পূর্ণ চন্দ্র মন্ডল, পাইকগাছা
‘ বিশ্ববাজার ধরতে চাই, বাগদার পাশে ভেনামী চাই’ ‘ভেনামীর সমৃদ্ধি রপ্তানির প্রবৃদ্ধি’ শ্লোগানকে সামনে রেখে পাইকগাছা লোনাপানি কেন্দ্র বিএফআরআই এ ভেনামী চিংড়ি চাষের পাইলট প্রকল্পের আওতায় ২য় বছরের মত ভেনামী চিংড়ির আহরণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার পাইকগাছা লোপাকে ভেনামী চিংড়ির আহরণ কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মুহাম্মদ ইয়াসিন চৌধুরী, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খ: মাহবুবুল হক, মৎস্য গবেষণা ইনিস্টিউটের মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মমতাজ বেগম, মো: হুমায়ন কবির, অধ্যাপক মো: মনিরুল ইসলাম, শ্যামল দাস, এম. আবদুল্লাহ ইবনে মাসুদ আহমেদ, মো: জিয়াউর রহমান, মো: টিপু সুলতান, ড. মো: লতিফুল ইসলাম, একেএম শফিকুল আলম রুবেল, দেবাশীষ কুমার মন্ডল, মো: মতিউর রহমান, মো: হাশমি সাকিব, শাওন আহম্মেদ, মো: মাসুদুর রহমান, মো: আবু নাছের, রিয়াজ মোর্শেদ রঞ্জু, রাফিয়া আফরিন ও শাহানাজ পারভীন, বিইসিএফএ এড. রফিকুজ্জামান প্রমুখ।
দেশের প্রথম ভেনামি চিংড়ি চাষের উদ্যোক্তা যশোরের এমইউসি ফুডসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শ্যামল দাস বলেন, পৃথিবীর যে কোন দেশের দিকে তাকান তারা ভেনামী চিংড়ি ছাড়া বিকশিত হয়নি। অত্যন্ত দু:খের সাথে বলতে হয় বাণিজ্যিক চাষ স¤প্রসারণে প্রথম ৫টি দেশের চিংড়ির উৎপাদন ও রপ্তানিকারকের মধ্যে আমাদের নাম নেই। কারণ আমরা ভেনামীকে বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদে নিতে পারেনি। আমরা ভেনামী চিংড়ি চাষ করে লাভবান হতে পারি। প্রত্যেক দেশে আন্তর্জাতিকভাবে দেখি সরকার এবং প্রাইভেট একসাথে কাজ করে। এটা অনুসরণ করলে বাণিজ্যিকভাবে আমাদেরও সফল হবেই। ১মবারের থেকে ২য় ধাপে এবার উৎপাদন বেশী হয়েছে। ১১ হাজার ১শ’ ১২ কেজি পার হেক্টর উৎপাদন হয়েছে। এটা সম্ভব হয়েছে কর্মীদের কর্মদক্ষতা, পুকুরে পানি বেশী, ২য় বছরের মত অভিজ্ঞা ছিল। ২০২৩ সালে প্রথম ফলনে ১২ হাজার ১২ কেজি পার হেক্টরে উত্তীর্ণ হবে আশা করি। এদেশ চিংড়িতে সমৃদ্ধ হবে। চাষীরা বাণিজ্যিকভাবে চাষের অনুমোদন পাবে।
ড. মো: লতিফুল ইসলাম জানান, আমি মনিটরিংয়ের দায়িত্বে আছি। ভেনামি চিংড়ি চাষের জন্য সরকারের নির্দেশে লোনা পানি কেন্দ্রের ৬টি পুকুর উদ্যোক্তাদের দেওয়া হয়েছে। ২য় বছরে ১ম ফলনে আহরণকালে সচিবসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা পরিদর্শন করেছেন। সম্পূর্ণ আহরণ হলে কত টাকা খরচ হল, উৎপাদন কত, ইনকাম কত হল, রোগবালাই, পরিবেশের উপর প্রভাব সবকিছু কারিগরি কমিটি বিশ্লেষণ করে সুপারিশ করা হবে।
সচিব ড. মুহাম্মদ ইয়াসিন চৌধুরী জন্মভ‚মি প্রতিবেদককে বলেন, বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক বাজারে ভেনামী চিংড়ির চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে বিশ্ব বাজারে বর্তমানে ৭২% ভেনামী চিংড়ির দখলে। বাকী ২৮% নিয়ে আমাদের প্রতিযোগিতা করতে হয়।
সেজন্য বিশ্ব বাজারের প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে ভেনামী চিংড়ি চাষ গুরুত্বপূর্ণ। আমরা পরীক্ষামুলক বা গবেষণামূলকভাবে এটা শুরু করেছি। পরিবেশের উপর, অর্থনীতির উপর কিরূপ প্রভাব ফেলে, কোন রোগবালাই আছে কি না? অন্যান্য সবকিছু বিচার-বিশ্লেষণ করে যাচাই কমিটির সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করবে ভেনামী চিংড়ি আমাদের দেশে বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা যাবে কিনা? আমাদের মনে রাখতে হবে বাগদা জিআই পণ্য, বাংলাদেশী পণ্য হিসাবে বিশ্ববাজারে সমাদিত। এর দাম একটু বেশী।
মূলত বাংলাদেশে খুলনা জেলার পাইকগাছায় সর্বপ্রথম ভেনামি চিংড়ি চাষের জন্য পাইলট প্রকল্প হিসাবে এর কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এই পাইলট প্রকল্পের ওপর নির্ভর করছে দেশে ভেনামি চিংড়ি চাষের ভবিষ্যৎ। তবে, নানা প্রতিক‚লতার মধ্যেও প্রথমধাপে সফলতা সন্তোষজনক। দ্বিতীয় ধাপেও সন্তোষজনক াবে বাড়ছে।
০.৪ হেক্টর পুকুরে ৮৮দিনে ৪ হাজার ৪শ ৪৫কেজি ভেনামী চিংড়ি উৎপাদিত হয়েছে। হেক্টর প্রতি ১১হাজার ১শ’ ১৩কেজি। কাজেই ভেনামীর সফলতায় চাষীরা বাণিজ্যিকভাবে চাষাদের স্বপ্নবুনছে।
স্বপ্নবুননে দ্বিতীয় ধাপে পাইকগাছার ভেনামী চিংড়ি পাইলট প্রকল্প
Leave a comment