
মোংলা প্রতিনিধি : সুন্দরবনে মাছ ধরতে গিয়ে বনবিভাগের অভিযানে বড় ভাই আটক হয়ে জেলহাজতে, আর ছোট ভাই নিঁখোজ রয়েছেন। নিখোঁজের সন্ধানে পরিবারসহ গ্রামের অর্ধশত লোক ট্রলার নিয়ে বনের বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশী অভিযান চালাচ্ছেন। তবে সোমবার বিকেলে বনবিভাগের জোংড়া ঘাটে বেঁধে রাখা লাশটি গুম করা হয়েছে বলে অভিযোগ হিলটনের পরিবার ও এলাকাবাসীর। তাদের দাবী ওই লাশটি হিলটনের ছিলো, বনবিভাগ দায় ও মামলা এড়াতে লাশটি গুম করে ফেলেছেন।
নিখোঁজের পরিবার ও গ্রামবাসী জানান, উপজেলার চিলা ইউনিয়নের ৫নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম চিলা গ্রামের মিঠুন নাথের বড় ছেলে সাগর নাথ (২৫) পেশায় জেলে আর ছোট ছেলে হিলটন নাথ (১৯) ইপিজেডের সিকাগো সিগারেট কোম্পানীতে চাকরি করেন। কিন্তু গত শুক্রবার ছুটি থাকায় বড় ভাই সাগরের সাথে সুন্দরবনে মাছ ধরতে যান ছোট ভাই হিলটন। সাগরের সাথে ছোট ভাইসহ জাকির হোসেন (৩৪) ও অসিম শেখ নামের সহযোগী জেলেও ছিলো। গত শুক্রবার রাতে বনের করমজল সংলগ্ন ৮নম্বর খালে মাছ ধরার প্রস্তুতিকালে সেখানে অভিযান চালায় বনবিভাগ। বনবিভাগ দুইটি স্প্রিড বোট ও দুইটি ট্রলার নিয়ে ওই খালে ঢুকে জেলে নৌকাটিতে উঠে জেলেদেরকে মারপিট শুরু করে ও দুই রাউন্ড ফাঁকা গুলিও চালায়। এ সময় মারপিট করে সাগর, জাকির ও অসিমকে আটক করেন বনবিভাগ। আর হিলটন বনবিভাগের মারপিটের একপর্যায়ে খালে পড়ে যান। মারপিটের আঘাতে খালে পড়ে স্রোতে ভেসে/তলিয়ে যান হিলটন। ওই রাতের অন্ধকারে হিলটনকে কিছুক্ষণ খোঁজাখুজি করে না পেয়ে পরে আটককৃতদের এনে শনিবার আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠান। তারা বলেন, সোমবার বিকেলে জোংড়া ফরেস্ট ঘাটে লাশ বেঁধে রাখার খবর পেয়ে পরিবারসহ অন্যান্য লোকজন রওনা হয়ে গেলে পৌঁছানোর আগেই লাশটি গায়েব করে ফেলেছে বনবিভাগ।
পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বনসংরক্ষক (এসিএফ) মোঃ মাহবুব হাসানের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
অভিযানে থাকা চাঁদপাই রেঞ্জের স্টেশন অফিসার মোঃ খলিলুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছু জানিনা, আমার উচ্চপদস্থ এসিএফ স্যারের (চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বনসংরক্ষক মোঃ মাহবুব হাসান) সাথে কথা বলেন।
পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন, এ বিষয়ে আমি তো কিছুই জানিনা। নিখোঁজ কোথায় হয়েছে, না হয়েছে, কেউ দেখেছে কিনা, সেটি অভিযানকারী এসিএফের (চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বনসংরক্ষক মোঃ মাহবুব হাসান) সাথে কথা বলে জেনে দেখছি। আর জোংড়া ঘাটে লাশ বেঁধে রাখার পর গায়েবের বিষয়ে তিনি বলেন, এ বিষয়ে জোংড়া অফিসে কথা বলেন, আমি কিছু জানিনা।
এদিকে জেলে নিখোঁজের বিষয়ে চিলা ইউপি চেয়ারম্যান গাজী আকবর হোসেন বলেন, আমি শুনেছি ওই জেলেরা পাস নিয়ে মাছ ধরতে সুন্দরবনে গিয়েছিলো। ওদেরকে আমি চিনি। তাদের মধ্যে হিলটন খালে পড়ে নিখোঁজ রয়েছেন। কিভাবে নিখোঁজ ও মারা গেছেন, এখানে কোন উদ্দেশ্য আছে কিনা আমি জানি না।