
শেখ সিরাজউদ্দৌলা লিংকন,কয়রা : প্রশাসনের ব্যাপক তৎপরতার মাঝে ও কোনভাবেই থামানো যাচ্ছে না সুন্দরবনের নদী খালে বিষ দিয়ে মাছ নিধন, এভাবে বিষ দিয়ে মাছ নিধন অব্যাহত থাকায় হুমকির মুখে পড়েছে বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের জীববৈচিত্র। প্রতিনিয়ত বিষ প্রয়োগে ধ্বংস হচ্ছে সুন্দরবনের মৎস্য ভান্ডার, ধ্বংস হচ্ছে জলজ সম্পদ বনজ সম্পদ সহ বন্যপ্রাণীর অস্তিত্ব।
এদিকে বন্ধ মৌসুমে অবৈধ ভাবে সুন্দরবনে অবস্থান করে বিষ দিয়ে মাছ শিকারকারী ২৫ বিষদস্যু ও তাদের মহাজনদের নাম বনবিভাগের কর্মকর্তার নিকট প্রকাশ করায় এক জেলেকে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছেন খুলনার কয়রা উপজেলার বিষদস্যু মহাজন নেতা মিন্টু সানা ও তার সাঙ্গোপাঙ্গরা।
সোমবার (২১ আগষ্ট) বিকেলে ৪ নম্বর কয়রা গ্রামের আব্দুল বারী সানা কয়রা থানায় নিরাপত্তা চেয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ১১ আগষ্ট সুন্দরবনের কাশিয়াবাদ ফরেষ্ট স্টেশনে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা, বিভিন্ন ফরেষ্ট স্টেশনের কর্মকর্তা, বনরক্ষী, পুলিশ প্রশাসন ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে সুন্দরবন সুরক্ষা বিষয়ক এক বৈঠকে হয়। সেখানে কারা সুন্দরবনে বিষ দিয়ে অবৈধ ভাবে মাছ মারে ও বনের অভ্যন্তরে মাছ শুকিয়ে বিক্রি করে এমন লোকদের তালিকা দিতে বলে। পরবর্তীতে বনজীবী জেলে বারী সানা কয়রা উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ২৫ জন বিষদস্যু ও তাদের মহাজনদের নামের তালিকা করে বনবিভাগের কর্মকর্তাদের নিকট প্রেরণ করে। ওই তালিকার তথ্য অনুযায়ী কাশিয়াবাদ ফরেস্ট স্টেশন কর্মকর্তা অভিযান চালিয়ে গহীন বনের মধ্য থেকে ২টি জালসহ নৌকা আটক করে।
অভিযোগে জেলে আব্দুল বারি সানা উল্লেখ করেছেন, তালিকাভুক্ত ৪ নম্বর কয়রা গ্রামের বিষ দস্যু মিন্টু সানা ও তার সহযোগি মহাজনেরা,গত ১৫ আগষ্ট বিকেলে কয়রার কাশিয়াবাদ বাজারে আমাকে দেখেতে পেয়ে কেন আমি বিষদস্যুদের তালিকা দিয়েছি জিজ্ঞেস করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। এছাড়া ওই বিষদস্যু নেতারা আমি বনে গেলে অবৈধ জাল ও বিষ দিয়ে ফরেষ্ট কর্মকর্তাদের নিকট আমাকে ধরিয়ে দিয়ে হয়রানি করার হুমকি দেয় । এসব ঘটনায় তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মিন্টু সানার ব্যবহারিত মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
সুন্দরবনের কাশিয়াবাদ ফরেস্ট স্টেশন কর্মকর্তা শ্যামা প্রসাদ রায় বলেন, সুন্দরবনের সব ধরনের বনজ সম্পদ আহরণ ও পর্যটক প্রবেশ তিন মাস বন্ধ রয়েছে। এরপরও সুন্দরবনের গহীনের খালে বিষ দিয়ে মাছ শিকারের চেষ্টা করে চিহ্নিত কিছু বিষদস্যু। আবার কেউ কেউ ডাঙায় বসে জেলেদের দাদনের ফাঁদে ফেলে বিষ দিয়ে মাছ শিকারে উৎসাহিত করেন। আমরা স্থানীয় জেলেদের মাধ্যমে অবৈধভাবে বনে অবস্থানকারীদের তালিকা নিয়ে অভিযান পরিচালনা করছি। আব্দুল বারী সানা নামের এক জেলেকে প্রশাসনের সহোযোগিতা করায় স্থানীয় বিষদস্যু মহাজনরা হুমকি দিচ্ছে বলে আমরা জেনেছি। বিষয়টি আমার উর্ধতন কতৃপক্ষকেও জানিয়েছি।
কয়রা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিজানুর রহমান বলেন, ৪ নম্বর কয়রা এলাকার বনজীবী জেলে আব্দুল বারি একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। আমরা বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেব।