি আয়ের লক্ষ্যে অনেক নারী ও পুরুষ কুমড়া বড়ি তৈরি করছেন। কুমড়া বড়ি তৈরি কাজে নিয়োজিত কয়েকজন নারী জানান, ‘শীতকাল কুমড়া বড়ি তৈরীর ভরা মৌসুম। এ সময় প্রায় প্রতিটা বাড়িতে কমবেশি কুমড়া বড়ি তৈরি করা হয়। অনেক ক্ষেত্রে পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে বাকিটা বাজারে বিক্রি করাও হচ্ছে। গ্রামাঞ্চলের নারীরা বাড়তি আয়ের জন্য কুমড়া বড়ি তৈরী করছেন।’
তারা জানান, ‘কুমড়া বড়ি তৈরীর প্রধান উপকরণ কলাইয়ের ডাল আর চাল কুমড়া। এর সাথে লবনসহ সামান্য মসলা। বাজারে প্রতি কেজি কলাই ডাল ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা আর চাল কুমড়া ২৫ থেকে ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। সাইজ হিসেবে চাল কুমড়া ৭০ থেকে ১০০ টাকার মধ্যে ক্রয় করা যায়। প্রতি কেজি কলাই ডালের সাথে ৩ কেজির মতো কুমড়ার মিশ্রণে কুমড়া বড়ি ভালো হয়। প্রথমে কলাই ডাল রৌদ্রে শুকিয়ে যাতায় ভেঙ্গে পরিস্কার করা হয়। সেই ডাল পানিতে ভিজিয়ে রেখে খোসা ছাড়িয়ে নিতে হয়। সাধারণত সন্ধ্যা থেকে রাতভর অর্থাৎ প্রায় ৫ থেকে ৬ ঘন্টা ডাল পানিতে ভিজিয়ে রাখা হয়। পরে শিল-পাটায় সেই ডাল বাটা হয়। আর চাল কুমড়া পিচ করে কেটে কুড়নিতে ঘষে মিহি করা হয়। এরপর দুইটির মিশ্রণ হাত দিয়ে ফেনিয়ে কুমড়া বড়ির উপকরণ তৈরী করা হয়। মাঠ, বাড়ির আঙ্গিনা, ছাদ বা খোলা জায়গায় পরিষ্কার কাপড় বা নেটে ভোর থেকে হাত দিয়ে বড়ি বসানো শুরু করা হয়। পাতলা কাপড়ে সারি সারি বড়ি বসানোর পর সেই বড়ি ৩/৪ দিন একটানা রৌদ্রে শুকানো হয়। বড়ি শুকিয়ে গেলে কাপড় থেকে বড়ি উঠিয়ে পাত্রে সংরক্ষণ করা হয়।’ তারা আরো বলেন, ‘তবে এখন উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কুমড়া বড়ি তৈরীর মেশিনেও মাড়াই করে কলাই ডাল ও কুমড়ার মিহি করা হচ্ছে।’
পৌর সদরের সাজিদা বেগম জানান, ‘৩ কেজি কুমড়ার সাথে ১ কেজি কলাইয়ের মিশ্রণে কুমড়া বড়ি ভাল তৈরি হয়। এখন বাজারে খোসা ছাড়ানো কলাই ডাল পাওয়া যায়। ডাল ভালো হলে বড়ির স্বাদও ভালো হয়। এছাড়াও অনেকে কুমড়া বড়ির সাথে পেয়াজ মিশ্রন দিয়ে থাকেন। প্রতি কেজি ডালের হিসেবে কুমড়া বড়ি তৈরি করতে পারিশ্রমিক হিসেবে ১০০ টাকা করে নেয়া হচ্ছে। সবমিলিয়ে প্রতি কেজি ডালের হিসেবে কুমড়া বড়ি তৈরি করতে আনুমানিক ২৭০ থেকে ২৮০ টাকা খরচ হচ্ছে। আর বাজারে ৩’শ টাকার উপরে কুমড়ার বড়ি বিক্রি হয়। এতে পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে বাড়তি আয় করা সম্ভব হচ্ছে।’ অনেকে জানান, ‘ কুমড়া বড়ি তরকারির একটি মুখরোচক উপাদান। এতে তরকারির স্বাদে যোগ হয় নতুন মাত্রা। শীত মৌসুমে কুমড়া বড়ি তৈরী করে অনেক নারীদের বাড়তি আয়ের সুযোগ হচ্ছে। তারা উপযুক্ত প্রশিক্ষণ ও পৃষ্ঠপোষকতা পেলে নিজেদের ভাগ্যোন্নয়ন গ্রামীন অর্থনীতিতে ইতিবাচক সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে।’
গ্রাম-বাংলার প্রতিটি বাড়িতে কুমড়ো বড়ি একটি অত্যন্ত প্রিয় এবং সাধারণ খাবার। পাবনার চাটমোহর এলাকার মানুষও দীর্ঘকাল ধরে কুমড়ো বড়ি তৈরি করে আসছে। শীতের তীব্রতায় কুমড়ো বড়ি যেন রসনায় তৃপ্তির নতুন মাত্রা যোগ করে। এটি শুধু গ্রামের গৃহিণীদের সযত্ন তৈরি করা একটি খাবার ছিল না, বরং একসময় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ যেমন কৈ, মাগুর, শৈল, জিওল ইত্যাদির সঙ্গে মিশিয়ে রান্না করে পরিবেশন করা হত।

জন্মভূমি ডেস্ক November 28, 2025
Share this Article
Facebook Twitter Whatsapp Whatsapp LinkedIn Email Copy Link Print
Previous Article রাজনীতির মূল উদ্দেশ্য হতে হবে মানুষের কল্যাণে কাজ করা
Next Article সাতক্ষীরায় ‌নতুন রূপে সেজেছে মিনি সুন্দরবন

দিনপঞ্জি

December 2025
S M T W T F S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031  
« Nov    
- Advertisement -
Ad imageAd image
আরো পড়ুন
তাজা খবরসাতক্ষীরা

উপকূলীয় মানুষের জন্ম রক্তে, মরণ লোনা পানিতে

By করেস্পন্ডেন্ট 1 hour ago
সাতক্ষীরা

পরিবর্তনের জন্য রাজনীতি

By জন্মভূমি ডেস্ক 11 hours ago
খুলনাতাজা খবর

খুলনা-১ আসনে জামায়াতের প্রার্থী কৃষ্ণ নন্দী

By জন্মভূমি ডেস্ক 11 hours ago

এ সম্পর্কিত আরও খবর

তাজা খবরসাতক্ষীরা

উপকূলীয় মানুষের জন্ম রক্তে, মরণ লোনা পানিতে

By করেস্পন্ডেন্ট 1 hour ago
সাতক্ষীরা

পরিবর্তনের জন্য রাজনীতি

By জন্মভূমি ডেস্ক 11 hours ago
খুলনাতাজা খবর

খুলনা-১ আসনে জামায়াতের প্রার্থী কৃষ্ণ নন্দী

By জন্মভূমি ডেস্ক 11 hours ago

প্রতিষ্ঠাতা: আক্তার জাহান রুমা

প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক: হুমায়ুন কবীর বালু

প্রকাশনার ৫২ বছর

দৈনিক জন্মভূমি

পাঠকের চাহিদা পূরণের অঙ্গীকার

প্রতিষ্ঠাতা: আক্তার জাহান রুমা

প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক: হুমায়ুন কবীর বালু

রেজি: কেএন ৭৫

প্রধান সম্পাদক: লে. কমান্ডার (অব.) রাশেদ ইকবাল, প্রকাশক: আসিফ কবীর কর্তৃক জন্মভূমি প্রকাশনী লি: ১১০/২,সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর বালু সড়ক, খুলনা থেকে মূদ্রিত ও প্রকাশিত

Developed By Proxima Infotech and Ali Abrar

Removed from reading list

Undo
Welcome Back!

Sign in to your account

Lost your password?