By using this site, you agree to the Privacy Policy and Terms of Use.
Accept

প্রকাশনার ৫২ বছর

দৈনিক জন্মভূমি

পাঠকের চাহিদা পূরণের অঙ্গীকার

  • মূলপাতা
  • জাতীয়
  • আন্তর্জাতিক
  • রাজনীতি
  • খেলাধূলা
  • বিনোদন
  • জেলার খবর
    • খুলনা
    • চুয়াডাঙ্গা
    • বাগেরহাট
    • মাগুরা
    • যশোর
    • সাতক্ষীরা
  • ফিচার
  • ই-পেপার
  • ALL E-Paper
Reading: সুন্দরবনের উপকূলে দেশীয় অর্ধশত প্রজাতির মাছের অস্তিত্ব বিলীন
Share
দৈনিক জন্মভূমিদৈনিক জন্মভূমি
Aa
  • মূলপাতা
  • জাতীয়
  • জেলার খবর
  • ALL E-Paper
অনুসন্ধান করুন
  • জাতীয়
  • জেলার খবর
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলাধূলা
  • বিনোদন
  • ই-পেপার
Have an existing account? Sign In
Follow US
প্রধান সম্পাদক মনিরুল হুদা, প্রকাশক আসিফ কবীর কর্তৃক জন্মভূমি প্রকাশনী লি: ১১০/২,সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর বালু সড়ক, খুলনা থেকে মূদ্রিত ও প্রকাশিত
দৈনিক জন্মভূমি > জেলার খবর > সাতক্ষীরা > সুন্দরবনের উপকূলে দেশীয় অর্ধশত প্রজাতির মাছের অস্তিত্ব বিলীন
তাজা খবরসাতক্ষীরা

সুন্দরবনের উপকূলে দেশীয় অর্ধশত প্রজাতির মাছের অস্তিত্ব বিলীন

Last updated: 2025/12/09 at 2:19 PM
জন্মভূমি ডেস্ক 2 weeks ago
Share
SHARE

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : পুটি মাছের কাঙ্গালি, ভাত মাছের বাঙ্গালী-এসব কথা এখন শুধুই প্রবাদ। এক সময় দেশি প্রজাতির প্রচুর মাছ পাওয়া যেত দেশের নদী-নালা-খাল-বিলে। তবে এখন সেসব মাছ খুব বেশি দেখা যায় না।
গত কয়েক দশকে দেশি প্রজাতির অনেক মাছই হারিয়ে যেতে বসেছে।বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল সুন্দরবনের উপকূলে মৎস্যভান্ডার নামে খ্যাত বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ ও শরণখোলা সহ দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চলের ৯টি উপজেলায়দেশীয় অর্ধশত প্রজাতির মাছের অস্তিত্ব প্রায় বিলীন। এখন আর পুকুর ভরা মাছ নেই।
জলবায়ুর পরিবর্তন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, অসচেতনতা, অবাধে লবণ পানি তুলে বাগদা চিংড়ি চাষ, ফসলের ক্ষেতে ক্ষতিকর কীটনাশক ও রাসায়নিক সারের যথেচ্ছা ব্যবহার এবং মিঠাপানির অভাবে মৎস্য খনি খ্যাত দক্ষিণাঞ্চলে অর্ধশত প্রজাতির মিঠাপানির দেশীয় মাছের অস্তিত্ব বিলীন হতে চলেছে। সুস্বাদু দেশীয় মাছ এখন আর তেমন মিলছে না। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার শহর বন্দর গ্রামে গঞ্জে সর্বত্রই দেশীয় মাছের চরম সংকট। যা পাওয়া যায় তার অগ্নিমূল।
বিগত দিনে সরকারের উদাসিনতা, মৎস্য অধিদপ্তরের বাস্তবসম্মত সুদূর প্রসারী পরিকল্পনা গ্রহণের অভাব এবং যে সকল প্রকল্প ও কর্মকাণ্ড হাতে নেয়া হয়েছিল তার যথাযত বাস্তবায়ন না করায় এ সেক্টরটি ‘শিকেয়’ উঠেছে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর মৎস্য অধিদপ্তর এবং কয়েকটি এনজিও এসব বিষয়ে কিছু প্রকল্প হাতে নিয়েছে। তবে তাও যৎ সামান্য। জন সচেতনতা তৈরিতে দায়িত্বশীলরা এগিয়ে আসছে না। মৎস্য বিজ্ঞানীদের মতে, কয়েক দশক পূর্বেও এ অঞ্চলে আড়াইশত প্রজাতির মিঠাপানির মাছ ছিল। কিন্তু মনুষ্যসৃষ্ট নানা প্রতিবন্ধকতার কারণে এসব মাছের অনেক প্রজাতি এখন চোখে পড়ে না। তাছাড়া বর্ষা মৌসুমের সময় নদী-খাল-বিল থেকে কারেন্ট জালের মাধ্যমে ব্যাপকহারে ডিমওয়ালা মাছ ধরার কারণে দেশীয় মিঠা পানির বিভিন্ন প্রজাতির মাছের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাচ্ছে। কালের গর্ভে মাছে-ভাতে বাঙালির ঐতিহ্য আজ হারিয়ে যেতে বসেছে।
মৎস্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, দুই দশক পূর্বেও বাগেরহাটের শরণখোলা, মোড়েলগঞ্জ, মংলার, রামপাল, খুলনার রূপসা, তেরখাদা, দিঘলিয়া, বটিয়াঘাটা, ডুমুরিয়া, পাইকগাছা, কয়রা ও ফুলতলা এবং খুলনা সন্নিকটস্থ উপকূলীয় অঞ্চলে প্রায় আড়াইশ প্রজাতির মিঠাপানির মাছ পাওয়া যেত। যার মধ্যে শোল, টাকি, কৈ, গজাল, টেংরা, চিতল, শিং, খয়রা, বাটা, পাইশ্যা, কালিবাউশ, বাইল্যা, কাজলি, সরপুঁটি, পাবদা, খৈলশা, ডগরি, জাবা, ভোলা, বাগাড়, বাশপাতা, ভাঙ্গান, কাইন, দেশী পুঁটি, গোদা চিংড়িসহ অর্ধশত প্রজাতির মিঠাপানির মাছ এখন বিলুপ্তির পথে। এ সকল মাছ স্বাদে ও পুষ্টি গুনে ছিল ভরপুর। এ অঞ্চলের গ্রামে-গঞ্জের কয়েকশ’ হাওড় বাওড়, বিল, খাল নদী থেকে এসকল মাছ সংগ্রহ করতো জেলে সম্প্রদায়।
সারা বছর তারা মৎস শিকার করে নিজ পরিবারের চাহিদাপূরণ সহ জীবিকা নির্বাহ করত। শুষ্ক মৌসুমে খাল বিল হাওরের পানি কমে গেলে চলত মাছ ধরার উৎসব।বর্ষা মৌসুমের পূর্বে এপ্রিল মাস থেকে খালে বিল নদীতে মাছ ডিম্ব নিঃস্বরণ শুরু করে। কারেন্ট জালের ব্যাপকতায় খাল, বিল নদীতে এ মাছের রেনু ধরা পড়ে মাছের প্রজনন প্রচণ্ডভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। জালে ধরা পড়ে নষ্ট হচ্ছে হাজার হাজার রেনু মাছ।পরিবেশ ও মৎস্য বিজ্ঞানীদের মতে, দক্ষিণাঞ্চলে মৎস্য প্রজাতি বিলুপ্তির কারণ হচ্ছে- অপরিকল্পিততভাবে জলাধারে বাধ দেয়ায় ভরা বর্ষা মৌসুমে ডিম ছাড়ার মা মাছ আসতে বাধা পায়। মাছের স্বাভাবিক চলাচলে বাধা তদুপরি খাল, বিল, হাওর, বাঁওড়গুলো ক্রমান্বয়ে ভরাট হয়ে যাওয়ায় প্রতিনিয়ত মাছের প্রজনন ক্ষেত্র সংকুচিত হয়ে আসার কারণে মাছের বংশ বৃদ্ধি বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে।
তাছাড়া বিভিন্ন কারণে পানি দূষণ জলাশয়ের গভীররা হ্রাস, ছোট মাছ ধরার জন্য কারেন্ট জালের ব্যবহারের কারণেও মাছে প্রজাতি ধ্বংস হচ্ছে। মারাত্মক পানি দূষণের কারণে আজ খুলনার ময়ূর নদী মাছের বংশ বৃদ্ধি ও জীবনধারণের অনুপযুক্ত হয়ে পড়েছে। বাগদা চিংড়ি চাষের জন্য বাধ দিয়ে লোনা পানির আধার নির্মাণের কারণে অনেক প্রজাতির মিঠাপানির মাছ বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। দেশীয় প্রজাতির মাছ সংরক্ষণে মৎস্যজীবী তথা সর্বসাধারণকে সচেতন করে তোলার পাশাপাশি স্থানীয় মৎস্য অধিদপ্তরের কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ ও মৎস্য সংরক্ষণ আইনের সঠিক বাস্তবায়ন নিশ্চিত করণের মাধ্যমেই সম্ভব।
এক সময়ের চিরচেনা দৃশ্য ছিল পান্তা ভাতের সঙ্গে পুঁটি মাছের পদ। গ্রামের হাটে কিংবা শহরের অলিগলিতে সহজলভ্য এই মাছটি আজ কেবল স্মৃতিচারণে স্থান পাচ্ছে। একসময় মানুষ গর্ব করে বলত- ‘পুঁটি মাছের কাঙালি, ভাত মাছের বাঙালি।’ এখন সেই প্রবাদ বাক্যই যেন পরিণত হয়েছে ঐতিহ্য হারানোর এক নিঃশব্দ বেদনায়!
বাঙালির পরিচয় ও ঐতিহ্যের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত দেশীয় মাছ এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে। কালের বিবর্তন, পরিবেশ দূষণ, প্রজনন ক্ষেত্র ধ্বংস, অপরিকল্পিত চাষাবাদ ও আধুনিক কৃষির রসায়ননির্ভর নীতির ফলে মাটির সঙ্গে যেমন সম্পর্ক হারাচ্ছে বাঙালি, তেমনি হারিয়ে যাচ্ছে প্রাকৃতিক জলাশয় ও তার আশ্রিত প্রাণবৈচিত্র।
বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএফআরআই) ও সাতক্ষীরা জেলা মৎস্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, এক সময় উপকূলীয় অঞ্চলে আড়াই শতাধিক প্রজাতির মিঠা পানির মাছ পাওয়া যেত। আজ সেই সংখ্যা নেমে এসেছে ভয়াবহ রকমের কম পর্যায়ে। বর্তমানে ৫৪টি প্রজাতি বিলুপ্ত এবং ২৮টি চরম বিপন্ন তালিকায় অবস্থান করছে। শোল, টাকি, কৈ, মাগুর, শিং, চিতল, চ্যাং, পাবদা, খয়রা, পুঁটি, গজাল, মোরকৌল্লো, ভোলা, বাশপাতা, কালিবাউশ, কুইচ্যা, গোদা চিংড়ি-এসব মাছ এখন গ্রামাঞ্চলের শিশুরা বইয়ের পাতায় পড়ে, বাস্তবে দেখে না!
এমন সঙ্কট সৃষ্টির পেছনে রয়েছে একাধিক কারণ। খাল-বিল ও নদী ভরাট হয়ে যাচ্ছে, জলাশয়ে পলি পড়ে গভীরতা হারাচ্ছে, কৃষিজমিতে অতিরিক্ত সার ও কীটনাশকের ব্যবহার মাছের জন্য হয়ে উঠেছে মারাত্মক বিষ। বর্ষা মৌসুমে মাছ যখন ডিম ছাড়ে, তখন বিভিন্ন ধরনের অবৈধ জাল দিয়ে ডিমওয়ালা মা মাছ ধরা হয়। এতে মাছের প্রজননব্যবস্থা ভেঙে পড়ে। নদী ও খালে ডিম ফুটে বের হওয়া রেনু মাছও বাঁচতে পারে না কারেন্ট জালের মারপ্যাঁচে। তাছাড়া সুন্দরবন অঞ্চলে এখনও বিষ প্রয়োগ ও বৈদ্যুতিক শক দিয়ে মাছ ধরার মতো অপরাধ সংগঠিত হয়।
এছাড়া প্রজননের মৌসুমে ডিমওয়ালা মাছ ধরা, ডিম ফোটার আগেই রেনু মাছ নিধন এবং অবৈধভাবে মাছ ধরা (বিষ প্রয়োগ, বৈদ্যুতিক শক) দেশীয় প্রজাতিগুলোর টিকে থাকা আরও কঠিন করে তুলছে।
পরিবেশ বিজ্ঞানী ও সুন্দরবন নিয়ে কাজ করা সাংবাদিক মহসিন উল হাকিম এই প্রতিবেদককে ‌ষ্টষবলেন, ‘শুধু অবৈধ জাল নয়, কৃষি জমিতে ব্যবহৃত রাসায়নিক সার ও কীটনাশক নদী বা খালে এসে মাছের জীবননাশ ডেকে আনে। কলকারখানার বর্জ্য নদী ও জলাশয়ে নেমে গিয়ে মাছের প্রজনন ক্ষমতা হ্রাস করে। অনেক জায়গায় দেখা যায়, ফসলের জমিতে কীটনাশকের প্রভাবে মাছ মরে গিয়ে জমিই ভরে যায়। সেই জমির ধান মানুষের পেটে যায়, পরোক্ষে মানুষের স্বাস্থ্যেও আসে নেতিবাচক প্রভাব।’
সিডিও নামক একটি স্থানীয় পরিবেশ সংগঠনের পরিচালক আল ইমরান বলেন, ‘আইলার পর সাতক্ষীরার বিস্তীর্ণ উপকূলে লবণাক্ততা বেড়ে গেছে। এই লবণাক্ত পানি এখন মাছ চাষের ঘেরগুলোতে তোলা হয়। ফলে মিঠা পানির মাছ বেঁচে থাকতে পারে না। প্রজনন মৌসুমে মা মাছ ধরা পড়ায় বংশবৃদ্ধি থেমে যাচ্ছে, প্রাকৃতিক খাদ্যচক্র ভেঙে পড়ছে।
সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার ১৩৬টি খাল এক সময় স্থানীয় মাছের অভয়াশ্রম ছিল। বর্তমানে অধিকাংশ খাল দখল হয়ে গেছে অথবা ঘেরে নোনা পানি তুলার ফলে মিঠা পানির মাছ টিকে থাকতে পারছে না। বর্ষা মৌসুমে মা মাছ প্রাকৃতিক জলাশয়ে ডিম ছাড়ার জন্য আসলেও অপরিকল্পিত বাঁধ এবং পানিপ্রবাহে বাধার কারণে তারা বাধাপ্রাপ্ত হয়।
মৎস্য বিজ্ঞানীরা বলছেন, মাছের স্বাভাবিক প্রজননের জন্য ‘রেস্টোরেশন পিরিয়ড’ বা তিন মাসের অবসর সময় আবশ্যক। সরকার এই সময় নদী ও জলাশয়ে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা দিলেও বাস্তবে তা অনেক ক্ষেত্রেই মানা হয় না।
সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের ফরেস্ট রেঞ্জ কর্মকর্তা ফজলুল হক জানান, ‘পরিবেশ সংরক্ষণ ও প্রজননক্ষেত্র রক্ষায় সরকার তিন মাসের জন্য মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। তবে এ সময়ও অনেকে তা মানছে না। সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে আন্তর্জাতিক জলযান চলাচলের ফলে শব্দ ও কৃত্রিম আলো মাছ ও জলজ প্রাণিদের প্রজনন ও জীবনযাত্রায় ব্যাঘাত ঘটায়। বন বিভাগ মাছ শিকার নিয়ন্ত্রণে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে, তবে বাস্তবায়নে রয়েছে সীমাবদ্ধতা।’
তিনি আরও জানান, মাছের বিশ্রামকালীন সময় তিন মাস নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়, যা গবেষণালব্ধ তথ্যের ভিত্তিতে নেওয়া সিদ্ধান্।।
মাছে ভাতে বাঙালির সেই ঐতিহ্য আজ শুধুই গল্প। খাবারের টেবিলে দেশীয় মাছের জায়গা দখল করেছে বিদেশি প্রজাতির রুই, কাতলা কিংবা তেলাপিয়া, যেগুলোর স্বাদ কিংবা পুষ্টিগুণ প্রাকৃতিক দেশীয় মাছের ধারেকাছেও নয়।
পুষ্টির দিক থেকেও এর ভয়াবহতা ফুটে উঠেছে বিভিন্ন গবেষণায়। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা এবং গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ইমপ্রুভড নিউট্রিশনের ২০২২ সালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এক যৌথ প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, মাছ চাষ এলাকায় বসবাসকারী পরিবারের ৬০ শতাংশ নারী ও শিশু আয়রন ও আয়োডিন ঘাটতিতে ভুগছে। সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন বলেন, আমিষের অভাবে গ্রামীণ নারীরা ভিটামিন এ, ডি ও সি ঘাটতিজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। শিশুদের মধ্যে দেখা দিচ্ছে রাতকানা, ত্বকের রোগ, দাঁতের সমস্যা, রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাসসহ নানা পুষ্টিগত সংকট।
সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন বলছিলেন, ’আমিষের অভাবে নারীরা পুষ্টিহীনতায় ভোগে। ভিটামিন এ-এর অভাবে রাতকানা, ভিটামিন সি-এর অভাবে স্কার্ভি ও দাঁতের সমস্যা বাড়ছে। শিশুদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাচ্ছে।
এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে প্রয়োজন সর্বস্তরের সচেতনতা ও কার্যকরী উদ্যোগ। শুধু সরকার নয়, স্থানীয় জনগণ, জেলে সমাজ, পরিবেশকর্মী এবং মৎস্যজীবীদের নিয়ে সম্মিলিত উদ্যোগ ছাড়া দেশীয় মাছ রক্ষা সম্ভব নয়। কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে বিলুপ্ত প্রজাতির মাছ ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চললেও পরিবেশের ভারসাম্য না থাকলে তা দীর্ঘস্থায়ী হবে না।
বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট ও পরিবেশবিদদের পরামর্শ অনুযায়ী দেশীয় মাছ রক্ষায় মাছের প্রজনন মৌসুমে অভয়াশ্রম নিশ্চিত করা জরুরী। কারেন্ট জালসহ ক্ষতিকর সব ধরনের জাল নিষিদ্ধ ও মনিটরিং জোরদার, পুকুর-ঘেরে নোনা পানি তোলা বন্ধ, কৃষিতে কীটনাশকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে সবার আগে। তবে অবশ্যই জেলেদের জন্য বিকল্প পেশার সুযোগ সৃষ্টি করার পরামর্শও দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। অথচ সেই নদী এখন প্রায় মাছশূন্য! মাছে-ভাতে বাঙালির পরিচয় শুধু বইয়ের পাতায় থাকলে চলবে না, বাস্তবেও তার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে হবে। তা না হলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম জানবেই না, পুঁটি মাছ কেমন দেখতে ছিল, কীভাবে গ্রামবাংলার খালে-বিলে-জলাধারে ছোট মাছগুলো লাফিয়ে বেড়াত!
মাছে ভাতে বাঙালি’ বহুল প্রচলিত এ কথাটি এখন আর বাস্তবে নেই। এটি এখন কিতাবে জায়গা করে নিয়েছে। হাওর-বাওর, পুকুর, খাল-বিল, হাটবাজার কোথায়ও এখন আর মিঠাপানির সুস্বাদু মাছ আগের মত পাওয়া যাচ্ছে না। গত কয়েক দশকে দেশি প্রজাতির অনেক মাছই হারিয়ে যেতে বসেছে। মৎস্য অধিদফতরের তথ্য মতে, হারিয়ে যাওয়া দেশি প্রজাতির মাছের সংখ্যা আড়াইশ’র বেশি। দেশি মাছের বদলে এখন বাজারে জায়গা দখল করে নিয়েছে বদ্ধপানিতে চাষ করা পাঙ্গাস, তেলাপিয়া, ক্রস ও কার্পজাতীয় মাছ। তারপরও জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে যে চাহিদা বেড়েছে সে পরিমাণ মাছের জোগান দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। ফলে বাজারে মাছের দাম চলে যাচ্ছে ক্রেতা-সাধারণের নাগালের বাইরে।
এ ছাড়া ডোবা-নালা, খাল-বিল ভরাট করায় মাছের আবাসস্থল কমে যাওয়া, কারেন্ট জালের অবৈধ ব্যবহার, ফসলি জমিতে অপরিকল্পিত কীটনাশক ব্যবহার, নদীদূষণ, নদ-নদীর নব্য হ্রাস, উজানে বাঁধ নির্মাণ, ডিম ছাড়ার আগেই মা মাছ ধরে ফেলা, ডোবা-নালা-পুকুর ছেঁকে মাছ ধরা, বিদেশি রাক্ষুসে মাছের চাষ ও মাছের প্রজননে ব্যাঘাত ঘটানো। নদ-নদী হাওর-বিলে মাছ কমে যাওয়ায় বংশ পরম্পরায় মাছ শিকারের ওপর নির্ভরশীল মৎস্যজীবীরা প্রয়োজনীয় মৎস্য আহরণ করতে না পারায় মানবেতর জীবনযাপন করছে। অনেকে এ পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় যুক্ত হচ্ছে।
তবে মৎস্য বিভাগের অভিমত, মুক্ত জলাশয় অর্থাৎ নদী-নালা, খাল-বিল, হাওর এসবে মৎস্য সম্পদ কমে এলেও বৃদ্ধি পাচ্ছে বদ্ধ জলাশয়ে মাছের চাষাবাদ। এতে মিঠাপানির সুস্বাদু মাছ কমে এলেও চাষের মাছের মাধ্যমে পুষ্টির চাহিদা পূরণ হচ্ছে।
এদিকে স্থানীয় মৎস্যজীবীরা জানায়, বর্তমানে আগের তুলনায় আট ভাগের একভাগ মাছও নেই নদী-নালা, খাল-বিল ও হাওরে। তাই তারা সারাদিন শিকার করেও এক দেড়শ বা কোনো কোনো দিন দুইশ টাকার বেশি মাছ শিকার করতে পারে না। আর মাছ না থাকায় বাড়ির ঘাটে সারাদিন অলস বাঁধা থাকে তাদের মাছ শিকারের নৌকাগুলো। দ্রব্যমূল্যের এ অসহনীয় বাজারদরে তারা পরিবার-পরিজন নিয়ে কষ্টে দিন কাটাচ্ছে। জেলে পরিবারের অনেক তরুণ গ্রাম ছেড়ে শহরে এসে রিকশা চালাচ্ছে অথবা অন্য কোনো পেশায় কাজ করছে। জলবায়ু পরিবর্তনে বিরাট নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে দেশের মৎস্য খাতে। বিরূপ প্রভাবের কারণে কমেছে মাছের উৎপাদন। উৎপাদন কমায় মাছের দাম প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে। ফলে ভোক্তারা পড়েছেন চরম বিপাকে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের মোট চাহিদার ৪০ শতাংশ মাছ উৎপাদন হয় প্রাকৃতিক উৎস যেমন- জলাশয়, খাল-বিল, নদী-নালা, হাওর থেকে। বাকি ৬০ শতাংশ মাছ উৎপাদন হয় চাষ থেকে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে উভয় প্রকার উৎপাদনই ব্যাহত হচ্ছে। এ কারণে চাহিদার তুলনায় বাজারে মাছের সংকট দেখা দিয়েছে। বেড়েছে দামও।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের অ্যাকুয়াকালচার বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাহফুজুল হক বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে প্রাকৃতিক উৎস এবং চাষের মাধ্যমে মাছ উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
আমাদের দেশে সাধারণত ডিম থেকে মাছের প্রজনন শুরু হয় ফেব্রুয়ারি থেকে আগস্ট মাসের মধ্যে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মাছ উৎপাদন হয় জুন থেকে আগস্টে। কিন্তু চলতি বছর জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে মে, জুন ও জুলাই মাস তীব্র খরার মধ্য দিয়ে পার হয়েছে। বৃষ্টি না হওয়ায় প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে মাছ কম উৎপাদন হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, চাষের মাধ্যমে মাছের উৎপাদনও কম হয়েছে। কারণ, এবার পর্যাপ্ত পানি পাওয়া যায়নি।
জলবায়ুর পরিবর্তনের কারণে মাছের পোনা ও ডিমের উৎপাদন কমেছে বলে স্বীকার করেছেন মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খ মাহবুবুল হক। তিনি বলেন, গত ১৫ বছর ধরে পাঁচ শতাংশ হারে মাছের উৎপাদন বেড়েছে। পাশাপাশি মানুষের মাছ খাওয়ার প্রবণতাও বেড়েছে। সর্বশেষ খানা জরিপে অনুযায়ী, দিনে মানুষ ৬৮ গ্রাম মাছ খাচ্ছেন। আমাদের লক্ষ্য, মানুষ প্রতিদিন দিনে ৮১ গ্রাম করে মাছ খাবে। ২০৪১ সালে এ লক্ষ্যে আমরা পৌঁছে যাব। গত বছর মাছের উৎপাদন তিন শতাংশ বেড়েছে। এ অর্থবছরে (২০২১৩-২৪) হয়ত খুব বেশি প্রবৃদ্ধি হবে না। জলবায়ুর বিরূপ প্রভাবের কারণে ফেব্রুয়ারি মাসের পর থেকে তাপমাত্রা বেশ গরম ছিল। ফলে, মাছের পোনা ও ডিম উৎপাদন কম হয়েছে।
মিঠা পানির দেশি মাছের সার্বিক অবস্থা নিয়ে আমাদের সংবাদদাতাদের পাঠানো রিপোর্ট তুলে ধরা হলো।
, এ জেলার নদ-নদী ও খাল-বিল থেকে হারিয়ে যেতে শুরু করেছে দেশি প্রজাতির মাছ। অথচ নিকট অতীতেও এই অঞ্চলের নদ-নদী ও খাল-বিল থেকে দেশিয় প্রজাতির হরেক রকমের মাছ পাওয়া গেলেও এখন আর সেসব মাছ খুব বেশি দেখা যায় না। দেশী প্রজাতির অনেক মাছ বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। বর্ষা মৌসুমেও এই অঞ্চলের নদ-নদী ও জলাশয়ে পর্যাপ্ত পানি নেই। পানির অভাবে দেশি মাছের সংকট দেখা দিয়েছে। সেই সঙ্গে পর্যাপ্ত বৃষ্টির অভাবে পানি কম হওয়ায় মাছের প্রজননও কমে যাচ্ছে। ফলে আগের তুলনায় দেশি জাতের অনেক মাছ এখন বিলুপ্তির পথে। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্য বিজ্ঞান অনুষদের অধ্যাপক ড. মোস্তফা হোসেন জানান, দেশে ২৭০ প্রজাতির মিঠা পানির মাছ পাওয়া যায়। তবে সম্প্রতি সময়ে এসব প্রজাতির মাছের মধ্যে অনেকগুলোর প্রজাতির মাছ এখন হারিয়ে যেতে বসেছে। এসব মাছ রক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া অতি জুরুরি।
, মৎস্য ভান্ডার হিসেবে খ্যাত নেত্রকোনার হাওরাঞ্চলে এখন দেশীয় প্রজাতির বিভিন্ন মাছ প্রায় বিলুপ্ত হতে চলেছে। এক যুগ আগেও নেত্রকোনার হাওরাঞ্চলে প্রচুর পরিমান দেশীয় মাছ পাওয়া যেত। অভয়াশ্রম না থাকা, অপরিকল্পিত জলমহাল ইজারা দেয়া, নির্বিচারে ডিমওয়ালা মাছ নিধন, ফসলী জমিতে মাত্রাতিরিক্ত সার ও কীটনাশক প্রয়োগের ফলে এখন আর আগের মতো হাওরে মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। এক সময় চারদিকে থই থই করা হাওড়ে ছিল অঢেল মাছের মেলা। এখন আর আগের মতো নেই জলাশয়ের সেই টইটম্বুর অবস্থা, নেই মাছের বৈচিত্র্যময়তা। নেত্রকোনার বিভিন্ন হাওরের মিঠা পানিতে আর দেখা মেলে না বিভিন্ন প্রজাতির পরিচিত মাছের। এক যুগ আগে হাওরে ২৫৩ প্রজাতির মাছ পাওয়া গেলেও এখন বিলুপ্তির পথে রয়েছে অন্তত ৬৪ প্রজাতির মাছ। এর মধ্যে ৩০ প্রজাতিকে সংকটাপন্ন ও ৯ প্রজাতির মাছকে চরম সংকটাপন্ন হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। সরকারিভাবে বিলুপ্ত প্রজাতির মাছ সংগ্রহের জন্য কাজ করছে সংশ্লিষ্টরা। তবে হাওরের পানিতে বিলুপ্ত প্রজাতির মাছ পুণরায় অবমুক্তকরণসহ নানা প্রকল্প গ্রহণের পরিকল্পনার কথা জানান মৎস্য কর্মকর্তারা। মোহনগঞ্জ উপজেলার ডিঙ্গাপোতা হাওর পাড়ের মল্লিকপুর গ্রামের জেলে চন্দন বর্মণ ও শ্যাওড়াতলী গ্রামের নিপেন্দ্র বর্মন বলেন, তাঁরা পৈতৃক সূত্রে মাছ ধরা ও বিক্রির সঙ্গে সম্পৃক্ত। এক যুগ আগেও তাঁরা যেসব মাছ হাওর থেকে ধরতেন, এখন সে সবের বেশির ভাগই বিলুপ্ত হয়ে গেছে। নতুন পানি আসার সময় কারেন্ট জাল ও চায়না বাইর দিয়ে অবাধে ডিমওয়ালা মাছ ও পোনা ধরার কারণে দেশি প্রজাতির অনেক মাছ বিলুপ্তির পথে রয়েছে। এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে কিছুদিন পর হাওরগুলো মৎস্য শূন্য হয়ে পড়বে। খালিয়াজুরী উপজেলার বল্লভপুর মৎসজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি রবি চন্দ্র দাস বলেন, ‘নদী, খাল, বিল, হাওর ভরাট হয়ে যাওয়া ও পানি শুকিয়ে মাছ আহরণ করায় এখন অনেক মাছ বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে।
সুনামগঞ্জ থেকে মো. হাসান চৌধুরী জানান, হাওর পরিবেষ্টিত এ জেলা এক সময় মাছের রাজ্য হলেও এখন আগের তুলনায় দেশী প্রজাতীর মাছ হাট-বাজারে সচরাচর চোখে পড়ে না। দেশীয় মাছ প্রায় বিলুপ্ত হওয়ার পথে। সে জায়গা দখল করেছে চাষকরা হাই ব্রিড জাতীয় মাছ। আর এই চাষের মাছ খেয়ে মিঠাতে হচ্ছে আমিষের চাহিদা।
সুনামগঞ্জে হাওরে এক যুগ আগেও পর্যাপ্ত পরিমান মিটা পানির সুস্বাদু মাছ পাওয়া যেত। প্রাকৃতিক ভাবে পাওয়া ওই মাছ স্থানীয়দের চাহিদা মিটিয়ে সিলেট, ঢাকা, ময়মনসিংহ, ভৈরবসহ দেশের বাইরে রপ্তানি করা হত। যাহা দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির খাতে ভুমিকা রাখতো। জেলার ছোট –বড় ১৫৩ টি হাওরে ছিল মাছের সরোবর এখন এসব স্মৃতি। সে সব যেন রূপ কথার গল্প। এখন মাছের ভরা মৌসুমে ও সুস্বাদু দেশীয় মাছ স্থানীয় হাট-বাজারে দেখা মিলে না। নদী হাওরে জেলেরা সারাদিন চষেও মাছ ধরতে পারছেন না। গত কয়েক বছরে প্রায় ৩৫-৪০জাতের দেশীয় মাছের অস্তিত্ব পুরো পুরি হুমকির মুখে। গত শনিবার জেলার জামালগঞ্জ উপজেলার সর্ববৃহৎ পাকনা হাওর ও জেলা সদরে দেখার হাওর ঘুরে কয়েক জন জেলের সাথে কথা হলে তারা বলেন আগের মতো হাওর-নদীতে মাছ নেই। হাওরে পাতানো জাল তুলে হতাশ হতে হয় তাদের। কিছু ছোট পুটি, চান্দা, বাইলা,তারা-বাইম ছাড়া অন্য কোন মাছের দেখা মিলেনা। আগে বর্ষার পানিতে রুই, কাতলা, বোয়াল, কালি বাউসসহ অনেক জাতের মাছ পাওয়া যেত। এখন আর সেই মাছ নেই বলে জানান তারা।
নরসিংদী থেকে মো. রফিকুল ইসলাম জানান, জেলায় খাল-বিল নদী-নালা কলকারখানার কেমিক্যালের দূষিত পানির কারণে মিঠা পানির মাছ বিপন্নের পথে। জেলার জলাশয় গুলোতে আগের মত বর্ষা মৌসুমে পানি আসে না। একসময় নদী-নালায় গুলোতে বর্ষা মৌসুম প্রচুর পরিমাণ দেশি মাছ ধরাপড়তো। এখন আর আগের মত এত বেশি মাছ পাওয়া যায় না জেলার খাল বিল ও জলাশয় গুলোতে। কলকারখানার দূষিত কেমিক্যালের বর্জের পানি অবাধে নামছে এ সকল খাল, বিল, নদীনালা ও জলাশয়ে। মিঠাপানি মাছ আরো ধ্বংসের কারণ হচ্ছে, ধান চাষে ব্যবহারিত সার কীটনাশকের পানি নদী নালা খালে বিলে মিশে মাছের প্রজনন ধ্বংস করছে। এতে দেশীয় প্রজাতির অনেক মাছ এখন আর আগের মত চোখে পড়ে না।
ময়মনসিংহের গফরগাঁও থেকে মুহাম্মদ আতিকুল্লাহ জানান, উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নের খাল-বিলে ও নদীতে দেশীয় মাছ হারিয়ে যাচ্ছে। দেশীয় মাছ বিভিন্ন বাজারে খুবই কম পাওয়া যায় । উপজেলা সিনিয়র মৎস্য অফিসার মুহাম্মদ মালিক তানভীর হোসেন জানান, বিভিন্ন খামার ও পুকুর, বিল মৎস্য চাষীদেরকে পরার্মশ দেয়া হচ্ছে যে, দেশি শিং, মাগুর, পাপদা, টেংরা ও গুলশা চাষ করার জন্য । দেশিয় মাছ কমে যাওয়ার কারণ হলো বিভিন্ন রকমের অবৈধ জাল , চিকন জাল দিয়ে পোনা মাছ নিধন অন্যতম কারণ। গফরগাঁও উপজেলার ৮নং গফরগাঁও ইউনিয়নের গড়াবের মোড়ে মাছ ব্যবসায়ী মো. আমান উল্লাহ জানান, গত ১০ থেকে ১৫ বছর ধরে ব্রহ্মপুত্র নদীতে বর্ষাকালে পানি না হওয়ার ফলে দেশির মাছের আকাল দেখা গেছে। এখন প্রতিদিন নৌকা দিয়ে তুলনামুলক ভাবে দেশি মাছ পাওয়া যায় একদম কম। সামান্য কিছু নানান ধরনের ছোট ছোট মাছ ও মাঝে মধ্যে কিছু কিছু বড় বড় দেশি মাছ পাওয়া যায়। সালটিয়া বাজারে আসা ক্রেতা শিলাসী গ্রামের মোঃ এমদাদুল হক (ইন্তু মহাজন) জানান, কয়েক বছর আগে বর্ষাকালে ধান ক্ষেতে ও বিলে দেশির মাছ প্রচুর পরিমানে পাওয়া যেত । কিন্তু কালেরবির্বতনে এখন আর দেশী মাছ চোখে পড়ে না। না পাওয়ার একমাত্র কারণ হলো যে, জমিতে বিভিন্ন ধরনের সারের প্রয়োগের কারনে দেশি মাছ আর উৎপাদন হতে পারছে না। অতিরিক্ত সারের প্রয়োগের কারণে মাটি নষ্ট হয়ে গেছে। যার কারণে দেশি মাছ পাওয়া সোনার হরিনের মতো।
ঢাকার ধামরাই থেকে মো. আনিস উর রহমান স্বপন জানান, ধামরাইয়ে ভরা বর্ষা মৌসুমে বিভিন্ন নদী, নালা, খাল বিলে আগের মতো পর্যাপ্ত পানি নেই। অপরদিকে কলকারখানার বর্জে নদী ও খালের পানি দূষণ, অসময়ে অপরিকল্পিত পুকুর খননের কারণে দেশীয় মাছের বংশ বৃদ্ধি হচ্ছে না। শুধু তাই নয় চায়না দুয়ারী জাল, কারেন্ট জাল ও চাই দিয়ে মা ও পোনা মাছ নিধন করার কারণে মাছের বংশ বৃদ্ধি হচ্ছে না বলে জানালেন উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা কৃষিবিদ । তিনি বলেন, উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজারে নিয়মিত অভিযান চালিয়ে চায়না দুয়ারী জাল ও কারেন্ট জাল আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করলে ও থামানো যাচ্ছে না।
শেরপুরের ঝিনাইগাতী থেকে এস. কে. সাত্তার জানান, মিঠা পানির দেশিয় মাছ এখন বিলুপ্তির পথে। শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতী উপজেলা সদর মাছ বাজারে সরেজমিন গিয়ে নানা প্রজাতির চাষের মাছের দেখা মেলে। বিদেশী রুই, কাতলা, কৈ, তেলাপিয়া, পাঙ্গাস, সিলকাপ, ইত্যাদি মাছের যোগান যথেষ্ট থাকলেও দেখা মেলেনি দেশীয় প্রজাতির মাছ। খোঁজে দেখা যায় দুয়েকজন মৎস্যজীবি অল্প কিছু করে মাছ নিয়ে বসে আছেন। তাও যেভাবে দাম হাকা হচ্ছে তা নি¤œবিত্ত-মধ্যবিত্তদের ক্রয় ক্ষমতার অনেক বাইরে। আদিকাল থেকেই দেশী মাছই পুষ্টির আঁধার। কিন্ত নদী-নালা, খাল, বিল শুকিয়ে মুক্ত জলাশয়ের মাছ বিলুপ্ত হচ্ছে। ফসলি জমিতে অতি মাত্রায় রাসায়নিক সার ও কীটনাশক প্রয়োগে মাছের জীবনচক্র বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

জন্মভূমি ডেস্ক December 10, 2025
Share this Article
Facebook Twitter Whatsapp Whatsapp LinkedIn Email Copy Link Print
Previous Article সুন্দরবনে বেপরোয়া জলদস্যুদের বাহিনী, ভিন্ন পেশায় ফিরে যাচ্ছে-বজীবীরা
Next Article প্লাস্টিক দূষণে ধুঁকছে উপকূলের ১৫ জেলার ‌মানবসভ্যতা

দিনপঞ্জি

December 2025
S M T W T F S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031  
« Nov    
- Advertisement -
Ad imageAd image
আরো পড়ুন
সাতক্ষীরা

মহান মুক্তিযুদ্ধে সাতক্ষীরার কিছু কথা

By জন্মভূমি ডেস্ক 7 hours ago
খুলনা

ডুমুরিয়ায় স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা

By জন্মভূমি ডেস্ক 11 hours ago
খেলাধূলা

মেসি ভারত সফর করতে কত টাকা নিয়েছেন জানা গেল

By জন্মভূমি ডেস্ক 11 hours ago

এ সম্পর্কিত আরও খবর

সাতক্ষীরা

মহান মুক্তিযুদ্ধে সাতক্ষীরার কিছু কথা

By জন্মভূমি ডেস্ক 7 hours ago
জাতীয়তাজা খবর

যেকোনো মূল্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে হবে

By জন্মভূমি ডেস্ক 13 hours ago
সাতক্ষীরা

তালায় শাহ্জালাল ইসলামী এজেন্ট ব্যাংকের শাখা উদ্বোধন

By জন্মভূমি ডেস্ক 13 hours ago

প্রতিষ্ঠাতা: আক্তার জাহান রুমা

প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক: হুমায়ুন কবীর বালু

প্রকাশনার ৫২ বছর

দৈনিক জন্মভূমি

পাঠকের চাহিদা পূরণের অঙ্গীকার

প্রতিষ্ঠাতা: আক্তার জাহান রুমা

প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক: হুমায়ুন কবীর বালু

রেজি: কেএন ৭৫

প্রধান সম্পাদক: লে. কমান্ডার (অব.) রাশেদ ইকবাল, প্রকাশক: আসিফ কবীর কর্তৃক জন্মভূমি প্রকাশনী লি: ১১০/২,সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর বালু সড়ক, খুলনা থেকে মূদ্রিত ও প্রকাশিত

Developed By Proxima Infotech and Ali Abrar

Removed from reading list

Undo
Welcome Back!

Sign in to your account

Lost your password?