জন্মভূমি ডেস্ক : বিএনপির ডাকা সকাল-সন্ধ্যা হরতাল চলছে সারাদেশে। বিএনপির ডাকা ওই হরতালকে সমর্থন জানিয়েছে জামায়াতসহ বেশ কয়েকটি বিরোধী রাজনৈতিক দল। এই হরতালের প্রভাব পড়েছে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কে। হরতালের কারণে সবচেয়ে ব্যস্ততম এ মহাসড়কে যানবাহনের চাপ একেবারেই নেই।
রোববার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে কুমিল্লার বেশ কিছু এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, পুরো মহাসড়ক ফাঁকা পড়ে আছে। ফাঁকে ফাঁকে দুয়েকটা সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, মোটরসাইকেলসহ দুই চাকা এবং তিন চাকার কিছু ক্ষুদে যান চলাচল করতে দেখা যায়।
এদিন সকাল থেকেই দূর পাল্লার বাস, মিনিবাস, প্রাইভেটকার, মালবাহী লড়ি, ট্রাক, ভ্যান, পিক-আপসহ সকল ভারী যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। যদিও হরতালের সমর্থনে মহাসড়কে তেমন কোনো কর্মসূচী চোখে পড়েনি। তবে সতর্কতার কারণেই যানবাহন বন্ধ রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন চালকরা।
ফলে, পরিবহন সংকটে পড়েছেন জরুরি গমনের যাত্রীরা। দূর পাল্লার কোনো বাহন না থাকায় ভেঙে ভেঙে, সিএনজি চালিত অটোরিকশা দিয়ে একটু একটু করে পথ পাড়ি দিতে দেখা গেছে যাত্রীদের। এতে গুণতে হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়া, এমনটাই দাবি যাত্রীদের।
মহাসড়কের কুমিল্লার পদুয়ার বাজার এলাকায় কথা হয় জয় সাহা নামের ওই যাত্রী ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি ফেনী থেকে কুমিল্লা পর্যন্ত এসেছি ভেঙে ভেঙে। সিএনিজতে করে একটু একটু পথ পাড়ি দিয়ে কুমিল্লায় এসে পৌঁছেছি। ঢাকায় যাব। বৃহস্পতিবার ছুটি পেয়ে অসুস্থ বাবাকে দেখতে গ্রামে গিয়েছিলাম। শনিবার সকালে ফেরার কথা থাকলেও গাড়ি সংকটে ফিরতে পারিনি। কিন্তু আজও যদি না যাই তাহলে আর চাকরি থাকবে না। তাই এভাবে একটু একটু করে এগোচ্ছি।
কুমিল্লার আন্তঃজেলা কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে কথা হয় বেশ কয়েকজন বাসচালক এবং সহযোগীর সঙ্গে। তারা সমস্বরে বলেন, নিরাপত্তার কারণে বাস ছাড়া হয়নি। হরতালে একমাত্র টার্গেট থাকে বাসের দিকে। একদিন রেস্ট করার পাশাপাশি ঝুঁকিমুক্তও থাকতে পারব।
যদিও হরতালে পরিবহন সচল রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল পরিবহন মালিক সমিতি। তবে তাদের সিদ্ধান্তে একমত না হয়ে গাড়ি বন্ধ রেখেছেন চালকরা।
কুমিল্লা পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি অধ্যক্ষ কবির আহমেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা ব্যবসায়ী, রাজনীতির সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই। আমরা পরিবহন চালু রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। চালকরা আর সহযোগীরা গাড়ি বের না করলে আমাদের কী করার আছে?
জেলা পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান ঢাকা পোস্টকে বলেন, জনসাধারণের জীবনযাপন, চলাফেরা বিঘ্নিত করে এমন কোনো কর্মসূচি ও ব্যক্তিদের বরদাশত করা হবে না। নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা হয়েছে পুরো জেলাকে।