
সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : সাতক্ষীরা জেলার উপকূলীয় মানুষ এখনো পর্যন্ত খাবার পানিতে বৈষম্যর শিকার। কারণ শহরের চেয়ে গ্রামে এক লিটার পানির মূল্য ৪০ গুণ বেশি। তারপরেও কিনে খেয়ে জীবন বাঁচাতে হচ্ছে উপকূলীয় মানুষের। সে কারণে উপকূলের মানুষ খাবার পানিতে ও বৈষম্যর শিকার হচ্ছে।শ্যামনগরের গোলাখালী সুন্দরবনের কিনারার একটি গ্রাম। দেশ স্বাধীনের আগে এই গ্রামে পানির তেমন অভাব ছিল না। গ্রামের মানুষ পুকুর সংরক্ষণ করতেন এবং সেখান থেকে পানি খেতেন। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় আইলার পর পুকুর সব প্লাবিত হয়ে বিনষ্ট হয়। মো. নূরুজ্জামানের জন্ম সেই গ্রামে, যার পুরো পরিবার তীব্র পানি সংকটের মুখোমুখি আজ। বেসরকারি পর্যায়ে পানিসংকট সমাধানে তারা কাজ করেন, কিন্তু জানালেন উদ্যোগগুলো অপ্রতুল। পানি সমস্যার সমাধান রাষ্ট্রীয় নীতিতে রাজনৈতিকভাবে ঠিক করতে হবে। আশাশুনি ও তালা উপজেলায় কাজ করতে গিয়ে তিনি লবণপানির আগ্রাসনের কারণে গ্রামীণ স্থানান্তরের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছেন। গ্রামে গ্রামে ঘরে ঘরে মানুষ পাওয়া যাচ্ছে না, কারণ পানির অভাবে প্রতিদিন গ্রাম ছাড়ছে মানুষ। সাতক্ষীরার সাংবাদিক গোলাম সারওয়ার পানিসংকট নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে লিখে চলেছেন। তিনি বলেন, উপকূলের মানুষ লবণপানি খাচ্ছে আর শহরের মানুষেরা সুপেয় পানির নামে বিষ খাচ্ছে। লবণপানির শোধনাগার তৈরি করে উপকূলের গ্রামে সুপেয় পানির সমাধান সম্ভব বলে তিনি মনে করেন। পাশাপাশি এলাকার উন্মুক্ত সব জলাধার এবং সাতক্ষীরার ২৭টি নদী দখলমুক্ত করে পানিসংকট সমাধান করতে হবে।
উপকূলের পানি ও উন্নয়ন নিয়ে ক্রিটিক্যাল চিন্তাতাত্ত্বিক, সাংবাদিক ও গবেষক গৌরাঙ্গ নন্দী, যিনি নিজেও এক দীর্ঘ পানিসংকট অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়ে বড় হয়েছেন। লেখালেখি ও লড়াই জারি রেখেছেন। ১৯৭৮ সালে তিনি প্রথম খুলনার দাকোপের একটি গ্রামে যান এবং দেখতে পান গ্রামের মানুষ বড় পুকুর থেকে পানি পান করত এবং বড় মাটির মটকায় পানি সংরক্ষণ করত। প্রায় ৪০ বছরের কর্মজীবনের অভিজ্ঞতা টেনে তিনি জানান, বর্তমানে দাকোপ, কয়রা, শ্যামনগর বা উপকূলের কোনো গ্রামেই এখন আর বড় পুকুর নেই। মানুষ মটকায় পানি জমিয়ে রাখে না। বর্তমানে সব মানুষকেই এখন পানি কিনে খেতে হয়। কারণ এই এলাকার মাটির তলার পানি ক্রমেই লবণাক্ত হয়ে উঠেছে। উপকূল অঞ্চল ঐতিহাসিকভাবেই নোনা অঞ্চল। এখানে পানিসংকট সমাধানের জন্য বহু আগেই থেকেই গ্রামীণ মানুষ পুকুর ও জলাশয় সংরক্ষণ করত। সাতক্ষীরার গুড়পুকুরের উদাহরণ টেনে তিনি জানান, এই নোনা অঞ্চলে এই পুকুরটির পানি মিষ্টি ছিল বলে এক সময় এই পুকুর ঘিরে মেলার প্রচলন ঘটে। উপকূলের নদীগুলোর সঙ্গে উজানের নদীপ্রবাহের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এ কারণে উপকূলের নদীতে মিষ্টিপানির প্রবাহ আসার সুযোগ নষ্ট হয়েছে এবং একই সঙ্গে লবণাক্ততা বাড়ছে। জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত নোনার পরিমাণ নদীতে বেশি থাকে, অন্য সময় কম থাকে। কিন্তু গ্রামের মাটি, কৃষিজমি, খাল ও গ্রামের ভেতর নোনার পরিমাণ বছরের সবসময় বেশি থাকে। এই অঞ্চলের নোনা ও স্বাদুপানির সংমিশ্রণের যে বৈশিষ্ট্য তার পরিবর্তন ঘটেছে। উপকূলীয় বাঁধ দিয়ে এই বৈশিষ্ট্য নষ্ট করা হয় এবং পরে আবার মাটির এই বাঁধ কেটে নদী-খাল থেকে নোনাপানি গ্রামের ভেতরে চিংড়ি চাষের জন্য ঢুকিয়ে গ্রামের ভেতর লবণাক্ততার তীব্রতা বাড়িয়ে দেওয়া হয়। এর সঙ্গে নদী-খাল দখল এবং অন্যান্য আরও সমস্যা আছে। গ্রামে গ্রামে পুকুর সংরক্ষণ করার ভেতর দিয়েই কেবল উপকূলের সুপেয় পানিসংকট সমাধান করা সম্ভব বলে তিনি মনে করেন। একই সঙ্গে কৃষি, চিংড়ি এবং বসতি সবকিছু জোনিংয়ের আওতায় আনাও জরুরি বলে মনে করেন।
শ্যামনগর পদ্মপুকুর ইউনিয়নের সাবেক ইউপি মেম্বার গাজী আশরাফ হোসেন জানান, তার চাচির তীব্র ডায়রিয়া হয়েছিল পুকুরের দূষিত লবণপানির কারণে। আগের দিনে গ্রামের মেয়েরা পুকুরের পানি এনে চুন মিশিয়ে ছেঁকে খেতেন কিন্তু বর্তমানে পানি এভাবে শোধন করা যাচ্ছে না। পানি উত্তোলন বা শোধনের কাজে সুলভ, স্বল্পমূল্যের এবং নিরাপদ নবায়নযোগ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের দাবি করেছেন এই সাবেক জনপ্রতিনিধি। উপকূলের পানিসংকট সমাধানে সরকার আন্তরিক কি নাÑ এই প্রশ্ন তুলেছেন উপকূলের সাংবাদিক এম কামরুজ্জামান। বিগত রেজিমের একটি কর্মসূচির অভিজ্ঞতা উল্লেখ করে ক্ষোভ নিয়ে তিনি জানান, অনেক প্রতিষ্ঠান উপকূলের পানিসংকটকে দেখিয়ে ফান্ড সংগ্রহ করে এবং জলবায়ু সম্মেলনে পানি-দুর্গত মানুষদের দেখিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করে। কোনো ভিক্ষা নয়, ন্যায়বিচার সুরক্ষার দাবি জানান তিনি। সুন্দরবন লাগোয়া গ্রাম শ্যামনগরের বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের দাঁতিনাখালী। গ্রামের বনজীবী নেতা শেফালী বিবি জানান, লবণপানির কারণে মেয়েদের স্বাস্থ্য ভেঙে পড়ছে এবং অনেক দূর থেকে সুপেয় পানি আনতে হয় বলে মেয়েরা নানা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে। অসহনীয় পানি সংকটের কারণে গ্রামীণ পরিবারগুলো খুব অল্পবয়সে মেয়েদের বিয়ে দিতে বাধ্য হয়। সরকার ও এনজিওরা বাল্যবিবাহ বন্ধ করতে কাজ করে। কিন্তু কেন উপকূলের গ্রামে গ্রামে মানুষ বাল্যবিয়ে দিতে বাধ্য হচ্ছে এসব কেউ খতিয়ে দেখছে না এবং মূল সমস্যার সমাধান করছে না বলে অভিযোগ করেন শেফালি বিবি। তিনি বলেন, পানিসংকট টিকিয়ে রেখে কোনোভাবেই বাল্যবিবাহ বন্ধ করা যাবে না। কতটুকু পানির কষ্ট হলে মা-বাবারা নিজের বুকের ধনকে এত অল্প বয়সে বিয়ে দিতে বাধ্য হচ্ছে তা সরকারকে ভাবতে হবে বলে তিনি মনে করেন।
শ্যামনগরের যুব উন্নয়ন সংগঠক গাজী আল ইমরান জানান, উপকূলের বহু নদী-খাল-জলাশয় বেদখল করেছে বহু প্রভাবশালী মানুষ। এরা রাজনৈতিকভাবে এবং বাণিজ্যিকভাবে ক্ষমতার ভাগাভাগি করেছে। দখল ও দূষিত সব জলাশয় উন্মুক্ত করে সবার জন্য খুলে দিতে হবে। আদি যমুনা নদীর নাম পাল্টে নাম দেওয়া হয়েছিল যমুনা খাল। আইবুড়ি নদীর নাম বদলে আইবুড়ি খাল। যারা এসব করেছেন তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে এবং দখলমুক্ত করতে হবে। সাতক্ষীরার সাংবাদিক আহসান হাবীব জানান, উপকূলের মাটি ও পানিতে লবণের পরিমাণ কত এটি সরকারিভাবে নিয়মিত ফোরকাস্ট করা হয় না। উপকূল অঞ্চলে লবণের পরিমাণ মাত্রা নিয়মিত জানানোর জন্য সরকারি দপ্তরকে কার্যকর করার প্রস্তাব জানান তিনি। সাংবাদিক ও গবেষক শরীফুল্লাহ কায়সার সুমন জানান, সাতক্ষীরার গ্রামে গ্রামে পানির যন্ত্রণা কত তীব্র হতে পারে, যখন আমরা দীর্ঘদিন দেখছি মানুষকে পানির জন্য মিছিল করতে হচ্ছে, সমাবেশ ও চিৎকার করতে হচ্ছে। পানিসম্পদ কিংবা জনস্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কেউ সুনির্দিষ্টভাবে উপকূলের পানিসংকট সমাধানে এখনো দৃশ্যমান তৎপরতা দেখায়নি। করপোরেট দৃষ্টিভঙ্গি বা পণ্যকরণের ধারণা থেকে নয়, পানিকে বিনা শর্তে বিনামূল্যে সব জনগণের মৌলিক অধিকার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার দাবি তার।
শ্যামনগরের শিক্ষক ও গবেষক রণজিৎ বর্মণ দীর্ঘদিনের কাজের অভিজ্ঞতায় দেখেছেন, পানি, মৎস্য, ভূমি ও কৃষি বিভাগের ভেতর পাবলিক পানির উৎসগুলো সুরক্ষায় কোনো সমন্বয় নেই। আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয় ছাড়া কোনোভাবেই উপকূলের মানুষের সত্যিকারের সমাধান সম্ভব নয় বলে তিনি জানান। পানির কষ্ট দূর করতে হলে সরকারি ও বেসরকারি সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে বলে মনে করেন সাতক্ষীরার সাংবাদিক আসাদুজ্জামান আসাদ। সাতক্ষীরার সাংবাদিক কল্যাণ ব্যানার্জি জানান, রাজনৈতিক অঙ্গীকার ছাড়া কোনোভাবেই উপকূলের সুপেয় পানির সমাধান সম্ভব নয়। পানি নিয়ে রাজনীতিবিদরা কেবল ছিনিমিনি খেলবেন আর মানুষ দিনের পর দিন ভুক্তভোগী হতে থাকবে তা আর কত দিন? পানিকে পণ্যকরণের বিরুদ্ধে লাগাতার আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি।
তালা উপজেলার পবিত্র মোহন দাস একজন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। মার্কিন দাতা সংস্থার অর্থায়নে তৈরি একটি পানি প্রকল্পের তিক্ত অভিজ্ঞতা সামনে এনে জানান, ২৪ লাখ টাকা খরচ করে করা সেই পানি প্রকল্প থেকে মানুষ ২৪ কলস পানিও সংগ্রহ করতে পারেনি এবং সেটি এখন বন্ধ আছে। সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে দুর্নীতি বন্ধ না করতে পারলে কোনোভাবেই পানিসংকটের সমাধান হবে না বলে তিনি জানান। মানবাধিকারকর্মী হেনরি বিশ^াস পানিসংকট সমাধানে উপকূলের গ্রাম থেকে শহর সবার সুপারিশ ও মতামতকে গুরুত্ব দেওয়ার কথা জানান।
সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আবুল কালাম আজাদ জানান, সাতক্ষীরার ২২ লাখ মানুষের ভেতর পানিসংকটের ধরন ও তীব্রতা ভিন্ন ভিন্ন রকমের। আর্সেনিক, আয়রন এবং লবণাক্ততা এই অঞ্চলের পানিসংকটের সঙ্গে জড়িত। সাতক্ষীরায় কতটুকু জমিতে কি পরিমাণে চিংড়ি উৎপাদতি হয় তার সঠিক পরিসংখ্যান জনসম্মুখে প্রকাশ করার দাবি জানান তিনি। বিভিন্ন দপ্তরের পরিসংখ্যান এবং তথ্যগত ত্রুটি এবং গরমিল থাকার বিষয়টিকে তিনি সামগ্রিক পানিসংকট সমাধানে একটি বাধা হিসেবে দেখেন।
কৃষিপদকপ্রাপ্ত কৃষক মোজাম্মেল হোসেন উপকূলের পানিসংকটের সঙ্গে জড়িত সব কর্তৃপক্ষকে জবাবদিহি ও বিচারের আওতায় আনার দাবি তুলে জানান, পানিকে বাজারের বিক্রয়যোগ্য পণ্য করা হচ্ছে, এনজিওরা অনেকে পানি বিক্রি করছে, এটি বন্ধ হওয়া দরকার। রাজনীতিবিদ মুক্তিযোদ্ধা কামরুল ইসলাম ফারুক সাতক্ষীরার বেদখল হওয়া খালের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, খাল উন্মুক্ত না করলে শহরের জলাবদ্ধতা দূর হবে না। এ জন্য নাগরিক সমাজের দাবিকে গুরুত্ব দিয়ে প্রশাসন ও কর্তৃপক্ষকে সক্রিয় হতে হবে। আইনজীবী শেখ আজাদ হোসেন বেলাল বলেন, পানিসম্পদ ও ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সম্পর্কিত সরকারি দপ্তরগুলোকে জানালেও তারা জনগণের সামনে আসতে চান না। উপকূলে পানিসংকট সমাধানসহ অন্যান্য সমস্যা সমাধানে দ্রুত উপকূল বোর্ড গঠন করে কাজ করার প্রস্তাব করেছেন তিনি।
উপকূল দেশের এক গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের অংশ। ১৯টি জেলায় বিস্তৃত এই উপকূল দেশকে ঘূর্ণিঝড় ও দুর্যোগ থেকে সুরক্ষা করে। বিশে^র বৃহত্তম বাদাবন ও দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকতও এখানে। লবণসহিষ্ণু দেশি ধানের জন্মভূমি এই অঞ্চল। নোনাখচি, খেজুরছড়ি, রায়েন্দা, তালমুগুর, দাদখানির মতো দেশি ধানের জাতগুলোই এই অঞ্চলে ঐতিহাসিকভাবে উপযোগী ছিল। কিন্তু ষাটের দশকে প্রবর্তিত বৈশ্বিক সবুজ-বিপ্লব প্রকল্প সব দেশিজাত হটিয়ে দিয়েছে। জোয়ার-ভাটার গণিতকে অস্বীকার করে তৈরি উপকূল বাঁধ ও বাণিজ্যিক চিংড়ি, কাঁকড়া ঘের লবণাক্ততার তীব্রতা ও অঞ্চল ক্রমেই বাড়িয়ে তুলছে। এর সঙ্গে প্রতিনিয়ত যুক্ত হয়েছে জলবায়ু সংকটের নানা অভিঘাত। নিউলিবারেল ব্যবস্থা আর কাঠামোগত বৈষম্য জিইয়ে রেখেই এই অঞ্চলে পানি সমস্যার নানা প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। যার কোনো সুরাহা নেই। পানিসংকটের প্রশ্নহীন ভার বহন করতে হচ্ছে মূলত গ্রামীণ নারী ও শিশুদের। প্রতিদিন মানুষ গ্রাম ছেড়ে শহরে যাচ্ছে জীবিকার সন্ধানে। পিপাসার্ত ও ক্ষুধার্ত জীবন ঘের ও লবণপানি বন্দি হয়ে মুক্তির উপায় খুঁজছে। বৈশি^ক জলবায়ু সম্মেলন, জলবায়ু তহবিল, ক্ষয়ক্ষতি ও কার্বন-বিবাদ কোনো কিছুই উপকূলের অন্যায় পানিসংকটের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করছে না। জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ মীর মুগ্ধের ‘পানি লাগবে পানি’ আমাদের সামনে পানির অনিবার্যতাকে হাজির করেছে। উপকূলের পানি-বৈষম্য নিরসনে সব শ্রেণি-বর্গ-পক্ষের সমন্বয়ে দরকার নয়া রাজনৈতিক বন্দোবস্তি।

