সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : সাতক্ষীরা সীমান্তের ইছামতি নদীর অব্যহত ভাঙনে হুমকির মুখে পড়েছে দেবহাটা উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রাম। নদীর প্রবল জোয়ারের তোড়ে পাউবো’র বেড়িবাঁধে ভেঙে নদী গর্ভে বিলিন হচ্ছে ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি। ফলে ইছামতি নদীর ভাঙনে ক্রমশঃ কমছে বাংলাদেশের ভূ-খন্ড। আতংকিত হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে ভাঙন কবলিত এলাকায় বসবাসকারিরা। নিঃস্ব হচ্ছে নদী তীরবর্তী মানুষেরা। জরুরী ভিত্তিতে নদী ভাঙনরোধে কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আশাংকা করেছেন এলাকাবাসী।
তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলা সাতক্ষীরা সদর উপজেলার হাড়দ্দহা থেকে কালিগঞ্জের বসন্তপুর ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বসিরহাট মুহাকমার পানিতর এলাকা থেকে হিঙ্গলগঞ্জ পর্যন্ত বাংলাদেশ ও ভারতকে বিভাজন করেছে ইছামতি নদী। কিন্তু সীমান্ত বিভাজনকারি ইছামতি নদীর অব্যহত ভাঙনে ক্রমশঃ ছোট হচ্ছে বাংলাদেশের মানচিত্র। ভাঙনের কবলে পড়ে নদী গর্ভে বিলিন হচ্ছে দেবহাটার বেশ কয়েকটি গ্রামের ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট ও ফসলি জমি। এসব গ্রামগুলোর মধ্যে রয়েছে দেবহাটা উপজেলার দেবহাটা, খানজিয়া, রাজনগর, ভাতসালা ও কোমরপুর। এরইমধ্যে এসব গ্রাম থেকে কয়েকশ’ বিঘা জমি ইছামতির ভাঙনে নদী গর্ভে চলে গেছে। সবচেয়ে বেশী গেছে রাজনগর মৌজার জমি।
পক্ষান্তরে ভরাট হচ্ছে ভারতের ওপারের ভূ-খন্ড। ইছামতি নদীর বেড়িবাঁধের উপর দাড়িয়ে দেখলে স্পষ্ট বোঝা যায় দুই তীরের পার্থক্য। ভারতের পরিকল্পিত নদী শাষণে বাংলাদেশ অংশে ভাঙন চলছে প্রতিনিয়ত। এতে বাড়িঘর ও ফসলি জমি হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছে নদী তীরবর্তী মানুষেরা। আর নদীটি সীমান্তবর্তী হওয়ায় মানুষ শুধু যে ভিটে-মাটিই হারাচ্ছে তা নয়, জমি হারাচ্ছে দেশ, আর এই ভাঙনের ফলে কমছে বাংলাদেশের ভূ-খন্ড। ফলে দেবহাটার মিনি সুন্দরবনের বিপরিত অংশে এবং ভাতশালা এলাকায় নদীসহ ভারতের মধ্যে গড়ে ওঠা বনায়নের কিছু অংশও বাংলাদেশের ভুখন্ড বলে দাবি করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বিভাগ-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী (চলতি দায়িত্বে) মোঃ সালাহউদ্দীন জানান, নদী ভাঙনের ফলে দেবহাটা উপজেলার সাড়ে তিন কিলোমিটার এলাকার ছয়টি পয়েন্ট নদী ভাঙন হয়েছে। নদীটি সীমান্তবর্তী হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে নদী ভাঙনের ফলে অনেক এলাকায় আমরা জমি হারিয়েছি। বর্তমানে ভাঙনের তীব্রতা আরো বেড়েছে। স্থায়ীবাঁধ ছাড়া এর সমাধান করা সম্ভব নয়। ডেল্টা প্রকল্পের আওতায় নদীতে স্থায়ীবাধ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়ার পরিকল্পনা নেয়া হবে। তবে নদী ভেঙে হারিয়ে যাওয়া জমি ফেরত আনার বিষয়টি সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্ত ছাড়া সম্ভব নয় বলে জানান তিনি।
প্রধান সম্পাদক: লে. কমান্ডার (অব.) রাশেদ ইকবাল, প্রকাশক আসিফ কবীর কর্তৃক জন্মভূমি প্রকাশনী লি: ১১০/২,সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর বালু সড়ক, খুলনা থেকে মূদ্রিত ও প্রকাশিত