
শেখ হাসান আল মাহমুদ, শরণখোলাঃ পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জে বাঘের চাপ বেড়েছে। বাঘের আনাগোনায় বনরক্ষীদের স্বাভাবিক চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। গত এক সপ্তাহে দুইবার রেঞ্জ সদর প্রাঙ্গনে বাঘ হানা দেয়। শুক্রবার দুপুরে বাঘের তাড়া খেয়ে ৮ /১০ টি হরিণ দৌড়ে রেঞ্জ অফিসের সামনে হুমড়ি খেয়ে পরে। এর আগে গত ৫ জুলাই শরণখোলা রেঞ্জ অফিসে ফাঁকা গুলি বর্ষণ করে বাঘ তাড়াতে হয়েছে বনরক্ষীদের।
পূর্ব সুন্দরবন বন বিভাগের শরণখোলা স্টেশন কর্মকর্তা ফরেস্ট রেঞ্জার মোঃ খলিলুর রহমান শনিবার (১২ জুলাই) সকালে বলেন, সুন্দরবনে বাঘের চাপ বেড়েছে। গত এক সপ্তাহে রয়েল বেঙ্গল টাইগার দুইবার শরণখোলা রেঞ্জ অফিস আঙিনায় চলে আসে। প্রথমবার গত ৪ জুলাই রেঞ্জ অফিস সংলগ্ন বনে বাঘের আগমন টের পাওয়া যায় । এ সময় বাঘ হরিণ ও শুকর তাড়া করে ফেরে। এখানে বাঘ অবস্থান করায় বনরক্ষীরা স্বাভাবিক চলাচল করতে পারছিল না। দুই দিনেও বাঘ সরে না যাওয়ায় দুই রাউন্ড ফাঁকা গুলি বর্ষণ করে বাঘ তাড়াতে হয়েছে। এ ঘটনার ৬ দিন পরে শুক্রবার (১১ জুলাই) দুপুরে একই স্থানে আবার বাঘ হানা দেয়। এদিন দুপুরে ৮ /১০ টি হরিণে বাঘের তাড়া খেয়ে দৌড়ে রেঞ্জ অফিসের সামনে এসে হুমড়ি খেয়ে পরে এবং বন্য শুকর গুলো এলোপাতারি দৌড়ে সুন্দরবনের মধ্যে চলে যায়। অফিসের কাছাকাছি বাঘের পায়ের ছাপ দেখা গেছে।
শরণখোলা শুক্রবার রাতে বনরক্ষীরা বাঘের ভয়ে অফিস থেকে বাইরে বের হয়নি। বনরক্ষী ও বনকর্মচারীদের মধ্যে এখন বাঘ আতঙ্ক বিরাজ করছে। শনিবার সকাল থেকে রেঞ্জ ও স্টেশন অফিস আঙিনায় অন্য দিনের মতো বণ্য শুকর বিচরণ করতেও দেখা যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে, বাঘ রেঞ্জ অফিসের কাছাকাছি স্থানে এখনও লুকিয়ে রয়েছে বলে ফরেস্ট রেঞ্জার খলিলুর রহমান জানিয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বনরক্ষী বলেন, শরণখোলা রেঞ্জ ও স্টেশন অফিসের পূর্ব দিকে বনের পাশে নাইলনের ফেন্সিং দিয়ে ঘেরা। এ ঘেরার মধ্যে কয়েকটি হরিণ আটকে থেকে ছোট জঙ্গল ও ঝোপের মধ্যে ঘোরাফেরা করে। এ ছাড়া ফেন্সিংয়ের নীচ দিয়ে কিছু বণ্য শুকর অফিস আঙ্গিনায় চলে আসে। সম্ভবত হরিণের লোভে বাঘ বারবার অফিসের কাছে চলে আসছে বলে ঐ বনরক্ষীদের ধারণা।
পূর্ব সুন্দরবন বন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জ কর্মকর্তা (এসিএফ) রানা দেব বলেন, রেঞ্জ অফিস সংলগ্ন ভোলা নদী সাতরে বাঘ অফিসের কাছে চলে আসছে।
পূর্ব সুন্দরবন বন বিভাগ বাগেরহাটের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মোঃ রেজাউল করীম চৌধুরী বলেন, সুন্দরবনে বাঘের চাপ বৃদ্ধি তো ভালো খবর। সুন্দরবন বাঘের আবাসস্থল। বাঘ বনের যে কোন জায়গায় বিচরণ করতে পারে এটা স্বাভাবিক ঘটনা। এতে বনরক্ষীদের আতংক হওয়ার কিছু নেই বলে ডিএফও জানিয়েছেন।