By using this site, you agree to the Privacy Policy and Terms of Use.
Accept

প্রকাশনার ৫২ বছর

দৈনিক জন্মভূমি

পাঠকের চাহিদা পূরণের অঙ্গীকার

  • মূলপাতা
  • জাতীয়
  • আন্তর্জাতিক
  • রাজনীতি
  • খেলাধূলা
  • বিনোদন
  • জেলার খবর
    • খুলনা
    • চুয়াডাঙ্গা
    • বাগেরহাট
    • মাগুরা
    • যশোর
    • সাতক্ষীরা
  • ফিচার
  • ই-পেপার
Reading: সুন্দরবনে ১৫ বার বাঘের সঙ্গে দেখা মিলল যার
Share
দৈনিক জন্মভূমিদৈনিক জন্মভূমি
Aa
  • মূলপাতা
  • জাতীয়
  • জেলার খবর
  • ই-পেপার
অনুসন্ধান করুন
  • জাতীয়
  • জেলার খবর
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলাধূলা
  • বিনোদন
  • ই-পেপার
Have an existing account? Sign In
Follow US
প্রধান সম্পাদক মনিরুল হুদা, প্রকাশক আসিফ কবীর কর্তৃক জন্মভূমি প্রকাশনী লি: ১১০/২,সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর বালু সড়ক, খুলনা থেকে মূদ্রিত ও প্রকাশিত
দৈনিক জন্মভূমি > জেলার খবর > সাতক্ষীরা > সুন্দরবনে ১৫ বার বাঘের সঙ্গে দেখা মিলল যার
তাজা খবরসাতক্ষীরা

সুন্দরবনে ১৫ বার বাঘের সঙ্গে দেখা মিলল যার

Last updated: 2025/01/26 at 1:51 PM
করেস্পন্ডেন্ট 9 months ago
Share
SHARE

সিরাজুল ইসলাম, শ্যামনগর : বাঘ দেখা নিয়ে ড. মনিরুলের বিচিত্র সব অভিজ্ঞতা থেকে জানা যায়, আমরা না দেখলেও বাঘ নাকি ঠিকই দেখে মানুষকে! প্রচুর মানুষ সুন্দরবন গিয়ে বাঘের পায়ের ছাপ দেখে, কিন্তু বাঘ দেখে না। এরমানে হলো, মানুষকে দেখলেই যে বাঘ তাকে আক্রমণ করবে ব্যাপারটি মোটেও তা না। বাঘ মানুষকে সবসময়ই দেখে, তবে নিতান্তই বিরক্ত না হলে হুঙ্কার ছাড়ে না, বা দেখার বিষয়টা প্রকাশও করে না। অর্থাৎ মানুষখেকো না হলে মানুষকে এড়িয়ে বা পাশ কাটিয়ে যাওয়াই নাকি রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের অভ্যাস।

এক, দুইবার নয় রীতিমতো ১৫ বার নিজ চোখে বাঘ দেখার বিরল অভিজ্ঞতা রয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মনিরুল হাসান খানের
২০০১ সাল, আগস্ট মাস। বর্ষার এক রোদেলা পড়ন্ত বিকেল। সুন্দরবনের দক্ষিণ-পূর্বে, কটকার পাশ দিয়ে চলে গেছে সরু খাল। সেই খালের তীর ঘেঁষে প্রায় ঘণ্টাখানেকের হাঁটা রাস্তা। একে তো কাদামাটি, এরপর ম্যানগ্রোভ বন বলে কথা। পুরো রাস্তাই মাটি ফুঁড়ে বেরনো এবড়োখেবড়ো শ্বাসমূলে ভরা। সঙ্গে ভ্যাপসা গরম আর চিটচিটে ঘাম, সবমিলে প্রাণ ওষ্ঠাগত। হঠাৎই বলতে গেলে দশ ফুটের ভেতরে প্রচণ্ড জোরে এক পিলে চমকানো হুঙ্কার! ব্যাঘ্র গর্জন কি একেই বলে!

বাঘ দেখা বা গর্জন শোনার বিষয়টি থ্রিলার গল্প বা উপন্যাস, খুবজোর চলচ্চিত্র, এ পর্যন্তই ঠিকঠাক। বাস্তবে এ অভিজ্ঞতা কেমন হতে পারে তা ভাবতে ভাবতেই শুনছিলাম বাঘ ও বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মনিরুল হাসান খানের সুন্দরবনের রয়েল বেঙ্গল টাইগারের সঙ্গে মুখোমুখি সাক্ষাতের দুর্দান্ত সব গল্প। এক, দুইবার নয় রীতিমতো ১৫ বার নিজ চোখে বাঘ দেখার বিরল অভিজ্ঞতা রয়েছে তার!

বাঘের দেখা পাওয়া নাকি রীতিমতো সৌভাগ্যের বিষয়। এমনকি ১০০ বার সুন্দরবন দর্শনেও বাঘের দেখা মেলেনি, এমন নজিরও রয়েছে ঢের। অধ্যাপক মনিরুলের বাঘ দেখার গল্প কিন্তু বেশ ব্যতিক্রম। যার শুরুটা হয়েছিল ১৯৯৪ সালে। প্রাণিবিদ্যায় পড়ার সুবাদে প্রথমবারের মতো সুন্দরবন যান সেবার। সেই যে শুরু এরপর কেটে গেছে তিনযুগ, এখনও বাঘের সন্ধানে, সুন্দরবনে যাওয়া হয় প্রতিনিয়তই। তবে প্রথমবার সুন্দরবনে গিয়েই অবশ্য সন্ধান পাননি ‘বাঘমামা’র। পায়ের ছাপ দেখে খুশি থাকতে হয়েছিল সেইসময়।

বাঘ দেখার জন্য অপেক্ষা করতে হয় এরপর আরও ৭ বছর! ততদিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরিয়েছেন। স্নাতক-স্নাতকোত্তরে প্রথম বিভাগ অর্জন করে গেছেন বিশ্বের প্রাচীনতম ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে, পিএইচডি ডিগ্রি নিতে। সর্বোচ্চ এ ডিগ্রির বিষয় হিসেবে বেছে নিলেন, ‘সুন্দরবনের রয়েল বেঙ্গল টাইগার’। ফলাফল, আবার সুন্দরবন ভ্রমণ। ২০০১ সাল থেকে শুরু করে ২০০২ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত দেড়বছর ফিল্ড পর্যায়ের গবেষণাকালে ১৪ বার পেয়ে যান বাঘের সঙ্গে সাক্ষাতের সুবর্ণ সুযোগ

দিনটা ছিল, আগস্টের ৯। বর্ষাকাল। সুন্দরবনের কটকায় অনেকক্ষণ হাঁটা শেষে হঠাৎ বাঘের পায়ের ছাপ আবিষ্কার করলেন ড. মনিরুল ও তার দুই সহকারী। তবে সেটা ছিল পুরোনো পায়ের ছাপ। যাহোক, সারাদিনের কাজ শেষে ফেরার পথে আবারও পায়ের ছাপ! তবে এবারে একদম নতুন একটা পুরুষ বাঘ। বাঘের ডেকে ওঠা শুনে আঁতকে উঠে দ্রুত আধাঘণ্টার ভেতর ফিরে গেলেন নিরাপদ আশ্রয়স্থল, টাওয়ারে। টাওয়ারে পৌঁছে বুঝলেন, একটি নয় বাঘ আসলে দু’টি। ক্রমাগত ডেকেই চলেছে তারা। উদ্দেশ্য বাঘিনীকে আকৃষ্ট করা!
এরমধ্যেই অনেকটা হঠাৎ করেই বাঘের ডাক নকলের বুদ্ধি! নকল বাঘের ডাক শুনে তৃতীয় বাঘের আবির্ভাব ভেবে যদি দেখা দেয় দুই বাঘ, উদ্দেশ্য ছিল সেটাই। তাই দুই বাঘের ভাবের আদানপ্রদানের মধ্যেই টাওয়ার থেকে নেমে মাটির হাঁড়িতে মুখ রেখে বাঘের মতো করে ডাক দেওয়া! এরপরই বাঘটা থামিয়ে দিলো তাদের ডাক। কী হলো, কে তার সাম্রাজ্য দখল করল, এসব পর্যবেক্ষণ করতেই বোধহয় শণের বিস্তীর্ণ মাঠের মধ্য থেকে মাথা বের করে দিলো সেই বাঘমামা! খালি চোখ আর বাইনোকুলার দিয়ে যতটুকু পারা যায় প্রাণভরে বাঘ দেখে নেওয়া। এভাবেই ড. মনিরুলের প্রথম বাঘ দর্শন। বাঘটি নাকি প্রায় ২০ মিনিট একদৃষ্টে তাকিয়ে ছিল।

২০০১ সা-২০০২ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত সুন্দরবনে ফিল্ডওয়ার্ক করেন অধ্যাপক মনিরুল। সেসময়েরই আরও এক ঘটনার কথা জানালেন বাঘ বিশেষজ্ঞ। জানালেন, প্রথম দিকে কেবল খালি বাঘের পায়ের ছাপ দেখেই সন্তুষ্ট হয়ে দিন কাটছিল তার। কেবল পায়ের ছাপই দেখেন, কেন বাঘ সামনে আসে না, এমন প্রশ্ন করতে করতেই একদিন পেয়ে গেলেন বেশ বড়সড় একদম টাটকা বাঘের পায়ের ছাপ। বাঘের সন্ধানও মিলল খানিকবাদেই। তবে সামনে নয়, বাঘের পেছনের দিক থেকে। যাহোক, পেছন থেকেই একের পর এক ছবি তুলে যাচ্ছেন, কিন্তু বাঘমামার তো পাত্তাই নেই তাদের দিকে। এখনকার ডিজিটাল যুগ তো আর তখন ছিল না। অর্থাৎ ৩৬টি ফিল্ম শেষ তো, ছবি তোলার সব আশাও শেষ। কেবল যখন একটাই ফিল্ম বাকি, সেসময় অনেকটা মরিয়া হয়েই বাঘের উদ্দেশ্যে দিলেন শিস। শব্দ শুনে বাঘটি মুখ ঘুরিয়ে যেই না একটু তাকালো অমনি ঝট করে বাঘের পুরো মুখসহ ছবি তুলে ফেললেন তিনি। জানালেন, সেটিই ছিল তার প্রথমবারের মতো সামনে থেকে বাঘকে ক্যামেরাবন্দি করা

বাঘ দেখা নিয়ে ড. মনিরুলের বিচিত্র সব অভিজ্ঞতায় বেশ ভালোমতোই মজে যাচ্ছিলাম। এমন সময় দারুণ এক তথ্য জানালেন প্রাণিবিদ্যার এ অধ্যাপক। আমরা না দেখলেও বাঘ কিন্তু ঠিকই দেখে মানুষকে!

১০০ বার সুন্দরবনে গিয়ে বাঘ দেখতে না পেলেই বা কী, বাঘের চোখকে ফাঁকি দেওয়া নাকি মোটেও সম্ভব নয়।

প্রচুর মানুষ সুন্দরবন গিয়ে বাঘের পায়ের ছাপ দেখে, কিন্তু বাঘ দেখে না। এরমানে হলো, মানুষকে দেখলেই যে বাঘ তাকে আক্রমণ করবে ব্যাপারটি মোটেও তা না।

বাঘ মানুষকে সবসময়ই দেখে, তবে নিতান্তই বিরক্ত না হলে হুঙ্কার ছাড়ে না, বা দেখার বিষয়টা প্রকাশও করে না। অর্থাৎ মানুষখেকো না হলে মানুষকে এড়িয়ে বা পাশ কাটিয়ে যাওয়াই নাকি রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের অভ্যাস।

পিএইচডি চলাকালে সুন্দরবনের ‘বাঘের মানুষ দেখা’র আরও এক অভিজ্ঞতার গল্প শোনালেন
সুন্দরবনের সুপতিতে যান সেবার, বেশ সরু একটা খালের ভেতর, নৌকায় চড়ে। বের হয়ে আসার সময় দেখেন তার ধারেই বসেছিল একটি কমবয়সী বাঘ। সম্ভবত মাছ ধরার জন্য সেই খালের ধারে বসেছিল বাঘটি। তবে তাদের দেখা মাত্রই উঠে পাড়ের দিকে চলে যায় সেই বাঘ।

‘বাঘটির ছবি তুলতে কাছে গিয়ে দেখি, গাছপালা, ঝোপঝাড়ের ভেতর দিয়ে সে বেশ আগ্রহ নিয়ে তাকিয়ে দেখছে। বয়সে তরুণদের যেমন সবকিছুতে খুব আগ্রহ থাকে, ঠিক সেভাবেই সে তাকিয়ে দেখছে আমাদের, একটু পর ঝোপের আড়ালে চলে যাচ্ছে, আবারও ফেরত আসছে।’ বয়স কম হওয়ার কারণে বাঘটির মানুষকে দেখার আগ্রহটাও অনেক বেশি ছিল বলেই মনে করেন সেই বাঘ বিশেষজ্ঞ।

এতোবার বাঘের সঙ্গে সাক্ষাৎ, অথচ এক-দুবার বাঘের তাড়া খাবেন না, তা কি হয়?

সুন্দরবনের কচিখালিতে গিয়ে সেরকমই এক অভিজ্ঞতার মুখে পড়তে হয়েছিল ড. মনিরুল ও তার দলবলকে, তবে থাবার হাত থেকে অল্পের জন্য পালিয়ে বাঁচতে পেরেছিলেন জানিয়েই একটু হাসলেন এই বাঘ বিশেষজ্ঞ।

জানালেন, সেবার একপাশে শণের মাঠ, একপাশে বন, এর মাঝ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন তারা বাঘ জরিপের কাজে। এরমাঝে দলছুট হওয়া নিষেধ থাকলেও ডেটার কাজ করতে করতে কিছুটা আলাদা হয়ে যান তিনি। তার যে সহকারী ছিলেন, তিনি লাঠি নিয়ে সামনে বেশ খানিকটা এগিয়ে গিয়েছিলেন। সেসময় একটি বাঘের সামনে পড়ে যান সেই ব্যক্তি। খুব সম্ভবত বাঘটা ঘুমাচ্ছিল। হঠাৎ সেই সহকারীর পায়ের আওয়াজে ঘুম ভেঙ্গে যায় আর গোঙানি দিয়ে ওঠে বাঘটি। গোঙানি শুনে দ্রুত দৌড়াতে গিয়ে আরও উল্টে পড়ে যান তার সহকারী।

“দৌড়ে গিয়ে তাড়াতাড়ি তাকে ধরে সরিয়ে একটা নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যাই। গোঙানিটা ঠিক বাঘের মতো ছিল নাকি শুয়োরের, এ নিয়ে আলোচনা করছিলাম! সময়টা ছিল শীতকাল, তাই বেশ কয়েকজন শণ কাটুরেও ছিল আমাদের কাছাকাছি। ‘বাঘ হোক আর যাই হোক, আমরা কোনো ভয় পাই না’, তারা এসে আমাদের উদ্দেশ্যে এসব কথা বলতে শুরু করল।”

“বাঘের হুঁশিয়ারি শুনেও কিছুটা বীরত্ব দেখানোর নেশা যেন পেয়ে বসে তাদের। বেশ খানিকদূর যাওয়ার পর যখন হুঙ্কার ছাড়ে বাঘটি, সেসময় তাদের টনক নড়ে। সমস্ত বাহাদুরি ছেড়ে স্যান্ডেল-ট্যান্ডেল ফেলে রীতিমতো দৌড়!”

“আমিও পেছনে তাকিয়ে শুধু একঝলক দেখলাম, জঙ্গল ভেঙে দৌড়ে আসছেন স্বয়ং বাঘমামা, আর পেছনে ফিরে দেখার সুযোগ কই। কোনোমতে দে ছুট! পড়িমড়ি করে এক দৌড়ে কচিখাল ফরেস্ট অফিসের পুকুরপাড়!”

পিএইচডির সুবাদে প্রায় দুইবছর টানা সুন্দরবনে থাকা অবস্থায় এ বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ বাঘ দেখেন ১৪ বার। আর ১৫তম বার দেখেন ২০০৮ সালে। তবে সেবারের বাঘ দেখাটা ছিল খুবই বিশেষ। ঝড়ের কবল থেকে বাঁচতে সাঁতরাচ্ছিল সেই বাঘটি।

বাঘবিশেষজ্ঞের মতে, এতো বড় সাইক্লোন পেছনে থাকার পরেও উদ্বেগ বা ভয়ের কোনো চিহ্নই ছিল না সেদিন বাঘটির চোখে-মুখে। তাই বাঘকে কেবল বনেরই নয়, সুন্দরবনের মতো জলাবনের রাজাও বলা যায়, দাবি তার।
তার মতে, সুন্দরবনের পশ্চিমাংশে মানুষেখেকো বাঘের সংখ্যা অনেকবেশি। তবে পূর্বে বা বাংলাদেশ অংশের বাঘ খুব একটা মানুষখেকো হয় না। পশ্চিমবঙ্গের দিকে কেন মানুষখেকো বাঘের সংখ্যা বেশি, এ সম্পর্কে একটি অনুমানের কথা জানালেন তিনি। তার মতে, এককালে কলেরা বা বসন্তের মতো মহামারি পশ্চিমবঙ্গের দিকে অনেক বেশি হয়েছে। সেসময় তাদের মরদেহগুলো ভাসিয়ে দেওয়া হতো নদীতে। এসব পচেগলে যাওয়া মরদেহগুলো সুন্দরবনে যেয়ে আটকে যেতো। পশ্চিমাংশের ওইসব এলাকার বাঘগুলো সেগুলো খেয়ে মানুষখেকো হয়ে উঠতে পারে বলে ধারণা তার।

অন্যদিকে, এই অঞ্চলের মানুষের এসব রোগে মারা যাওয়ার সংখ্যা কম ছিল। তাই এসব এলাকার বাঘ সাধারণত মানুষখেকো নয় বলেই ধারণা তার। তিনি আরও জানালেন, মা বাঘ যদি মানুষখেকো হয়, সেক্ষেত্রে তার সন্তানও মানুষখেকো হতে পারে। তাই এদিকের বাঘ নিয়ে তার ভয়ও কম। এমনকি অস্তিত্ব নিয়ে হুমকির মুখে না পড়লে এদিককার বাঘ খুব একটা ক্ষতিকর নয় বলেও জানালেন তিনি। এজন্যই বোধহয় বাঘ দেখলে প্রথম থেকেই উত্তেজনা ছাড়া তেমন কোনো ভয় কাজ করেনি তার, এমনটিও জানালেন এ বাঘ গবেষ

বাঘ নিয়ে জরিপের কাজে যেহেতু প্রায় দেড় বছর থাকা হয়েছে সুন্দরবন, সেই সুবাদে চিত্রা হরিণ থেকে শুরু করে বানর, বিভিন্ন পাখি সবকিছুর সৌন্দর্যে বিমোহিত হয়েছেন বারবার। সুন্দরবনে সাপ, কুমিরের মুখোমুখিও হয়েছেন।
জানালেন, ট্যুরিস্ট লঞ্চগুলো সাধারণত গোসল আর খাবারের জন্য প্রয়োজনীয় পানি নিয়েই যায়। যেহেতু ফিল্ডওয়ার্কের কাজে তাদের মাসে ১২ দিন করে সুন্দরবনে থাকতে হতো, তাই তারা লাইফবোটের
মতো ছোট ছোট আকৃতির লঞ্চ ব্যবহার করতেন। এগুলো সাইজে বেশ ছোট হওয়ায় পর্যাপ্ত পানি নেওয়া সম্ভব ছিল না, গোসল আর খাওয়ার পানি নিয়ে বেশ সমস্যা হতো। যেকোনো ফরেস্ট অফিসের পুকুর থেকে মিঠাপানি এনে ফিটকিরি দিয়ে পরিষ্কার করে তা ফুটিয়ে খেতেন আর গোসলটা সরু বা মাঝারি খালে একপ্রকার যেনতেনভাবে সেরে নিতেন। এভাবে গোসল শেষে একদিন লঞ্চে উঠেই দেখেন কুমিরও সেখান দিয়েই সাঁতরাচ্ছে! আর সাপ? যে সে সাপ না, রীতিমতো রাজগোখরার মুখোমুখিও হয়েছেন বেশ কয়েকবার। রাজগোখরার এক কামড়ে নাকি প্রাপ্তবয়স্ক হাতিও মারা যেতে পারে। এই রাজগোখরারও পিছু নিয়েছিলেন একবার, উদ্দেশ্য ছিল ছবি তোলা, হঠাৎ নাকি সাপটি থেমে গিয়ে মাটি থেকে এক মিটার উঁচু এক ফনা তুলে তারদিকে তাকা

জীবদ্দশায় ১৫ বার বাঘ দেখা তো আর চাট্টিখানি কথা নয়। তাই অনেকটা আগ্রহভরেই জানতে চাওয়া, এই উৎসাহের উৎস কী।

উত্তরে অনেকটাই স্পষ্ট হয়ে এল, বনে বনে ঘুরে বেরিয়ে বাঘ দেখা আর বন্যপ্রাণী নিয়ে কাজের প্রতি এ ভালোবাসার উৎস কিছুটা উত্তরাধিকারসূত্রেই।
জানা গেল, তার বাবা ছিলেন শিকারী। এবারে সেই ব্রিটিশ আমল আর শিকারী বাবার গল্প হলো কিছুক্ষণ। জানলাম, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগে চাকরির সুবাদে টাংগাইলের মধুপুর গড় অঞ্চলে অনেক বছর থেকেছেন তার বাবা। বিস্তীর্ণ সেই শালবনে বাঘ থেকে শুরু করে সবধরনের বন্যপ্রাণীই শিকার করতেন। ছোটবেলায় বাবার মুখ থেকে সেসব গল্প শুনতে শুনতেই হয়ত বন্যপ্রাণীদের প্রতি একরকম মায়ায় জড়িয়ে পড়েন মনিরুল নিজেও।

জানালেন, গির্জার এক ফাদারের সঙ্গে মিলে তার বাবার সেইসব শিকার, বিশেষ করে বাঘের সঙ্গে এনকাউন্টারের গল্পগুলোই বোধহয় তার নিজের বাঘ ও বন্যপ্রাণী গবেষক হয়ে উঠতে অনেকটা টনিক হিসেবে কাজ করে১

২০০৪ সালে ‘সুন্দরবনের বাঘের প্রতিবেশ ও সংরক্ষণ’ নিয়ে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন শেষে যোগ দেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগে। বর্তমানে বিভাগটির অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত।

তিনিই প্রথম, তার আগে কেউই সুন্দরবনের বাঘ নিয়ে পিএইচডি করেননি। পেয়েছেন কাজের স্বীকৃতিও। ২০১৫ সালে জাতীয় ‘বঙ্গবন্ধু অ‍্যাওয়ার্ড ফর ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন’ পেয়েছেন। সুন্দরবনে বাঘ দেখা নিয়ে ‘সুন্দরবনে বাঘের সন্ধানে’ নামে একটি বই লিখেছেন ড. মনিরুল। রয়েছে ছবি তোলার ওপর ‘ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফি’ নামে আরেকটি বই।

তার চাওয়া, সুন্দরবনের বাঘেরা টিকে থাকুক।

করেস্পন্ডেন্ট January 26, 2025
Share this Article
Facebook Twitter Whatsapp Whatsapp LinkedIn Email Copy Link Print
Previous Article শ্যামনগরে রঙিন স্বপ্ন নিয়ে তরমুজ চাষে ব্যস্ত কৃষক
Next Article সেক্টর কমান্ডার কে এম সফিউল্লাহ আর নেই
Leave a comment

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

দিনপঞ্জি

October 2025
S M T W T F S
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031  
« Sep    
- Advertisement -
Ad imageAd image
আরো পড়ুন
তাজা খবরসাতক্ষীরা

ভোমরা স্থলবন্দরকে ‘কাস্টমস হাউজ’ ঘোষণা, বাণিজ্যে নতুন দিগন্ত

By জন্মভূমি ডেস্ক 4 hours ago
তাজা খবরসাতক্ষীরা

লোকালয়ের প্লাস্টিক বর্জ্য সুন্দরবনে, যায় মাছের পেটেও

By জন্মভূমি ডেস্ক 5 hours ago
তাজা খবরসাতক্ষীরা

সাতক্ষীরার সুবিধাবঞ্চিত নারীরা শপিং ব্যাগ তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করছে

By করেস্পন্ডেন্ট 7 hours ago

এ সম্পর্কিত আরও খবর

তাজা খবরসাতক্ষীরা

ভোমরা স্থলবন্দরকে ‘কাস্টমস হাউজ’ ঘোষণা, বাণিজ্যে নতুন দিগন্ত

By জন্মভূমি ডেস্ক 4 hours ago
তাজা খবরসাতক্ষীরা

লোকালয়ের প্লাস্টিক বর্জ্য সুন্দরবনে, যায় মাছের পেটেও

By জন্মভূমি ডেস্ক 5 hours ago
তাজা খবরসাতক্ষীরা

সাতক্ষীরার সুবিধাবঞ্চিত নারীরা শপিং ব্যাগ তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করছে

By করেস্পন্ডেন্ট 7 hours ago

প্রতিষ্ঠাতা: আক্তার জাহান রুমা

প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক: হুমায়ুন কবীর বালু

প্রকাশনার ৫২ বছর

দৈনিক জন্মভূমি

পাঠকের চাহিদা পূরণের অঙ্গীকার

প্রতিষ্ঠাতা: আক্তার জাহান রুমা

প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক: হুমায়ুন কবীর বালু

রেজি: কেএন ৭৫

প্রধান সম্পাদক: লে. কমান্ডার (অব.) রাশেদ ইকবাল, প্রকাশক: আসিফ কবীর কর্তৃক জন্মভূমি প্রকাশনী লি: ১১০/২,সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর বালু সড়ক, খুলনা থেকে মূদ্রিত ও প্রকাশিত

Developed By Proxima Infotech and Ali Abrar

Removed from reading list

Undo
Welcome Back!

Sign in to your account

Lost your password?