
সিরাজুল ইসলাম, শ্যামনগর : সাতক্ষীরা শ্যামনগর উপজেলা পাউবোর উপবিভাগীয় প্রকৌশলী ইমরান সরদারের খুঁটির জোড় কোথায় তা জানতে চায় সুধীমহল থেকে সর্বস্তরের মানুষ। সরে জমিনে তদন্তকালে প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে জানা যায় সাতক্ষীরা জেলার গাবুরা ইউনিয়নে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ১০৪০ কোটি টাকা ব্যয় মেগা প্রকল্পে হরিলুট করেছেন এই আওয়ামী লীগ ক্যাডার দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ইমরান সরদার। এছাড়া বুড়ি গোয়ালিনী ইউনিয়ন জাইকার দেওয়া ৯৭কোটি টাকা ব্যয় বস্তা ডাম্পিং ও রাস্তা সংস্কারের ৭০% কাজ না করে টাকা আত্মসাৎ করেছেন এই আওয়ামী লীগ ক্যাডার উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী ইমরান সরদার ও ট্যাক্স ফোর্সের কর্মকর্তারা। আর গাবুরা ইউনিয়নে মেগা প্রকল্পের ৭০শতাংশ বস্তা ডাম্পিং না করে ট্যাক্স ফোর্সের কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করে হাতিয়ে নিয়েছে শত কোটি টাকা। যাহা তদন্ত হলে সত্যতা মিলবে আয়নার মতো। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পরে দেশে যখন অস্থিরতা বিরাজ করছে ঠিক সেই সময় শ্যামনগর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী ইমরান সরদার ও ট্যাগ ফোর্সের কর্মকর্তারা এই সীমাহীন অপকর্ম করেছে। সরকার টাকা দিয়েছে উপকুলিয়া বানভাসি মানুষের বেরিবাধ রক্ষার জন্য আর সেই টাকা লুটপাট করে পকেটে ভরেছে উপবিভাগীয় প্রকৌশলী ইমরান আহমেদ সরদার ও ট্যাগ ফোর্সের কর্মকর্তারা। প্রাপ্ত তথ্য জানা যায় ইমরান আহমেদ সরদার তার নিজ বাড়ি মাগুরায় বিশ্ব ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের এলাকায় সে ছাত্র জীবনে ছাত্রলীগের ক্যাডার ছিল সেই প্রভাব খাটিয়ে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রথমে উপসহকারী প্রকৌশলী পদে চাকরি নেয় পরে দলীয় প্রভাব খাটিয়ে প্রমোশন নিয়ে উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী পদে পদোন্নতি নিয়েছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার এখন ক্ষমতায় না থাকলেও তার দুর্নীতি আর ঘুষ বাণিজ্য এখনো থামেনি বহাল তবিয়াতে চালিয়ে যাচ্ছে। তার এই দুর্নীতি খুটির জোর কোথায় তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে সুধী মহল জনপ্রতিনিধি ও সাধারণ মানুষের মধ্যে। সাধারণ মানুষ সুধী মহল জনপ্রতিনিধিরা তদন্ত করে এই কর্মকর্তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন উদ্বোধন কর্তৃপক্ষের কাছে। শ্যামনগর উপজেলার গাবুড়া ইউনিয়নে মেগা প্রকল্পের মাটির কাজেও এই দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার সহতায় চলছে সীমাহীন লুকোচুরি ও দুর্নীতি সরকারের দেওয়া মেজারমেন্ট অনুযায়ী কোন জায়গায় কাজ হচ্ছে আবার কোন জায়গায় পুকুর চুরি হচ্ছে। টলার অথবা কার্গো যোগে মাটি টেনে এনে বাঁধ নির্মাণ করার কথা থাকলেও তা না করে নদীর চর রাস্তার গোড়া থেকে ও সাধারণ মানুষের বাড়িঘর কেটে মাটি নিয়ে রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছে যাহা সম্পূর্ণ নকশা বহির্ভূত। ইমরান আহমেদের এই সমস্ত দুর্নীতি অপকর্ম ঘুষ বাণিজ্যের প্রতিবাদে এলাকাবাসী মানববন্ধন সংবাদ সম্মেলন সহ নানা জায়গায় স্মারকলিপি দেওয়ার পরেও আজ পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি তার বিরুদ্ধে। সে কারণে সর্বস্তরের মানুষের একটাই প্রশ্ন উপবিভাগীয় প্রকৌশলী ইমরান সরদারের খুটির জোর কোথায়। তার গ্রামের বাড়ি মাগুরা জেলার জেলা জামাতের আমির ও জেলা বিএনপির সভাপতি সহ সাধারণ মানুষ এই প্রতিবেদককে জানিয়েছেন গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ইমরান সরদার দলীয় প্রার্থী শাকিব আল হাসানকে বিজয় করার সহায়তা হিসাবে১৩ লক্ষ টাকা নির্বাচনী খরচ দিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে এই প্রতিবেদক মাননীয় পানি উপদেষ্টা মহোদয়ের সাথে কথা বলে পানি উপদেষ্টা মহোদয়ের পরামর্শ ক্রমে হোয়াটসঅ্যাপ ও ইমেইলে ইমরান সর্দারের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন যাহা নিম্নে উল্লেখ করা হলো।মহোদয়, সম্মান সহকারে আপনাকে অবহিত করছি যে সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী ইমরান আহমেদ বিভিন্ন দুর্নীতি অনিয়ম ঘুষ বাণিজ্য বহাল তবিয়াতে চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি শ্যামনগর উপজেলায় দীপ ইউনিয়ন গাবু রায় ১০৪০ কোটি টাকা ব্যয় মেগা প্রকল্প চলমান কাজে ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়ম করেছে। এখানে নির্ধারিত বস্তা ড্যাম্পিং এর ৭০% বস্তা ডাম্পিং না করে ইমরান আহমেদ উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী ও টেক্সফোর্সের প্রতিনিধিরা ঠিকাদারদের কাছ থেকে এই টাকা নিয়ে ভাগবাটোয়ারা করে নিয়েছে। তাছাড়া সাতক্ষীরা জেলার বুড়ি গোয়ালিনী ইউনিয়নে জাই কার দেওয়া ৯৭টাকার কাজে বস্তা ডাম্পিং করার বরাদ্দ ছিল নয় লক্ষ৫০ হাজার সেখানে বস্তা ড্যাম্পিং হয়েছে মাত্র ৬ লক্ষ অথচ কাগজপত্র ডাম্পিং দেখিয়ে দিয়েছেন উপবিভাগীয় প্রকৌশলী ইমরান আহমেদ। ট্যাক্স ফোর্সের কর্মকর্তাদের শ্যামনগর পানি উন্নয়ন বোর্ডের ডাকবাংলায় বসিয়ে রেখে সেখানে বসে কাগজপত্র স্বাক্ষর করে টাকা-পয়সা ভাগবাটোরা করেছে। যাহা তদন্ত হলে সত্য প্রমাণ হবে এবং সত্যতা প্রমাণ করতে প্রত্যক্ষদর্শীরা তৎপর রয়েছে।
মহোদয় এই উপবিভাগীয় প্রকৌশলী বাড়ির মাগুরা জেলায় বিশ্ব ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠজন বলে মাগুরার জেলা জামাতের আমির ও জেলা বিএনপির সভাপতিসহ বিভিন্ন তথ্য থেকে এই তথ্য ও উদঘাটন করা হয়েছে। তিনি গত নির্বাচনের সময় শাকিব আল হাসানকে নির্বাচনের খরচের জন্য ১৩লক্ষ টাকা সহায়তা করেছেন যার প্রমাণ ওই এলাকার সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বিভিন্ন রাজনৈতিক বিদরা সবকিছু প্রমাণ করার জন্য প্রস্তুত রয়েছেন।
মহোদয় এই উপবিভাগীয় প্রকৌশলী ইমরান আহমেদ ছাত্র জীবনে প্রথমে কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন পরে মাগুরা জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক থাকাকালীন দলীয় প্রভাব খাটিয়ে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের চাকরিতে যোগদান করেন। তার চেয়ে অনেক মেধাবী ছাত্র ছিল তাদেরকে পিছিয়ে ফেলে ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে এই চাকরিতে যোগদান করেন উপবিভাগীয় প্রকৌশলী ইমরান আহমেদ।
মহোদয় শ্যামনগর উপজেলা বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম কর্নারে অবস্থিত, এটি সবচেয়ে উপকূলীয় অঞ্চলের ঝুঁকিপূর্ণ উপজেলা এই উপজেলায় বারটি ইউনিয়নের আটটি ইউনিয়ন পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে সম্পৃক্ত। এখানে সারা বছর নদী ভাঙ্গন একটার পর একটা লেগে থাকে সে কারণে সব সময় ইমারজেন্সি কাজ চলমান থাকে। এই ইমারজেন্সি কাজে যে বরাদ্দ থাকে তা ৩০ শতাংশ কাজ করে উপবিভাগীয় প্রকৌশলী ইমরান আহমেদ কোন ঠিকাদাররা কাজের সাইডে আসে না ইমরান আহমেদ নিজেই ঠিকাদার আবার নিজেই তদারকি কর্মকর্তা সেজে এই কাজ করে থাকেন। ঠিকাদারদের সাথে যে চুক্তি থাকে সেই চুক্তি মাফিক টাকা ঠিকাদাররা দফায় দফায় কাজ চলমান অবস্থায় ইমরান আহমেদের কাছে পৌঁছে দেয়।
মহোদয় ইমরান আহমেদের এই সীমাহীন দুর্নীতি অনিয়মের বিরুদ্ধে উপজেলা আইন-শৃঙ্খলা মিটিং ও জেলা আইন শৃঙ্খলা মিটিংয়ে বারবার অভিযোগের চিত্র উঠে এসেছে কিন্তু তিনি কোন কিছু তর্ক না করে বহাল তবিয়তে চাকরি করে যাচ্ছে। যাহাতে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছে মারাত্মক । ইমরান আহমেদ আওয়ামী লীগের ক্যাডার হওয়ায় চলমান সরকারের উন্নয়নের কাজে দুর্নীতি অনিয়ম করে সরকারকে জনগণের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করার জন্য সর্বদাই প্রস্তুত রয়েছে এবং সেই মাফিক কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। যার অনুলিপি নিম্ন বর্ণিত কর্মকর্তাদের কাছে প্রেরণ করা হয়েছে।
১/মহাপরিচালক বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড পানিভবন ঢাকা
২/ প্রধান প্রকৌশলী দক্ষিণ অঞ্চল খুলনা
৩/নির্বাহী পুরকৌশলী বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড সাতক্ষীরা ( ১)
বিষয়টি নিয়ে উদ্যতন কর্তৃপক্ষ যদি এক্ষুনি এই দুর্নীতিবাজ উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী ইমরান সরদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ না করে তাহলে সরকারের হাজার হাজার কোটি টাকার কাজ বানের জলে ভেসে যাবে বলে মনে করেন অভিজ্ঞ মহল। এ বিষয়ে উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী ইমরান আহমেদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন দুর্নীতি হলে কর্তৃপক্ষ আছে তারা দেখবে সাংবাদিকদের দেখার কথা নয়।

