ডেস্ক নিউজ : সুইজারল্যান্ডের জেনেভা বিমানবন্দরে হেনস্তার শিকার হয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।
সুইজারল্যান্ডের জেনেভাস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস ও স্থায়ী মিশন সূত্রে গণমাধ্যম জানতে পেরেছে, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) গভর্নিং বডি এবং সংস্থাটির গুরত্বপূর্ণ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) দেশে ফেরার জন্য বিমানবন্দরে পৌঁছালে অনাকাঙ্ক্ষিত এ ঘটনার শিকার হন আসিফ নজরুল। এ সময় দূতাবাসের প্রটোকল ছিল তার সঙ্গে।
জানা যায়, অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টার গাড়ি জেনেভা বিমানবন্দরে নামার পর একদল লোক সেখানে উপস্থিত হয়ে তাকে ঘিরে ধরেন। এরপর বেশ কয়েক মিনিট তাদের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়।
বেশ কয়েকটি সূত্রের দাবি, বিমানবন্দরে ড. আসিফ নজরুলকে হেনস্তাকারীরা সবাই আওয়ামী লীগের সমর্থক।
এ ঘটনার একটি ভিডিও বৃহস্পতিবার রাতেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ৪ মিনিট ২৭ সেকেন্ডের ওই ভিডিওটিতে দেখা যায়, একদল লোক আসিফ নজরুলকে ঘিরে ধরেছেন। তারা তার সঙ্গে উত্তেজিত ভাষায় তর্ক করছেন। এদের মধ্যে একজনকে আসিফ নজরুলের উদ্দেশে বলতে দেখা যায়, ‘আপনি মিথ্যাচার করেছেন।’
অন্য একজন বলেন, ‘আপনারা পাকিস্তানের প্রেতাত্মা। আপনারা নিরীহ লোক হত্যা করছেন। হাজার হাজার পুলিশ হত্যা করেছেন। নিরীহ ছাত্রদেরকে মৃত্যুর পথে ঠেলে দিয়েছেন।’
পাশ থেকে আরও একজন বলেন, ‘আপনারা বাংলাদেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করেন না। আপনারা অবৈধ।’
এ সময় ড. আসিফ নজরুল ওই ব্যক্তিদের বলেন, ‘আপনারা এসব বলতে এসেছেন। আপনারা কথা বলতে আসেন নাই।’ এরপর তিনি পাশ কাটিয়ে চলে যেতে চাইলে ওই ব্যক্তিরা তাকে ঘিরে ধরে থাকেন। এক পর্যায়ে আইন উপদেষ্টাকে বলতে শোনা যায়, ‘আপনি গায়ে হাত দিচ্ছেন কেন?’
পরে তিনি চলে যেতে শুরু করলে পেছন থেকে একজন স্লোগান দিতে থাকেন, ‘পাকিস্তানী রাজাকার বাংলাদেশ ছাড়, ছাড়।’
আরেকজনের কণ্ঠে শোনা যায়, ‘পাকিস্তানের প্রেতাত্মা হুঁশিয়ার, সাবধান।’ কয়েকজন আবার ‘জয় বাংলা’ স্লোগানও দেন।
জেনেভাস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে জানান, আইন উপদেষ্টা ব্যক্তিগত কোনো সফরে সুইজারল্যান্ড আসেননি। তিনি আইএলও গভর্নিং বডির মিটিংয়ে এসেছেন। আইএলওতে বাংলাদেশের দুটি মামলা চলছে। সেজন্য উপদেষ্টা এখানে এসেছেন। তিনি আইএলও’র মহাপরিচালকের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে জেনেভা সময় বৃহস্পতিবার বিকেলে দেশে ফেরার জন্য বিমানবন্দরে প্রবেশের পথে কিছু লোক উপদেষ্টার সঙ্গে বাজে ব্যবহার করেছেন।
এ কর্মকর্তা আরও বলেন, আইন উপদেষ্টার সঙ্গে দূতাবাসের লোকজন ছিল। ওনাকে প্রটোকল দেওয়া হয়েছে। হঠাৎ করে এসে কিছুলোক এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে।