করোনার ভারতীয় ধরন ও ব্লাক ফাঙ্গাস ছড়ানো রোধ করার লক্ষ্যে সীমান্তবর্তী দেশের আট জেলায় লকডাউন কঠোরভাবে বাস্তবায়ন জরুরি। দেখতে পাচ্ছি, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ হঠাৎ ব্যাপক হারে বেড়েছে। সীমান্তে জনচলাচল ও পণ্য পরিবহনে মানা হচ্ছে না গাইডলাইন। করোনা মোকাবিলায় সার্বিক সমন্বয়ের বড়ই অভাবের কথা গণমাধ্যমে উঠে আসছে। ভারত থেকে বৈধ পথে যারা আসছেন, তাদের অনেকে করোনার নেগেটিভ সনদ আনছেন না। আবার অনেকে ডুপ্লিকেট নেগেটিভ সনদ নিয়ে দেশে প্রবেশ করেছেন। প্রতিদিন বিপুলসংখ্যক মানুষ ভারত থেকে অবৈধভাবে দেশে আসছেন। এছাড়া ভারত থেকে আসা পণ্যবাহী ট্রাকের সঙ্গে ড্রাইভার ও সহকারীরা বিপজ্জনক ভারতীয় ধরনের করোনা ভাইরাস বহন করে আনছেন। তারাও স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। এমন খবর আমাদের উদ্বেগ বাড়ায়। এমন অবস্থায় ভারতীয় ধরন ও ব্লাক ফাঙ্গাস ছড়িয়ে পড়ার বিষয়টি স্বাভাবিক। বাংলাদেশের ৬৪ জেলার মধ্যে ভারতের সঙ্গে সীমান্তঘেঁষা জেলার সংখ্যা ৩০টি। বাংলাদেশের সীমান্তঘেঁষা ৩০ জেলার মধ্যে একমাত্র চাঁপাইনবাবগঞ্জে লকডাউন ঘোষণা করার পর এখন পর্যায়ক্রমে অপর ২৯ জেলায় লকডাউন ঘোষণা করার চিন্তাভাবনা করছে সরকার। দেশের সীমান্তবর্তী আট জেলাকে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিশেষজ্ঞ কমিটি। শনিবার কমিটির বৈঠকে নওগাঁ, নাটোর, সাতক্ষীরা, যশোর, রাজশাহী, কুষ্টিয়া ও খুলনা জেলাও ‘লকডাউন’ করার সুপারিশ করা হয়েছে। উত্তর-পশ্চিমের ভারতীয় সীমান্তবর্তী জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জ এখন করোনার হটস্পট। এ জেলায় করোনার ভারতীয় ধরন শনাক্তের পর চলছে সাত দিনের বিশেষ লকডাউন। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টের সঙ্গে ব্লাক ফাঙ্গাসও দেশে সংক্রমিত হতে পারে। এতে পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে। এ অবস্থা সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ার আগে ভারতীয় করোনা ভ্যারিয়েন্ট এবং ব্লাক ফাঙ্গাস, হোয়াইট ফাঙ্গাসে মৃত্যুর বিভীষিকা থেকে মুক্ত থাকতে চাইলে সীমান্তে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া ছাড়া বিকল্প নেই। করোনা ভাইরাস ও ব্লাক ফাঙ্গাস মহামারির তাÐব মোকাবিলা এই মুহূর্তে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এই মহামারি মোকাবিলায় সীমান্ত সুরক্ষিত রাখা আমাদের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। দেশের অর্থনীতির চেয়ে কোটি মানুষের জীবনের নিরাপত্তা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এ ক্ষেত্রে শৈথিল্য প্রদর্শনের সুযোগ নেই। গাফিলতির কারণে দেশে করোনা ভাইরাস যেন ভারতের মতো ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি না করে তা এখনই নিশ্চিত করতে হবে।