শেখ মোহাম্মদ আলী ,শরণখোলা : অবরোধ ও হরতালে পর্যটক শূণ্য হয়ে পড়েছে সুন্দরবন। সুন্দরবনে এখন পর্যটনের ভরা মৌসুম। গত এক সপ্তাহ ধরে সুন্দরবনে যাচ্ছেননা পর্যটকগণ। রাজস্ব হারাচ্ছে বনবিভাগ। পর্যটনখাতে লাখ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে পর্যটকের অভাবে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন ট্যুর অপারেটররা।
বাংলাদেশ ট্যুর অপারেটর এসোসিয়েশন অব সুন্দরবন (টোয়াস) এর সেক্রেটারী নাজমুল আযম ডেভিট বলেন, বর্তমানে সুন্দরবনে পর্যটনের ভরা মৌসুম চলছে। অথচ সুন্দরবন পর্যটক শূণ্য হয়ে পড়েছে। পর্যটকরা সুন্দরবনে ভ্রমণের জন্য ইতিপূর্বে বুকিং দিয়ে রাখা বিভিন্ন জাহাজ ও লঞ্চের যাত্রা বাতিল করে দিচ্ছেন। চলমান হরতাল ও অবরোধের কারণে পর্যটকরা এ সময় সুন্দরবনে যাওয়া থেকে বিরত রয়েছেন ফলে পর্যটন ব্যবসার সাথে জড়িত মালিক ও শ্রমিকরা আর্থিক ক্ষতির সম্মূখীন হচ্ছেন বলে টোয়াস সেক্রেটারী জানান।
শরণখোলার স্থানীয় ট্যুর অপারেটর রাসেল আহমেদ ও আঃ হালিম বলেন, লাখ লাখ টাকা খরচ করে সুন্দরবনে পর্যটনের জন্য নৌযান প্রস্তত করেছি অথচ হরতাল অবরোধের কারণে পর্যটক পাওয়া যাচ্ছেনা। কর্মীদের বসিয়ে বসিয়ে বেতন দিতে হচ্ছে ফলে তারা অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বলে জানালেন আঃ হালিম।
পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের অন্যতম পর্যটন স্পট করমজল বণ্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফরেষ্টার আজাদ কবীর বলেন, পর্যটকের অভাবে বনবিভাগ রাজস্ব হারাচ্ছে। গত এক সপ্তাহ ধরে করমজলে পর্যটকরা তেমন আসা যাওয়া করছেনা। নভেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যটনের মৌসুম। প্রতি বছর নভেম্বর মাসে সপ্তাহে ৫/৬ হাজার পর্যটক করমজলে আসা যাওয়া করায় বনবিভাগ লক্ষাধিক টাকা রাজস্ব আদায় করে থাকে সেখানে এবছর নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ৪/৫ শত পর্যটক করমজল ভ্রমণ করেছে এতে বনবিভাগ মাত্র ২৫/৩০ হাজার টাকা রাজস্ব আদায় করেছে। গত বছর পর্যটন মৌসুমের চার মাসে করমজলে পর্যটন খাতে বনবিভাগ ২৫ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় করেছিলো বলে ফরেষ্টার আজাদ কবীর জানিয়েছেন।
পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের প্রধান পর্যটন কেন্দ্র কটকা অভয়ারণ্য কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফরেষ্টার সুরজিত চৌধুরী বলেন, কটকা পর্যটন কেন্দ্র পর্যটক শূণ্য হয়ে পড়েছে বলে বলা যায়। আগে প্রতিদিন গড়ে ১২/১৪ টি পর্যটকবাহী জাহাজ ও লঞ্চ কটকায় আসা যাওয়া করতো সেখানে গত এক সপ্তাহের মধ্যে একটি নৌযানও কটকায় আসেনি। তবে গত ২৫ অক্টোবর ১৪টি এবং ২৮ অক্টোবর ১২ টি পর্যটকবাহী লঞ্চ জাহাজ কটকায় এসেছিলো। হরতাল অবরোধের কারণে পর্যটকগণ এখন সুন্দরবনে যাচ্ছেননা বলে ঐ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনে করেন বলে জানিয়েছেন।
হরতাল অবরোধে পর্যটক শূণ্য সুন্দরবন
Leave a comment