পলি রানী ঘোষ : মনীষীরা বলেছেন-“শিক্ষাই সর্বোত্তম বিনিয়োগ।” ভাবনার জগতের সাথে একাত্ম হওয়া হলো শিক্ষা। মানুষের সুখী হওয়ার জন্যে সবচেয়ে বেশি দরকার বুদ্ধির এবং শিক্ষার মাধ্যমে এর বৃদ্ধি ঘটানো সম্ভব।
ডিজিটাল প্রযুক্তির নিত্যনতুন উদ্ভাবনের পথ ধরে আসা চতুর্থ শিল্পবিপ্লব বিজয়ে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অদম্য অগ্রগতিতে এগিয়ে যাওয়া বর্তমান সরকার বহুমাত্রিক পরিকল্পনা-কর্মকৌশল গ্রহণ ও সফল বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে সরকারের প্রতিশ্রুত ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ বাস্তবায়ন সম্পন্ন হয়েছে।স্মার্ট বাংলাদেশ হবে সাশ্রয়ী টেকসই, জ্ঞানভিত্তিক, বুদ্ধিদীপ্ত ও উদ্ভাবনী। এককথায় সব কাজই হবে স্মার্ট। যেমন স্মার্ট শহর ও স্মার্ট গ্রাম বাস্তবায়নের জন্য স্মার্ট স্বাস্থ্যসেবা, স্মার্ট পরিবহন, স্মার্ট ইউটিলিটিজ, নগর প্রশাসন, জননিরাপত্তা, কৃষি, ইন্টারনেট সংযোগ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা।
আজকের শিশুরাই আগামী দিনের স্মার্ট বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি। উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে হলে সবার আগে তাদের উন্নত চিন্তাজগতের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে হবে। প্রাথমিক শিক্ষা একটি শিশুর জীবনে ব্যক্তিত্বের বিকাশ ও জ্ঞানার্জনের মূলভিত্তি তৈরি করে। সে কারণে, শারীরিক ও মানসিকভাবে সুসংগঠিত করে প্রগতিশীল, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নির্ভর স্মার্ট সমাজ বিনির্মাণে সব শিশুর মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করা খুবই জরুরি। প্রাথমিক শিক্ষার মূল কাজ হলো, শিশুর সহজাত সক্ষমতার সর্বোচ্চ ব্যবহার করে মানবিক মূল্যবোধ ও মানসিক দক্ষতা বৃদ্ধি করা। এই কাজটি নিপুণভাবে সম্পাদিত হয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এজন্য প্রয়োজন একজন দক্ষ,তথ্য প্রযুক্তি অভিজ্ঞ ও স্মার্ট দেশপ্রেমিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকের।মাল্টিমিডিয়ার ব্যবহার, কন্টেন্ট তৈরি, ইন্টারনেট ব্রাউজিং, সর্বোপরি প্রযুক্তির ব্যবহার করে যোগাযোগ দক্ষতা বৃদ্ধি করতে হবে। স্মার্ট মানুষের সমস্ত গুণাবলী একজন শিক্ষক সর্বপ্রথমে নিজের মধ্যে আত্মস্থ করবেন। তিনি অর্জিত জ্ঞান ও দক্ষতা শিক্ষার্থীদের মাঝে সঞ্চার করবেন।
সুশিক্ষিত, স্মার্ট, সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে মানসম্মত এবং যুগোপযোগী শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। আর সেই মানসম্মত শিক্ষাদানে সুশিক্ষিত, স্মার্ট, সুনাগরিক গঠনের কাজটি কেবল শিক্ষকরাই সম্পাদন করবেন। এজন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় সব মন্ত্রণালয়ের মধ্যেও গুরুত্বের দাবিদার। শিক্ষার ভীত রচিত হয় প্রাথমিক শিক্ষায়। সেজন্য প্রাথমিক শিক্ষাকে অধিক গুরুত্ব দেয়া স্মার্ট রাষ্ট্র বিনির্মাণে প্রথম পদক্ষেপ হওয়া দরকার।আর সেজন্য প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের তথ্য, শিক্ষকসহ বিদ্যালয়ের সার্বিক তথ্য অনলাইন করা হয়েছে সফলভাবে। শিক্ষার্থীরা মাল্টিমিডিয়ার সাহায্যে পাঠ শিখতে সক্ষম হয়েছে।
একটি স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে স্মার্ট জাতির বিকল্প নেই। আর সেই স্মার্ট জাতি তৈরি করতে হলে প্রথমত রাষ্ট্রকে নজর দিতে হবে শিক্ষকদের ওপর। আগে শিক্ষক এবং শিক্ষাঙ্গনকে স্মার্ট হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। তারপর এই স্মার্ট শিক্ষাব্যবস্থা একটি স্মার্ট রাষ্ট্র বিনির্মাণে ভূমিকা রাখবে।তবেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন পূরণের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশ ধীরে ধীরে সফলতার দ্বারপ্রান্তে খুব সহজেই পৌঁছে যাবে।
লেখক: পলি রানী ঘোষ, সহকারী শিক্ষক, ৯২ নং জেয়ালা পল্লীমঙ্গল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, তালা, সাতক্ষীরা এবং জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা পদক ২০২৩এর সাতক্ষীরা জেলা শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষিকা।