
সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার দেয়াড়া ইউনিয়নের খোরদো বাজারে জমে উঠেছে খেজুরের গুড় ও পাটালি বেচাকেনার হাট। প্রাচীন যুগ থেকে এই বাজার গুড়ের হাট নামে পরিচিত।
শীত মৌসুম আসলে বাজারে খেজুরে গুড় ও পাটালী আসা শুরু হয়। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের গুড় ব্যাপারীরা এসে এই বাজারে গুড় কেনার আগাম ঘরভাড়া নেন। সেজন্য শীত মৌসুম আসলেই দেখা যায় খেঁজুর গাছের গাছিদের ব্যস্ততার দৃশ্য।
খেজুর গাছ কাটা থেকে শুরু করে রস আহরণ করে সেই রস থেকে গুড় তৈরি করা পর্যন্ত বেশ ব্যস্ত সময় পার করে থাকেন এ জনপদের মানুষেরা। গ্রামাঞ্চলে খেজুর গাছিরা নিজেদের প্রয়োজন মিটিয়ে বাড়তি উপার্জনের জন্য তারা রস আগুনে জ্বালিয়ে তৈরি করেন গুড় ও গুড় থেকে তৈরিকৃত পাটালি।
স্থানীয় বাজারে চাহিদা মিটিয়ে গুড় ও পাটালী চলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলেও। উপজেলার খোরদো বাজারের খোরদো-চাকলা ব্রিজ সংলগ্ন গুড়ের হাট সপ্তাহে দু’দিন বৃহস্পতিবার ও রবিবার বসে। কপোতাক্ষ নদের তীর ঘেষা খোরদো বাজারস্থ ব্রিজের মুখ সংলগ্ন রাস্তার ধারে এ হাট সত্যি চোখে পড়ার মতো। শীতের মৌসুমে কলারোয়া উপজেলার অন্যতম প্রধান এ খেজুর গুড়ের হাট বেশ জমজমাট হয়ে থাকে বলে অনেকে জানিয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, ‘কলারোয়ার খেজুরের রসের রয়েছে আলাদা খ্যাতি বা জস। সেই খেজুরের রস জ্বালিয়ে তৈরি করা হয় গুড় ও পাটালি। উপজেলার খোরদো বাজারে খেজুর গুড় ও পাটালির হাটে গুড় ও পাটালি বিক্রি করতে আসেন পার্শ্ববর্তী যশোর জেলার মনিরামপুর ও কলারোয়া উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলের প্রায় ৩০/৩৫ টি গ্রামের খেজুর গাছের গাছিরা।’
গুড় বিক্রি করতে আসা দেয়াড়া গ্রামের মতিয়ার সরদার ও জব্বার সানা নামের খেজুর গাছি জানান, ‘এখনতো আগের মতো গাছ নেই। বিলুপ্তির পথে খেজুর গাছ। তাই রস এখন কম সংগ্রহ করা হয়, যা সংগ্রহ করতে পারি তাতে খরচটা কোন রকম বেঁচে থাকে। তারপর বর্তমান বাজারে এক ভাড় গুড়ের দামও কম পাওয়া যায়। যেটা কষ্ট এবং জ্বালানি খরচ হিসেবে তুলনামূলকভাবে কম।’
একইভাবে মনিরামপুরের চাকলা গ্রামের আতিয়ার রহমান জানান, ‘ব্যাপারিরা গুড়ের দাম কম বলে। যে দাম বলে, সেই দামে বিক্রয় করলে লাভ তো দূরে থাক, কষ্টের মুল্যও হবে না।’
অপরদিকে, হাটে আসা ব্যাপারিরা দাবি করেন, ‘গাছিরা তাদের সঠিক মূল্য পাচ্ছেন।’ তারা আরো বলেন, ‘গত বারের চেয়ে এ বছর গুড়ের দাম অনেক বেশি।’
গুড়ের ব্যাপারি হুমায়ুন কবির জানান, ‘এবছর গুড়ের দাম বেশি। গত বছর যে গুড়ের ভাড় ছিল ৫শ’ থেকে ৬শ’ টাকা, এ বছর সেই গুড়ের ভাড় সাড়ে ৮শ’ থেকে ৯শ’ এমনকি এক হাজার’ টাকা ক্রয় করতে হচ্ছে।’
স্থানীয়রা জানান, ‘এ গুড়ের হাট থেকে ব্যাপারিরা ভাড় ভর্তি গুড় ক্রয় করে নিজ নিজ এলাকায় নিয়ে চলে যান এবং প্লস্টিকের ড্রামে ভর্তি করে বা বিভিন্ন উপায়ে দেশের বিভিন্ন জেলা শহরে সরবরাহ করে থাকেন। বিশেষ করে দেশের উত্তরের জেলা গুলোর পাশাপাশি বরিশাল, পটুয়াখালী ও অন্যান্য এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়।’
বাজার সংশ্লিষ্টরা জানান, ‘শুধু হুমায়ুন কবির নয়, বরিশাল জেলা থেকে ২/৩ জন ও কলারোয়ার পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসা একদল গুড়ের ব্যাপারি প্রতিনিয়ত খোরদো বাজারের গুড়ের হাট থেকে পাইকারী দামে গুড় ও পাটালি কিনে অন্যত্র বিক্রি করে থাকেন।’
এদিকে স্থানীয় গুড় ব্যবসাযীরা বলেন, ‘খোরদো বাজারের খেজুর গুড়ের হাট থেকে গুড় কিনে ড্রাম ভর্তি করে গোডাউনে স্টক করেও রাখেন অনেক ব্যবসায়ীরা। পরে শীত মৌসুম চলে গেলে সেই গুড় ও পাটালি চড়া দামে বিক্রয় করে থাকেন তারা।’ সবমিলিয়ে ইতোমধ্যে জমে উঠেছে এখানকার খেজুরের গুড় ও পাটালির হাট।
সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার খোরদো বাজারে জমে উঠেছে খেঁজুরের গুড় ও পাটালি বেচাকেনার হাট। শতবছরের প্রাচীন যুগ থেকে এই বাজার গুড়ের হাট নামে পরিচিত লাভ করেছে। শীত মৌসুম আসলে বাজারে খেজুরে গুড় ও পাটালী আসা শুরু হয়।
দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের গুড় ব্যাপারীরা এসে এই বাজারে গুড় কেনার আগাম ঘরভাড়া নেয়। সেজন্য শীত মৌসুম আসলেই দেখা যায় খেঁজুর গাছের গাছিদের ব্যস্ততার দৃশ্য। খেঁজুর গাছ কাটা থেকে শুরু করে রস আহরণ করে সেই রস থেকে গুড় তৈরি করা পর্যন্ত বেশ ব্যস্ত সময় পার করে থাকেন এ জনপদের মানুষেরা। গ্রামা লে খেঁজুর গাছিরা নিজেদের প্রয়োজন মিটিয়ে বাড়তি উপার্জনের জন্য তারা রস আগুনে জ্বালিয়ে তৈরি করেন গুড় ও গুড় থেকে তৈরিকৃত পাটালি।
স্থানীয় বাজারে চাহিদা মিটিয়ে গুড় ও পাটালী চলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। কলারোয়া উপজেলার খোরদো বাজারের খোরদো-চাকলা ব্রিজ সংলগ্ন গুড়ের হাট সপ্তাহে দু’দিন বৃহস্পতিবার ও রবিবার বসে। কপোতাক্ষ নদের তীর ঘেষা খোরদো বাজারস্থ ব্রিজের মুখ সংলগ্ন রাস্তার ধারে এ হাট সত্যি চোখে পড়ার মতো। শীতের মৌসুমে কলারোয়া উপজেলার অন্যতম প্রধান এ খেঁজুর গুড়ের হাট বেশ জমজমাট হয়ে থাকে বলে অনেকে জানিয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, কলারোয়ার খেঁজুরের রসের রয়েছে আলাদা খ্যাতি বা জস। সেই খেঁজুরের রস জ্বালিয়ে তৈরি করা হয় গুড় ও পাটালি। উপজেলার খোরদো বাজারে খেঁজুর গুড় ও পাটালির হাটে গুড় ও পাটালি বিক্রি করতে আসেন পার্শ্ববর্তী যশোর জেলার মনিরামপুর ও কলারোয়া উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলের প্রায় ৩০/৩৫টি গ্রামের খেঁজুর গাছের গাছিরা। গুড় বিক্রি করতে আসা দেয়াড়া গ্রামের মতিয়ার রহমান ও জব্বার সানা নামের খেঁজুর গাছি জানান, এখনতো আগের মতো গাছ নেই। বিলুপ্তির পথে খেঁজুর গাছ। তাই রস এখন কম সংগ্রহ করা হয়, যা সংগ্রহ করতে পারি তাতে খরচটা কোন রকম বেঁচে থাকে। তারপর বর্তমান বাজারে এক ভাড় গুড়ের দামও কম পাওয়া যায়। যেটা কষ্ট এবং জ্বালানি খরচ হিসেবে তুলনামূলকভাবে কম।
কলারোয়ার খোরদো বাজারে জমে উঠেছে খেজুরের গুড় বা পাটালি বেচাকেনার হাট। প্রাচীন যুগ থেকে এই বাজর গুড়ের হাট নামে পরিচিত। শীতের মৌসুমে বাজারে খেজুরের গুড় ও পাটালি আসা শুরু হয়। দেশ-বিদেশ থেকে গুড়ের বেপারিরা বাজারে গুড় কেনার আগাম ঘরভাড়া নেয়। সেজন্য এই মৌসুম আসলেই দেখা যায় খেজুর গাছের গাছিদের ব্যস্ততা দৃশ্য।
খেজুর গাছ কাটা থেকে শুরু করে রস আহরণ করে সেই রস থেকে গুড় তৈরি করা পর্যন্ত বেশ ব্যস্ত সময় পার করে থাকে এ জনপদের মানুষেরা। গ্রামাঞ্চলে খেজুর গাছিরা নিজেদের প্রয়োজন মিটিয়ে বাড়তি উপার্জনের জন্য তারা খেজুরের রস আগুনে জ্বালিয়ে তৈরি করে গুড় ও গুড় থেকে তৈরিকৃত পাটালি। গুড় ও পাটালি স্থানীয় বাজারে চাহিদা মিটিয়ে গুড় বা পাটালি চলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলা শহরেও। খোরদো বাজারের খোরদো-চাকলা ব্রিজ সংলগ্ন গুড়ের হাট সপ্তাহে দু’দিন বৃহস্পতিবার ও রোববার বসে। কপোতাক্ষের তীর ঘেষা খোরদো বাজারস্থ ব্রিজের মুখ সংলগ্ন রাস্তার ধারে এ হাট সত্যি চোখে পড়ার মতো। শীতের মৌসুমে কলারোয়া উপজেলার অন্যতম প্রধান এ খেজুর গুড়ের হাট বেশ জমজমাট হয়ে থাকে বলে অনেকে জানিয়েছেন। স্থানীয়রা জানিয়েছেন- কলারোয়ার খেজুরের রসের রয়েছে আলাদা খ্যাতি বা জস। সেই খেজুরের রস জ্বালিয়ে তৈরি করা হয় গুড় ও পাটালি। উপজেলার খোরদো বাজারে খেজুর গুড় ও পাটালির হাটে গুড় ও পাটালি বিক্রি করতে আসেন পার্শ্ববর্তী যশোর জেলার মনিরামপুর ও কলারোয়া উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলের প্রায় ৩০/৩৫ টি গ্রামের খেজুর গাছের গাছিরা। গুড় বিক্রি করতে আসা দেয়াড়া গ্রামের নাজিম উদ্দিন দফাদার ও জব্বার দফাদার নামের খেজুর গাছি জানান-এখনতো আগের মতো গাছ নেই। বিলুপ্তির পথে খেজুর গাছ। তাই রস এখন কম সংগ্রহ করা হয়, যা সংগ্রহ করতে পারি তাতে খরচটা কোন রকম বেঁচে থাকে। তারপর বর্তমান বাজারে এক ভাড় গুড়ের দামও কম পাওয়া যায়। যেটা কষ্ট এবং জ্বালানি খরচ হিসেবে তুলনামূলকভাবে কম। একই ভাবে মনিরামপুরের চাকলা গ্রামের আতিয়ার রহমান জানান-ব্যাপারিরা গুড়ের দাম কম বলে। যে দাম বলে, সে দামে বিক্রয় করলে লাভ তো দূরে থাক, কষ্টের মুল্যও হবে না। দক্ষিনাঞ্চল আসা ব্যাপারিরা দাবি করেন গাছিরা তাদের সঠিক মূল্য পাচ্ছে। তারা আরো বলেন গত বারের চেয়ে এ বছর গুড়ের দাম অনেক বেশি। গুড়ের ব্যাপারি হুমায়ুন কবির জানান, এ বছর গুড়ের দাম বেশি। গত বছর যে গুড়ের ভাড় ছিলো ৩শ’ থেকে ৪শ’ টাকা, এ বছর সেই গুড়ের ভাড় সাড়ে ৪শ’ থেকে ৫শ’ এমনকি ৬শ’ টাকা ক্রয় করতে হচ্ছে। এ গুড়ের হাট থেকে ব্যাপারিরা ভাড় ভর্তি গুড় ক্রয় করে নিজ নিজ এলাকায় নিয়ে চলে যান এবং প্লাস্টিকের ড্রামে ভর্তি করে বা বিভিন্ন উপায়ে দেশের বিভিন্ন জেলা শহরে সরবরাহ করে থাকেন। বিশেষ করে দেশের উত্তরের জেলা গুলোর পাশাপাশি বরিশাল, পটুয়াখালী ও অন্যান্য এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। শুধু হুমায়ুন কবির নয়, কলারোয়ার পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসা একদল গুড়ের ব্যাপারি প্রতিনিয়ত খোরদো বাজারের গুড়ের হাট থেকে পাইকারী দামে গুড় ও পাটালি কিনে অন্যত্র বিক্রিয় করে থাকেন। স্থানীয় গুড় ব্যবসাযীরা বলেন খোরদো বাজারের খেজুর গুড়ের হাট থেকে গুড় কিনে ড্রাম ভর্তি করে গোডাউনে স্টক করেও রাখেন অনেক ব্যবসায়ীরা। পরে শীত মৌসুম চলে গেলে সেই গুড় ও পাটালি চড়া দামে বিক্রয় করে থাকেন তারা।
একইভাবে মনিরামপুরের চাকলা গ্রামের আতিয়ার রহমান জানান, ব্যাপারিরা গুড়ের দাম কম বলে। যে দাম বলে, সেই দামে বিক্রয় করলে লাভ তো দূরে থাক, কষ্টের মুল্যও হবে না। অপরদিকে, হাটে আসা ব্যাপারিরা দাবি করেন, গাছিরা তাদের সঠিক মূল্য পাচ্ছেন। তারা আরো বলেন, গত বারের চেয়ে এ বছর গুড়ের দাম অনেক বেশি। গুড়ের ব্যাপারি হুমায়ুন কবির জানান, এবছর গুড়ের দাম বেশি। গত বছর যে গুড়ের ভাড় ছিলো ৫শ’ থেকে ৬শ’ টাকা, এ বছর সেই গুড়ের ভাড় সাড়ে ৮শ’ থেকে ৯শ’ এমনকি এক হাজার’ টাকা ক্রয় করতে হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, এ গুড়ের হাট থেকে ব্যাপারিরা ভাড় ভর্তি গুড় ক্রয় করে নিজ নিজ এলাকায় নিয়ে চলে যান এবং প্লস্টিকের ড্রামে ভর্তি করে বা বিভিন্ন উপায়ে দেশের বিভিন্ন জেলা শহরে সরবরাহ করে থাকেন। বিশেষ করে দেশের উত্তরের জেলাগুলোর পাশাপাশি বরিশাল, পটুয়াখালী ও অন্যান্য এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়।
বাজার সংশ্লিষ্টরা জানান, বরিশাল জেলা থেকে ২/৩ জন ও কলারোয়ার পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসা একদল গুড়ের ব্যাপারি প্রতিনিয়ত খোরদো বাজারের গুড়ের হাট থেকে পাইকারী দামে গুড় ও পাটালি কিনে অন্যত্র বিক্রি করে থাকেন। এদিকে স্থানীয় গুড় ব্যবসাযীরা বলেন, খোরদো বাজারের খেঁজুর গুড়ের হাট থেকে গুড় কিনে ড্রাম ভর্তি করে গোডাউনে স্টক করেও রাখেন অনেক ব্যবসায়ীরা। পরে শীত মৌসুম চলে গেলে সেই গুড় ও পাটালি চড়া দামে বিক্রয় করে থাকেন তারা। সবমিলিয়ে ইতোমধ্যে জমে উঠেছে এখানকার খেঁজুরের গুড় ও পাটালির হাট।
সাতক্ষীরার ৭টি উপজেলায় খেজুরের রস সংগ্রহ ও রস জ্বালিয়ে গুড় তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছিরা। শীত যত বাড়ছে, খেজুরের গুড়ের চাহিদাও বাড়ছে। পাশাপাশি রস জ্বালিয়ে তৈরি করা গুড়ের চাহিদাও অনেক। টানা ৫ মাস চলে গাছিদের এ কর্মযজ্ঞ। এরই মধ্যে গুড় তৈরি করে সারা বছর তার চাহিদা মেটানো হয়। ওই ৫ মাসের উপার্জনেই সংসার চলে অনেক চাষির।
শীত মৌসুমে আবহমান গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য গ্রামাঞ্চলের ঘরে ঘরে খেজুর রস দিয়ে তৈরি হয় হরেক রকমের পিঠা ও পায়েস। পাশাপাশি খেজুরের গুড় দিয়ে তৈরি হয় নানান পিঠাপুলি। তাই বাণিজ্যিকভাবেও খেজুরের রস সংগ্রহ ও গুড় তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করতে হচ্ছে গাছিদের।
জানা যায়, খেজুরের রস আহরণের মধ্যদিয়েই গ্রামীণ জনপদে শুরু হয় শীতের আমেজ। সে হিসেবে যশোরাঞ্চলে খেজুর গাছ থেকে রস আহরণের পূর্ব প্রস্তুতি শীত আসার জানান দিচ্ছে। গাছিরা জানান, প্রথমে ধারালো দা দিয়ে খেজুর গাছের মাথার সোনালি অংশ বের করছেন তারা। এর ৮ থেকে ১৪ দিন পর নোলন স্থাপন করা হবে। এর সপ্তাহখানেক পর শুরু হবে সুস্বাদু খেজুর রস আহরণের কাজ।
তারা আরও জানান, প্রতিদিন বিকাল থেকে সন্ধ্যার মধ্যেই খেজুর গাছের সাদা অংশ পরিষ্কার করে ছোট-বড় মাটির কলস বেঁধে রাখা হয় রসের জন্য। এরপর ভোর থেকেই ওইসব গাছ থেকে রস সংগ্রহ করা হয়। সকালের দিকে কেউবা রস কিনে নিয়ে যায়। আবার এই রস দিয়ে পাটালি ও লালি গুড় তৈরি করে বিক্রি করে থাকেন তারা।
জানা গেছে, সাতক্ষীরা সদর, তালা এবং আশাশুনি উপজেলার গ্রামগুলোতে খেজুর গাছের সংখ্যা বেশি। এসব খেজুর গাছ থেকে রস আহরণ ও গুড় তৈরি করে লাভবান হচ্ছেন গাছিরা। আবার বাড়তি লাভের আশায় এসব এলাকায় আসছেন অন্য জেলার গাছিরাও। খেজুর গুড় তৈরির পেশায় এখন বাড়তি আয়ে খুশি তারা।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার শিবপুর গোদাঘাটা এলাকার এক গাছি জানান, এ বছর এলাকায় আড়াইশ’ গাছ লিজ নিয়ে খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরি করে থাকি। তবে তার উৎপাদিত এই গুড় বিক্রিতে কোনো ঝামেলা নেই। সকালের দিকে ক্রেতারা এসে নগদ টাকা দিয়ে কিনে নিয়ে যায়। তবে তিনি অভিযোগ করে বলেন, এলাকার কিছু মানুষ রাতের আঁধারে রস খেয়ে আবার হাঁড়ি ভেঙে ফেলে রাখে। এতে করে আমাদের বছরে এক থেকে দেড়শ’ হাঁড়ি আবার নতুন করে কিনতে হয়।
স্থানীয় খেজুর রস ক্রেতা মো. হোসেন আলী বলেন, শীতের সকালে গাছ থেকে নামানো কাঁচা রসের স্বাদ বর্ণনা করা সম্ভব নয়। এ ছাড়াও জ্বাল দেয়া রসের তৈরি বিভিন্ন সুস্বাদু খাবার অতুলনীয়। এখান থেকে রস কিনে বোতলে করে বাড়ির জন্য নিয়ে যাচ্ছে বলেও জানান তিনি।
অনলাইনে খেজুরের খাঁটি গুড় বিক্রি করেন দিনা আক্তার। তিনি জানান, খেজুরের বহুল ব্যবহার নিয়ে বর্ণনার শেষ নেই। রস দিয়ে নানা রকম পিঠা, পায়েস, গুড়, কুটির শিল্প, আয় ও কর্মসংস্থান হয়। সার্বিক বিবেচনায় খেজুর সমধিক গুরুত্ববহ একটি প্রজাতি। মানুষ খেজুরের খাঁটি গুড় পেতে চায়। কিন্তু অনেক সময় দুস্কর হয়ে পড়ে। তবে আমি ভোর থেকে গাছিদের রস সংগ্রহ করার পরতা জ্বালিয়ে তৈরি করা গুড় ও পাটালি বিভিন্ন ভোক্তাদের কাছে পাঠিয়ে থাকি।
শীতের মৌসুম মানেই খেজুর গুড়। এই গুড় নিজস্ব গন্ধ ও স্বাদের জন্য সবার পছন্দের। শীতের পিঠা-পায়েসের বেশিরভাগ তৈরিতেই ব্যবহার হয় খেজুর গুড়। খেতে সুস্বাদু বলেই এটি বেশি খাওয়া হয়। এদিকে এই গুড়ের উপকারিতার কথা আমাদের বেশিরভাগেরই অজানা। আপনি জানতেন যে সুস্বাদু খেজুর গুড় আমাদের শরীরের জন্যও নানাভাবে উপকার করে? জেনে নিন এর কিছু উপকারিতা সম্পর্ সম্পর্কে।
আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যাদের শরীরে আয়রনের ঘাটতি রয়েছে। এর ফলে নানা ধরনের অসুখে আক্রান্তও হতে দেখা যায়। আপনি জেনে অবাক হবেন যে, খেজুরের গুড়ে রয়েছে প্রচুর আয়রন। তাই খেজুরের গুড় খেলে শরীরে আয়রনের ঘাটতি পূরণ হয়। ফলে দূরে থাকে রক্তশূন্যতাসহ আয়রনের ঘাটতিজনিত যাবতীয় অসুখ।
নারী এবং পুরুষের শরীরের গঠন এক নয়। নারীদের জন্য এমনকিছু পুষ্টির দরকার পড়ে, যা সব ধরনের খাবারে থাকে না। এক্ষেত্রে একটি উপকারী খাবার হতে পারে খেজুর গুড়। এতে থাকা নানা ধরনের পুষ্টি উপাদান নারীদের বিভিন্ন অসুখ থেকে দূরে রাখে।
যারা হজমের সমস্যায় ভুগছেন, তারা প্রতিদিন অল্প করে খেজুরের গুড় খেলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন। যারা নিয়মিত খেজুরের গুড় খান, তারা এর সুফল পাচ্ছেন। এই গুড় আপনাকে কোষ্ঠকাঠিন্য, আমাশা, বদহজমের মতো অসুখ থেকে দূরে থাকতে সাহায্য করবে।
যেসব খাবার লিভার ভালো রাখতে কাজ করে তার মধ্যে অন্যতম হলো খেজুর গুড়। এই গুড়ে থাকে প্রচুর সোডিয়াম ও পটাসিয়াম। এই দুই উপকারী উপাদান আমাদের পেশিকে শক্তিশালী করতে কাজ করে। নিয়মিত খেজুরের গুড় খেলে তা মেদ ঝরাতে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতেও কাজ করে। সেইসঙ্গে নিয়ন্ত্রণে রাখে উচ্চ রক্তচাপও।
শুনে নিশ্চয়ই অবাক হচ্ছেন? অবাক করা বিষয় হলেও সত্যি যে, খেজুর গুড় আপনার ত্বক ভালো রাখতে কাজ করে। আপনি যদি মসৃণ ত্বক চান তবে নিয়মিত খেজুর গুড় খাবেন। এতে চেহারায় সহজে বয়সের ছাপ পড়বে না। ব্রণ ও ফুসকুড়ি দূর করতেও এই গুড় কার্যকরী। ত্বক সুন্দর থাকুক তা কে না চায়! তাহলে এবার প্রতিদিনের খাবারে যোগ করুন খেজুর গুড়।

